ফ্রান্সের দক্ষিণপূর্বের শহর আভিনিয়োর এক মসজিদের সামনে দুই ব্যক্তি গুলি চালালে সাত বছরের এক মেয়েসহ আটজন আহত হন৷ তবে এটি সন্ত্রাসী ঘটনা নয়, বলে জানিয়েছে কৌঁসুলির কার্যালয়৷
বিজ্ঞাপন
প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য বলছে, রবিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে কমপক্ষে দুই ব্যক্তি একটি গাড়ি থেকে বের হয়ে গুলি শুরু করে৷ আহতদের অবস্থা গুরুতর নয় বলেও জানিয়েছে কৌঁসুলির কার্যালয়৷ ঘটনাটি সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় উল্লেখ করে স্থানীয় কৌঁসুলি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে থাকা তথ্য বলছে, হামলার লক্ষ্য মসজিদটি ছিল না৷ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থাকা একটি রাস্তায় হামলাটি হয়েছে বলে তার সঙ্গে যে এর সম্পর্ক থাকবে, তা ঠিক নয়৷''
পুলিশ বলছে, স্থানীয় গ্যাংদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এই হামলা হয়েছে ধরে নিয়ে বিষয়টির তদন্ত করছেন স্থানীয় কৌঁসুলিরা৷
জার্মানির বার্তা সংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে চারজন মসজিদের সামনে দাঁড়ানো ছিলেন৷ আর সাত বছরের মেয়েটি পাশের এক ভবনের দ্বিতীয় তলায় তার বাসায় পরিবারের সঙ্গে ছিল৷ গুলির টুকরার আঘাতে সে আহত হয়৷
নিস শহরের এক অভিশপ্ত রাত
ভালেরি আশ নিস শহরের এক ফটোগ্রাফার৷ হামলার রাতে অনেক দৃশ্য তিনি ক্যামেরাবন্দি করেছেন৷ সংবাদ সংস্থা এএফপি তাঁর তোলা অনেক ছবি প্রকাশ করেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Goldsmith
যে ট্রাক ব্যবহার করে হামলা হয়েছিল
ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে এই ট্রাক৷ তার সামনের কাচে গুলির দাগ৷ ৩১ বছর বয়স্ক টিউনিশীয় বংশোদ্ভূত এক ফরাসি নাগরিক এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
বেঁচে গিয়েও বিহ্বলতা কাটছে না
হামলার কয়েক ঘণ্টা পরেও অরাজকতা দেখা গেছে৷ ভূমধ্যসাগর উপকূলের তীরে সুন্দর, প্রাণখোলা এই শহর এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিল না৷ উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন, তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
বৃহস্পতিবার রাতের চিত্র
রাত এগারোটার কিছুক্ষণ পর স্থানীয় সংবাদপত্র ‘নিস মাত্যাঁ’ ভিড়ের মধ্যে ট্রাক ঢুকে পড়ার খবর প্রকাশ করে৷ তার কয়েক ঘণ্টা পর ঘটনার ভয়াবহতা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে থাকে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তার খণ্ডচিত্র৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
হামলার পরেও আতঙ্ক
অনেকেই হাত তুলে প্রমাণ করতে চাইছিলেন, যে তারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়৷ পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, আততায়ী একাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে৷ কিন্তু এমন হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে প্রাথমিক তদন্তে কিছু জানা যায় নি৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
মৃত্যুর রাত
উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন৷ পথেঘাটে লাশের ছড়াছড়ি৷ যারা আহত অবস্থায় বেঁচে গেছেন, তাদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
মানুষের সমাগমের উপলক্ষ্য
ফটোগ্রাফার ভালেরি আশ আসলে ফ্রান্সের জাতীয় দিবস পালন উৎসবের ছবি তুলতে গিয়েছিলেন৷ আতশবাজির প্রথম ছবিগুলি এএফপি প্রকাশ করছিল৷ কিন্তু তারপরই ছবির বিষয় বদলে যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
‘আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছি’
প্রথমে পুলিশ, তারপর সৈন্যরা নিস শহরের পথঘাটের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নেয়৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছেন৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যার্না কাসন্যোভ বলেন, ‘‘আমরা সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত আছি, যারা যে কোনো মূল্যে এবং প্রবল হিংসাসহ আমাদের উপর হামলা চালাতে চায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
7 ছবি1 | 7
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক ব্যক্তি গাড়ি নিয়ে দক্ষিণপূর্ব প্যারিসের একটি মসজিদে হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল৷ কিন্তু মসজিদের বাইরে থাকা পিলার এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধকের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় তা সম্ভব হয়নি৷ হামলাকারী ৪৩ বছরের এক আর্মেনীয় নাগরিক৷ তিনি সিজোফ্রেনিয়ার রোগী বলে জানা গেছে৷
উল্লেখ্য, গত মাসের ১৯ তারিখ এক ব্যক্তি লন্ডনের এক মসজিদে গাড়ি নিয়ে হামলা চালালে একজন নিহত হয়েছিলেন৷ ঐ ঘটনার পর ফ্রান্সের মুসলমানরা এখন উৎকণ্ঠায় বসবাস করছেন৷ তাঁরা পুলিশের কাছে ধর্মীয় প্রার্থনার জায়গায় নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন৷
যে রাত বিশ্বকে বদলে দিল
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ১৩ই নভেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ১২৯ জন নিহত ও ৩৫২ জন আহত হয়েছে৷ কেঁপে উঠেছে গোটা বিশ্ব৷ বদলে গেছে অনেক কিছু৷
ছবি: Reuters/C. Allegri
প্রাথমিক খবর
জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন প্যারিসে হামলার প্রাথমিক খবর আসতে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মানুষের মনে ভয়
খবর পেয়ে প্যারিসের মানুষের মনে ভয় ও আতঙ্ক ছেয়ে যায়৷ কর্তৃপক্ষ মানুষকে বাড়িতেই থাকার পরামর্শ দিয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পণবন্দি নাটকের মঞ্চ
বাটাক্লঁ কনসার্ট হলে হেভি মেটাল সংগীত চলাকালীন সন্ত্রাসবাদীরা কিছু মানুষকে পণবন্দি করেছিল৷ রাত একটা নাগাদ পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে৷
ছবি: Reuters/C. Hartmann
বিহ্বল প্রেসিডেন্ট
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন৷ ফুটবল ম্যাচের বিরতির সময়ে তিনি স্টেডিয়াম ছেড়ে গিয়েছিলেন৷ তাঁকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়৷
ছবি: Reuters
স্টেডিয়ামে চাপা আতঙ্ক
ফ্রান্স ও জার্মানির জাতীয় দল এবং দর্শকরা কিন্তু স্টেডিয়াম ছেড়ে যাবার অনুমতি পাননি৷ সে সময়ে তাঁদের মনের অবস্থা কী ছিল, তা অনুমান করা যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Alexandre
হামলাকারীদের দশা
প্রায় সব আততায়ী নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে৷ একজন সীমান্ত পেরিয়ে বেলজিয়ামে প্রবেশ করেছে৷ পুলিশ সূত্র অনুযায়ী হামলাকারীদের মধ্যে কমপক্ষে দু’জন বেলজিয়ামে বসবাস করতো৷
ছবি: Getty Images/K. Tribouillard
আহতদের অবস্থা সংকটজনক
প্যারিসে একাধিক হামলায় আহত অনেক মানুষের অবস্থা সংকটজনক৷ ফলে নিহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Bureau
কড়া নিরাপত্তার বেড়াজাল
প্যারিসে হামলার পর আন্তর্জাতিক স্তরেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে৷ যেমন নিউ ইয়র্কে ফরাসি কনসুলেটের সামনে আরও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/S. Platt
গোটা বিশ্বে সংহতি
নিউ ইয়র্কে ‘ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার’-এর অ্যান্টেনায় ফরাসি জাতীয় রং ফুটিয়ে তোলা হয়৷ নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো বলেন, ‘‘আমরা ফরাসি জাতির সঙ্গে সংহতির বন্ধনে আবদ্ধ৷’’