নিস থেকে বুধবারই ট্রাক এবং গাড়ির মিছিল নিয়ে প্যারিসের দিকে রওনা হয়েছিল ফ্রান্সের তথাকথিত 'ফ্রিডম কনভয়'। কিন্তু বৃহস্পতিবার প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কোনোভাবেই ওই কনভয় নিয়ে প্যারিসে বা তার আশপাশে ঢোকা যাবে না। বস্তুত ১১ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত প্যারিসে কোনোরকমবিক্ষোভ আন্দোলন করা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফ্রান্সের দেখাদেখি বেলজিয়ামও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্রাসেলসেও বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ব্রাসেলসেও যাওয়ার কথা ছিল ফ্রিডম কনভয়ের।
করোনাবিধিবিরোধী ট্রাকচালকদের বিক্ষোভে অচল ক্যানাডার রাজধানী
জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি পরিস্থিতি৷ তাই প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মন্তব্য, ‘‘এটা (বিক্ষোভ) থামতেই হবে৷’’ অটোয়ার রাস্তা থেকে ট্রাক আর বিক্ষোভকারীরা কবে সরবে সেটাই এখন দেখার...
ছবি: Lars Hagberg/REUTERS
মুক্তি দাবি
এখনো যারা টিকা নেননি তাদের জন্য কঠোর নিয়ম করেছে ক্যানাডা সরকার৷সেই নিয়মে টিকা না নেয়া ট্রাক চালকরা পড়েছেন বিপদে৷ নিয়ম অনুযায়ী পণ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেলে টিকা-সনদ দেখাতে না পারলে তারা আর দেশে ফিরতে পারবেন না৷এই নিয়মের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি চায় তারা৷ তাই অটোয়ার রাস্তায় ট্রাকের পেছনে লাগানো হচ্ছে পোস্টার, যাতে লেখা ‘ফ্রিডম’৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
জ্বালানি তেলের ছড়াছড়ি
সরকারের ঘোষণা করা এই নিয়মের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানাতে রাজধানীতে ভিড় করেছে শত শত ট্রাক৷ ট্রাক নিয়ে আসা চালকেরা রাস্তায়ই থাকছেন, খাচ্ছেন, লাগাতার হর্ন বাজিয়ে বিপর্যস্ত করে তুলছেন জনজীবন৷পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন অটোয়ার মেয়র৷ পুলিশ ঘোষণা করেছে- ট্রাক চালকদের সরাতে ট্রাকের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে৷ তাই অনেকে সেখানে জ্বালানি নিয়ে যাচ্ছেন৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
রান্নাঘর রক্ষার চেষ্টা
পেছনের এই খুপড়িতে খাবার রান্না করতেন ট্রাকচালকেরা৷ সেই অস্থায়ী রান্নাঘর বন্ধ করে দেবে পুলিশ৷ তাই তা রক্ষার জন্য পাহারা দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
ট্রুডোর এ কেমন ঘর!
অটোয়ার পার্লামেন্ট স্কয়ারে এক ট্রাকে দেখা যাচ্ছে পোস্টার আর ব্যানার৷ পোস্টারে লেখা ‘নো ভ্যাকসিন পাসপোর্ট, নো ম্যান্ডেট’ আর একটা ব্যানারে লেখা, ‘ট্রুডোর নতুন ঘর’৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
জ্বালানি মজুদ
পুলিশ ট্রাকের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধে করে দেবে৷ তাই ট্রাকে জ্বালানি ভরছেন একজন৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
পুলিশকে কটাক্ষ
পুলিশ ট্রাকের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দেয়ায় ট্রাকচালকদের সমর্থক এক বিক্ষোভকারী জ্বালানি পান করার ভাণ করছেন৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
মাস্ক দিয়েই প্রতিবাদ
নাক-মুখ খোলা মাস্ক পরেছেন এক বিক্ষোভকারী, সেই মাস্কেই লেখা ‘ফ্রিডম’৷
ছবি: Lars Hagberg/REUTERS
রাস্তায় খেলাধুলা
বিক্ষুব্ধ ট্রাকচালক এবং অন্য করোনাবিধি-বিরোধী অন্য বিক্ষোভকারীরা রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে৷ তাই রাস্তাই এখন হকি খেলার মাঠ৷
ছবি: Lars Hagberg/REUTERS
বিক্ষোভকারীদের ড্যান্স পার্টি
অটোয়ার রিডু সেন্টারের বাইরে বিক্ষোভকারীরা মেতেছে নাচের উৎসবে৷
বিক্ষোভে সমর্থন জানাতে ট্রাকের গায়ে স্বাক্ষর করছেন একজন৷ তার আগে স্বাক্ষর করেছেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী৷
ছবি: Lars Hagberg/REUTERS
বিক্ষোভের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
ট্রাক চালকদের বিক্ষোভে অটোয়ার জনজীবন বিপন্ন৷ তাই সেই বিক্ষোভের বিরুদ্ধেও দানা বাঁধছে বিক্ষোভ৷ এক সমাবেশ থেকে তাই করোনাবিধি-বিরোধী ট্রাকচালকদের প্রতি আহ্বান, ‘‘এ শহরকে আতঙ্কগ্রস্ত করা বন্ধ করুন৷’’
ছবি: Blair Gable/REUTERS
ট্রুডোর বিরুদ্ধে জমছে ক্ষোভ
১২ দিন ধরে করোনাবিধি-বিরোধীদের অবস্থানের কারণে অচল রাজধানী অটোয়া৷ সরকার তাদের সরাতে এখনো কঠোর ব্যবস্থা না নেয়ায় এক নগরবাসীর প্রশ্ন, ‘‘ট্রুডো কোথায়?’’
ছবি: Lars Hagberg/REUTERS
13 ছবি1 | 13
ঘটনার সূত্রপাত ক্যানাডায়। কোভিড নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে একদল মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপ, অ্যামেরিকা এবং ক্যানাডায় আন্দোলন করছে। তাদের দাবি, টিকাকরণ বাধ্যতামূলক করা যাবে না। কোভিডের জন্য একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাবে না। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা যাবে না। ক্যানাডায় এই প্রতিবাদীরা প্রথম ফ্রিডম কনভয় বার করে। বড় বড় ট্রাক নিয়ে তারা প্রথমে রাজধানী কার্যত অবরুদ্ধ করে দেয়। এরপর তারা অ্যামেরিকা এবং ক্যানাডার সীমান্তও কার্যত অচল করে দিয়েছে। প্রচুর ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। অ্যামেরিকা এবং ক্যানাডা দুই দেশই সীমান্ত পার করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম তৈরি করেছে। প্রতিবাদীদের দাবি সেই নিয়ম বাতিল করতে হবে।
ইউরোপেও দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ প্রতিরোধ চলছে। সম্প্রতি ক্যানাডার মতো ফ্রান্সেও ফ্রিডম কনভয়ের সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিবাদীরা। সবমিলিয়ে ছয়টি কনভয় প্যারিসের অভিমুখে রওনা হয়েছিল। কিন্তু তাদের মাঝপথেই আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ক্যানাডার থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের রাজধানীতে ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন দেখার এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবাদীরা বিকল্প কোনো সিদ্ধান্ত নেয় কি না।