শেষ পর্যন্ত গ্রিসমান-এমবাপ্পে-পগবারাই উঁচিয়ে ধরলেন বিশ্বকাপ ২০১৮-র শিরোপা৷ ৪-২ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলো তারা৷
বিজ্ঞাপন
শেষ যে দু'টি দল প্রথমবার ফাইনাল খেলেছে বিশ্বকাপের আসরে, তারা হলো ফ্রান্স ১৯৯৮ সালে এবং স্পেন ২০১০ সালে৷ দু'দলই বিশ্বকাপ জিতেছে৷ এবার ফুটবল ইতিহাসের ১৩তম ও ইউরোপের ১০ম নতুন দল হিসেবে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে ক্রোয়েশিয়া৷
পুরো বিশ্বকাপ জুড়ে মদ্রিচ-রাকিটিচরা একের পর এক বাধা পেরিয়ে মন জয় করেছেন কোটি ফুটবলপ্রেমীর৷ তাই শক্তির বিচারে দিদিয়ে দেশঁ'র ফ্রান্সকে এগিয়ে রাখলেও সমর্থকদের অনেকের মন জুড়ে ছিল ক্রোয়াটরা৷
তুলনামূলক নবীনদের নিয়ে গড়া দল ফ্রান্স৷ সেখানে আছেন পরীক্ষিত ও উদীয়মান তারকারা৷ বিশ্বকাপ জুড়ে তাঁরা নৈপুণ্যে সবাইকে ছাপিয়ে না গেলেও শক্তিশালী দল হিসেবে সমীহ আদায় করেছে৷ এছাড়া পরিসংখ্যানেও এগিয়ে ছিল তারা৷ আগের পাঁচবারের মুখোমুখিতে ক্রোয়াটদের তিনবার হারিয়েছে ফ্রান্স৷ বাকি দুই ম্যাচ ড্র হয়েছে৷ তবে ক্রোয়েশিয়া যেভাবে ফাইনাল পর্যন্ত এসেছে, তাতে তারাও যে ছেড়ে কথা বলবে না, তা অনুমিতই ছিল৷
তাই মনের মতো এক ফাইনাল দেখার অপেক্ষায় থাকা সমর্থকদের হতাশ করেনি দুই দল৷ শুরু থেকেই টান টান উত্তেজনা৷ সেই উত্তেজনায় প্রথম কয়েক মিনিট একটু ছন্নছাড়া খেলা হলেও হঠাৎ করেই খেলা বদলে যায় ১৮ মিনিটের মাথায়৷ ফ্রান্সের প্রথম শট অন টার্গেটটিই গোলে পরিণত হয়৷ তবে এতে ক্রোয়াট ফরোয়ার্ড মানসুকিচের অবদান ছিল বেশি৷ তাঁর হেড দিয়ে বল ক্লিয়ার করার প্রচেষ্টাটি বিফলেই শুধু যায়নি, বরং খুঁজে নিয়েছে নিজেদের জালকেই৷
তবে এর আট মিনিটের মধ্যেই দুর্দান্তভাবে খেলায় ফিরে আসে ক্রোয়াটরা৷ টানা চতুর্থ ম্যাচে পিছিয়ে থেকেও সমতায় ফেরার কীর্তি গড়েন তারা৷ মাঝমাঠের কাছাকাছি থেকে মদ্রিচের ফ্রি কিক ডান প্রান্ত হয়ে আবার ফ্রেঞ্চ ডি-বক্সে এলে সেখান থেকে বাঁ পায়ের চমৎকার শটে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স ভেঙে গোল আদায় করেন পেরিসিচ৷ অসাধারণ সেটপিস গোল৷
বিশ্বকাপ ফাইনালের যে ছবিগুলো আপনার দেখা উচিত
দুর্দান্ত ফিনিশিং, মুহুর্মুহু আক্রমণ-পালটা আক্রমণ আর বিতর্কিত এক পেনাল্টি৷ বিশ্বকাপ ফাইনালে আপনি যা যা চান তার প্রায় সবই ঘটেছে মস্কোয় অনুষ্ঠিত ফাইনালে৷ ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়ার এ ফাইনালের কিছু স্মরণীয় মুহূর্ত থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: Reuters/D. Sagolj
দুর্ভাগ্যজনক আত্মঘাতী গোল
মারিও মানসুকিচ (বাম থেকে পঞ্চম) চেয়েছিলেন বলটি বাইরে পাঠাতে৷ কিন্তু, প্রতিপক্ষের গ্রিসমানের ফ্রি কিকটি কিনা তাঁর মাথায় লেগেই ঢুকে গেল নিজের দলের গোল পোস্টে! ফাইনালের শুরুতে ক্রোয়েশিয়া দল বড় ধাক্কা খেয়েছে তাঁর এই আত্মঘাতী গোলে৷
ছবি: Reuters/C. Recine
তবে ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেয়নি ক্রোয়েশিয়া
আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়লেও হতাশা পেয়ে বসেনি এই প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা ক্রোয়েশিয়াকে৷ বরং ইভান পেরিসিচ চমৎকার এক গোল করে খেলায় সমতা ফেরান৷ আর সেটা ঘটেছে প্রথম গোলের দশ মিনিট পরেই৷
ছবি: Reuters/C. Recine
ভিএআর বিতর্ক
ভিডিও অ্যাসিস্টেন্ট রেফারি, অর্থাৎ ভিএআর প্রযুক্তির সুবিধা আবার এগিয়ে দেয় ফ্রান্সকে৷ পেরিসিচ নিজ দলের ডি-বক্সের মধ্যে বলে হাত লাগিয়েছিলেন কিনা তা পরীক্ষা করতে ভিএআর-এর সহায়তা নেন আর্জেন্টিনার রেফারি নেস্তঁর পিটানা৷ পিটানা টিভিতে রিপ্লে দেখে ফ্রান্সকে পেনাল্টি দেন৷
ছবি: Reuters/K. Pfaffenbach
ফ্রান্সের এগিয়ে যাওয়া
গ্রিসমানের পেনাল্টি শটের গোল ফ্রান্সকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেয়৷ এবারের বিশ্বকাপে রীতিমতো বড় তারকা বনে যাওয়া ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক সুবাসিচকে পুরোপুরি বোকা বানান গ্রিসমান৷ এটা ছিল চলতি বিশ্বকাপে তাঁর চতুর্থ গোল৷
ছবি: Reuters/K. Pfaffenbach
পগবাও আবার চেনালেন নিজেকে
ফাইনালে নিজের অপেক্ষাকৃত দুর্বল পা দিয়ে গোল করে সমালোচনার জবাব দিলেন পল পগবা৷ ফ্রান্সের বড় কোনো টুর্নামেন্টে এটা তাঁর তৃতীয় গোল এবং ইউরো ২০১৬ কোয়ার্টার ফাইনালের পর প্রথম গোল৷
ছবি: Reuters/M. Shemetov
উচ্ছ্বসিত ফরাসি প্রেসিডেন্ট
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ স্টেডিয়ামের ভিআইপি বক্সে বসে প্রতিপক্ষ দল ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাবার-কিটারোভিচ এবং আয়োজক দেশ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে খেলা দেখেছেন৷ ফাইনালে ফ্রান্সের এগিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি৷
ছবি: Reuters/D. Sagolj
ইতিহাসের অংশ এমবাপ্পে
কিলিয়ান এমবাপ্পে (বামে) ফাইনালে দলের পক্ষে চতুর্থ গোলটি করে ক্রোয়েশিয়ার সব সম্ভাবনা কার্যত শেষ করে দেন৷ ১৯ বছর বয়সি এই খেলোয়াড় হচ্ছেন ১৯৫৮ সালে পেলের পর বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করা প্রথম টিনএজার৷
ছবি: Reuters/D. Staples
ক্রোয়েশিয়াকে উপহার
ফরাসি গোলরক্ষক উগো ল্যরিস (ডানে) ক্রোয়েশিয়াকে একটি গোল বলতে গেলে উপহারই দিয়েছেন৷ সতীর্থ ডিফেন্ডারের কাছ থেকে ব্যাক পাসে বল পেয়েছিলেন তিনি৷ মারিও মানসুকিচ ছুটে এসেছিলেন বল কেড়ে নিতে৷ তাঁকে কাটাতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন ল্যরিস৷বল নাগালে পেয়ে এক টোকাতেই ফরাসি গোলরক্ষককে বোকা বানান মানসুকিচ৷
ছবি: Reuters/M. Shemetov
হাওয়ায় ভাসছেন কোচ
দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের পর কোচ দিদিয়ে দেশঁ-কে এভাবেই শূণ্যে ছুঁড়ে দেন ফরাসি খেলোয়াড়রা৷ দেশঁ ছিলেন ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি দলের অধিনায়ক৷ বিশ্বকাপ ইতিহাসে খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ী তৃতীয় ব্যক্তি তিনি৷
ছবি: Reuters/K. Pfaffenbach
সবই জিতলো ফ্রান্স!
ফরাসি খেলোয়াড়রা যখন বিশ্বকাপ ট্রফি তুলে ধরেন, তখন মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিলো মস্কোর লুঝনিকি মাঠে৷ এবার গোটা আসরে ভালো খেলে বিশ্বকাপ জয় করেছে ফ্রান্স৷ আগামী চারবছরের জন্য তারাই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন৷ ২০২২ সালে কাতারে অন্য কেউ কী পারবে ফরাসিদের বিজয় রথ থামাতে?
ছবি: REUTERS
10 ছবি1 | 10
তবে এই সুখ বেশিক্ষণ টেকেনি মদ্রিদের৷ এই পেরিসিচই এবার নিজেদের পেনাল্টি বক্সের ভেতরে বলে হাত লাগিয়ে বিপাকে ফেলেন দলকে৷ স্পটকিক থেকে ‘কুল কাস্টমার' গ্রিসমান সহজেই এগিয়ে নেন ফ্রান্সকে৷ ২-১-এ এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে '৯৮-এর বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা৷
প্রথমার্ধে ফ্রান্স ২-১ গোলে এগিয়ে থাকলেও ক্রোয়াটদেরই বেশি ভালো মনে হচ্ছিলো৷ কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দেশঁ তাঁর শিষ্যদের পাঠান আরো উজ্জ্বীবিত করে৷ লুঝনিকির মাঠে একের পর এক ঝলক দেখিয়ে ফ্রান্স ছয় মিনিটের ব্যবধানে আদায় করে নেয় আরো দুই গোল৷ একটি ৫৯ মিনিটে পল পগবা আর আরেকটি ৬৫ মিনিটে টিনএজ তারকা এমবাপ্পে৷ দু'টি গোলেই সুবাসিচ পরাস্ত খুব সহজেই৷
শেষ গোলটি করে এমবাপ্পে ইতিহাসে নিজের নাম লেখালেন পেলের সঙ্গেই৷ কারণ, ‘প্রাপ্তবয়স্ক' হবার আগে কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করার যোগ্যতা এর আগে দেখিয়েছেন ফুটবল মায়েস্ত্রো পেলেই৷
তবে যেই মানসুকিচ আত্মঘাতী গোল করে দলকে শুরুতেই ডুবিয়েছিলেন, তিনিই এরপর ফ্রেঞ্চ গোলরক্ষক লরিসের ভুলকে নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন৷ এর আগে বিশ্বকাপের কোনো ফাইনালে একই ব্যক্তি আত্মঘাতী ও দলের পক্ষে গোল দু'টো একসঙ্গে করেননি৷ তাই বলা যায়, তিনিও ইতিহাসের অংশ৷ শেষ পর্যন্ত ৪-২ ব্যবধানেই শেষ হয় ২০১৮ বিশ্বকাপের ফাইনাল৷ এর আগে ছয় গোলের ফাইনাল হয়েছিল ১৯৬৬ সালে৷ সেই ফাইনালে জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড৷
সব মিলিয়ে একটি তীব্র উত্তেজনাপূর্ণ, নানা ঘটনায় সাজানো এক ফাইনাল উপহার দিয়েছে রাশিয়া বিশ্বকাপ৷ পুরো ম্যাচে ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর শিশুসুলভ উচ্ছ্বলতা ছিল চোখে পড়ার মতো৷ ছিলেন ক্রোয়াট প্রেসিডেন্ট কলিন্ডাও৷ অভিনন্দন দিয়েছেন প্রতিপক্ষকে৷ সান্ত্বনা দিয়েছেন দলকে৷
এদিকে, টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত খেলা ক্রোয়াট তারকা লুকা মদ্রিচের হাতে যোগ্য হিসেবেই তুলে দেয়া হয়েছে গোল্ডেন বলের পুরস্কার৷ আর ছয় গোল নিয়ে গোল্ডেন বুট জিতেছেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড হ্যারি কেন৷ উদীয়মান সেরা তারকা হয়েছেন ফ্রান্সের এমবাপ্পে৷
এবারের বিশ্বকাপের যা কিছু সেরা
আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় একটি মাত্র দল৷ সেরা খেলোয়াড়, সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারও জোটে একজনের ভাগ্যে৷ কিন্তু ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় আসরে এর বাইরেও তো স্মরণীয় অনেক কিছু থাকে৷ সেরকম বিষয়গুলো নিয়েই এই ছবিঘর৷
ছবি: Reuters/G. Dukor
বেশি গোল যে দলের
এবারের আসরে সবচেয়ে বেশি গোল কোন দল করেছে, বলুন তো? বেলজিয়াম৷ হ্যাঁ, সেমি ফাইনাল থেকে বিদায় নেয়ার আগে ১৪ গোল করে তারা৷ তারপর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারানোয় সংখ্যাটি বেড়ে হয়ে যায় ১৬৷ এত গোল আর কোনো দল করতে পারেনি৷
ছবি: Reuters/S. Perez
সবচেয়ে আক্রমণাত্মক দল
কোন দল কতটা আক্রমণাত্মক তা নির্ধারণের একটাই উপায় আর তা হলো কোন দল কত বেশি আক্রমণ করেছে সে হিসেবটা দেখা৷ সেই হিসেবে ব্রাজিলই ছিল সবচেয়ে এগিয়ে৷ কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচ খেলে সব মিলিয়ে ২৯২টি আক্রমণ শানিয়েছে নেইমারের দল৷ তবে পরে ক্রোয়েশিয়া পেছনে ফেলে তাদের৷ ফাইনাল শেষে, অর্থাৎ ব্রাজিলের চেয়ে দুই ম্যাচ বেশি খেলায় ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণ সংখ্যায় দাঁড়ায় ৩২২৷
ছবি: Reuters/M. Shemetov
সবচেয়ে বেশি পাস
এখানে কারা এগিয়ে ইংল্যান্ড৷ মোট সাতটি ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩৩৩৬টি পাস দিয়েছে তারা৷
ছবি: Reuters/L. Smith
সেরা গোলরক্ষক?
এবারের বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষক কে? অনেকের নামই হয়ত উঠে আসবে৷ কিন্তু সবচেয়ে বেশি গোল বাঁচানো যদি মানদণ্ড হয়, তাহলে সবচেয়ে এগিয়ে থাকবেন মেক্সিকোর গুইলেরমো ওচোয়া৷ দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত চার ম্যাচে সর্বোচ্চ ২৫টি গোল বাঁচিয়ৈছিলেন তিনি৷ তবে পরে বেলজিয়ামের গোলরক্ষক কর্তোই তাঁকেও ছাড়িয়ে যান৷ ৭ ম্যাচে তিনি বাঁচিয়েছেন ২৭টি গোল৷
ছবি: Reuters/S. Perez
সবচেয়ে আক্রমণাত্মক খেলোয়াড়
নিন্দুকেরা তাঁর মাঠে গড়াগড়ি দেখতে দেখতেই হয়রান, অথচ পরিসংখ্যান বলছে নেইমার জুনিয়রই ছিলেন এবারে বিশ্বকাপের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ফরোয়ার্ড৷ ব্রাজিল তো কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছে৷ তাই মাত্র পাঁচটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন নেইমার৷ ওই পাঁচ ম্যাচে প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নিয়েছেন মোট ২৭টি৷ এত শট আর কোনো ফরোয়ার্ড নিতে পারেননি৷
ছবি: Reuters/C.G. Rawlins
সবচেয়ে পরিশ্রমী পেরিসিচ
ক্রোয়েশিয়া যে এবার বিশ্বকাপ মাতালো, তার মূল কৃতিত্ব যদি একজন খেলোয়াড়কে দিতে চান, কার কথা বলবেন আপনি? নিশ্চয়ই লুকা মদ্রিচ! সেমিফাইনাল পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়ার ছয়টি ম্যাচে সব মিলিয়ে ৬৩ কিলোমিটার দৌড়েছেন ৩৩ বছর বয়সি এই প্লে-মেকার৷ তবে ফাইনাল শেষে দেখা যায় তাঁকে পেছনে ফেলে দিয়েছেন পেরিসিচ৷ ৭ ম্যাচে ৭২ কিলোমিটার দৌড়েছেন তিনি৷
ছবি: Reuters/M. Shemetov
সেরা রক্ষণভাগ
বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ৩২টি দলের রক্ষণভাগের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ক্রোয়েশিয়াই সেরা৷ ফাইনাল পর্যন্ত সাতটি ম্যাচে মোট ৩০১টি ক্লিয়ারেন্স, ট্যাকল এবং সেভ করেছে ক্রোয়াট ডিফেন্ডাররা৷
ছবি: Reuters/G. Dukor
রামোসকে মনে রাখতে হবে যে কারণে
স্পেনের রক্ষণভাগের অতন্দ্র প্রহরী সার্হিয়ো রামোস৷ তবে এবার শুধু রক্ষণের কাজেই ব্যস্ত ছিলেন না রেয়াল মাদ্রিদ অধিনায়ক৷ আক্রমণ রচনাতেও ভূমিকা রেখেছেন অনেক৷ তাই বিশ্বকাপের অন্য সব খেলোয়াড়ের চেয়ে বেশি পাস দিয়েছেন তিনি৷ এ আসরে মোট ৪৮৫টি পাস দিয়েছেন রামোস৷
ছবি: Reuters/K. Pfaffenbach
বেশি গোলের ম্যাচ
এবারের বিশ্বকাপ শুরুই হয়েছিল সৌদি আরবের বিপক্ষে রাশিয়ার ৫-০ গোলের জয় দিয়ে৷ স্পেন-পর্তুগাল ৩-৩ গোলে ড্র ম্যাচেও দেখা গেছে গোলের ছড়াছড়ি৷ পরে দু’টি ম্যাচে আরো বেশি গোল হয়েছিল৷ বেলজিয়াম-টিউনিশিয়া (৫-২) ও ইংল্যান্ড-পানামা (৬-১) ম্যাচে সাতটি করে গোল দেখা গেছে৷ ওই দু’টিই এবারের আসরের সবচেয়ে বেশি গোলের ম্যাচ৷
ছবি: Reuters/M. Childs
এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি কার্ড
ম্যাচে খুব বেশি উত্তেজনা থাকলে বা লড়াইটা খুব জমজমাট হলেই সাধারণত খেলোয়াড়রা মেজাজ হারান৷ পরিস্থিতি শান্ত রাখতে তখন কঠোর হতে হয় রেফারিকে৷ তখন কার্ডও দেখাতে হয় বেশি৷ কিন্তু বেলজিয়াম বনাম পানামা ম্যাচটিতে সে অর্থে কোনো উত্তেজনাই ছিল না৷ তারপরও ম্যাচে মোট আটটি কার্ড দেখিয়েছেন রেফারি৷ এবারের আসরে সবচেয়ে বেশি কার্ড দেখানো হয়েছে সেই ম্যাচেই৷
ছবি: Reuters/H. McKay
এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি পাস
বেশি পাসের প্রসঙ্গ এলে স্পেনের নাম আসবেই৷ এই বিশ্বকাপে যে ম্যাচে সবচেয়ে বেশি পাস হয়েছে, সেখানেও স্পেন আছে৷ কিন্তু তাদের প্রতিপক্ষ ছিল রাশিয়া৷ হ্যাঁ, স্পেন-রাশিয়া ম্যাচেই হয়েছিল সবচেয়ে বেশি পাস৷ সেই ম্যাচে দু’দলের খেলোয়াড়রা মোট ১২৩৫টি পাস দিয়েছিলেন৷