1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা!

৬ জুন ২০১২

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুক’এ কটূক্তি করায় সেদেশের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ এর আগে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছিল৷

Symbolfoto über Facebook, das den Status des Netzwerks als (weltweiten) Marktführer darstellt. ILLUSTRATION - Ein Smartphone auf dem das Logo des Online-Netzwerkes Facebook zu sehen ist steht am Dienstag (08.05.2012) in Berlin auf einer Tageszeitung. Mit dem Start des Handels der Facebook-Aktie an der Technologiebörse Nasdaq wird für Freitag (19. Mai) gerechnet. Foto: Marc Tirl dpa/lbn
ছবি: picture-alliance/dpa

সর্বশেষ ঘটনাটি ময়মনসিংহের একটি বিশ্ববিদ্যালয়'এর৷ সেখানকার শিক্ষার্থী সোহেল মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে কটূক্তি করেছেন তিনি৷ ফেসবুকে ব্যক্তিগত প্রোফাইলে এই মন্তব্য করায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হয়৷

ময়মনসিংহের ত্রিশাল'এর পুলিশ প্রধান ফিরোজ তালুকদার এই বিষয়ে বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘ফেসবুকে তার মন্তব্য দেখার পর অনেক শিক্ষার্থী উত্তেজিত হয়ে পড়ে৷ শিক্ষার্থীটি ফেসবুকে দাবি করেছে, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর মুক্তির কোন সুযোগ নেই, কেননা শেখ হাসিনা তাকে আটকে রেখেছে৷''

বলাবাহুল্য, ইলিয়াস আলী হচ্ছেন বিরোধী দল বিএনপি'র একজন প্রভাবশালী নেতা৷ গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে তিনি নিখোঁজ আছেন৷ বিরোধী দলের দাবি, ইলিয়াসকে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী ‘গুম' করেছে৷ অন্যদিকে, সরকার পক্ষ ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পেছনে বিরোধী দলই জড়িত বলে দাবি করেছে৷

বাংলাদেশে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড৷ ফেসবুকে মন্তব্য করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়'এর শিক্ষার্থী সোহেল মোল্লা এখন গুরুতর আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে জড়িয়ে গেছেন৷ পুলিশ কর্মকর্তা ফিরোজ তালুকদার এই বিষয়ে বলেন, আমরা আমাদের তদন্ত সম্পন্ন করেছি এবং নিশ্চিত হয়েছে যে তার ফেসবুক মন্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল৷

বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবের অবশ্য মনে করেন, ফেসবুকে একটি মন্তব্যের ভিত্তিতে সরকারের এই প্রতিক্রিয়া অপ্রয়োজনীয়৷ তিনি বলেন, ‘‘আসলে এটা (ফেসবুক) একটা নতুন বিষয়, ফলে এটা সম্পর্কে যারা দেখভাল করছে বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যারা আছেন, তারা না বুঝে এই কাজগুলো করছেন৷ এটা এই কারণে বলছি যে, ইন্টারনেট এমন একটা মাধ্যম যেখানে স্বাধীনভাবে যে কেউ যে কারো মতামত প্রদান করতে পারে৷ এখানে অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন আছে, তেমনি অনেক ভুল, বিভ্রান্তিকর তথ্যও এখানে আছে৷ এবং ভালো দিক হচ্ছে, ইন্টারনেট যারা ব্যবহার করেন তারা এই বিষয়ে সচেতন৷ কাজেই কে কী মন্তব্য করল এবং সেটা শুনেই যে কেউ বিশ্বাস করবে, এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই৷''

তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের মন্তব্য যাই হোক, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ফেসবুকের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন৷ দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘‘এই ছাত্র যে অপরাধ করেছে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, যে কারণে আমরা তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যারাই এ ধরনের অশোভন কটূক্তি করবে, তাদের বিরুদ্ধে একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷''

বলাবাহুল্য, কারিগরিভাবে ইন্টারনেট থেকে যেকোন মন্তব্য বা বিষয়বস্তু মুছে ফেলা বা নির্দিষ্ট কোন লিংক ব্লক করে দেওয়া কঠিন এবং জটিল হলেও ক্ষেত্রবিশেষে সম্ভব৷ কিন্তু ছোট্ট একটি মন্তব্য মুছতে প্রযুক্তির প্রয়োগকে যৌক্তিক মনে করছেন না সুমন আহমেদ সাবের৷ এই প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বরং এসব ক্ষুদ্র মন্তব্যকে বিশেষ গুরুত্ব না দেওয়ার পক্ষে৷ তিনি বলে ‘‘আজকে ইন্টারনেটে যে পর্যায়ে চলে গেছে, সেখান থেকে একেকটা ক্ষুদ্র, একক বিষয়বস্তু মুছে ফেলা আসলেই জটিল৷ যদি খুব ক্ষতিকর কোন মন্তব্য থাকে, সেটা একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে মুছে ফেলা সম্ভব৷ কিন্তু একটা মন্তব্যকে যে মুছে ফেলতেই হবে এমন কি কোন কথা আছে? এসব বিষয় বরং এড়িয়ে গেলেই ভালো৷''

উল্লেখ্য, ফেসবুকে কটূক্তি করার অপরাধে বাংলাদেশে এর আগে অন্তত আরো দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ গত জানুয়ারি মাসে ফেসবুকে শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় গ্রেপ্তার হন শিক্ষার্থী আল-নাইম জুবায়ের৷ একইমাসে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষক রুহুল খন্দকারকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ঢাকার আদালত৷ তাকে অস্ট্রেলিয়া থেকে ফেরত আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ