ঝড়ের তাণ্ডবে সব লন্ডভন্ড৷ সবাই যখন বাতাসের তোড় থেকে বাঁচতে পালাচ্ছে, তখন যদি দেখা যায় কেউ একজন সেই বাতাসের সাথেই লড়াই করছেন, কেমন লাগবে? এমনই একজন ঝড়তাড়ুয়া - জাস্টন ড্রেক৷
বিজ্ঞাপন
হারিকেন ইরমা ক্যারিবীয় অঞ্চলজুড়ে এরই মধ্যে তাণ্ডব চালিয়েছে৷ ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে অন্তত ২৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে৷ ফ্লোরিডা ও জর্জিয়া থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে ৬০ লাখের বেশি মানুষকে৷
কিন্তু আবহাওয়া অফিস যখন ঘূর্ণিঝড় ইরমার পথ থেকে সবাইকে সরে যেতে বলছে, তখন জাস্টন ড্রেক করলেন ঠিক উলটো কাজ৷ টুইটারে তিনি পরিচিত @JustonStrmRider নামে৷
আরেক স্টর্ম রাইডার @SimonStormRider নামের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, প্রচণ্ড ঝড়ের প্রায় কেন্দ্রে গিয়ে গাড়ি থেকে নেমে গেছেন জাস্টন৷ বাতাসের গতি পরিমাপ করার জন্য হাতে একটি যন্ত্রও ধরে রেখেছেন তিনি৷
কিন্তু ভয়াবহতা বুঝতে যন্ত্রের হিসেবের আর প্রয়োজন পড়েনি৷ দাঁড়ানো মাত্রই তাঁকে কয়েক ফুট পেছনে প্রায় উড়িয়ে নিয়ে যায় বাতাস৷ আবার এগুনোর জন্য জাস্টনকে প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হয় সামনে৷
ইরমার এই ভিডিও মূহুর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়েছে৷ ছড়িয়ে পড়েছে টুইটার, ফেসবুকে৷ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাতকারে জাস্টন জানিয়েছেন, জীবনে বহু ঝড়ের মধ্যে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি৷ কিন্তু ইরমার মতো ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা তাঁর হয়নি৷
হাতের যন্ত্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় মাত্র ১১৭ মাইল দেখা গেলেও জাস্টন ধারণা করছেন মূল গতিবেগ এর চেয়েও বেশি হতে পারে৷ হয়তো যন্ত্রের হিসেব করার ক্ষমতার বাইরে ছিল এই ঘূর্ণিঝড়৷
এডিকে/এসিবি
আকাশে আগুন: বজ্র এবং বিদ্যুৎ চমকানো
গ্রীষ্ম, সূর্য - বজ্রপাত: মাত্রাতিরিক্ত গরমের পর প্রায়ই ঝড় ওঠে, যেমনটা জার্মানিতে দেখা যাচ্ছে৷ বাংলাদেশ বা ভারতে অবশ্য এই প্রবণতা বহু আগে থেকে৷ চলুন বজ্রপাত আর বিদ্যুৎ চমকানোর কয়েকটি বিশেষ দিক জানা যাক৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আকাশে ‘শর্ট সার্কিট’
রাতের আকাশে এমন দৃশ্য বিরল নয়৷ বিদ্যুৎ চমকানোর ব্যাপারটি অনেকটা ‘শর্ট সার্কিটের’ মতো ব্যাপার৷ আর একেকটি বিদ্যুৎ চমক ৫০০ মিলিয়ন ভোল্ট পর্যন্ত শক্তিশালী হতে পারে৷ জার্মানিতে প্রতি বছর গড়ে বিশ লাখের বেশি বার বিদ্যুৎ চমকায়৷ এতে অবশ্য ভয়ের কিছু নেই৷ কেননা অধিকাংশই মাটি স্পর্শ করে না৷ বরং মেঘ থেকে মেঘে স্থানান্তর হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায়
ছবিতে থাকা এই মানুষটি বজ্রপাতের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না৷ কেননা তাঁর ধাতব স্যুট বিদ্যুৎ চমক প্রতিরোধে সক্ষম৷ এই স্যুটের নীতি হচ্ছে ‘ফ্যারাডে কেজ’৷ ধাতু বিদ্যুৎ চমক থেকে সৃষ্ট বিদ্যুতের প্রবাহ প্রতিরোধ করতে পারে৷ তাই বিমান কিংবা গাড়িও ‘লাইটনিং বোল্ট’ বা বিদ্যুৎ চমকের আঘাত থেকে নিরাপদ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মাটিতে ফিরিয়ে নেয়া
সাধারণত উঁচু জায়গায় বজ্রপাত ঘটে৷ যেকারণে প্রায় সব বড় গির্জা বা বহুতল ভবনে ‘লাইটনিং রড’ রয়েছে, যা আর্থিং হিসেবেও পরিচিত৷ এই ব্যবস্থার ফলে বজ্রপাতের কারণে ভবনের ক্ষতি হয় না৷ বরং বিদ্যুৎ সরাসরি ভূমিতে চলে যায়৷ ১৭৫২ সালে বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন ‘লাইটনিং রড’ আবিষ্কার করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ধ্বংসাত্মক প্রাকৃতিক আচরণ
২০১৩ সালে বজ্রপাতের কারণে জার্মান বিমা সংস্থাগুলোর ২৮০ মিলিয়ন ইউরোর মতো গুনতে হয়েছে৷ তবে সরাসরি ঘরবাড়ির উপর বজ্রপাতের কারণে এটা হয়নি৷ আসলে অনেক সময় বাড়ির কাছাকাছি বজ্রপাত হলে বাড়তি বিদ্যুৎ সাধারণ বৈদ্যুতিক লাইনের মাধ্যমে ঘরের মধ্যে চলে যায়৷ ফলে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়৷ তাই পরামর্শ হচ্ছে, বিদ্যুৎ চমকালে টিভি, ফ্রিজের মতো পণ্যের প্লাগ খুলে রাখুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘বল লাইটনিং’ এর অস্তিত্ব আছে
এটা প্রকৃত ‘বল লাইটনিং’ নয়৷ তবে বাস্তবেও এটা সম্ভব! যদিও এমন বিদ্যুৎ চমকানোর ছবি প্রকৃতি থেকে এখনো তোলা যায়নি, তবে বিজ্ঞানীরা বিষয়টি প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আকর্ষণ এবং আতঙ্কের মাঝামাঝি
গ্রীষ্মের আকাশে বিদ্যুৎ চমকানো দেখে অনেকে রোমাঞ্চ অনুভব করেন৷ তবে কেউ যদি বিদ্যুৎ চমকানোর কথা শুনেই ঘামতে শুরু করেন তাহলে তাকে বলে ‘এস্ট্রাফোবিয়া৷’ বজ্রপাত এবং বিদ্যুৎ চমকানো নিয়ে যাদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে তারা এস্ট্রাফোবিয়ায় আক্রান্ত৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শিল্পীদের প্রেরণা
‘লর্ডস অফ লাইটনিং’ এর মতো শিল্পীরা বজ্রপাতের সৌন্দর্যকে এভাবেই স্টেজে ফুটিয়ে তুলেছেন৷ বিভিন্ন চিত্রকর্মেও বিদ্যুৎ চমকানোর দৃশ্য একেছেন শিল্পীরা৷ নিরাপদ দূরত্বে বসে প্রকৃতির এই খেয়াল উপভোগ্য নয় বৈকি৷