1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় ''ইলেকট্রোনিক বই''

রায়হানা বেগম২০ অক্টোবর ২০০৮

ব্যাপক উত্‌সাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ১৫ থেকে ১৯ অক্টবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আন্তর্জাতিকখ্যাত ৬০তম ফ্রাংফুর্ট বইমেলা৷ বিশ্বের বৃহত্তম বইমেলা এটি৷ সারা বিশ্বের বইপ্রেমীদের আকৃষ্ট করে থাকে এই বইমেলা৷

ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় ভারতীয় বইয়ের চাহিদা নেহায়েত কম নয় (ফাইল ফটো)ছবি: AP

১০০টিরও বেশি দেশ থেকে ৭০০০-এর ওপরে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান উপস্থাপন করেছে প্রায় ৪ লাখ গ্রন্থ৷ দর্শকের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩ লক্ষ৷

১৯৪৯ সালে ২০০টি জার্মান প্রকাশনা সংস্থার ১০ হাজার গ্রন্থ নিয়ে শুরু হয় এই বই মেলা৷ এই যাত্রা অব্যাহত রয়েছে এখনও৷ আজ ইলেকট্রোনিক মিডিয়ার প্রবল প্রতিপত্তির যুগেও ছাপানো বই তার গুরুত্ব হারায়নি৷ তবে ৯০-এর দশক থেকে ইলেকট্রোনিকের দৌরাত্ম্য যেমন, সিডি রম, ডিভিডি, ইলেকট্রনিক বই ইত্যাদির প্রাচুর্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিভিন্ন বইমেলায়৷ এবছরের ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায়ও তার ব্যতিক্রম হয়নি৷

বইমেলায় পাকিস্তানিদের বইয়ের সমারোহছবি: DW

প্রতি বছরের মত এবছরও সাহিত্য, চলচ্চিত্র, টেলিভিশন এবং রাজনীতি ও অর্থনীতি জগতের অনেক বরেণ্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন ফ্রাঙ্কফুর্টের বইমেলায়৷ ১০ হাজার সাংবাদিক এবং দেশ বিদেশের ১০০০ লেখক অংশ গ্রহণ করেছেন মেলায়৷ লেখক, প্রকাশক, পুস্তক ব্যবসায়ী, শিল্পী, সাংবাদিক সকলের দেখা সাক্ষাত্-এর কেন্দ্রবিন্দু ফ্রাঙ্কফুর্ট বই মেলা৷ প্রতিবছরের মত এবারও চিত্রপরিচালক, অভিনেতা, রাজনীতিকদের আকৃষ্ট করেছে ‌ফ্রাংফুর্ট বইমেলা৷

ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার পরিচালক ইউর্গেন বস বলেন, ১৯৪৯ সালে শুরু থেকেই এই বই মেলা আন্তর্জাতিক মেলায় পরিণত হয়েছে৷ এই মেলা ফ্রাঙ্কফুর্টে শুরু হয়েছিল হঠাত্‌ করে এবং সেই ঐতিহ্য নিয়ে আজও এগিয়ে চলেছে এটি৷ এই মেলায় বিভিন্ন বিষয়, যেমন সারা বিশ্বে ডিজিটালের অগ্রযাত্রা, ছোট ও বড় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিবাদ, পুস্তক বাণিজ্যের ভবিষ্যত্‌ এসব বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা হয়৷

৭০ এর দশক থেকে প্রতি বছর সম্মানিত অতিথি হিসাবে একটি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়৷ এবছরের অতিথি দেশ ছিল তুরস্ক৷ এ দেশটি তার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও প্রাচুর্য তুলে ধরেছে মেলায়৷ মেলার উদ্বোধন করেছেন তুরস্কের নোবেলবিজয়ী লেখক ওরহান পামুক, প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল এবং জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ভালটার স্টাইনমায়ার৷ তুরস্ক থেকে এসেছিলেন ১৫০ জন প্রকাশক ও ২৫০ জন লেখক৷

২০০৯ সালে বিশেষ অতিথি হবে চীন৷ এক্ষেত্রে অবশ্য কিছু সমালোচনার সুরও ধ্বনিত হচ্ছে৷ যেখানে কঠোর সেন্সরের কবলে সাহিত্য সংস্কৃতির স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ সম্ভব হচ্ছেনা, যেখানে মানবাধিকার অহরহ লংঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ, সেই রকম একটি দেশকে ফ্রাঙ্কফুর্ট বই মেলায় আমন্ত্রণ জানানো কি ঠিক হবে?

এবারের অতিথি দেশ ছিলো তুরস্ক

ইউর্গেন বস অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করেন৷ তিনি বলেন, চীনে তথাকথিত সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পর সাহিত্য জগতে যেন এক ধস নেমেছিল৷ কেউ আর লেখালেখির ব্যাপারে তেমন উত্‌সাহ পাচ্ছিলেননা৷ তবে ইদানীং রাষ্ট্রীয় প্রকাশনার বাইরে কিছু কিছু ব্যক্তিগত প্রকাশনা সংস্থাও সেখানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ আমাদের উচিত্‌ এদেরকে সাহায্য করা, যাতে চীনের সাহিত্য জগত এক সুরে কথা না বলে বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে৷

এছাড়া ভারতের ক্রমবর্ধমান বিশাল বইয়ের বাজারের দিকেও লক্ষ্য রেখেছে ফ্রাঙ্কফুর্টের বই মেলা৷ এ প্রসঙ্গে ইউর্গেন বস বলেন, ভারতের অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন রকম৷ এই দেশটির ২০টি সরকারী ভাষা সম্পর্কে আমাদের তেমন কিছুই জানা নেই৷ আমরা কেবল সেই সব ভারতীয় লেখককেই চিনি, যাদের লেখা ইংরেজি থেকে জার্মান ভাষায় অনূদিত হয়েছে৷ কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষের ভাষা উর্দু, হিন্দি সম্পর্কে আমরা কিছুই জানিনা৷ ভারতের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক দিকটি বিবেচনা করে হলেও এই বিষয়টিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে৷

ফ্রাঙ্কফুর্ট বই মেলার সবচেয়ে নতুন আকর্ষণ ছিল ইলেকট্রনিক বই৷ ৩৬১ জন প্রদর্শক উপস্থাপন করেছিলেন এই ধরনের ডিজিটাল সামগ্রী৷ এব্যাপারে প্রচার মাধ্যমগুলির দিক থেকে বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে৷ ইলেকট্রনিকযুক্ত একটি ধাতুর পাতে কয়েক হাজার পর্যন্ত পৃষ্ঠা ধারণ করতে সক্ষম এই ইলেকট্রোনিক বই৷

ইউর্গেন বস মনে করেন, এই ধরনের নতুন নতুন সামগ্রী বইকে পেছনে হটিয়ে দিতে পারবেনা৷ ভিডিও, হিয়ার বুক, বুক অন ডিমান্ড এসবও তা পারেনি৷ এতে শুধু নতুন বাজার খুলে যাবে মাত্র৷

এবারের বইমেলার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল শিক্ষা৷ শিক্ষা ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা পেলে সমাজে খাপ খাওয়ানোও সহজ হয়৷ তুরস্কের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী এরটুগুল গুনাই এবং অন্যন্য তুর্কী অতিথিদের সঙ্গে বিশেষ করে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে ৷

বইমেলা উপলক্ষে প্রতিবছরের মত এবারও জার্মান পুস্তক বাণিজ্য সমিতির পক্ষ থেকে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে নবাগত একজন কৃতী লেখককে৷ জার্মানির পূর্বাঞ্চলের ৩৯ বছর বয়সী উভে টেলকাম্প তাঁর ডেয়ার টুর্ম (দি টাওয়ার) বইটির জন্য পেলেন এবারের পুরস্কার৷ যার অর্থমূল্য ২৫০০০ ইউরো৷ বইমেলার শেষ দিন চিরাচরিত প্রথা মেনে ফ্রাংকফুর্টের ঐতিহাসিক পাউলসকির্শে গির্জায় এক বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রদান করা হল জার্মান পুস্তক ব্যবসায় সমিতির বার্ষিক শান্তি পুরস্কার৷ প্রথমবারের মত এই সম্মানিত পুরস্কার তুলে দেয়া হল একজন শিল্পীর হাতে৷ চিত্রকর ও অব্জেক্ট আর্ট-এর বিশ্বখ্যাত জার্মান শিল্পী আনসেল্ম কীফার পেলেন ২৫ হাজার ইউরো অর্থমূল্যের এই শান্তি পুরস্কার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ