নাগরিক জীবনে হাঁটার সুযোগ ক্রমশই কমছে৷ অথচ সুস্থ থাকতে হলে সবার, বিশেষ করে বয়োজ্যেষ্ঠদের হাঁটাহাঁটির সুযোগ দরকার৷ এ নিয়ে গবেষণা করে বিশ্বসেরা তরুণ বিজ্ঞানীর পুরস্কার পাচ্ছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. মনির মনিরুজ্জামান৷
বিজ্ঞাপন
প্রতিবছরই যাতায়াত ব্যবস্থা বিষয়ক গবেষণাকর্মে বিশেষ অবদানের জন্য ‘ইয়ং রিসার্চার অফ দ্য ইয়ার', অর্থাৎ বর্ষসেরা তরুণ বিজ্ঞানীর পুরস্কার দিয়ে থাকে ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট ফোরাম (আইটিএফ)৷ এ বছর এই পুরষ্কার পাচ্ছেন ক্যানাডার ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টোর পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ড. মনির মনিরুজ্জামান৷
ক্যানাডার আইল্যান্ড অফ মন্ট্রিলে প্রবীনদের হাঁটার অভ্যাসের হার পর্যবেক্ষণ করেই মূলত গবেষণাটি করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ বিজ্ঞানী ড. মনির মনিরুজ্জামান৷ গবেষণা শেষে বয়স্কদের হাঁটার সুযোগ বাড়ানোর জন্য শহরাঞ্চলে সুপরিকল্পিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কিছু পরামর্শও দিয়েছেন তিনি৷
২০১৬ সালের ‘ইয়ং রিসার্চার অফ দ্য ইয়ার' হিসেবে ড. মনির মনিরুজ্জামানের নাম ঘোষণার পর আইটিএফ-এর সেক্রেটারি জেনারেল হোসে ভিগাস বলেন, ‘‘(ড. মনিরুজ্জামানের) এই অভিনব কাজটির মাধ্যমে বৈজ্ঞানিকভাবে দেখানো হয়েছে যে কিছু রাস্তার পরিবেশ বয়স্ক মানুষদের জন্য বেশি আকর্ষণীয়৷ এবং এমন রাস্তাঘাট থাকলে বয়োবৃদ্ধরা সমাজের সঙ্গে অনেক বেশি সম্পৃক্ত থাকতে পারেন৷ ''
আগামী ১৯ মে জার্মানির লাইপসিগ শহরে ড. মনির মনিরুজ্জামানের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হবে৷ বিশেষ প্রশংসাপত্রের সঙ্গে ৫ হাজার ইউরোর অর্থ পুরস্কারও দেয়া হবে তাঁকে৷
এসিবি/ডিজি (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের দারুণ উদ্ভাবন!
গাড়ি চালানোর সময় চালক ঠিক অবস্থায় আছেন কিনা সেটা জানিয়ে দেবে একটি ডিভাইস৷ সেই পদ্ধতিই উদ্ভাবন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের নেতৃত্বাধীন একদল হবু বিজ্ঞানী৷
ছবি: Abdur Razzaque
সড়ক দুর্ঘটনা কমানো
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের তত্ত্বাবধানে ঐ বিভাগের চার শিক্ষার্থী একটি ডিভাইস উদ্ভাবন করেছেন৷ পরামর্শক হিসেবে ছিলেন ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, তড়িৎ ও যোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগের লেকচারার মো. এনামুল হক চৌধুরী৷ এর মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব বলে আশা করছেন ড. রাজ্জাক৷
ছবি: Abdur Razzaque
ডিভাইসটি যা করবে
গাড়ি চালানোর সময় চালক মোবাইলে কথা বললে, এসএমএস করায় ব্যস্ত হলে কিংবা চা, কফি খেলে তাকে সতর্ক করে দেবে৷ এছাড়া চালক সামনের রাস্তার দিকে না তাকিয়ে পাশের বিলবোর্ডের দিকে নজর দিচ্ছে কিনা সেটাও খেয়াল রাখবে এই ডিভাইস৷
ছবি: Abdur Razzaque
তাপমাত্রা, রক্তচাপ পরিমাপ
মদ্যপ অবস্থায় আছে কিনা, তার ঘুম ঘুম ভাব হচ্ছে কিনা, শরীরে তাপমাত্রা, হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ ঠিক আছে কিনা, অর্থাৎ চালক সুস্থ আছে কিনা, সে বিষয়গুলোও খেয়াল রাখা যাবে এই ডিভাইসের মাধ্যমে৷
ছবি: Abdur Razzaque
কয়েকটি সেন্সর
প্রতিটি বিষয় খেয়াল রাখার জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা সেন্সর৷ তবে সব কাজ যেন একটা মাত্র ডিভাইস দিয়ে করা যায় সে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান ড. রাজ্জাক৷
ছবি: Abdur Razzaque
দাম ২৫-৩০ হাজার টাকা
বর্তমানে পরিপূর্ণ ডিভাইসটি ব্যবহার করতে চাইলে খরচ পড়বে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার মতো৷ তবে আরও গবেষণার মাধ্যমে এর মূল্যটা কমানো সম্ভব৷
ছবি: FARJANA K. GODHULY/AFP/Getty Images
সেমিনারে উপস্থাপন
ড. রাজ্জাক জানান, ইতিমধ্যে সরকার, বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন পরিবহণ মালিকদের সামনে ডিভাইসটি তুলে ধরা হয়েছে৷ আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সচিব এটার প্রতি আগ্রহী হয়ে একে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন৷ এছাড়া বেসরকারি সোহাগ পরিবহণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডিভাইসটি বাস্তবে কতটা কার্যকর হচ্ছে তা পরীক্ষা করে দেখতে এবং পরীক্ষামূলকভাবে এটা চালু করার জন্য যে আর্থিক সহায়তা লাগবে সেটা দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন৷
ছবি: Abdur Razzaque
যেভাবে পরিকল্পনার শুরু
ড. রাজ্জাক বলেন, তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীর, ক্রিকেটার মানজার রানার মতো ব্যক্তিত্বদের সড়ক দুর্ঘটনায় হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তাঁকে ভাবিয়ে তুলেছিল৷ নিজের কাজের ক্ষেত্র থেকে এ ব্যাপারে কিছু করা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবতে গিয়েই তাঁর মাথায় এই ডিভাইসের পরিকল্পনা আসে বলে জানান তিনি৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/GettyImages
সহায়তা
এই ডিভাইস তৈরি প্রকল্প এগিয়ে নিতে অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক ‘ইনফরমেশন সোসাইটি ইনোভেশন ফান্ড’-এর কাছ থেকে ৩০ হাজার ডলার অস্ট্রেলীয় ডলার পেয়েছিলেন ড. রাজ্জাক ও তাঁর দল৷