1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বধিরতা দূর করতে উদ্যোগ

মার্টিন রিবে/এসবি২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কানে কম শোনেন, অথবা শুনতেই পান না – এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়৷ শ্রবণশক্তির অভাব মেটাতে কিছু ক্ষেত্রে ‘হিয়ারিং এড' ব্যবহার করতে হয়৷ কিন্তু আলোর সাহায্যে শব্দ শোনা? জার্মান বিজ্ঞানীরা ঠিক এমনই এক প্রযুক্তি তৈরি করছেন৷

Symbolbild Musik Sound Klang
ছবি: Fotolia/lassedesignen

আংশিক বা সম্পূর্ণ বধিরতা মানুষের ইন্দ্রিয়র সবচেয়ে বড় রোগ৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমান অনুযায়ী, প্রায় ৩৬ কোটি মানুষ কানে ঠিকমত শুনতে পান না৷ অনেকে কম শোনেন, কেউ আবার সম্পূর্ণ বধির৷ জার্মানির গ্যোটিঙেন শহরের বিজ্ঞানীরা আলোর স্পন্দনের সাহায্যে বধিরতার চিকিৎসা করতে চান৷ ইএনটি ডাক্তার প্রো. টোবিয়াস মোসার বলেন, ‘‘শ্রবণশক্তির অভাব একদিকে অডিটারি ক্যানাল, টিমপ্যানাম-এ হতে পারে৷ সেটা হলো সাউন্ড ট্রান্সমিশন অথবা সাউন্ড কন্ডাকশন সংক্রান্ত শোনার সমস্যা৷ কিন্তু সেই সমস্যার উৎস ককলিয়া, শ্রবণের স্নায়ু অথবা মস্তিষ্কেও থাকতে পারে৷ তখন সেটাকে সেন্সরিনিউরাল হিয়ারিং লস বলা হয়৷ ককলিয়া-য় হেয়ার সেন্সরি সেল অথবা স্নায়ুকোষ ত্রুটিপূর্ণ থাকতে পারে কিংবা হারিয়ে যেতে পারে৷''

সাধারণত এই সব হেয়ার সেন্সরি সেল শব্দকে স্নায়ুর স্পন্দনে রূপান্তরিত করে৷ সেগুলির বেশি ক্ষতি হলে সাধারণ হিয়ারিং এড যন্ত্র আর কাজ করে না৷ তখন তথাকথিত ককলিয়া ইমপ্লান্ট বসাতে হয়৷ তার কাজ হলো ত্রুটিপূর্ণ হেয়ার সেন্সরি সেল এড়িয়ে শব্দকে ইলেকট্রিক পদ্ধতিতে সরাসরি স্নায়ুকোষ বা ককলিয়ায় পৌঁছে দেওয়া৷ সেখানেই স্নায়ুর স্পন্দন সৃষ্টি হয়৷ আসলে মস্তিষ্কেই শ্রবণের বোধ সৃষ্টি হয়, যদিও তা তেমন স্পষ্ট নয়৷ প্রো. মোসার বলেন, ‘‘ককলিয়া আসলে অনেকটা ঘোরানো সিঁড়ির মতো৷ তাতে অনেকগুলি ধাপ রয়েছে৷ কল্পনা করুন, প্রত্যেকটি ধাপ যেন একটি করে সুরের নোটের দায়িত্ব পালন করছে৷ ইলেকট্রিক ইমপ্লান্ট অনেকগুলি এমন ধাপ চালাচ্ছে৷ এভাবে বিস্তীর্ণ ও অস্পষ্ট এক পিচ মস্তিষ্কে পৌঁছচ্ছে৷''

গ্যোটিঙেন-এর বিজ্ঞানীরা তাই এবার শ্রবণের স্নায়ুকোষকে আলো দিয়ে স্টিমুলেট বা উদ্দীপিত করতে চান৷ কারণ এভাবে নির্দিষ্ট জায়গায় ফোকাস করা সম্ভব৷ এর জন্য তাঁরা ক্ষুদ্র আলোর সিরিজ তৈরি করছেন, যা কানের ভিতরের অংশে প্রয়োগ করা যাবে৷ কয়েক'শ মাইক্রো-লাইট-এর সমন্বয়ে তা কাজ করবে৷

কিন্তু শ্রবণের যে স্নায়ুকোষ সাধারণত শব্দের কারণে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাকে কীভাবে আলোর সিগনাল দিয়ে জাগিয়ে তোলা সম্ভব? এর উত্তর সহজ৷ শ্রবণের স্নায়ুকোষকেই আলোর স্পন্দনে সাড়া দিতে শেখাতে হবে৷ তার মধ্যেই আলোর সুইচ তৈরি করতে হবে৷ প্রো. টোবিয়াস মোসার বলেন, ‘‘সবুজ অ্যালজি থেকে জিন-গত তথ্য আমরা লাইট সুইচের জন্য ব্যবহার করছি৷ তারপর ক্ষতিকারক নয়, এমন ভাইরাস দিয়ে জিন ট্রানস্ফারের মাধ্যমে সেই জেনেটিক তথ্য স্নায়ুকোষে নিয়ে যাচ্ছি৷ এভাবে স্নায়ুকোষ আলোর পড়লেও প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে৷''

শ্রবণের স্নায়ুকোষকে আলোর মাধ্যমে উদ্দীপিত করলে এক স্পন্দন মস্তিষ্কের শ্রবণের অংশে চলে যায়৷ ইঁদুরের উপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, যে মস্তিষ্কে শ্রবণের অংশটি আলোর স্পন্দনে সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ একটি বড় মডেলের সাহায্যে সেটা দেখানো সম্ভব৷ প্রো. মোসার বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে এমন এলইডি ইমপ্লান্ট কানের মধ্যে ককলিয়ার খালি অংশে ঢোকানো সম্ভব হবে৷ তারপর ঘোরানো সিঁড়ির এক একটি ধাপে আলো পড়লে এক নীল আলোর ছটা স্নায়ুকোষের উপর এসে সেটিকে উদ্দীপিত করে তুলবে৷''

ককলিয়ার নীচের স্তরে লাইট-এমিটিং ডায়োড জ্বলে উঠলে শ্রবণের স্নায়ুকোষ উচ্চগ্রামের শব্দ অনুভব করবে৷ উপরের স্তরে এলএডি জ্বলে উঠলে নীচু গ্রামের শব্দ শোনা যাবে৷ বিজ্ঞানীদের আশা, আগামী ৫ বছরের মধ্যে রোগীদের উপর অপটিকাল ইমপ্লান্ট পরীক্ষা করা সম্ভব হবে৷ ফলে তাঁরা আবার শ্রবণশক্তি অনেকটাই ফিরে পাবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ