এদিকে ঈদকে ঘিরে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঘরমুখী মানুষকে।
বুধবার সকালে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল হক খান পাভেল দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ১৭ থেকে ১৮ হাজার যানবাহন এই সেতু পার হয়।
ঈদ মানেই আনন্দ আর এই আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করে নিতেই বাড়ি ফেরেন মানুষ৷ সেজন্য অনেকেই সারারাত অপেক্ষা করেন ট্রেনের টিকেটের জন্য কিংবা লঞ্চে ওঠেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে৷ সেরকমই কিছু ছবি পাবেন এখানে৷
ছবি: DW/M. Mamunঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের আগাম টিকেট সংগ্রহের জন্য মানুষের ভিড়৷ আগের দিন রাত থেকে এসব মানুষ দাঁড়িয়েছিলেন টিকেটের জন্য৷ তবে যাত্রীর তুলনায় বাংলাদেশ রেলওয়ের আসন সংখ্যা কম হওয়ায় দিনভর অপেক্ষা শেষে অনেককেই ফিরতে হয় খালি হাতে৷
ছবি: DW/M. Mamunঢাকার বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় হাজারো ঘরমুখো মানুষ৷ ঈদের সময়ে যাত্রীর চাপের কারণে ট্রেনের সময়সূচি ঠিক রাখতে পারছে না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ৷ তবে এ চিত্র আগের বছরের তুলনায় এ বছর অনেক ভালো৷
ছবি: DW/M. Mamunজীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে উঠছে হাজারো ঘরমুখো মানুষ৷ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতেই এতো কষ্ট করে বাড়ি ফেরা৷
ছবি: DW/M. Mamunঈদের ছুটিতে ট্রেনের ছাদে চড়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ৷ জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও ছাদে চেপে বসেছেন এসব মানুষ৷ ছাদে যাত্রী পরিবহণ নিষিদ্ধ হলেও প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ব্যাকুল মানুষের কাছে সকল নিষেধাজ্ঞাই উপেক্ষিত৷
ছবি: DW/M. Mamunসদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ভিড়৷ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম নৌপথ৷ অন্যান্য পথের মতো নদীপথেও তাই ঈদ উপলক্ষ্যে মানুষের ভিড় বেশি৷
ছবি: DW/M. Mamunলঞ্চের ডেকে গাদাগাদি করে বসে বাড়ি ফিরছেন মানুষ৷ ঈদের সময় লঞ্চগুলোর ডেকে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করা হয়৷
ছবি: DW/M. Mamunঢাকার সদরঘাটে নৌকা থেকে লঞ্চে উঠছেন যাত্রীরা৷ এভাবে উঠতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন যাত্রীরা৷ এরপরেও নারী ও শিশুদের নিয়ে এভাবেই লঞ্চে উঠতে দেখা যায় যাত্রীদের৷
ছবি: DW/M. Mamunলঞ্চের ডেকে জায়গা না পেয়ে খোলা ছাদে উঠে পড়েছেন হাজারো মানুষ৷ অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের ফলে প্রতিবছরই ঈদ মৌসুমে দুর্ঘটনায় পড়ে অনেক নৌযান, প্রাণ হারান অনেকেই৷ তারপরেও থেমে থাকে না অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই৷
ছবি: DW/M. Mamunপরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছেন এসব মানুষ৷ ভুলে গেছেন সরকারের নিষেধাজ্ঞা, নিজ জীবনের নিরাপত্তা৷ ঈদের আগের দিন ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলোর চিত্র ছিল একই৷ এ যেন ঝুঁকির মধ্যে আনন্দ যাত্রা!
ছবি: DW/M. Mamunনৌ ও রেলপথের মতোই সড়ক পথেও যাত্রীর চাপ বেশি৷ অনেকেই তাই বাড়ি ফিরছেন বাসের ছাদে চড়ে৷ তবে এতো কষ্টের পরও কখন বাড়ি ফিরতে পারবেন যাত্রীরা এর কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ বাংলাদেশের সড়কপথে ঈদের আগে যাত্রীদের জন্য সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়ায় যানজট৷
ছবি: DW/M. Mamunঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরতে ট্রাকে চড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ৷ এসব মানুষের বেশিরভাগই দিনমজুর৷ তবে টিকেট না পাওয়ায় অনেক মধ্যবিত্তকেও দেখা যায় ট্রাকে উঠতে৷ এভাবেই ট্রাকে চড়ে ৪০০-৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পরিবারের সঙ্গে মিলিত হবেন তাঁরা৷
ছবি: DW/M. Mamun বুধবার সকাল থেকেই এ মহাসড়কের ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জমুখী লেনে যানজট দেখা যায়। রাজধানী থেকে উত্তরের পথে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ২৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব থেকে টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার ঘারিন্দা পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোর থেকে শুরু হওয়া যানজট ও বৃষ্টির কারণে ঈদযাত্রায় বিপাকে পড়েছেন ঘরমুখো মানুষ। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় ঘরমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। তারা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন। কেউ ছাতা নিয়ে, কেউ মাথায় পলিথিন পেঁচিয়ে, কেউবা আবার বৃষ্টিতে ভিজেই রওনা হয়েছেন। চন্দ্রা ত্রিমোড়ে যানজট না থাকলেও পরিবহন ও যাত্রীদের চাপে জটলা সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির মধ্যে হাজার হাজার যাত্রী অপেক্ষা করছিলেন গাড়ির জন্য।
মহাসড়কটির ৪ লেনের উন্নয়নমূলক কাজ ও ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ চলমান থাকায় কয়েকটি পয়েন্টে রাস্তা সরু হয়ে যাওয়ায় ওই পয়েন্টগুলোতে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলা ও দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার চালক ও যাত্রীদের।
পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ট্রাক, পিকআপ, মোটরসাইকেলসহ যে যেভাবে পারছেন, সেভাবেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল কবীর দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে আজ সকাল ৯টার পর থেকে যানবাহনের ব্যাপক চাপ থাকায় যানবাহন চলছে ধীর গতিতে। মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ও যানজট নিরসনে বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে ভোগান্তি বেড়েছে ঘরমুখী মানুষের। ভোগান্তি মাথায় নিয়েই পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটে চলেছেন লোকজন।
কেএম (দ্য ডেইলি স্টার, সমকাল)