1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফ্লিপকার্ট - ভারতের আমাজোন

৫ সেপ্টেম্বর ২০১১

অনলাইনে কেনাকাটার সবচেয়ে বড় সাইট আমাজোন৷ কিন্তু ভারতে তার কোনো শাখা নেই৷ তবে আছে আমাজোনেরই ভারতীয় সংস্করণ ফ্লিপকার্ট৷

শচিন আর বিন্নি বানসাল৷ না, তাঁরা দুই ভাই নন৷ তবে দুজনেই বড় হয়েছেন ভারতের চন্ডীগড়ে৷ আর লেখাপড়া শিখেছেন নতুন দিল্লির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি আইআইটি'তে৷ বিষয় কম্পিউটার বিজ্ঞান৷ এরপর তাঁরা যোগ দেন মার্কিন কোম্পানি আমাজোনে সফটওয়্যার ডেভলপার হিসেবে৷ তবে কাজ করেছেন ভারতে থেকেই, ব্যাঙ্গালোরে বসে৷

চাকরি করতে করতে তাঁরা ভাবলেন, নিজেরাই এধরণের একটা কোম্পানি খুললে কেমন হয়৷ যেই ভাবা সেই কাজ৷ ছেড়ে দিলেন লোভনীয় সেই চাকরি৷ শুরু করলেন নিজেদের ব্যবসা৷ সেটা ছিল ২০০৭ সাল৷ প্রথম দিকে অনলাইনে বই বিক্রি করতেন দুই বানসাল৷ অর্ডার পাওয়ার পর ঘরে প্যাকেট করে নিজেরাই সেগুলো বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতেন৷ কেননা শুরুর দিকে অর্ডারের সংখ্যা বেশি না থাকায় কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি তাঁদের বাসা থেকে ডেলিভারি নিতে চাইত না৷

বই বিক্রি দিয়ে শুরু হয়েছিল ফ্লিপকার্টের যাত্রা

এভাবে অবশ্য খুব বেশিদিন চলতে হয়নি৷ মাত্র চার-পাঁচ মাস৷ এরপরই বাড়তে থাকে অর্ডারের সংখ্যা৷ গত অর্থবছরে ফ্লিপকার্ট প্রায় ১১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য বিক্রি করে৷ এ বছর সেটা একশো মিলিয়নে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ আর ২০১৫ সালের মধ্যে বিক্রির পরিমাণ এক বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে৷

সংখ্যাগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যাচ্ছে কতটা প্রবৃদ্ধি করছে ফ্লিপকার্ট৷ কোম্পানির এই সাফল্যের উপর বিশ্বাস রেখে মার্কিন একটি কোম্পানি ফ্লিপকার্টে ৩১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে৷ আরও দেড়শো মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের কথাও শোনা যাচ্ছে৷ অর্থাৎ টাকা আর টাকা৷ মাত্র চার বছরেই কোথা থেকে কোথায় চলে এসেছেন শচিন আর বিন্নি বানসাল৷ একেই বুঝি বলে সফল উদ্যোক্তা৷ বয়সে একেবারেই তরুণ এই দুজন৷ শচিনের বয়স ৩০ আর বিন্নির মাত্র ২৮৷

কিন্তু তাঁদের এই সাফল্যের রহস্য কী? জানা গেছে, ভারতে থেকেও আমাজোনের মাধ্যমে জিনিসপত্র কেনা যায়৷ কিন্তু সেটা ঘরে পৌঁছে দেয়ার খরচ বেশি এবং পেতেও সময় লাগে অনেক৷ সেই তুলনায় ফ্লিপকার্টে জিনিস কিনে কম খরচে এবং তাড়াতাড়ি পণ্য পেয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা৷ ভারতের মোট পাঁচটি শহর থেকে ডেলিভারি দেয়ার ব্যবস্থা করেছে ফ্লিপকার্ট৷

শুরুটা বই দিয়ে হলেও এখন ফ্লিপকার্টের মাধ্যমে মোবাইল ফোন, হোম অ্যাপলায়েন্সেস, ক্যাসেট সহ অনেক ধরণের পণ্য কিনতে পারা যায়৷ প্রতি মিনিটে এখন গড়ে ১০টি পণ্য বিক্রি হচ্ছে ফ্লিপকার্টের মাধ্যমে৷

ব্যবসা করতে গিয়ে কিছু অসুবিধাতেও পড়ছে ফ্লিপকার্ট৷ কেননা অনলাইনে কেনাকাটাটা এখনো তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি ভারতে৷ প্রায় একশো বিশ কোটি মানুষের দেশে অনলাইনে কেনাকাটা করা মানুষের সংখ্যা দুই কোটির একটু বেশি৷

এছাড়া অন্যান্য সমস্যার মধ্যে আছে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার৷ ভারতে এই কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা দুই কোটিরও কম৷ এ সমস্যা দূর করতে ফ্লিপকার্ট নগদ অর্থের বিনিময়েও পণ্য ডেলিভারি দিয়ে থাকে৷ এবং কোম্পানির ব্যবসার অর্ধেকটা আসে এভাবেই৷

ফ্লিপকার্টের ব্যবসা বাড়ার অন্যতম একটি কারণ হলো বই বিক্রি বেড়ে যাওয়া৷ ইলেকট্রনিক বই আসার কারণে অ্যামেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্বে যেখানে কাগজের বই বিক্রির সংখ্যা দিনদিন কমছে সেখানে ভারতে সেটা বাড়ছে বলে জানালেন শচিন, যিনি ফ্লিপকার্টের প্রধান নির্বাহী৷ আর বিন্নি বানসাল কোম্পানির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ