ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের একটি সংবাদ শিরোনাম হলো-মৃত ব্যক্তিকে 'দৌড়ে পালাতে' দেখেছে পুলিশ৷ ৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয় প্রতিবেদনটি৷
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক কর্মী গাজীপুরের আমিন উদ্দিন ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি মারা গেলেও গত ২৮ অক্টোবরের নাশকতার এক মামলায় স্থানীয় পুলিশ তাকে আসামী করেছে৷ পুলিশের এক উপপরিদর্শক তাকে ঘটনার সময় দৌড়াতে দেখেছিলেন৷ গত এক বছরে দেশের পত্রপত্রিকায় এমন খবর আরো প্রকাশিত হতে দেখা গেছে৷ যেমন, ‘লন্ডনে থেকেও নাশকতা মামলার আসামি প্রবাসী বিএনপি নেতা' (আজকের পত্রিকা, ৫ জুন, ২০২৩)৷ গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর বলছে, এমন গায়েবি মামলায় খোদ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বিব্রত (দেশ রূপান্তর, ১০ আগস্ট, ২০২৩)৷ প্রতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পুলিশের এমন গায়েবি মামলা, বিরোধী দল ও নির্বাচন বিরোধীদের ধড়পাকড়ের মহড়া আমরা দেখে থাকি৷ এটাকে বঙ্গীয় নির্বাচনের নাটকের অংশবিশেষ বলা যায়৷
বাংলাদেশের নির্বাচন যেমন ‘গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার সূত্র' মতে অনুষ্ঠিত হয়, তেমনি নির্বাচনের আগে কিছু নাটক অবধারিতভাবে মঞ্চস্থ হয়৷ ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে প্রয়াত সৈয়দ আবুল মকসুদ তাঁর এক কলামে লিখেছিলেন, ‘বঙ্গীয় নির্বাচন হলো নাটকবিশেষ৷ তবে একাঙ্কিকা নয়, পঞ্চাঙ্ক নাটক'৷ অর্থাৎ বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা অবধারিতভাবে পাঁচ ধরনের নাটক দেখতে পাই৷ ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে নাট্যাঙ্কের সংখ্যা আরো বেড়েছে৷ কিংস পার্টি গঠন, এক সময়ের মিত্রদের সাথে আসন ভাগাভাগির মতানৈক্য, নিজ দলের নেতাদের ডামি বা উপপ্রার্থী করা, স্বতন্ত্র প্রার্থীর হিড়িক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নাট্যাভিনয়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে৷ বিগত দুটি সংসদ নির্বাচনে আমরা দেখেছিলাম উপপ্রধান সরকারি দল জাতীয় পার্টি ও সরকারি জোটের বামদলগুলোকে নিয়ে সি-টিম গঠনের নাটক৷ সেখানে এবার দেখলাম 'খেলনা বন্দুক' খ্যাত উপপ্রার্থী দাঁড় করানোর নাটক৷ মনোনয়নপত্র জমাদান, বাতিল, আপীল নিষ্পত্তি, প্রত্যাহার ও নির্বাচনী প্রচারাভিযানে নিয়তই আমরা কিছু নাটক দেখি এবং দেখতে দেখতে অভ্যস্তও হয়ে পড়ছি৷ বঙ্গীয় নির্বাচনে এই নাট্যাভিনয়ের সাথে আইন ও বিচার ব্যবস্থার সংশ্লিষ্টতা আছে, যেখানে দেখা যায়, জোর যার আইন তার৷ কারণ নাট্যাভিনয়ের কিছু মুখ্য চরিত্র, যেমন নির্বাচন কমিশন, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে একপক্ষের দিকে ঝুঁকতে দেখা যায়৷ অথবা তারা 'চোখ থাকিতেও অন্ধের' ভূমিকা পালন করে৷
২৮ অক্টোবরের পর কিছু আলোচিত ঘটনা
২৮ অক্টোবর বিএনপি ঢাকায় মহাসমাবেশ করেছিল৷ কিন্তু শেষ করতে পারেনি৷ এরপর ঐদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধী অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ সরকারের পক্ষে যেতে রাজি হওয়ায় জামিন পান বিএনপির এক নেতা৷ বাকিরা এখনও জেলে৷
ছবি: Kamol Das
ইটপাটকেল নিক্ষেপের মামলায় কারাগারে মির্জা ফখরুল
২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ সমাপ্ত হতে পারেনি৷ এর পরদিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনের ফটক ভেঙে ইটপাটকেল নিক্ষেপের মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ মির্জা ফখরুলের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, মির্জা ফখরুল ছিলেন পল্টন থানাধীন মহাসমাবেশের মূল মঞ্চে৷ রমনা থানাধীন প্রধান বিচারপতির বাসভবনের ফটক ভাঙচুর কিংবা ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় তিনি কোনোভাবে জড়িত নন৷
ছবি: Asif Ahasanul
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার
২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও শামসুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ, বিএনপির মিডিয়া সেলের সমন্বয়ক জহির উদ্দিন স্বপন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকসহ অনেকে৷
ছবি: Asif Ahasanul
জামিন পেয়ে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে শাহজাহান ওমর
২৮ অক্টোবরের পর গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপির অন্য শীর্ষ নেতারা জামিন না পেলেও বিএনপির তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর ২৯ নভেম্বর জামিন পান৷ এরপর ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নও পেয়েছেন৷ এই ঘটনায় বিএনপি তাকে বহিষ্কার করেছে৷
ছবি: Dulal Saha
সবকিছু দ্রুততার সাথে সম্পন্ন
শাহজাহান ওমর জামিনে কারাগার থেকে বের হওয়ার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে তার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, ক্ষমতাসীন দলের তাকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়৷ এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘‘শাহজাহান ওমরের ঘটনা প্রমাণ করেছে যে, সরকার কীভাবে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে৷’’
ছবি: Dulal Saha
বিএনপি, জামায়াতের যত নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
২৮ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ৪৭৫টি মামলায় তাদের ১৮ হাজার ৯০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি৷ আর জামায়াত বলছে, ২৫ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ১০৪টি মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীর সংখ্যা দুই হাজার ৮৪৫ জন৷
ছবি: Kamol Das
গুম হওয়া ব্যক্তির কারাদণ্ড
ঢাকার বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমন ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর গুম হন বলে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে৷ সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘মায়ের ডাক’ সংগঠন গড়ে তুলেছেন৷ ২০১৩ সালের ২৫ মে একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেওয়ার মামলায় গত ২০ নভেম্বর সুমনকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷
ছবি: Arafatul Islam/DW
মৃত ব্যক্তিকে পালিয়ে যেতে দেখেছে পুলিশ!
গাজীপুরের আমিন উদ্দিন মোল্লা দুই বছর ১০ মাস আগে মারা যান৷ অথচ তাকে ২৮ অক্টোবর রাতে পুলিশের একটি ‘টহল দলকে লক্ষ্য করে ককটেল ছুড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময়’ দেখতে পান কাপাসিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সালাউদ্দিন৷ মামলার এজাহার বলছে, ঘটনাটি ঘটেছিল রাতে সাড়ে ১১টার দিকে, তারগাঁও মেডিকেল মোড় এলাকায়৷ অন্ধকার রাতে ল্যাম্পপোস্টের আলোয় সন্দেহভাজনদের ‘স্পষ্ট’ দেখতে পেয়েছিলেন বলেও জানান সালাউদ্দিন৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
উপস্থিত না থেকেও মোটরসাইকেল ভেঙেছেন!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামায়াত সমর্থক আল আমিন সরকারসহ বিএনপি-জামায়াতের ৫৭ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৩০ অক্টোবর সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে কসবা পৌর এলাকায় ‘চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর, মারধর ও দুই লাখ ছিনিয়ে নেওয়ার’ অভিযোগে মামলা হয়৷ অথচ আল আমিনের ইমিগ্রেশনের কাগজপত্রে ডেইলি স্টার দেখতে পেয়েছে, তিনি ওমরাহ পালন শেষে ৩০ অক্টোবর সকাল ৬টায় ঢাকায় নামেন৷ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব সড়কপথে প্রায় ১২০ কিলোমিটার৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
8 ছবি1 | 8
বঙ্গীয় নির্বাচনের নাট্যাঙ্কের প্রথম দৃশ্যে দুটি দিক থাকে৷ একটি হলো নির্বাচন বিরোধীদের জ্বালাও পোড়াও ও সহিংস কর্মকাণ্ড, অন্যটি হলো বিরোধী নেতাকর্মীদের ঢালাও গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে ভুতুড়ে মামলা৷ গত কয়েকটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, নির্বাচনের পরপরই এসব মামলা ডিপফ্রিজে চলে যায়৷ সরকার ও পুলিশ প্রয়োজন মতো সেসব মামলা ফ্রিজ থেকে সময়ে সময়ে বের করে৷ ইতিমধ্যে দেশের পত্রপত্রিকায় এমন মামলার বেশ কয়েকটি খবর প্রকাশিত হয়েছে৷ যেমন, ‘কারও ৪৫০, কারও ৩০০, বিএনপি নেতাদের কার বিরুদ্ধে কত মামলা (প্রথম আলো, ২০ সেপ্টেম্বর), দেড় লাখ মামলা মাথায় ৫০ লাখ নেতাকর্মী, প্রতিদিন আদালতে যেতে হচ্ছে অনেককে (কালবেলা, ২৩ সেপ্টেম্বর)৷ ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৪,৫৫১টি মামলা হয়েছিল (যুগান্তর, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮)৷ কিন্তু গত ১০ বছরে এসব মামলার বিচার হয়েছে এমন নজির খুঁজে পাওয়া কঠিন৷ অথচ ২০১৪ সালে বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস বিশ্বব্যাপী নিন্দিত হয়েছিল৷ ২০১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাসকারীদের যদি যথাযথ শাস্তির আওতায় আনা যেত তাহলে এখন যে জ্বালাও পোড়া হচ্ছে তা অনেকখানি কমে যেত৷ ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও আমরা দেখেছিলাম, ওই নির্বাচনের আগে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কিন্তু পরে সেসব মামলা পুলিশ ও আদালতের নথিতেই সীমিত থেকে ছিল৷
বাংলাদেশের নির্বাচনী নাটকের দ্বিতীয় অঙ্কটি দেখা যায় মনোনয়নপত্র জমাদান ও বাতিলের প্রক্রিয়ায়৷ মনোনয়নপত্র জমাদানের নামে মনোনয়ন শোভাযাত্রা শবযাত্রার বহরকে ছাড়িয়ে গেলেও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার হেডমাস্টার নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা থাকে কৈফিয়ত তলব করা পর্যন্তই৷ আর মনোনয়নপত্র বাতিলের যে হিড়িক সেটা দেখে সত্যিই বিস্ময় জাগে যে, বিশ্বের আর কোনো দেশের নির্বাচনে এত মনোনয়নপত্র বাতিল হয় কীনা৷ যাচাই-বাছাইকালে এবার রিটার্নিং কর্মকর্তারা ২৭১৬ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ৭৩১ জনের মনোনয়ন বাতিল করেছেন৷গাণিতিক হিসাবে ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে৷ ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ হার ছিল ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ আর ২০১৪ সালে ছিল ২১ শতাংশ৷ বরাবরের মত এখানেও নির্বাচন কমিশনের বাছাই প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে৷ রাজনৈতিক মামলাগুলোর মতো রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেকের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে- এমন অভিযোগ উঠছে৷ এ ধরনের অভিযোগ ২০১৮ সালের নির্বাচনেও উঠেছিল৷
আধুনিক যুগে জনমত যাচাই ও সরকার পরিবর্তনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো নির্বাচন৷ বিশ্বে গণতন্ত্র আছে এমন যে কোনো দেশে অবধারিতভাবে নির্দিষ্ট সময় পরপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ সরকার গঠনের জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচন হলো রাজনীতির একেবারে শেষ ধাপ৷ কিন্তু বাংলাদেশে সরকার গঠনের চিন্তাই সব রাজনৈতিক দলের মাথায় আগে আসে৷ সরকার গঠনের জন্য যতটুকু দরকার, যে কোনো উপায়ে ততটুকু নির্বাচন করাটাই এখানে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ অর্থাৎ সরকার গঠনই বাংলাদেশে মুখ্য যেখানে নির্বাচন উপলক্ষ হিসেবে কাজ করে৷ এ কারণে বাংলাদেশে রাজনীতি থাকুক আর না থাকুক, গণতন্ত্রের টিকিটি খুঁজে পাওয়া যাক বা না যাক, নির্বাচন নিয়ে ব্যাকুল হওয়ার মতো রাজনীতিকের ঘাটতি নেই৷ এক সময় বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মীয় মতাদর্শের ভিত্তিতে অনেকগুলো ধারা ছিল৷ কিন্তু এখন একটিই ধারা-সেটি হলো ক্ষমতাকেন্দ্রিক ধারা৷ যে কারণে বাংলাদেশের গণতন্ত্র অনেক আগে থেকেই সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে পড়েছে, ভেঙ্গে পড়েছে নির্বাচনী ব্যবস্থা৷ রক্ত মাংসের মানুষের গণতন্ত্র পরিণত হয়েছে মূর্তিবাদী গণতন্ত্রে৷
বাংলার ভূখণ্ডে প্রথম অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৫৪ সালে৷ চুয়ান্নর নির্বাচনের তাৎপর্য শুধু পাঁচ বছর প্রদেশ শাসনের জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না৷ বরং এই নির্বাচন বাঙালি জাতির ভবিষ্যত রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছিল৷ এই নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী নূরুল আমিন পরাজিত হলেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, সেটি নির্বাচনের প্রশাসনের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ না করার জন্য৷ এরপর আরেকটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছিল সত্তর সালে৷ সেখানেও জেনারেল ইয়াহিয়া হস্তক্ষেপ করেননি৷ আর ৫২ বছরের স্বাধীন বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যে ১১টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার মধ্যে মাত্র চারটি নির্বাচন সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ছিল৷ অন্য নির্বাচনগুলো দেশ ও দেশের বাইরে নানা প্রশ্ন এবং বিতর্ক রয়েছে৷ ১৯৯১ সালের পর থেকে (১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ছাড়া) সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দিকে আমাদের এক ধরনের ইতিবাচক অভ্যস্ততা তৈরি হচ্ছিল৷ সামরিক সরকার আমলের ‘চর দখলের নির্বাচন' কিংবা ‘ভোট ডাকাতির নির্বাচন' থেকে আমরা সরে আসতে পেরেছিলাম৷ ১৯৯১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ আগ্রহ ভরে ভোট দিত, তাদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ ছিল৷ ভোটের দিন ভোটাররা নিজেদেরকে ক্ষমতাবান ও দায়িত্বশীল মানুষ মনে করতেন৷ যেমনটা ছিল ১৯৫৪ ও ১৯৭০ সালের নির্বাচনে৷ কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, মানুষ একইসাথে রাজনীতি ও নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারিয়েছে৷ নির্বাচন এখন মানুষের কাছে একটি সার্কাসের খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ মানুষের সর্বজনীন ভোটাধিকার এখন স্বল্পজনীন ভোটাভুটিতে পরিণত হয়েছে৷
অনৈতিক ও আইনবহির্ভূত কাজ যদি বারবার হতে থাকে, তখন তাতে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে যায়৷তা নিয়ে তাদের কোনো প্রতিক্রিয়াও থাকে না৷ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান এখন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা পালনের নিমিত্ত মাত্র৷ আনুষ্ঠানিকতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখানে অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে৷ নির্বাচনের সবচেয়ে বড় অংশীদার জনগণের সম্পৃক্ততা নেই বললেই চলে৷ বঙ্গীয় নির্বাচনে একই ধরনের নাট্যাঙ্কগুলো বারবার দৃশ্যায়িত হওয়ায় নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে৷ দেশে যে নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক রাজনীতির মূল নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়৷ নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী সে কথা কেতাবে থাকলেও বাস্তবে মানুষ এর প্রতিফলন দেখছে না৷ বিচার একটি রাজনীতি-নিরপেক্ষ বিষয় হওয়ায় যে কোনো বিচারকাজের সাথে সংশ্লিষ্টদের চোখ বন্ধ রেখে ন্যায়দণ্ড নিশ্চিত করার জন্য কাজ করতে হয়৷ রাজনৈতিক অপরাধ ও ঘটনাগুলোর বিচার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হলেও কি ধরণের পরিণতি হতে পারে সেটি ভারতীয় লেখক এ জি নূরানী'র ‘ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল ট্রায়ালস: ১৭৫৭-১৯৪৭'-এ আমরা দেখতে পাই৷
বাংলাদেশে নির্বাচনী আওয়াজ উঠলে যেনতেনভাবে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সংস্কৃতি আনুষ্ঠানিক রূপ পেয়ে যাচ্ছে৷ সাথে খুবই অযাচিতভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠছে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর অক্ষমতা ও পক্ষপাতিত্ব৷ বঙ্গীয় রাজনীতিতে নির্বাচনী নাট্যাঙ্কগুলো নতুন কিছু মাত্রা যোগ করছে বটে, কিন্তু তা রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোকে দুর্বল করে দিচ্ছে৷মানুষের যেমন চোখ, কান, নাকসহ নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থাকে তেমনি রাষ্ট্রের নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগসহ অনেক সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান থাকে৷ এগুলো যদি ঠিকমত কাজ করতে না পারে তাহলে রাজনীতিতে নেমে আসে তুষারযুগ, গণতন্ত্র চলে জগাখিচুড়ির মতো৷
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
বাংলাদেশের প্রথম প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন বিচারপতি এম ইদ্রিস৷ বর্তমানে কাজী হাবিবুল আউয়াল৷ বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ের নির্বাচন কমিশনগুলো সম্পর্কে জানুন ছবিঘরে...
ছবি: Asif Mahmud Ove
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচন কমিশন
বাংলাদেশের প্রথম প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন বিচারপতি এম ইদ্রিস৷ ১৯৭২ সালের ৭ জুলাই থেকে ১৯৭৭ সালের ৭ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি ৷ ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে এই কমিশন৷ সে সময় রাষ্ট্রপতি ছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। নির্বাচনে ২৯৩ আসন জিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। জাসদ ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ একটি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পাঁচটি আসন পায়।
ছবি: AP
নুরুল ইসলাম কমিশন
বিচারপতি একেএম নুরুল ইসলাম বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদে দায়িত্ব পালন করা সিইসি৷ ১৯৭৭ সালের ৮ জুলাই যখন দায়িত্ব নেন, তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান৷ প্রায় আট বছর দায়িত্ব পালনের পর অব্যাহতি নেন ১৯৮৫ সালের ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি৷ ৷ ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন হয় তার তত্ত্বাবধানে। বিএনপি পায় ২০৭ আসন, আবদুল মালেক উকিলের আওয়ামী লীগ ৩৯ আসন৷
ছবি: imago stock&people
তিন রাষ্ট্রপতির কমিশন
পরপর দুই সামরিক শাসকের অধীনে সিইসির দায়িত্ব পালন করেছেন নুরুল ইসলাম৷ ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জিয়াউর রহমান নিহত হলে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার ১৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ‘সামরিক অভ্যুত্থানে’ ক্ষমতায় আসেন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। পরবর্তীতে এরশাদের সরকারে আইনমন্ত্রী ও পরে উপ রাষ্ট্রপতিও হয়েছিলেন নুরুল ইসলাম৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Rahman
মসউদ কমিশন
বিচারপতি চৌধুরী এটিএম মসউদ দায়িত্ব নেন ১৯৮৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি৷ তিনি পূর্ণ পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করেন ১৯৯০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি৷ এরশাদের আমলে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুটো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এই কমিশনের অধীনে৷ তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আট দলীয় জোট গেলেও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সাত দলীয় জোট তা বর্জন করে। চতুর্থ জাতীয় নির্বাচন দুই জোটই বর্জন করে৷
ছবি: DW
সুলতান কমিশন
বিচারপতি সুলতান হোসেন খান ১৯৯০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ তবে মাত্র ১০ মাস দায়িত্বে থেকে কোনো জাতীয় নির্বাচন না করেই ২৪ ডিসেম্বর সরে যেতে বাধ্য হন এরশাদের নিয়োগ পাওয়া এই সিইসি৷ গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হলে প্রধান দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক মতৈক্যে অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ৷ এরপর তিনি ইসি পুনর্গঠন করেন৷
ছবি: Mustafiz Mamun
রউফ কমিশন
পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথম তিন সদস্যের ইসি পায় বাংলাদেশ। বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ সিইসি হিসেবে নিযু্ক্ত হন৷ ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করে তার কমিশন৷ তিনি ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন৷ রউফ কমিশন নির্বাচনি আইনে ব্যাপক সংস্কার আনে, জারি করা হয় নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ। ১৯৯৪ সালে মাগুরা উপ নির্বাচন নিয়ে বিতর্কিত হন সিইসি রউফ।
ছবি: AP
সাদেক কমিশন
বিচারপতি একেএম সাদেক সিইসি পদে নিযুক্ত হন ১৯৯৫ সালের ২৭ এপ্রিল৷ ১৯৯৬ সালে এই কমিশনের অধীনেই হয় বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারির ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলগুলো ভোট বর্জন করে। বিএনপি পায় ২৭৮ আসন৷ দেড় মাস মেয়াদী সংসদের একমাত্র অধিবেশনে ত্রয়োদশ সংশোধনে সংবিধানে যুক্ত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা৷ এই ইসিই নির্বাচনি আচরণবিধি চালু করে৷
ছবি: AP
হেনা কমিশন
১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে অস্থিরতার মধ্যে সাবেক আমলা মোহাম্মদ আবু হেনা ১৯৯৬ সালের ৯ এপ্রিল সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ এই প্রথম কোনো আমলা এই পদে নিয়োগ পান৷ তার অধীনে ১৯৯৬ সালের জুনে সপ্তম জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ দলীয় সরকারের অধীনে ১৯৯৯ সালে টাঙ্গাইল (সখিপুর-বাসাইল) উপনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির জন্য সমালোচিত হয় তার কমিশন৷ নির্বাচনের গেজেট না করেই ২০০০ সালের ৮ মে দায়িত্ব ছাড়েন আবু হেনা৷
ছবি: Mustafiz Mamun
সাঈদ কমিশন
রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মেয়াদপূর্তির পর আওয়ামী লীগ সরকার ওই দায়িত্বে আনে একানব্বইয়ের নির্বচনের সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে থাকা শাহাবুদ্দিন আহমেদকে। আবু হেনা সরে যাওয়ার পর সিইসি হন সাবেক আমলা এম এ সাঈদ৷ বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সাঈদ কমিশনের অধীনেই ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন হয়।
ছবি: Mustafiz Mamun
আজিজ কমিশন
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত কমিশনগুলোর একটি আজিজ কমিশন৷ বিচারপতি এমএ আজিজ ২০০৫ সালের ২২ মে সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ ব্যাপক রাজনৈতিক টানাপড়েনের সময় ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নবম জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন৷ পরে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুদ্দীন আহমদ তফসিল বাতিল করেন৷ ২১ জানুয়ারি কোনো জাতীয় নির্বাচন আয়োজন না করেই পদত্যাগ করেন এম এ আজিজ৷
ছবি: DW
শামসুল হুদা কমিশন
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এমএ আজিজের উত্তরসূরী হন এটিএম শামসুল হুদা৷ তার কমিশন ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নবম জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করে৷ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন হয় ওই কমিশনের সময়েই। সংলাপ করে নির্বাচনি আইন সংস্কার করা হয়। চালু হয় রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের নিয়ম ও ইভিএম। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩০, বিএনপি ৩০ ও জাতীয় পার্টি ২৭ আসন পায়।
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
রকিবুদ্দিন কমিশন
ইসি পুনর্গঠনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের পর সার্চ কমিটি গঠন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। ২০১২ সালের ০৯ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেন সাবেক আমলা কাজী রকিবুদ্দিন আহমদ৷ সংসদে বাতিল হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা৷ ক্ষমতাসীন দলের অধীনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়৷ বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দলের বর্জন করা নির্বাচনে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন৷
ছবি: DW
নুরুল হুদা কমিশন
এবারও সংলাপ আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবুল হামিদ৷ সিইসি করা হয় সাবেক আমলা কে এম নুরুল হুদাকে৷ দ্বাদশ ইসির যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের নতুন কার্যালয় নির্বাচন ভবনে। তার অধীনে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ পাওয়ায় যায়৷ বর্তমান কমিশনের মেয়াদ রয়েছে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।