1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বইমেলা আমাদের নিজস্ব সম্পদ'

৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বইমেলাকে ঘিরে এবার বইয়ের প্রস্তুতি কেমন? কী ধরনের লেখা পাঠকরা বেশি পছন্দ করছেন? আরো অনেক বিষয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি কামরুল হাসান শায়ক৷

Buchmesse Bangladesch
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman

ডয়চে ভেলে: বইমেলা নিয়ে প্রকাশকদের তো বড় আয়োজন থাকে৷ এবার আপনাদের আয়োজনটা কেমন?

কামরুল হাসান শায়ক: এবারের বইমেলা গত বছরের চেয়ে অনেকটাই সমৃদ্ধ হবে বলে আমরা আশা করছি৷ আমাদের প্রকাশকদের যে দু'টি সংগঠন আছে, আমরা সবাই বাংলা একাডেমীর সঙ্গে দু'টি বৈঠক করেছি৷ সেই বৈঠকের আলোকে বলতে পারি, এবারের বইমেলা অনেক বেশি সমৃদ্ধ হবে৷ গোছালোও হবে৷ এই কারণে বলছি যে, এবার বইমেলার নকশা করেছেন দেশের অন্যতম সেরা স্থাপত্যবিদ এনামুল করিম নির্ঝর ভাই৷ তিনি আমাকে জানিয়েছেন, স্বল্প সময়ের কারণে তিনি এবার মনের মতো করে করতে পারেননি, তারপরও অনেক ভালো হবে বলে আমরা আশা করছি৷ অনেক প্রকাশক অভিযোগ করেন, তাঁর স্টলটি এমন জায়গায় পড়ে গেছে যে, পাঠক যাচ্ছেন না৷ এবার নির্ঝর ভাই প্রতিটা স্টল যেন পাঠকের কাছে ‘পেজেন্টবল' হয়, তেমন করেই নকশাটা করেছেন৷

বইয়ের প্রস্তুতি কেমন আপনাদের?

প্রকাশকরা তো বই তৈরি করে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন৷ আর আমাদের কথা যদি বলি, তাহলে পাঞ্জেরী প্রকাশনী সারা বছরই বই প্রকাশ করে থাকে৷ 

প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত মানুষের সংখ্যা কেমন?

‘৫০ লাখেরও বেশি পরিবার প্রকাশনা শিল্পে যুক্ত’

This browser does not support the audio element.

এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তো অনেক মানুষ৷ আমাদের প্রকাশকই তো এক হাজারেরও উপরে৷ বহু মানুষ এর সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ একজন লাইব্রেরিয়ান, একজন প্রেস মালিক, কর্মচারী, একজন বাঁধাইকারক, সবাই তো আমাদের সঙ্গে যুক্ত৷ কাগজ যিনি সাপ্লাই দেন তিনিও কিন্তু আমাদের সঙ্গে যুক্ত৷ আমরা গবেষণা করে দেখেছি, এই ধরনের ৫০ লাখেরও বেশি পরিবার এই প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত আছে কোনো-না-কোনোভাবে৷

আপনি যে বলছিলেন, ১ হাজারেরও বেশি প্রকাশক আছেন৷আমরা দেখি ,অনেক প্রকাশকই যে বই আনেন সেটা মানসম্পন্ন না৷ সেক্ষেত্রে প্রকাশক সমিতি কোনো ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে কিনা...

দেখুন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে যেটা আছে সেটা হলো যিনি ভালো কাজ করবেন না, তিনি টিকে থাকবেন না৷ হয়ত সাময়িক কিছু সময় তিনি চালিয়ে নিতে পারেন, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তার টিকে থাকা সম্ভব নয়৷ আমাদের সমিতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যে ট্রেড অর্গানাইজ রুলস আছে, সেটা অনুযায়ী চলে৷ সেই রুলস অনুযায়ী তাদের নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার সংরক্ষিত৷ আমাদের সমিতি চাইলেই অনেক কিছু করতে পারে না৷ তবে আমরা সদস্য পদ দেওয়ার ক্ষেত্রে এগুলো বিবেচনায় নেই৷ আমাদের সমিতিতে বর্তমানে ১৬৩ জন সদস্য৷ আরেকটা যে সমিতি আছে, তাদের সদস্যও একই ধরনের৷ তাহলে দুই সংগঠন মিলে সদস্য কিন্তু ৩-৪ শ'৷ আমি বলছিলাম, প্রকাশক এক হাজারেরও বেশি৷ কিন্তু সদস্য তালিকা দেখলে আপনার কাছে বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে৷

প্রকাশনা শিল্প  আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে  কেমন ভূমিকা রাখছে?

দেখুন, জিডিপিতে আমরা কতটা ভূমিকা রাখছি, সেই ধরনের কোনো গবেষণা হয়নি৷ আমার জানা নেই এই ধরনের কোনো গবেষণার কথা৷ কেউ করলে করে থাকতেও পারেন৷ তবে প্রকাশনা শিল্প শুধু বৈষয়িক জিডিপিতে যোগ করছে, এমনটা নয়৷ শিক্ষিত জাতি বির্নিমাণ করে অন্যভাবেও ভূমিকা রাখছে৷ সৃজনশীল প্রজন্ম গঠনেও কিন্তু এই শিল্প ভূমিকা রাখছে৷ আর অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আমাদের টার্নওভার এক হাজার কোটি টাকার মতো৷

এবারের বইমেলায় কতগুলো প্রকাশনী অংশ নিচ্ছে?

এবারের বইমেলায় গতবারের মতো প্রায় সাড়ে ৪শ' প্রকাশনী অংশগ্রহণ করছে, যদিও এখনো ফাইনাল হয়নি৷ কিছু কমবেশি হতে পারে৷

অনেক লেখকের বই তো আপনারা প্রকাশ করেন, কোন ধরনের লেখাকে আপনারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন?

এই মুহুর্তে যদি বলেন তাহলে আমাদের প্রকাশকরা সায়েন্স ফিকশনকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে৷ এরপরই উপন্যাস৷ নতুন আরেকটি বিষয় যুক্ত হয়েছে, সেটা হলো কমিক্স উপন্যাস৷ এটাও গুরুত্ব পাচ্ছে৷ গল্পের বই, কবিতা, প্রবন্ধও গুরুত্ব পায়৷

মানসম্পন্ন লেখক আপনারা কেমন পাচ্ছেন?

দেখেন, মানসম্পন্ন লেখক বলব না, বলব মানসম্পন্ন পান্ডুলিপি আমরা কেমন পাচ্ছি৷ অনেক বড় বড় লেখক আমাদের আছেন৷ তবে আমি যেটা বলব, আমরা এখন একটা গ্লোবাল ভিলেজে বাস করছি৷ আপনি যদি কোনো বই পড়তে চান, তাহলে মোবাইল বা কম্পিউটারে সার্চ দিলেই আপনি জানতে পারছেন, সবচেয়ে বেশি পাঠকপ্রিয় সায়েন্স ফিকশন কোনটা৷ আমাদের লেখকরা যদি মানসম্পন্ন লেখা না দেন, তাহলে কিন্তু তাঁরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাবেন৷ অনুবাদের জায়গায় যদি আমরা সিরিয়াস হই, তাহলে সারা বিশ্বের বাজারে কিন্তু আমরা এই বইগুলো বিক্রি করতে পারি৷

আমাদের অমর একুশে গ্রস্থমেলার আন্তর্জাতিক গুরুত্ব কতখানি?

এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন৷ আমরা দীর্ঘদিন ধরে জেনে আসছি, আমাদের এই গ্রন্থমেলাটা কিন্তু আবেগের জায়গা৷ ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মরণে, মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে এবং চেতনাবোধ থেকে এই মেলা পরিচালিত হয়৷ এটা আবেগের একটা জায়গা৷ এটা আমাদের বাঙালির জাতীয় উৎসব৷ এটার আন্তর্জাতিক রূপান্তর আমরা চাই না৷ এটা আমাদের নিজস্ব সম্পদ৷

বইমেলার বিস্তৃতি বেড়েছে ,আমরা জানি৷ এই বইমেলাকে আগামীতে আপনি কোন জায়গায় দেখতে চান?

আমরা এই বইমেলাকে বাঙালি জাতির সাংস্কৃতিক উৎসবের সর্বোচ্চ জায়গায় দেখতে চাই৷ আমরা যে জ্ঞান-ভিত্তিক সোনার বাংলা চাই, সেই জ্ঞান-ভিত্তিক সমাজ দেখতে গেলে প্রোডাক্টিভ জেনারেশন আমরা চাই৷ তাদের বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই৷ বই পড়ার যে অভ্যাস, সেটা ধরে রাখতে হলে এই বইমেলাই হোক আমাদের সংস্কৃতির সর্বোচ্চ একটি জায়গা৷ পাশাপাশি এই বইমেলা পৃথিবীর বুকে এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত হোক যে এটা সাহিত্য, সংস্কৃতি, লেখক, পাঠক ও প্রকাশকরা একটা বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কে যুক্ত হোক৷ সবার জন্য বই, শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার হাতে আমরা বই চাই৷ এটাই আমরা বইমেলার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই৷

আপনিও কি একমত? লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ