1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজ-সংস্কৃতিনেদারল্যান্ডস

ফ্যাশনে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া আনছেন ডাচ ডিজাইনার

৩০ মে ২০২৪

ফরাসি ভাষায় ‘ওৎ কুতুয়র'-এর সহজ অনুবাদ করা কঠিন৷ ফ্যাশন ডিজাইনারের উচ্চ মানের সেই অনন্য পরিচ্ছদকে কোনো ব্যক্তির শরীরের মাপ অনুযায়ী চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়৷ এক ডাচ ডিজাইনার সে ক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তন আনছেন৷

নিজের ডিজাইন করা পোশাক পরা মডেলের সঙ্গে হাস্যোজ্জল ইরিস ফান
থ্রিডি প্রিন্টিং দিয়ে পোশাক তৈরি করা ফ্যাশন জগতের প্রথম ব্যক্তি ইরিস ফানছবি: DW

নেদারল্যান্ডসের ডিজাইনার ইরিস ফান হেরপেনের কল্পনানির্ভর সৃষ্টি দেখতে ভাস্কর্যের মতো৷ তাঁর অনেক ‘ওৎ কুতুয়র' সংগ্রহের পরিচ্ছদ কাঠ বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি৷ বিশ্বের অন্যতম সেরা উদ্ভাবনশীল ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে তিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন৷ ইরিস বলেন, ‘‘আমি ভাস্কর্য ও তৈলচিত্র সৃষ্টি করতে চেয়েছিলাম৷ নাচেও আগ্রহ ছিল৷ তখনো জানতাম না ফ্যাশন জগতে পা রাখবো৷ কিন্তু নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতাম৷ ফ্যাশন কত বড় রূপান্তর আনতে পারে, কত গভীর প্রভাব রাখতে পারে, সেটা শিখতে শুরু করেছিলাম৷ ফ্যাশন আত্মপরিচয়ের ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি৷ সংস্কৃতিও বটে৷ তখন উপলব্ধি হলো যে কুতুয়র আমার জগত৷''

ইরিস প্রযুক্তি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ভালোবাসেন৷ ২০১০ সালে তিনি ফ্যাশন জগতের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি পোশাক সৃষ্টি করেছিলেন৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সেটা এমন একটা মুহূর্ত ছিল, যখন আমি আমার কারুশিল্প নতুন প্রযুক্তির কাছে খুলে ধরলাম৷ আমার মতে, সেটা ছিল আমার কাছে রূপান্তরের এক মুহূর্ত৷ জানতাম না, শেষ পর্যন্ত সেটা করা যাবে কিনা৷ কিন্তু ঝুঁকি নিতেই হয়৷ এগিয়ে যাওয়ার তাগিদে কখনো বিফল হতে হয়৷''

প্যারিসের এক মিউজিয়াম এক বড় প্রদর্শনী তাঁকেই উৎসর্গ করেছে৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর স্ত্রী ব্রিজিৎ এবং নেদারল্যান্ডসের রানি মাক্সিমা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷ রানি এমনকি ফান হেরপেনের তৈরি একটি গাউন পরে সবার সামনে এসেছেন৷ কিছুটা চাপা স্বভাবের এই ডিজাইনারের জন্য সেটা ছিল বিশাল সম্মানের বিষয়৷

তিনি সাধারণত বছরে দুবার প্যারিসের ওৎ কুতুয়র শো-তে নিজের সৃষ্টিকর্ম তুলে ধরেন৷ প্যারিসের ডেকোরেটিভ আর্ট মিউজিয়ামের কিউরেটর ক্লোয়ে পিতিয়ো বলেন, ‘‘তিনি ঐতিহ্যগত কুতুয়রের সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটাতে সফল হয়েছেন৷ সেই সংমিশ্রণই তাঁর সৃষ্টিকে এত মৌলিক ও অভিনব করে তোলে৷’’

থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি পোশাক

04:23

This browser does not support the video element.

আন্তর্জাতিক স্তরের বিখ্যাত মানুষেরা দলে দলে তাঁর ওৎ কুতুয়র শো দেখতে আসেন৷ যেমন মার্কিন গায়ক ক্যামিলা কাবেলো, জার্মানির ইনফ্লুয়েন্সর লেওনি হানে এবং ব্রিটেনের অভিনেতা মেইসি উইলিয়ামস৷ তাঁরা সবাই ইরিস ফান হেরপেনের তৈরি পোশাক পরেন৷ মেইসি বলেন, ‘‘একেবারে ভিন্ন জগতের বাসিন্দার মতো দেখতে লাগে৷ মনে হয় যেন শরীর থেকেই অরগ্যানিক পদ্ধতিতে পোশাক গজিয়ে উঠেছে৷ পোশাক বলে মনেই হয় না৷ এগুলি পোশাকের প্রায় সব পূর্বশর্ত অমান্য করে৷ মনে হয় যেন এক শিল্পকীর্তি পরে হাঁটছি৷ খুবই স্পেশাল মনে হয়৷''

জার্মান ফটোগ্রাফার এলেন ফন উনভেয়ার্ট মনে করেন, ‘‘ইরিস ফান হেরপেনের এই সব জাদুময় জীব ব়্যাম্পের উপর হাঁটে এবং মনের মধ্যে এত রকম কল্পনা জাগিয়ে তোলে৷ খুবই নারীসুলভ ও মুগ্ধ করার মতো৷ আমি তাঁর পরিচ্ছদ ভালোবাসি৷''

কিন্তু ফান হেরপেনের প্রতিটি সৃষ্টি একটা বার্তাও বহন করে৷ তিনি ফ্যাশন শিল্পের এমন এক নতুন প্রজন্মের অংশ, যারা সত্যি এক পরিবর্তন আনতে চায়৷ টেকসই পদ্ধতিকে তিনি অগ্রাধিকার দেন৷ ইরিস মনে করেন, ‘‘সেটাই কুতুয়রের সৌন্দর্য৷ টেকসই উপাদান উদ্ভাবন সত্যি সম্ভব৷ সেই কাজে সময় দিতে হয়, এমন উদ্যোগের অংশ ইনস্টিটিউটের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হয়৷ আমরা আমাদের জ্ঞান একত্র করার চেষ্টা করি৷ আশা করি সেই প্রেরণার মাধ্যমে ফ্যাশন জগত আরো চক্রাকার হয়ে উঠবে এবং সংখ্যার বদলে মানকে বেশি গুরুত্ব দেবে৷ আমার মতে, আমাদের মানসিকতা বদলাতে হবে৷''

ইরিসের তৈরি ভবিষ্যতের পরিচ্ছদের প্রত্যেকটি যেন এক একটি ভাস্কর্য৷ তিনি প্রথম থ্রিডি প্রিন্টেড পোশাকের মাধ্যমে ফ্যাশন জগতে ইতিহাস রচনা করেছেন৷ সেটি মিউজিয়াম অফ ডেকোরেটিভ আর্টের স্থায়ী প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে অমর হয়ে থাকবে৷

কাটিয়া লিয়ার্শ/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ