খাওয়ার পর ব্রাশ করা খুবই ভালো অভ্যাস৷ তবে অম্লজাতীয় খাবার, যেমন টমেটো, কমলা, ইত্যাদি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্রাশ না করে অন্তত আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করা উচিত, বলে মনে করেন ব্রিটিশ দন্ত বিশেষজ্ঞ ডা. হাওয়ার্ড আর. গ্যাম্বল৷ কারণ এ সব খাওয়ার পরপরই অ্যাসিড দাঁতের সাদা অংশ এনামেল ও তার নীচের অংশ ডেনটিনকে আক্রমণ করে৷ ডা. গ্যাম্বল বলেন, সেসময় ব্রাশ করা মানে অ্যাসিডকে আক্রমণে সহায়তা করা৷

ডায়বেটিস রোগী ও যাঁরা কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খোঁজেন, তাঁদের কাছে কোকাকোলা জিরো কিংবা লাইট বেশ প্রিয়৷ তবে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে এর কিছু ক্ষতিকর দিক পাওয়া গেছে৷ কোকাকোলা জিরোতে যেহেতু চিনির পরিবর্তে আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার ব্যবহার হয়, তাই শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় চিনির অভাব মেটাতে অন্য যে খাবার খাওয়া হয় তার মাধ্যমে শরীরে বেশি ক্যালরি প্রবেশ করে৷ ফলে মেদ বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস সহ অন্য অসুখ হতে পারে৷

অনেকেই মনে করেন কাজের দিনগুলোতে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার কারণে যে সময়টুকু আমরা কম ঘুমাই, সপ্তাহান্তে ছুটির দিনগুলোতে সেটা পুষিয়ে নেয়া ভালো৷ কিন্তু সেটা করার কারণে অন্য একটি বিপত্তি ঘটে বলে গবেষণায় জানা গেছে৷ গবেষক দলের প্রধান ঘুম বিশেষজ্ঞ ডা. গ্রেগরি কার্টার বলেন, সপ্তাহান্তে বেশি সময় ঘুমালে শরীরের স্বাভাবিক ছন্দে পরিবর্তন ঘটে৷ ফলে পরের সপ্তাহের দিনগুলোতে শরীরে সবসময় কেমন যেন ঘুমঘুম ভাব অনুভূত হয়৷

অফিসের কাজে-কর্মে যদি প্রচণ্ড চাপ থাকে, তাহলে শরীরে কোর্টিসল হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়৷ এরপর বাসায় ফিরে বিশ্রাম না নিয়ে সরাসরি কাজে লেগে গেলে কোর্টিসলের পরিমাণ কমার সুযোগ পায় না৷ এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে কোর্টিসলের পরিমাণ বেশি থাকলে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা তৈরি হতে পারে৷ এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল হয়ে পড়তে পারে৷ ‘জার্নাল অফ ফ্যামিলি সাইকোলজি’-তে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে এই তথ্য জানা গেছে৷

ঘুম বিশেষজ্ঞ ডা. গ্রেগরি কার্টার বলেন, ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে টিভি দেখা ও মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করতে হবে৷ না হলে ঐ সব থেকে যে নীলাভ আলো বের হয়, সেটা শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে৷ ফলে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠাটা কঠিন হয়ে যায়৷

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ তবে বিশেজ্ঞরা বলেন, যদি কয়েকজন মিলে একসাথে ধূমপান ছাড়ার লক্ষ্য স্থির করেন, তবে কাজটা অনের সহজ হবে৷ আর এর সেজন্য চাই কোনো একটা বিশেষ কারণ বা উপলক্ষ্য কিংবা জোড়ালো কোনো অনুভূতি৷

আজকাল প্রায় সকলেরই সার্বক্ষণিক সঙ্গী ‘স্মার্টফোন’৷ অনেকেরই এমন একটা ভাব, যেন ‘যন্ত্রটি’ বন্ধ করলেই সকলের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন তিনি! আসলে এতকিছু না ভেবে হাতের যন্ত্রটি বন্ধ করে দিন৷ দেখবেন, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের সাথে এই ‘সাময়িক বিচ্ছেদ’-এর ফলে আপনি মানসিকভাবে অনেকটা হালকা বোধ করছেন!

বিশেষ কিছু খাবার থেকে সাময়িকভাবে দূরে থাকা বা কিছু দিনের জন্য সে সব পরিত্যাগ করা নতুন নয়৷ সব ধর্মেই কিন্তু উপোস বা রোজা রাখার রীতি রয়েছে, তবে ভিন্ন ভিন্নভাবে৷ বিশেষজ্ঞরাও আজকাল স্বাস্থ্যগত কারণে মদ, ধূমপান, মিষ্টি, চর্বি বা অতিরিক্ত খাওয়া থেকে কিছু দিনের জন্য বিরত থাকার কথা বলেন৷ বলেন প্রচুর শাক-সবজি, ফল এবং কফির জায়গায় ‘হার্বাল টি’ বা চা পানের কথাও৷

খাবারের ব্যাপারে প্রতিটি মানুষেরই ব্যক্তিগত কিছু পছন্দ থাকে, যা থেকে তাঁরা দূরে থাকতে পারেন না৷ আসলে কিন্তু পছন্দের খাবারকে ‘না’ বলাই হলো সত্যিকারের উপোস বা ত্যাগ৷ হ্যাঁ, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷

চকলেট (বানানভেদে চকোলেট) বা মিষ্টিজাতীয় খাবার সুখ হরমোনকে সক্রিয় করে তোলে৷ তাই উপোসের কয়েক সপ্তাহ চকলেটকে ‘না’ বলুন৷ পরে অবশ্য এর ফলাফল দেখে নিজেই অবাক হয়ে যাবেন৷

সকালে কফির সুগন্ধে যাঁর ঘুম ভাঙে, তাঁর কি কফি না হলে চলে? অবশ্যই চলবে, তবে এর জন্য প্রয়োজন অসম্ভব মনের জোর৷ গরম কিছু চাই তো? বেশ তো, কফির বদলে চা পান করুন৷ পরপর দু-তিনদিন চা পান করলেই দেখবেন কফির আগ্রহ কমে যাবে৷ এ সব শুধু কথার কথা নয়...৷ তাই নিজেই পরীক্ষা করে দেখুন না!

গাড়ি ছেড়ে খানিকটা হাঁটুন, পারলে সাইকেল চালান৷ এতে যেমন পরিবেশ রক্ষা হবে, তেমন রক্ষা করা হবে নিজের স্বাস্থ্যও৷ শুধু তাই-ই নয়, কিছুদিন করার পর হয়ত এর মধ্যে আনন্দও পেতে শুরু করবেন আপনি৷

উপোস বা রোজা রাখার পাশাপাশি নিজের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হন৷ মানে দূরে থাকুন প্লাস্টিকের ব্যবহার করা থেকে৷ অর্থাৎ উপোসের ক’টা দিন কেনা-কাটা করার সময় বা অন্যান্য কাজে সব ধরনের প্লাস্টিকের ব্যবহার পরিত্যাগ করুন৷ দেখবেন, কেমন অন্য ধরনের একটা অনুভূতি হচ্ছে৷

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছুদিনের জন্য সঙ্গম করা থেকে বিরত থাকলে, পরবর্তীতে আনন্দের মাত্রা নাকি দ্বিগুণ বেড়ে যায়৷ তাই তিন বা চার সপ্তাহ সেক্স থেকে দূরে থাকুন৷

বিশেষজ্ঞদের মতে, জোর করে উপোস করলে ফল হতে পারে উল্টো৷ তাই যিনি নিজের আগ্রহে ও আনন্দের সঙ্গে উপোসের সিদ্ধান্ত নেন বা কোনোকিছু থেকে নিজেকে বিরত রাখেন, একমাত্র তিনিই লাভবান হন৷