1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বঙ্গবাজারে আগুনের অতীত-বর্তমান

৪ এপ্রিল ২০২৩

বঙ্গবাজারে আগুন এবারই প্রথম নয়। এর আগেও বেশ কয়েকবার আগুন লেগেছে এই মার্কেটে। গত কয়েকবছরে একাধিকবার আগুনের ঘটনা ঘটার পর সতর্কতা নোটিশ দেয়া হলেও তাতে কান দেয়নি কর্তৃপক্ষ।

ঈদের জামা-কাপড় পুড়ে যাওয়ায় যেভাবে ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তার প্রভাব পড়তে পারে ঈদের কাপড়ের ব্যবসায়ও।
ঈদের জামা-কাপড় পুড়ে যাওয়ায় যেভাবে ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তার প্রভাব পড়তে পারে ঈদের কাপড়ের ব্যবসায়ও।ছবি: Mortuza Rashed/DW

১৯৯৫ সালে বঙ্গবাজার একবার ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায়। পরবর্তীতে নতুন আদলে গড়ে তোলা হয় ওই মার্কেট। অপরিকল্পিতভাবে বাড়তে থাকে এর পরিধিও। বর্তমান বঙ্গবাজার চারটি ইউনিটে বিভক্ত- বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, গুলিস্তান ইউনিট, মহানগর ইউনিট, আদর্শ ইউনিট।

পরিদর্শক কমিটির বারবার সর্তকতা

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের একটি পরিদর্শক কমিটি ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে বঙ্গবাজারের চারটি ইউনিটকে ‘খুবই ঝুঁকিপূর্ণ' চিহ্নিত করে বাজার কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ ও নির্দেশনা দেয়।

একই বছরের মে মাসে বঙ্গবাজারের ত্রুটিগুলো তুলে ধরে মার্কেট কর্তৃপক্ষকে একটি নোটিশ দেয়া হয়, যাতে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে সুপারিশমালা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। যদিও নোটিশের ৮ মাস পর ডিসেম্বরে দ্বিতীয় দফায় বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের ৪টি ইউনিট পুনরায় পরিদর্শন করে মার্কেটের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থাকে পুনরায় ‘খুবই ঝুঁকিপূর্ণ' বলা হয়। এরপর বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) ২০০৬ এবং অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন-২০০৩ মোতাবেক বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, গুলিস্তান ইউনিট, মহানগর ইউনিট ও আদর্শ ইউনিটে অগ্নিপ্রতিরোধ, নির্বাপণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য মার্কেট কর্তৃপক্ষকে পুনরায় নোটিশ ও নির্দেশ দেওয়া হলেও কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।

গুলিস্তান ইউনিটে আগুন

২০১৮ সালের ২৪ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের গুলিস্তান ইউনিটে একবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেসময় ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট প্রায় আধাঘণ্টা চেষ্টা করে সকাল ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন লাগার পর মার্কেট কর্তৃপক্ষকে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে দুই দফা নোটিশ দেয়া হয়।

নির্বিকার মার্কেট কর্তৃপক্ষ!

বারবার সতর্ক করার পরও ২০১৮ সালে গুলিস্তান ইউনিটে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ২০১৯ সালের মার্চে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, বঙ্গবাজার মার্কেট কর্তৃপক্ষ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর পরিদর্শক কমিটির নির্দেশনা মানেনি। সরেজমিনে দেখা যায়, মার্কেটের ভেতরে গলিগুলো খুবই চাপানো। নীচতলায় ইট-সিমেন্টের তৈরি পিলার থাকলেও পুরো মার্কেটটি টিন ও কাঠের তৈরি। মার্কেটে বিভিন্ন স্পটে অগ্নিনির্বাপণে এক্সটিংগুইশার থাকলেও কোথাও স্মোক/হিট ডিটেক্টর, ফায়ার হোজরিল, পাম্প, ফায়ার অ্যালার্ম বা অন্য কোনও ব্যবস্থা ছিল না।

রাজধানীর এক হাজার ৩০৫টি অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ বিপণিবিতানের মধ্যে গুলিস্তানের বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের চারটি ইউনিটকে অধিক অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হয়। তবে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স মার্কেট কর্তৃপক্ষের দাবি করে, বঙ্গবাজারে আগুন লাগার কোনও ঝুঁকি নেই। কেন না মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে।

অথচ তখন ব্যবসায়ীরা বলেন ভিন্ন, তারা সব সময় ঝুঁকিতে ব্যবসা করেন। মার্কেটের সিকিউরিটি গার্ডরা জানলেও মার্কেট কর্তৃপক্ষ তাদেরকে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র (এক্সটিংগুইশার) চালানোর কোনও ট্রেনিং দেয়নি।

অতঃপর ভয়াল থাবা!

৪ এপ্রিল মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবাজারে লাগা ভয়াবহ আগুনে আশপাশের মার্কেটসহ বঙ্গবাজারের চারটি মার্কেট পুড়ে ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। বিমান বাহিনী, সেনা, নৌ ও বিজিবির ফায়ার ফাইটার টিম ও ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কি পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে জানা না গেলেও মার্কেটগুলোতে সব মিলিয়ে মোট দোকানের সংখ্যা ২ হাজার ৩৭০ টি। তবে ঈদের আগে ঈদের জামা-কাপড় পুড়ে যাওয়ায় যেভাবে ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তার প্রভাব পড়তে পারে ঈদের কাপড়ের ব্যবসায়ও।

জেকে/কেএম

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ