ইউরোপে শুরু হয়ে গেছে বড়দিন আর নববর্ষের ছুটির আমেজ৷ তাই অনেকেই এই দুই উপলক্ষ্যের মাঝের সময়টা ছুটি নিয়ে আত্মীয়স্বজন অথবা বন্ধ-বান্ধবদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়ছেন৷ বিনিয়োগকারীরাও এর বাইরে নন৷
বিজ্ঞাপন
ফলে এই সময়টায় ইউরোপের পুঁজিবাজারে লেনদেন কম হবে বলে ধারণা বাজার বিশ্লেষকদের৷ বড়দিন উপলক্ষ্যে ফ্রাংকফুর্ট, লন্ডন আর প্যারিসের মার্কেট বৃহস্পতি ও শুক্রবার বন্ধ থাকবে৷ বুধবার দুপুরের পর বন্ধ হয়ে যাবে লন্ডন ও প্যারিস মার্কেট৷ ফ্রাংকফুর্টের বাজার বন্ধ হয়ে গেছে মঙ্গলবার লেনদেনের পরই৷
বড়দিন ছাড়াও আর কদিন বাদেই রয়েছে নববর্ষ৷ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী এই সময়ে লম্বা ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা করছেন বলে জানাচ্ছে বার্তা সংস্থাগুলো৷
বড়দিনে বার্লিনে আসার দশটা কারণ
বার্লিন এক প্রাণোচ্ছল শহর; এখানে না আছে দিন, না আছে রাত৷ বিশ্ব বার্লিনকে জানে এক কোলাহলমুখর, কর্মব্যস্ত মহানগরী হিসেবে৷ কিন্তু বড়দিন এলে বার্লিন যেন কোনো জাদুতে এক মায়াময় শহর হয়ে ওঠে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Manfred Krause
স্প্যানডাও-তে পুরনো বার্লিন
বার্লিনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বড়দিনের বাজারগুলোর মধ্যে পড়বে স্পানডাও-এর প্রাচীন অংশে আয়োজিত প্রথাগত ক্রিসমাস মার্কেটটি৷ প্রায় আড়াইশো দোকানি চারটি মহাদেশের খাদ্য ও সামগ্রী বিক্রয় করে থাকেন স্পানডাও-এর ঐতিহাসিক রাজপথের ধারে৷ এখানে সব কিছু পাওয়া যায়: স্ক্যান্ডিনেভিয়ার আগুনে সেঁকা স্যালমন মাছ থেকে শুরু করে ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর ইউক্রেনীয় অলংকরণ৷ অবশ্যই ‘গ্লু ওয়াইন’ বা মশলাদার গরম সুরা বাদ থাকে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Bernd Settnik
শার্লটেনবুর্গ প্রাসাদে রাজকীয় পরিবেশ
ব্যারোক স্থাপত্যের প্রাসাদটির সামনেই বড়দিনের বাজার৷ সেখানে বিক্রি হয় উচ্চমানের কাঠের আসবাব ও খেলনা, যেমন দোলনা অথবা নাগরদোলা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Bernd von Jutrczenka
পশ্চিম বার্লিনে বড়দিনের আগমন
কাইজার উইলহেল্ম মেমোরিয়াল চার্চের সামনে বড়দিনের বাজার – কিন্তু তার ঠিক উল্টো দিকেই ‘সিটি ওয়েস্ট’ নামধারী এক সুবিশাল শপিং সেন্টার, যেখানে বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ ছাড়া ‘বিকিনি বার্লিন’ নামধারী এক অত্যাধুনিক ‘ফ্যাশন হাউস’ আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Jörg Carstensen
ঝকমকে কুরফ্যুর্স্টেনডাম
পশ্চিম বার্লিনের এই মুখ্য অ্যাভিনিউটিকে লোকে ভালোবেসে ডাকে ‘কু-ডাম’৷ কু-ডামের গাছগুলো পরীদের আলোকসজ্জায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে৷ পথচারীদের স্বাগত জানায় বার্লিনের প্রতীক ‘বাডি বেয়ার’ এবং রেইনডিয়ার-এ চড়া স্যান্টা ক্লজের অতিকায় সব ডিসপ্লে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Kay Nietfeld
চ্যান্সেলরের জন্য তিনটি ক্রিসমাস ট্রি
বড়দিনে বসবার ঘরে ক্রিসমাস ট্রি রাখা এবং সাজানোটা একটি বহু পুরনো জার্মান প্রথা৷ খোদ জার্মান চ্যান্সেলরও সে প্রথার বহির্ভূত নন৷ বড়দিনের এক মাস আগে থেকে একটি ১৫ মিটার উচ্চতার আলোকোজ্জ্বল ক্রিসমাস ট্রি শোভা পায় চ্যান্সেলরের অফিসের সামনে৷ অভিসভবনের ভিতরে থাকে আরো দু’টি ক্রিসমাস ট্রি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Rainer Jensen
‘উন্টার ডেন লিন্ডেন’
বার্লিনের দ্বিতীয় প্রখ্যাততম রাজপথটির আলোকসজ্জাও কিছু কম যায় না: ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণ থেকে হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয় অবধি ২০০টি লেবুগাছকে আলোকিত করতে ৬০ কিলোমিটার ‘ফেয়ারি লাইটস’, মানে টুনি বালব লাগে৷ এই আলোকসজ্জা থাকে ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Stephanie Pilick
তারার আলো নয়, আলোর তারা
সন্ধ্যা হবার পর সোনি সেন্টার থেকে পটসডামার প্লাৎস-এর দিকে যেতে হলে চোখে পড়বে আলোর তারা৷ তবে বড়দিনের সময় তা-তে আরো এক লাখ আলো যুক্ত হয়: স্বর্ণময় থেকে ঝলকানো নীল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Soeren Stache
‘জনদার্মেনমার্ক্ট’-এ ক্রিসমাস
এই ‘পুলিশবাজারের’ ক্রিসমাস মার্কেটটি খুবই ঐতিহ্যবাহী৷ দু’টি ক্যাথিড্রাল এবং একটি ব্যারোক স্থাপত্যের কনসার্ট হলের কাছে আয়োজিত এই বড়দিনের বাজারে নানা ধরনের খাবার-দাবার ও কুটিরশিল্প ছাড়া একটি স্টেজ শো’রও ব্যবস্থা থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Maurizio Gambarini
আলেক্সান্ডারপ্লাৎস-এর মেলা
দুর্ধর্ষ মজা আর রোমহর্ষক কাণ্ডকারখানার জন্য ‘আলেক্স’-এর টিভি টাওয়ারের কাছে বড়দিনের বাজারটিতে যেতে হবে৷ এখানে প্রধানত তরুণ জনতা আসে আইস স্কেটিং, নাগরদোলা, ব়্যাফল ইত্যাদির আকর্ষণে৷ অথবা ৬০ মিটার উঁচু ফেরিস হুইলটিতে চড়ে শহরের দৃশ্য দেখা যেতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Xamax
ক্যোপেনিক-এ ক্রিসমাস ক্যারল
২০০৩ সাল থেকে এই প্রথা শুরু হয়েছে: সে’বছর প্রায় ৯০ জন মানুষ ইউনিয়ন বার্লিন ফুটবল ক্লাবের স্টেডিয়ামে সম্মিলিত হয়ে বড়দিনের গানে গলা মেলান৷ ২০১৩ সালে ক্যোপেনিক-এর স্টেডিয়ামে সমবেত হয়েছিলেন ২৭ হাজারের বেশি ক্যারল গায়ক৷ এ বছরের ২৩শে ডিসেম্বরও হাজার হাজার মানুষ ক্যারল গাইতে এই স্টেডিয়ামে আসবেন, বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Manfred Krause
10 ছবি1 | 10
এদিকে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইউরোপের পুঁজিবাজারের অবস্থা ভালো ছিল৷ কারণ তেলের মূল্য কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে৷ এছাড়া ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেন সরকারি বন্ড কেনে তার পক্ষে আরও সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে৷ মুমূর্ষ অবস্থায় থাকা ইউরোজোনের অর্থনীতিকে চাঙা করতে ইসিবি সরকারি বন্ড কিনতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে গত কয়েকদিন ধরে৷ এর সমর্থনে কথা বলেছেন ইসিবি-র নীতি নির্ধারকদের কেউ কেউ৷
সবশেষ এর পক্ষে কথা বলেছেন ইসিবি-র আরেক নীতি নির্ধারক এবং বেলজিয়ামের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর লুক ক্যোনে৷ তিনি মনে করেন, নিস্তেজ হয়ে পড়া ইউরোজোনের অর্থনীতিকে সতেজ করতে সরকারি বন্ড কেনা একটি ভালো উপায় হতে পারে৷