1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বংশগত স্ট্রেস থামানোর উপায় খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা

২৮ আগস্ট ২০১৮

বংশানুক্রমে স্ট্রেস হস্তান্তর বন্ধ করার কোনো উপায় আছে কি? বিজ্ঞানীরা একদিকে মস্তিষ্কের মধ্যে তার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া শনাক্ত করেছেন৷ অন্যদিকে কিছু সহজ উপায়ে সেই স্ট্রেস দূর করার পথও খুঁজে পেয়েছেন৷

ছবি: Colourbox/I. Jacquemin

গবেষকরা ইঁদুরের মস্কিষ্কের মধ্যে হিপোক্যামপাস নামের একটি বিশেষ অংশে বংশানুক্রমে প্রাপ্ত ট্রমার উৎস খুঁজে পেয়েছেন৷ তাঁরা সেখানেই উত্তারাধিকারের পরিবর্তন আবিষ্কার করেছেন৷ বিশেষ একটি জিন স্ট্রেসের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া নির্ধারণ করে৷ ট্রমা সেখানে তোলপাড় কাণ্ড ঘটিয়ে জিনের সুইচ বদলে দেয়৷ সেই ত্রুটির কারণে সেটি অত্যন্ত জোরালোভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে৷

এর ফলে কর্টিসল নামের স্ট্রেস হরমোনের প্রভাব অত্যন্ত বেড়ে যায়৷ তখন ইঁদুরটি আরো সহজে স্ট্রেসে কাবু হয়ে পড়ে৷ সন্তান-সন্ততি, নাতি-পুতি – সবার ক্ষেত্রেই সেই বৈশিষ্ট্য দেখা যায়৷ নিউরোবায়োলজিস্ট ইসাবেল মানসুই এ বিষয়ে বলেন, ‘‘শুরুতে আমরা অত্যন্ত অবাক হয়েছিলাম৷ কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রেও এমনটা প্রায়ই দেখা যায়৷ ট্রমার লক্ষণ বংশানুক্রমে চলতে থাকে৷ বাবা-মার কাছ থেকে সন্তানরা তা পায়৷''

দ্বিতীয় পরীক্ষায় ইঁদুরদের চলার পথে একটি ক্রসিং রাখা হয়েছে৷ ইঁদুর হয় নিজেকে লুকিয়ে ফেলতে পারে, অথবা কিছুটা ঝুঁকি নিতে পারে৷ সেটি কত ঘনঘন ঝুঁকি নিচ্ছে, ক্যামেরা ও স্টপওয়াচের মাধ্যমে তা পরিমাপ করা হয়৷

ল্যাবে চতুর্থ প্রজন্মের ইঁদুরটি কেমন আচরণ করবে? দেখা গেল, উন্মুক্ত পথের একটি অংশের ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে৷ স্বাভাবিক অনুমান অনুযায়ী কোনো ট্রমাগ্রস্ত ইঁদুর এমন পরিস্থিতিতে এক কোণে লুকিয়ে পড়তে পারে৷ কিন্তু ট্রমাগ্রস্ত ইঁদুর ঝুঁকির মাত্রা খতিয়ে দেখে বলে তারাই অনেক বেশি ঝুঁকি নেয়৷ ইঁদুরটি সত্যি বিশাল ঝুঁকি নিচ্ছে৷ ইসাবেল মানসুই বলেন, ‘‘ভাবনাচিন্তা না করেই ইঁদুরটি পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ ট্রমাগ্রস্ত মানুষের ক্ষেত্রেও ঝুঁকির এমন মানসিকতা দেখা যায়৷''

অর্থাৎ বিনা বাধায় ট্রমা বংশের মধ্যে এগিয়ে যেতে পারে৷ সম্ভবত মানুষের ক্ষেত্রেও এমনটাই ঘটে৷

এই গবেষণার ফল সত্যি বড় করুণ৷ ইসাবেল বলেন, ‘‘সেটা সত্যি বটে, কিন্তু আমাদের জীবনের অভিজ্ঞতার যে পরিণতি রয়েছে, সে বিষয়ে সচেতন হওয়াও জরুরি৷ শুধু আমরা নই, আমাদের বংশধরদেরও তার ঠেলা সামলাতে হবে৷''

ইঁদুরটি আবার কীভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে, ইসাবেল মানসুই সেই উপায়ও খুঁজে পেয়েছেন৷ তার জন্য বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয়নি৷ খাঁচায় চারগুণ বেশি জায়গা এবং কার্যকলাপে অনেক বৈচিত্র্য এনে জিন সুইচ আবার স্বাভাবিক করে তোলা যায়৷

সেইসঙ্গে চাই বিশাল সামাজিক পরিবেশ৷ এমনকি একটি জিমও রয়েছে৷ অর্থাৎ ‘ভালো জীবনযাত্রা' হলেই কি চলবে? মানুষের ক্ষেত্রেও সেটা খাটে কি? ইসাবেল মানসুই মনে করেন, ‘‘মানুষও এর ফলে উপকার পেতে পারে৷ মানসিক চিকিৎসার সময় জিনের সুইচ বদলানো যায় কিনা, তা আমরা দেখতে চাই৷ সম্মোহন, শামানইজম, ধ্যানের মতো পথও কার্যকর হতে পারে৷ মোট কথা মানুষকে কিছুটা চাঙ্গা করে তাদের অবস্থার উন্নতি করলেই হলো৷'' 

কারণ, মানুষের ক্ষেত্রেও বংশানুক্রমে ট্রমাজনিত স্ট্রেসের প্রসার ঘটে৷ ইসাবেল মানসুই এবার ফ্রান্সের নিস শহরে সন্ত্রাসী হামলার সাক্ষী ও তাঁদের সন্তানদের নিয়ে গবেষণা করতে চান৷ সেইসঙ্গে কোন চিকিৎসার মাধ্যমে জিনে কিছু চিহ্ন মুছে দেওয়া যায়, সেটাও জানতে চান তিনি৷

আন্দ্রেয়া ফিশলি/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ