মা বনাম প্রধানমন্ত্রী বিতর্ক
২৯ জুলাই ২০১৩শনিবার (২৭.০৭.১৩) ফেসবুকে শেখ হাসিনার মোরগ পোলাও রান্নার একটি ছবি প্রকাশ পায়৷ সজীব ওয়াজেদের ফেসবুক পাতায় ছবিটি প্রকাশের পর মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে৷ গণমাধ্যম এই ছবিটি প্রকাশ করেছে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে৷ ছবিটি শেয়ার করার সময় সজীব ওয়াজেদের ফেসবুক পাতায় তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ছিল দু'হাজারের কিছু বেশি৷ আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পঁয়ত্রিশ হাজারে৷ শুধু তাই নয়, সজীবের পাতা থেকেই হাসিনার ছবিটি সোমবার দুপুর অবধি ৪,৫৬৬ বার ছবিটি শেয়ার হয়েছে৷ প্রতি মুহূর্তেই সেখানে জমা পড়ছে নিত্য নতুন মন্তব্য৷
কমিউনিটি বাংলা ব্লগ সামহয়্যার ইন ব্লগে আবীর শাকরান মাহমুদ লিখেছেন, ‘‘প্রসঙ্গ: প্রধানমন্ত্রীর রন্ধন ক্রিয়া আর আমাদের নানা মুনির নানা প্রতিক্রিয়া৷'' এই ব্লগার তাঁর নিবন্ধে হাসিনার ছবিটির প্রেক্ষিতে কার কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তার কিছু কাল্পনিক নমুনা তুলে ধরেছেন৷
ব্লগার সুব্রত শুভ ফেসবুকে এই বিষয়ে লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিজের ছেলের জন্য রান্না করছেন৷ ছবিটা দেখে ভাল লাগল৷ মায়ের রান্না সকল সন্তান খেতে চায়; হোক সে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বা হোক সে দিনমজুরের সন্তান৷''
শেখ হাসিনার ছবিটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশন নিয়ে অবশ্য বিতর্কও চলছে৷ ক্যাপশনে সজীব ওয়াজেদ লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমার জন্য মোরগ-পোলাও রান্না করছেন৷ আমি যত পোলাও খেয়েছি, তার রান্নাই সবচেয়ে সেরা৷'' ছবিটির নিচে মাহমোদোল হক প্রশ্ন করেছেন, ‘‘আপনি বোঝাতে চাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আপনার জন্য রান্না করছেন? আমি সেটা মনে করি না, কারণ তিনি এটার জন্য বেতন পান না৷ নিজের মায়ের প্রতি সম্মান দেখান৷''
ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘পোলাও রান্না করার ছবিতে আমাদের বাঙালি মানসিকতা খুব আবেগপ্রবণ হবে সন্দেহ নেই, আবার ধর্মব্যবসায়ীরাও খুশি হবে এই ভেবে যে, প্রধানমন্ত্রী এতদিনে নিজের জায়গাটা চিনতে পেরেছেন৷ আল্লামা শফীদের মতে, ‘‘নারীদের আসল জায়গা প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার নয়, রান্নাঘর''; প্রধানমন্ত্রীর পুত্র এই ছবি দিয়ে আসলে কী বোঝাতে চাইলেন জানি না৷''
আরেক ব্লগার আরিফ জেবতিক বিষয়টি দেখছেন একটু ভিন্নভাবে৷ ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘‘মুক্তিযুদ্ধে সব হারানো রমা চৌধুরীর সন্তানরা এই মাটিতে শুয়ে আছে – এই কষ্টে তিনি জুতা পায়ে দিয়ে হাঁটেন না৷ চরম জীবনযুদ্ধের লড়াকু এই নারীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উপযাচক হয়ে দেখা করেছেন – এটাই বড় খবর৷ কিন্তু আমাদের চোখ গেল মোরগ পোলাওয়ের হাঁড়ির দিকে৷ আমরা সেই হাঁড়ির ঢাকনা তুলে সেখানে সিদ্ধ হওয়া পলিটিক্স খুঁজতে শুরু করলাম৷''
সংকলন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন