সোমবার রাতে জার্মানির বাভেরিয়া রাজ্যে এক ট্রেনের মধ্যে হামলায় পাঁচ ব্যক্তি আহত হয়েছে৷ আততায়ী এক আফগান শরণার্থী৷ কট্টর ইসলামপন্থি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সে এই হামলা চালিয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷
বিজ্ঞাপন
ফ্রান্সের নিস শহরের সন্ত্রাসী হামলার আতঙ্ক এখনো কাটেনি৷ জার্মানির বাভেরিয়া রাজ্যে এক হামলা সেই আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিল৷ এবারও একজন আততায়ী৷
ট্রাক নয়, হাতে কুড়াল ও ছুরি নিয়ে ট্রেনের মধ্যে সে যাত্রীদের উপর নির্বিচারে হামলা চালালো৷ তার ফলে পাঁচজন আহত হয়েছে৷ আহতদের মধ্যে চারজন হংকং-এর একটি পরিবারের সদস্য৷ হামলার সময়ে ট্রেনের সেই কামরায় প্রায় ২৫ জন যাত্রী ছিলেন৷ প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী হামলার পর কামরা রক্তে ভেসে যাচ্ছিল৷
তবে এবার আততায়ী বেশি সময় পায়নি৷ চেন টেনে পালানোর সময় পুলিশ তাকে ধরার চেষ্টা করে৷ পুলিশের উপর হামলা চালালে পুলিশেরই গুলিতে তার মৃত্যু হয়৷ অন্য একটি ঘটনার জের ধরে বিশেষ কমান্ডো বাহিনী কাছেই উপস্থিত ছিল৷
সোমবার রাতে বাভেরিয়ার ভ্যুয়র্ত্সবুর্গ শহরের কাছে এক ট্রেনে যে ব্যক্তি হামলা চালিয়েছে, তার বয়স মাত্র ১৭৷ আফগানিস্তান থেকে শরণার্থী হিসেবে সে একাই জার্মানিতে এসেছিল৷ হামলার কারণ এখনো জানা যায়নি৷ তবে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সূত্র অনুযায়ী, হামলার ঠিক আগে সে ‘আল্লাহু আকবর' বলেছিল বলে খবর পাওয়া গেছে৷ তাই নিস-এর হামলার পর সন্দেহের তালিকার শীর্ষে রয়েছে কট্টর ইসলামপন্থি ভাবধারা৷ তদন্তে এই বিষয়টিকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ তার ঘরে হাতে-আঁকা আইএস পতাকা পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে৷
আততায়ী সম্পর্কে এখনো বিশেষ কিছু জানা যায়নি৷ অপ্রাপ্তবয়স্ক শরণার্থী হিসেবে সে বাবা-মা ছাড়াই জার্মানিতে এসেছিল৷ ভ্যুয়র্ত্সবুর্গ শহরের কাছেই সে থাকতো৷ সর্বশেষ খবর অনুযায়ী এক পরিবার তাকে আশ্রয় দিয়েছিল৷ হামলার পর সে কোথায় পালানোর পরিকল্পনা করেছিল, তাও স্পষ্ট নয়৷
উল্লেখ্য, মাস দুয়েক আগে বাভেরিয়া রাজ্যের রাজধানী মিউনিখ শহরের কাছে এক আততায়ী ট্রেনের মধ্যে ছুরি চালিয়ে এক জনকে হত্যা করে৷ সেই হামলায় ৩ জন গুরুতর আহত হয়৷ তবে সেই আততায়ী মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল বলে জানা যায়৷
নিস শহরের এক অভিশপ্ত রাত
ভালেরি আশ নিস শহরের এক ফটোগ্রাফার৷ হামলার রাতে অনেক দৃশ্য তিনি ক্যামেরাবন্দি করেছেন৷ সংবাদ সংস্থা এএফপি তাঁর তোলা অনেক ছবি প্রকাশ করেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Goldsmith
যে ট্রাক ব্যবহার করে হামলা হয়েছিল
ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে এই ট্রাক৷ তার সামনের কাচে গুলির দাগ৷ ৩১ বছর বয়স্ক টিউনিশীয় বংশোদ্ভূত এক ফরাসি নাগরিক এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
বেঁচে গিয়েও বিহ্বলতা কাটছে না
হামলার কয়েক ঘণ্টা পরেও অরাজকতা দেখা গেছে৷ ভূমধ্যসাগর উপকূলের তীরে সুন্দর, প্রাণখোলা এই শহর এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিল না৷ উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন, তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
বৃহস্পতিবার রাতের চিত্র
রাত এগারোটার কিছুক্ষণ পর স্থানীয় সংবাদপত্র ‘নিস মাত্যাঁ’ ভিড়ের মধ্যে ট্রাক ঢুকে পড়ার খবর প্রকাশ করে৷ তার কয়েক ঘণ্টা পর ঘটনার ভয়াবহতা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে থাকে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তার খণ্ডচিত্র৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
হামলার পরেও আতঙ্ক
অনেকেই হাত তুলে প্রমাণ করতে চাইছিলেন, যে তারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়৷ পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, আততায়ী একাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে৷ কিন্তু এমন হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে প্রাথমিক তদন্তে কিছু জানা যায় নি৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
মৃত্যুর রাত
উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন৷ পথেঘাটে লাশের ছড়াছড়ি৷ যারা আহত অবস্থায় বেঁচে গেছেন, তাদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
মানুষের সমাগমের উপলক্ষ্য
ফটোগ্রাফার ভালেরি আশ আসলে ফ্রান্সের জাতীয় দিবস পালন উৎসবের ছবি তুলতে গিয়েছিলেন৷ আতশবাজির প্রথম ছবিগুলি এএফপি প্রকাশ করছিল৷ কিন্তু তারপরই ছবির বিষয় বদলে যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
‘আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছি’
প্রথমে পুলিশ, তারপর সৈন্যরা নিস শহরের পথঘাটের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নেয়৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছেন৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যার্না কাসন্যোভ বলেন, ‘‘আমরা সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত আছি, যারা যে কোনো মূল্যে এবং প্রবল হিংসাসহ আমাদের উপর হামলা চালাতে চায়৷