দোষের মধ্যে তাঁরা অতি-বড়লোকদের ওপর করের পরিমাণ বাড়াতে বলেছিলেন। সেস বসাতে বলেছিলেন তাঁদের ওপর, যাঁরা প্রতি বছর ১০ লাখ টাকার বেশি বেতন পান। তার জন্য শাস্তির মুখে সরকারি অফিসাররা।
বিজ্ঞাপন
করোনার বাজারে সরকার কী ভাবে অর্থনৈতিক সংকটকাটাতে পারে এবং গরিব মানুষের উপকার করতে পারে, তার উপায় বার করার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় রাজস্ব বিভাগের ৫০ জন তরুণ আইআরএস অফিসার মিলে একটি রিপোর্ট তৈরি করে ফেলেছিলেন। এই উদ্যোগের ফল হলো, তিনজন সিনিয়ার অফিরসারকে চার্জশিট করা হয়েছে। বাকিদের মাথায় শাস্তির খাঁড়া ঝুলছে। মোদী সরকার যাবতীয় সুপারিশ খারিজ করে বলেছে, ওই অফিসারদের রিপোর্ট বানাতে বলা হয়নি। তাই রিপোর্টের সুপারিশ রূপায়ণের প্রশ্নই ওঠে না। আর পুরো ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
রিপোর্টটি তৈরি করে আইআরএসের তরুণ অফিসাররা তা তুলে দিয়েছিলেন সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস বা সিবিডিটির চেয়ারম্যানের হাতে। সরকারি সূত্রা জানাচ্ছে, তাঁরা যে নিয়মবিরুদ্ধ কাজটা করেছেন, সেটা হলো, রিপোর্টটি সংবাদমাধ্যমের কাছে ফাঁস করে দেওয়া। সার্ভিস রুল অনুসারে এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এই সংকটের বাজারে এই অপরাধটুকু উপেক্ষা করে তারা যে সুপারিশ করেছে, তা রূপায়ণের কথা কি সরকার ভাবতে পারতো না? তা হলে গরিবদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে তাঁদের অর্থাভাব অনেকটাই কমতো। কেন তা করলো না সরকার? সরকার কি অতি বড়লোকদের ওপর এই সংকট সময়েও কর বসানোর ক্ষেত্রে নীতিগতভাবে বিরোধী?
অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে কোন দেশ কী করছে
করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে৷ প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হওয়াসহ আছে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান হারানোর শঙ্কা৷ তবে উন্নত দেশগুলো এই পরিস্থিতি সামলাতে বিভিন্ন আর্থিক ব্যবস্থাও নিচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Jordan
জার্মানি
সব ধরনের কোম্পানি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ১১০ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে জার্মান সরকার৷ দুর্যোগকালীন এই পরিস্থিতি সামাল দিতে মোট ৮০ হাজার কোটি ডলারের তহবিল রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷ কোম্পানিগুলোর আর্থিক স্বচ্ছলতা বজায় রাখতে দেয়া হচ্ছে কর-ছাড়৷ দেরিতে ঋণ পরিশোধে গুণতে হবে না জরিমানা৷ প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটকে দেয়া হবে সাড়ে ১৪ কোটি ইউরো৷
অর্থনৈতিক ধাক্কা সামাল দিতে ২১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের তহবিল ঘোষণা করেছে স্পেন৷ ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানি, কর্মী আর আর্থিক অস্বচ্ছলদের সুরক্ষায় এই অর্থ ব্যয় করা হবে৷ এর মধ্যে শুধু সামাজিক নিরাপত্তায় খরচ করা হবে প্রায় ৬৪ কোটি ডলার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AAB. Akbulut
পর্তুগাল
১৮ মার্চ থেকে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পর্তুগাল৷ এখন পর্যন্ত এক হাজার কোটি ডলারের প্রণোদনা ‘প্যাকেজ’ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার৷ এরমধ্যে ৩২২ কোটি ডলার পর্যটন, বস্ত্র, কাঠসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ঋণ সহায়তা হিসেবে দেয়া হবে৷ ৫৩৬ কোটি ডলার আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে কর সুবিধা ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে৷
ছবি: Reuters/M. F. Lopes
ফ্রান্স
প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ডলার সহায়তা তহবিলের প্রকল্প হাতে নিয়েছে ফ্রান্স সরকার৷ এর বড় একটি অংশ দেয়া হবে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে৷ রেস্টুরেন্ট, দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং কোয়ারান্টিনের কারণে যেসব কর্মী কাজে যোগ দিতে পারছেন না, তাদের জন্য কয়কশ’ কোটি ডলার ব্যয়ের ঘোষণা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে৷
ছবি: Getty Images/AFP/L. Marin
যুক্তরাজ্য
করোনা ভাইরাসের কারণে ১৪৫০ কোটি ডলারের জরুরি আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য৷ জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা এবং সমস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকসান মেটাতে এই টাকা দেয়া হবে৷ পাশাপাশি খুচরা ব্যবসা এবং পর্যটন শিল্পের জন্য ৪০ হাজার কোটি ডলারের ঋণ তহবিলও রাখা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/empics/PA Video
যুক্তরাষ্ট্র
সম্প্রতি ১০ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের একটি সহায়তা প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে সেনেট৷ স্বাস্থ্য বিমা ছাড়াই করোনার পরীক্ষা করানো, স্কুলগামী শিশুদের জন্য খাবার সরবরাহ, কর্মীদের ১০ দিনের অসুস্থতাজনিত এবং কিছু ক্ষেত্রে ১২ সপ্তাহের বেতনসহ ছুটির পেছনে এই টাকা ব্যয় হবে৷ পাশাপাশি এক ট্রিলিয়ন ডলারের আরেকটি প্রণোদনা প্যকেজের জন্য আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন৷
ছবি: Reuters/L. Millis
ক্যানাডা
ক্যানাডার জন্য পাঁচ হাজার ৬৪০ কোটি ডলারের সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো৷ এই অর্থ দেশটির জিডিপির তিন শতাংশ ৷ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর-ছাড়, কর্মীদের বেতন, সমাজে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ব্যয় হবে এই অর্থ৷
ছবি: picture-alliance/empics/M. Sudoma
অস্ট্রেলিয়া
১১০০ কোটি ডলারের আর্থিক প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার৷ ৬৫ লাখ নিম্ন আয়ের মানুষকে এককালীন ৪৫১ ডলার করে দেয়া হবে এই তহবিল থেকে৷ পাশাপাশি এক লাখ ২০ হাজার শিক্ষানবিশ চাকুরিজীবী এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতেও খরচ করা হবে এখান থেকে৷ অন্যদিকে অর্থনীতিকে সচল রাখতে ঋণের সুদহার কমিয়ে দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Carrett
তুরস্ক
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ১৫৪০ কোটি ডলারের ব্যয় পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে তুরস্ক৷ ‘অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা’ শিরোনামের এই প্যাকেজটির আওতায় মোট ২১ টি খাতে খরচ করা হবে৷ এর মধ্যে অবসরকালীন ভাতা বৃদ্ধি, ব্যবসা সহযোগিতা, মূল্য সংযোজন কর হ্রাসসহ খুচরা, ইস্পাত, গাড়ি ও পর্যটন শিল্পে আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B. Ozbilici
9 ছবি1 | 9
রিপোর্টে কী বলেছিলেন ওই অফিসাররা? তাঁদের প্রস্তাব ছিলো, যে সব বড়লোকের বার্ষিক আয় বছরে এক কোটি টাকার বেশি, তাঁদের আয়করের পরিমাণ ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হোক। আর যাঁদের বছরে আয় পাঁচ কোটির বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রে সম্পদ কর আবার চালু করা হোক। তবে বরাবরের জন্য নয়। তিন থেকে ছয় মাসের জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হোক। ঘটনা হলো, দেশের এক শতাংশ অতি-বড়লোকরা ভারতের ৫২ শতাংশ সম্পদের মালিক। আর ৬০ ভাগ সাধারণ মানুষের কাছে আছে মাত্র ৫ শতাংশ সম্পদ। তাই সম্ভবত ৬০ শতাংশ লোককে সাহায্য করার জন্য এক শতাংশ লোকের ওপর কিছুটা বোঝা চাপাবার কথা ভেবেছিলেন ওই তরুণ অফিসাররা। তাঁদের আরও সুপারিশ ছিলো, যাঁদের বছরে আয় ১০ লাখ টাকার ওপরে, তাঁদের করোনা সেস দিতে হবে। এই দুইটি ব্যবস্থা নিলে সরকার ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলতে পারত। তাছাড়া যে সব বহুজাতিক কোম্পানির লাভ এক থেকে ১০ কোটি, তাদের দুই শতাংশ হারে এবং তার বেশি লাভের কোম্পানিগুলির ওপরে ৫ শতাংশ হারে সারচার্জ বসানোর কথাও তাঁরা বলেছিলেন।
বাজারেও করোনার আঘাত
করোনা ভাইরাসের প্রভাব স্বাস্থ্য থেকে এসে পড়েছে বাজারেও৷ কীভাবে সামলাচ্ছে তারা করোনার দাপট, জানুন ছবিঘরে...
ছবি: VLADIMIR MARKOV via REUTERS
বাড়ছে প্রতিরোধক বিক্রি
করোনা ভাইরাস ছড়ানোর মতোই দ্রুতগতিতে বাড়ছে জীবাণুর ভয়৷ সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নানা ধরনের জীবাণু-প্রতিরোধকের চাহিদা৷ কেমিক্যাল সংস্থাগুলির বিভিন্ন পণ্যের বিক্রিও বাড়ছে৷ কিন্তু পণ্যবাহী জাহাজ চীনের সীমান্তে আটকা থাকার ফলে নতুন মাল পৌঁছতে পারছে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Pleul
রেস্টুরেন্টে ভাঁটা
কেএফসি, পিৎজা হাট বা ম্যাকডোনাল্ডসের মতো ফাস্ট ফুড চেনগুলির রমরমা করোনা ভাইরাসের কারণে আগের মতো নেই৷ বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে এই সব দোকান৷ অনলাইনে বিক্রিও বন্ধ৷ অন্যান্য অনলাইন খাবার অর্ডার করার অ্যাপও এখন আর চীনে খাবার সরবরাহ করছে না৷
ছবি: picture-alliancedpa/imaginechina/Y. Xuan
খেলার সামগ্রীতেও করোনার প্রভাব
বিশ্বখ্যাত খেলার সামগ্রীর ব্র্যান্ড অ্যাডিডাস ও নাইকি সাময়িকভাবে চীনে তাদের বেশির ভাগ দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়েছে৷ শুধু তাই নয়, যেসব দোকানে নাইকি বা অ্যাডিডাসের পণ্য বিক্রি হয়, সেখানেও চলছে কড়া নজরদারি, যাতে করে বিক্রি না হওয়া পণ্যের মাধ্যমে জীবাণু আরো না ছড়ায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Stringer/Imaginechina
বিপদের ঝুঁকিতে গাড়িপ্রস্তুতকারীরা
জার্মান গাড়ি শিল্পের উপর এই ভাইরাসের ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রভাব থাকতে পারে, মনে করছেন গাড়ি শিল্প বিশেষজ্ঞ ফার্ডিনান্ড ডুটেনহ্যোফার৷ বিখ্যাত গাড়িপ্রস্তুতকারী সংস্থা ফক্সভাগেনের মোট ৩৩টি কারখ্না রয়েছে চীনে, যার মধ্যে বেশ কটি আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে৷ গাড়ি প্রস্তুতের কাজে বাধা আসলেও ডেলিভারির কাজ ঠিকই চলছে এখনও৷
ছবি: Imago Images/Xinhua
সাবধানী হন্ডা
করোনা ভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র উহান অঞ্চলে জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা হন্ডার তিনটি কারখানা আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে৷ এখনও যদিও স্পষ্ট নয় যে কবে থেকে কাজ আবার শুরু হবে, কিন্তু তবুও সাবধানে ফাঁকি রাখতে চান না হন্ডা কর্মকর্তারা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
চাহিদামত পণ্য নেই বাজারে
বর্তমান বিশ্বে এক দেশের বাজারের সাথে আরেক দেশের শিল্প খুব গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট থাকায় হ্যুনডাই বা হন্ডার মতো সংস্থার প্রস্তুত বন্ধ থাকার প্রভাব পড়ছে বিশ্বের বাজারেও৷ দক্ষিণ কোরিয়ায় এই সপ্তাহেও বন্ধ থাকবে হ্যুনডাই গাড়ির প্রস্তুতের কাজ৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই ধারা অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রেও দেখা যাবে৷
ছবি: Reuters/Aly Song
ফ্রাংকফুর্টেও করোনার প্রভাব
চীনের সাথে একাধিক দেশ ইতিমধ্যে বন্ধ করেছে বিমান পরিষেবা৷ এই বন্ধের ফলে বহু ব্যবসায়ী প্রাংকফুর্টের বিখ্যাত ‘আম্বিয়েন্টে’ শিল্পমেলায় তাদের পসরা নিয়ে আসতে পরেননি৷ যদিও জার্মানির সাথে উহানের কোনো সরাসরি বিমান ব্যবস্থা নেই, তবুও সাবধান থাকতে এয়ারপোর্টে বিশেষ আইসোলেশন ইউনিট (চীনফেরত যাত্রীদের জন্য বিচ্ছিন্ন বলয়) রাখা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Y. Schreiber
7 ছবি1 | 7
সরকার যে ভাবে এই রিপোর্ট খারিজ করে ইতিমধ্যেই তিনজন সিনিয়র অফিসারকে চার্জশিট করেছে, তাতে জোরদার বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সহকারী নেতা সুখেন্দু শেখর রায় ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''এ কথা ঠিক, সার্ভিস রুল অনুযায়ী এই রিপোর্ট জনসমক্ষে আনা যায় না। কিন্তু সরকার বিষয়টি উপেক্ষা করতে পারতো। কারণ, আইআরএস অফিসাররা সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এই রিপোর্ট বানিয়েছিলেন। তাঁরা দেশকে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। তাঁরা রিপোর্টে যা বলেছেন, আমি তা সমর্থন করি। এই অত্যন্ত মেধাবী অফিসাররা নিয়ম জানেন না, তা তো হতে পারে না। হয় তাঁরা নিজেদের মতামত জানাবার তাগিদে নিয়ম উপেক্ষা করেছেন। অথবা, তাঁরা ভেবেছেন যেহেতু তাঁরা একটা ভালো কাজ করছেন, তাই সার্ভিস রুল ভঙ্গ করলেও কিছু হবে না।''
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী একসময় মোদী সরকারকে স্যুট-বুটের সরকার বলে অভিহিত করতেন। লোকে অবশ্য তাঁর সেই অভিযোগকে ভোটের সময় আমল দেয়নি। কিন্তু কংগ্রেস এই ক্ষেত্রে আইআরএস অফিসারদের পাশে থেকে প্রশ্ন করেছে, সরকারকি শুধু কর্পোরেটের স্বার্থই দেখবে? আর সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''আমার মনে আছে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মোদীজি বলেছিলেন, সকলের পরামর্শ শুনব। সরকারি কর্মীরাও পরামর্শ দিতে পারবেন। বণিকসভাগুলি সরকারকে পরামর্শ দিতে পারে, ট্রেড ইউনিয়ন দিতে পারে, রাজনৈতিক দল দিতে পারে, আইআরএস অ্যাসোসিয়েশন দিতে পারে না? আর রিপোর্টে তো সরকার-বিরোধী কোনও কথা বলা হয়নি। বড়লোকদের ওপর কর বসানো, গরিবদের সাহায্য করা কি দেশবিরোধী কথা না কি? আসলে সরকারে যাঁরা আছেন, মনে হচ্ছে তাঁরা তাঁদের ওপরওয়ালাদের সেবা করতে দায়বদ্ধ।''
আবার রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুগত হাজরা মনে করেন, আইআরএস অফিসাররা অনুচিত কাজ করেছেন। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ''তাঁরা সার্ভিস রুল ভেঙেছেন। তাঁরা রিপোর্ট কোনওভাবেই প্রকাশ করতে পারেন না। সেস বসাবার কথা বলে মধ্যবিত্তদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছেন। দেশ যখন করোনার সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন তাঁরা এই ধরনের কাজ করতে পারেন না।''
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সরকার তাদের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছে। তারা অতি-বড়লোকদের ওপর বাড়তি কর চাপিয়ে তাঁদের রুষ্ট করতে চায় না।