1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বই স্ক্যান করবে পুলিশ!

সমীর কুমার দে ঢাকা
৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিন থেকে ঢাকায় শুরু হয়েছে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা৷ তবে পুলিশ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতে পারে এমন বই স্ক্যান করবে ঘোষণা দেয়ায় লেখক, প্রকাশক ও বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন৷

Bangladesch Buchmesse
ছবি: DW/Harun Ur Rashid

লেখকরা খুব বেশি সমালোচনা না করলেও ভিন্নমত পোষণ করেছেন৷ তাদের মতে, মেলা শুরুর আগে অনেকেই অনেক কথা বলেন৷ কিন্তু বাস্তবে সেটা সম্ভব নয়৷ তবে লেখক ও প্রকাশকদের সচেতন থাকার আহবানও তাদের৷

Ahasan Habib 03.02.18.mp3 - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

পুলিশের নজরদারি করার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে দেশ পাবলিকেশন্সের স্বত্বাধিকারী অচিন্ত চয়ন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা বাক স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি৷ এটা মুক্তচিন্তার চর্চার ক্ষেত্রেও বড় অন্তরায়৷'' তাঁর মতে, ‘‘এখানে লেখক ও প্রকাশক সবাই সচেতন৷ আর পুলিশের পক্ষে এত বড় আয়োজনের প্রতিটি বই পড়ে দেখাও সম্ভব নয়৷ 

লেখক সুমন্ত আসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পুলিশ সতর্কতার কারণে হয়ত এটা বলেছে৷ এটা নিয়ে এত আলোচনার কিছু নেই৷'' অপর লেখক আহসান হাবীবও মনে করেন, ‘‘এটা নিয়ে আলোচনা করলে আলোচনা বাড়বে৷ যেটা কখনই সম্ভব নয় সেটা নিয়ে আলোচনা করে অযথা ঝামেলা তৈরি না করাই ভালো৷''

তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ কেন বলেছে, সেটা আমরা জানি, এ নিয়ে খোঁচাখুঁচি করলে আলোচনাই বাড়বে৷ আমাদের উচিত মেলার ভালো দিকগুলো তুলে ধরে সুন্দর মেলাকে সফল করে তোলা৷''

Jalal Amhad 03.02.18.mp3 - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

তবে অনেক লেখকই মনে করেন, ‘‘বইয়ের ক্ষেত্রে এমন বিধিনিষেধ দেওয়ায় মুক্তচিন্তার ওপর প্রভাব পড়বে৷ তাদের মতে, এটা লেখক ও প্রকাশকদের শৃঙ্খলিত করারই নামান্তর৷

প্রসঙ্গত, বইমেলা শুরুর আগের দিন পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ‘‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো বই কেউ প্রকাশ করছে কিনা, সেটা অনুসন্ধান করে দেখবে পুলিশ৷ কোনো বই ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করছে খবর পেলে সেই বই জব্দ করা হবে৷ তাছাড়া যারা সেই বই প্রকাশ করবেন ও বিক্রি করবেন তাদের বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ৷'' 

যদিও বাংলা একাডেমি বলছে, তারা লেখক-প্রকাশকদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে৷ বাংলা একাডেমির বই কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ওটা পুলিশের কথা৷ বাংলা একাডেমির প্রচলিত নিয়ম হচ্ছে, আমাদের তথ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন নতুন বই আসে৷ সেগুলো আমাদের কর্মীরা বইয়ের ধরন অনুযায়ী শ্রেণিবদ্ধ করেন৷ এরপর সেসব বইয়ের প্রচার হয়৷ এখানে বই পড়ে দেখার কথা আমাদের নীতিমালায় নেই৷''

Sumanto Aslam 03.02.18.mp3 - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের একটা কমিটি আছে, যার কাজ হলো গ্রন্থমেলার নীতিমালা বাস্তবায়ন হচ্ছে কি-না তা দেখাশোনা করা৷ তাতে বাংলা একাডেমি, প্রকাশক, পুলিশ, কপিরাইট ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি থাকে৷ তারা পুরো মেলা পরিদর্শন করেন৷ কোনো অভিযোগ আসলে দেখেন৷''

জালাল আহমেদের আরো বলেন, ‘‘যদি নীতিমালা পরিপন্থি বই, পাইরেটেড বা নোট বই থাকে সেগুলো ওই কমিটি দেখে৷ প্রয়োজন বোধ করলে কমিটি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করে৷ সেই সুপারিশ অনুযায়ী বাংলা একাডেমি ব্যবস্থা নেয়, প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নেয়৷

Achinto Chaion 03.02.18.mp3 - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

‘‘আমরা লেখকদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি৷ সৃষ্টিশীলতায় বিশ্বাস করি৷ এখানে এমন কিছু হবে না যাতে লেখকের স্বাধীনতা খর্ব হয়৷''

উল্লেখ্য, গত কয়েকবছর ধরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে এমন বইয়ের বিষয়ে নজর রাখছে কর্তৃপক্ষ৷ বিশেষ করে ২০১৫ সালে মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অভিজিৎ রায়, এবং তাঁর বইয়ের প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যাকাণ্ডের পরের বছর থেকে সংবেদনশীল বিষয়ের কিছু বই পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় মেলা কর্তৃপক্ষ৷ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে এমন বই প্রকাশ না করতে লেখক ও প্রকাশকদের সতর্কও করে দেওয়া হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ