উগ্র ডানপন্থিদের হামলার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের আইনি সাহায্য দেয়া এক আইনজীবীর মেয়েকে হুমকি দিয়েছে পুলিশ৷ তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, ফ্রাঙ্কফুর্ট পুলিশে এক নব্য-নাৎসি নেটওয়ার্কের তথ্য৷
বিজ্ঞাপন
জার্মান সংবাদপত্র ফ্রাঙ্কফুর্ট আলগেমাইনে সাইটুং এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরের পুলিশ বাহিনীতে সন্দেহভাজন ডানপন্থি জঙ্গি নেটওয়ার্কের বিষয়ে তদন্ত করছে হেসে রাজ্যের স্টেট ক্রিমিনাল পুলিশ- এলকেএ৷
আদালতেইসলামি জঙ্গিদের পক্ষে লড়াই করা তুর্কি বংশোদ্ভূত আইনজীবীকে হুমকি দিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়৷ এই ঘটনা তদন্তে এলকেএ একটি বিশেষ দল গঠন করেছে৷
সেডা বাসায়-ইলডিজকে ফ্যাক্স করে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘‘নোংরা তুর্কি শূকর, তুমি জার্মানিকে ধংস করতে পারবে না৷ যত তাড়াতাড়ি পারো, এখান থেকে জীবিত বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করো, শূকর৷''
ফ্রাঙ্কফুর্টার নয়ে প্রেসেকে বাসায়-ইলডিজ জানিয়েছেন, চিঠির এই অংশটুকু তাঁকে নিয়মিতভাবে পাঠানো ঘৃণাবাচক অন্য চিঠিগুলোর মতোই৷ কিন্তু চিঠির পরের অংশটুকু তাঁকে শঙ্কিত করে তুলেছে৷
‘ইন দ্য ফেড’ এবং ফাতি আকিনের অন্যান্য ছবি
চলচ্চিত্র পরিচালক ফাতিহ আকিনের ছবি এ বছর ‘গোল্ডেন গ্লোব’ পুরস্কার জিতেছে৷ সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানিতে নিও-নাৎসিদের হত্যাকাণ্ডের কিছু সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে তাঁর ছবি৷ ফিরে দেখা যাক তাঁর আগের ছবিগুলি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Warner Bros.
‘ইন দ্য ফেড’
২০০০ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত জার্মানি জুড়ে নিও নাৎসিদের ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট আন্ডারগ্রাউন্ডের রমরমা খুব বেড়েছিল৷ তাদের হাতেই খুন হতে হয় আকিনের ছবির হিরো নুরি৷ নুরি আর কাটজার পরিবার ছিল জার্মানির আর পাঁচটা নির্বিরোধী পরিবারের মতোই৷ কিন্তু নুরির শিকড় ছিল তুরস্কে৷ সে জন্যই উগ্র দক্ষিণপন্থিদের হাতে খুন হতে হয় তাঁকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Warner Bros.
ডায়ানে ক্রুগার
আন্তর্জাতিক প্রযোজনায় জার্মান অভিনেত্রী ডায়ানে ক্রুগার ইতিমধ্যেই সুপরিচিত একটি নাম৷ ‘ইন দ্য ফেড’ জার্মান ভাষায় অভিনীত তাঁর প্রথম ছবি৷ ইতিমধ্যেই ছবিটিতে অভিনয়ের জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছেন ক্রুগার৷ কান ফিল্মোৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি৷
ছবি: Reuters/R. Duvignau
গুড বাই বার্লিন
২০১৬ সালে আকিন বানিয়েছিলেন ‘ট্শিক’ বা ‘গুডবাই বার্লিন’ নামের একটি ছবি৷ ছবির বিষয়বস্তু ছিল জার্মানির কান্ট্রি সাইড৷ সেখানে গাড়ি নিয়ে ঘুরছিলেন দুই যুবক৷ সমালোচকেরা প্রশংসা করেছিলেন ছবিটির৷ মে মাসে কান উৎসবে আবার প্রশংসা পান আকিন তাঁর নতুন ছবির জন্য৷
ছবি: Studiocanal GmbH
দ্য কাট
২০১৪ সালে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়েছিল আকিনের ছবি ‘দ্য কাট’৷ ফিল্মবোদ্ধা এবং বাণিজ্য জগৎ– সর্বত্রই ফ্লপ হয়েছিল ছবিটি৷ তুরস্কের হাতে আর্মেনীয়দের গণহত্যার ছবি ফুটে উঠেছিল তাঁর সেই ছবিতে৷ বোদ্ধারা বলেছিলেন, ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকলেও ছবিটি রক্তাল্পতায় ভুগছে৷
ছবি: pandorafilm
হেড অন
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞেরা প্রথম আকিনকে চিহ্নিত করেছিলেন বছরতেরো আগে৷ তখন সদ্য মুক্তি পেয়েছে তাঁর ছবি ‘হেড অন’৷ সে বছর গোল্ডেন বিয়ার সম্মান পেয়েছিলেন আকিন৷ সকলে বুঝেছিলেন, আগামী দিনে চলচ্চিত্র দুনিয়াকে নতুন রকম ইমোশন দেখাতে চলেছেন আকিন৷
ছবি: picture alliance/dpa
শর্ট শার্প শক
হামবুর্গের আলটোনা অঞ্চলের তিন যুবককে নিয়ে জীবনের প্রথম ছবি তৈরি করেছিলেন আকিন৷ ‘শর্ট শার্প শক’৷ ১৯৯৮ সালে৷ তাঁর বয়স তখন ২৫৷ তখনো এ ধরনের প্রযোজনা আগে কখনো দেখেনি জার্মানি৷ ছবির তিন অভিনেতার শিকড় পৃথিবীর তিন প্রান্তে৷ একজন তুরস্কের, একজন গ্রিসের আর শেষজন সার্বিয়ার অধিবাসী৷ জার্মান ছবির জগতে একটি মাল্টি-কালচারাল গল্প বলার দিকনির্দেশ করেছিলেন আকিন৷
ছবি: picture-alliance/IFTN/United Archives
দ্য এজ অফ হেভেন
লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার জিতেছিল ‘শর্ট শার্প শক’৷ বার্লিনে পুরস্কার পেয়েছিল আকিনের ‘হেড অন’৷ তবে কান ফিল্মোৎসবে আকিনের প্রথম পুরস্কার ‘দ্য এজ অফ হেভেন’-এর জন্য৷ ২০০৭ সালে৷ সেরা চিত্রনাট্যের পুরস্কার৷
ছবি: picture alliance/dpa
‘সোল কিচেন’
একটি বাদে প্রায় প্রতিটি ছবির জন্যই পুরস্কার পেয়েছেন আকিন৷ ২০০৯ সালে ভেনিস ফিল্মোৎসবে পুরস্কার জিতে নেয় আকিনের হামবুর্গ কমেডি ‘সোল কিচেন’৷ রেস্তোরাঁর মালিক, তাঁর বান্ধবী এবং ভাইকে নিয়ে ওই কমেডি তৈরি করেছিলেন আকিন৷ ছবির সংলাপ বিশেষ ভাবে আকর্ষণ করেছিল দর্শকদের৷
ছবি: corazon international
ছবির রাজনীতি
‘ইন দ্য ফেড’ ফাতিহ আকিনের নবম ছবি৷ জার্মান সংস্কৃতির মধ্যে বর্ণবিদ্বেষের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে৷ সংস্কৃতির সঙ্গে জুড়ে থাকা রাজনীতিটিও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই ছবিতে৷ যদিও ছবিটির কোথাও ‘জাজমেন্টাল’ হননি আকিন৷ নৈর্ব্যক্তিকভাবে নিজের মন্তব্য করেছেন তিনি৷
পরের অংশে বলা হয়েছে, ‘‘প্রতিশোধ নিতে...আমরা তোমার মেয়েকে হত্যা করবো৷'' চিঠিতে তাঁর ঠিকানা এবং তাঁর মেয়ের নামেরও উল্লেখ ছিল৷ চিঠির শেষে স্বাক্ষর করা ছিল- এনএসইউ ২.০৷উগ্র ডানপন্থি নব্য-নাৎসি দল ন্যাশনাল সোশালিস্টআন্ডারগ্রাউন্ড ২০০০ সাল থেকে সক্রিয় রয়েছে৷ বাসায়-ইলডিজ এই এএসইউয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধেও বেশ কয়েকটি মামলা লড়েছেন৷