একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে কারো ফাঁসি হলে সেটা নিয়ে সাধারণত নানাবিধ আলোচনা, সমালোচনা হয়৷ তবে ফোরকান মল্লিকের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে৷ তার মৃত্যুদণ্ড নেই কোনো প্রতিক্রিয়া৷
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, ধর্ষণের মতো অপরাধে জড়িত থাকার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে ফোরকান মল্লিককে৷ ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করে৷ ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে রায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল ফেসবুকে ৷ সাধারণত এ ধরনের রায়ে অনেক প্রতিক্রিয়া আসে৷ কিন্তু মল্লিকের ক্ষেত্রে বেশ ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ ডয়চে ভেলের প্রশ্নের উত্তরে মন্তব্য করেছেন প্রথম দু'ঘন্টায় মন্তব্য করেছেন মাত্র তিনজন৷
রাকিব আহমেদ লিখেছেন, ‘‘...একবার শেখ মুজিবুর রহমান ওদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছে৷ এখন কেন হাসিনা ওদের বিচার করে ভাই? আপনারা কি জানেন কেন বিচার হয়?'' তবে মো. মফিজ খান মনে করেন, ‘‘মানবতাবিরোধী অপরাধের নায্য বিচার হওয়া দরকার এবং অতি তারাতারি৷'' আর সিদ্ধার্থ সরকার লিখেছেন, ‘‘আইনের মোড়কে রাষ্ট্রীয় হত্যা৷''
বিভিন্ন দেশে যেভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য একেক দেশ একেক রকম পদ্ধতি ব্যবহার করে৷ ছবিঘরে থাকছে তেমন কয়েকটি উপায়ের কথা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইনজেকশন
অ্যানেস্থেশিয়ার জন্য সোডিয়াম পেন্টোনাল, সম্পূর্ণ অক্ষম করার জন্য প্যানকিউরোনিয়াম ব্রোমাইড আর হৃদযন্ত্র থামিয়ে দেয়ার জন্য পটাশিয়াম ক্লোরাইড নামের তিনটি রাসায়নিক উপাদান ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে ঢুকিয়ে অনেক দেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷ যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভিয়েতনামে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়৷
ছবি: BilderBox
গুলি
ইন্দোনেশিয়া, চীন, সৌদি আরব, তাইওয়ান, উত্তর কোরিয়া সহ কয়েকটি দেশে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷ এক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির চোখ কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে তাকে বসিয়ে বা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়৷ এরপর সামরিক বা নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য একের পর এক গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেন৷
ছবি: Fotolia/Scanrail
বৈদ্যুতিক চেয়ারে বসিয়ে
অভিযুক্তকে কাঠের চেয়ারে বসিয়ে তার মাথা ও পায়ের মাধ্যমে শরীরে ৫০০ থেকে ২,০০০ ভোল্ট বিদ্যুৎ প্রবাহিত করা হয়৷ প্রতিবার ৩০ সেকেন্ড করে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কয়েকবার এভাবে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করা হয়৷ এই পদ্ধতিটা যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফাঁসি
বাংলাদেশ সহ আফগানিস্তান, ভারত, ইরান, ইরাক, জাপান, মালয়েশিয়া ও কুয়েতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রচলন রয়েছে৷
ছবি: vkara - Fotolia.com
শিরশ্ছেদ
কয়েক হাজার বছর ধরেই শিরশ্ছেদ বিষয়টি রয়েছে৷ তবে বর্তমানে শুধু সৌদি আরবে এই পদ্ধতিটি চালু রয়েছে৷ সাধারণত শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর মসজিদ প্রাঙ্গনে শিরশ্ছেদ করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Abir Abdullah
অন্যান্য উপায়
পাথর ছুড়ে মারা, গ্যাস চেম্বারে ফেলে দেয়া, অনেক উঁচু থেকে অভিযুক্তকে নীচে ফেলে দেয়ার মাধ্যমেও কোথাও কোথাও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
6 ছবি1 | 6
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সোচ্চার ব্লগাররাও ফোরকানের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে নিরব রয়েছেন৷ রাজনৈতিক দল কিংবা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও কোনো প্রতিক্রিয়া নেই৷ টুইটারে এ সংক্রান্ত নিউজ প্রকাশ করা হয়েছে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে, তবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷
বাংলাদেশের স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ফোরকান মল্লিক দিনমজুর ছিলেন৷ এমনকি মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে আপিল করার মতো আর্থিক সামর্থ্যও তার নেই বলে দাবি করেছেন ফোরকান মল্লিকের আইনজীবী৷