1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফেসবুকে হুমকি, শিক্ষকের জেল

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৭ জুন ২০১৩

ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত৷ সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে এটিই সর্বোচ্চ সাজা৷

The Prime Minister of Bangladesh Sheikh Hasina addresses a news conference with German Chancellor Angela Merkel, not seen, after a meeting at the chancellery in Berlin, Tuesday, Oct. 25, 2011. (Foto:Markus Schreiber/AP/dapd)
ছবি: dapd

গত বছরের এপ্রিল মাসে বুয়েটের প্রভাষক হাফিজুর রহমান রানা ফেসবুকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেন৷ তিনি তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, ‘হায়েনা, ওই হায়েনা, তুই দেশকে খেয়েছিস, এখন বুয়েটকে খাবি....পারবি না৷ আমরা বুয়েটের শিক্ষক এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলাম শিকারি৷'

এখানেই শেষ নয়৷ হাফিজুর রহমান রানা আরো লেখেন, ‘প্রথমে তোর মাথায় গুলি করবৌ, পরে পেটে৷ তারপর মাথা কেটে বুয়েটের সামনে টানিয়ে রাখবো৷ যাতে আর কোনো হায়েনার আক্রমণে বুয়েট আক্রান্ত না হয়৷'

গত বছরের ২৩শে এপ্রিল এ ব্যাপারে ঢাকার শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়, যা পরে মামলায় রূপান্তরিত হয়৷ পুলিশ তদন্ত শেষে তথ্য প্রযুক্তি আইন ও দণ্ডবিধিতে হাফিজুর রহমানকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে৷ অভিযোগ গঠনের পর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ জহুরুল হক হাফিজুর রহমানের সাত বছর কারাদণ্ডের রায় দেন বৃহস্পতিবার৷ আদালত গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারির পর, হাফিজুর রহমান হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আর আদালতে হাজিরা দেননি৷ তাই তাঁর অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শেষ হয়৷

গত বছরের এপ্রিল মাসে বুয়েটের প্রভাষক হাফিজুর রহমান রানা ফেসবুকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেন (প্রতীকী ছবি)ছবি: picture-alliance/dpa

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, তথ্য প্রযুক্তি আইনে তাঁর জানা মতে এই প্রথম সাইবার অপরাধে বাংলাদেশে কারুর সাত বছরের কারাদণ্ড হলো৷ এর আগে এই ধরণের অপরাধে কারুর সাজা হয়েছে বলেও তাঁদের জানা নেই৷ তিনি জানান, সাইবার অপরাধ দমনে এখন পর্যাপ্ত আইন আছে৷ নতুন সন্ত্রাস দমন আইনেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তত্‍পরতা আইনের আওতায় আনা সম্ভব৷ তবে সমস্যা হলো, গুগলের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো চুক্তি না থাকায় আইনি প্রক্রিয়ায় ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য পাওয়ার সুযোগ নেই পুলিশের৷ চুক্তি করার জন্য তাঁরা বিটিআরসি-কে অনুরোধ করেছেন৷ এদিকে, তথ্য পাওয়ার সুযোগ না থাকায় অনকে সময় অভিযোগ পেলেও তদন্ত এগিয়ে নেয়া যায় না৷ তাই মনিরুল ইসলামের কথায়, সাইবার অপরাধ দমনে এখন পুলিশের প্রযুক্তি এবং দক্ষ জনবল থাকলেও অনেকেই অভিযোগ করতে চান না সামাজিক কারণে৷

ওদিকে তথ্য প্রযুক্তিবিদ জাকারিয়া স্বপন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কেন, যে কোনো ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি দেয়া অপরাধ৷ তাই আদালত প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদানকারীকে কারাদণ্ড দিয়ে ন্যায় বিচারই করেছে৷ এতে অন্যরাও সতর্ক হবেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে আইনি ব্যবস্থার কথা মাথায় রাখবেন৷ তবে তিনি নতুন সন্ত্রাস দমন আইন নিয়ে আশঙ্কাও প্রকাশ করেন৷

জাকারিয়া স্বপন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ সরকারের কাজ, নীতি বা সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলে এই আইনে তাঁকে বিচারের আওতায় আনা যাবে৷ তিনি মনে করেন, সরকার কেন, প্রধানমন্ত্রীসহ যে কোনো ব্যক্তির সমালোচনার অধিকার সাংবিধানিক অধিকার, এটা মত প্রকাশের স্বাধীনতা৷ কিন্তু এই আইনে তা খর্ব হবে৷ এর ফলে মত প্রকাশ নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়বে, যা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর৷ তিনি মনে করেন, সরকারের বোঝা উচিত যে সমালোচনা তাদের ক্ষতি নয় বরং উপকারই করে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ