এগরা, বজবজের পর এবার বিস্ফোরণ বনগাঁয়। মৃত ১২ বছরের এক বালক।
বিজ্ঞাপন
সোমবার সকালে শৌচাগারে গিয়েছিল ওই বালক। আর তখনই বিস্ফোরণ হয়। ঘটনার তদন্তে নেমেছে বনগাঁ থানার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওই শৌচালয়ে বোমা রাখা ছিল। ওই বালক কোনোভাবে বোমায় হাত দিয়ে ফেলে। আর তার থেকেই বিস্ফোরণ হয়।
বিস্ফোরণের পর দ্রুত ওই বালককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
ভানু বাগ এলাকায় বোমা সম্রাট নামে পরিচিত ছিল
একের পর এক বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ। এগরায় বেআইনি কারখানায় কি তৈরি হতো বোমা? গ্রাম ঘুরে ডিডাব্লিউ-র তদন্তমূলক রিপোর্ট।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মিনতি বাগ
এগরায় যেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেই গ্রামেরই বাসিন্দা মিনতি। ডিডাব্লিউকে তিনি জানিয়েছেন, বরাবর ওই কারখানাটিকে ফুলঝুরির কারখানা হিসেবে জেনে এসেছেন তিনি। এর বাইরে আর কিছু জানেন না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আরতি পাল
এই বাজির কারখানা অনেক বছর ধরে আছে। মৃত ভানু বাগ এই এলাকার জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন।গ্রামের সব অনুষ্ঠানে বাজি পোড়ানো হতো। কিন্তু কারখানার ভিতরে কখনো ঢুকিনি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মধুমিতা ওঝা
এখানে বাজি বানানো হতো অনেক বছর ধরে। লোকের মুখে শুনেছি, বাজি ছাড়াও বোমা তৈরি হতো এখানে। অনেকেই একথা বলতেন। আমার বাড়ি পাশের গ্রামে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
শত্রুঘ্ন মাইতি
সবাই জানে এখানে হাত বোমা বানানো হতো। বিভিন্ন পুজোয় এবং চড়কে হাত বোমা ফাটানো হতো। হাতবোমা টেস্ট করতে গিয়েই বারুদের স্তূপে আগুন লেগেছে বলে শুনেছি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রবীন্দ্র বাগ
এই কারখানা থেকে প্রত্যেকদিন সকালে ৭টা ৪৫ এর বাসে হাওড়ায় মাল যেত। সারা বছর কি বাজির সাপ্লাই হয়? তাহলেই বুঝুন আর কোন মাল যেত? ভানু যে কাজ করেছে তার জন্য আমাদের মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রতন বাগ
এদের বাজি কলকাতা হয়ে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়তো বলে শুনেছি। এখানে বেশ কিছু পুরনো ধরনের বাজি তৈরি হতো। তাই অনেক চাহিদা ছিল। ভানু বাগের জল বোমা বিখ্যাত ছিল। ভানু তৃণমূলের সদস্যও ছিলেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মানিক পাত্র
সাধারণ আতসবাজিতে কখনো এমন বিস্ফোরণ হয়? এখানে বড় ধরনের কিছু তৈরি হতো। ২০০৩ সাল থেকে এই কারখানা দেখছি। শুনেছি এখানে বোমাই বেশি বানানো হতো।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিষ্ণুপদ জানা
এই বেআইনি কারখানাটি ২৫ বছর ধরে চলছে। সকলের নাকের ডগায়। কেউ কোনোদিন প্রশ্ন করার সাহস পায়নি। আতসবাজি তৈরি হতো। কিন্তু এখানে যে মানুষ মারার বোমা তৈরি হতো, তা এই গ্রামে সবাই জানেন। কেউ মুখ খোলার সাহস পাননি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সজল কর
২০০২ সাল থেকে এদের ব্যবসার রমরমা। এখানে সব ধরনের বোমাই বানানো হতো। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সেই বোমা চালান হতো। যত দিন গেছে, এদের ব্যবসা ততই ফুলে ফেঁপে উঠেছে। কলকাতা বীরভূমে নিয়মিত মাল যেত। পুলিশকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেওয়া হতো বলে শুনেছি। ভানু এখানে বোমাসম্রাট বলে পরিচিত ছিল।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
9 ছবি1 | 9
একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটছে গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে। এর আগে মেদিনীপুরের এগরায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছিল। ঘটনার তদন্তে নেমে অনুমান করা হচ্ছে, ওই কারখানায় বাজির পাশাপাশি বোমাও তৈরি করা হতো। এরপর বজবজে বিস্ফোরণ হয়। সেখানেও বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছিল। বনগাঁর বিস্ফোরণের সঙ্গে অবশ্য বাজির কোনো যোগ নেই। সেখানে বোমা রাখা ছিল শৌচালয়ের ভিতরে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্য়ক্তি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ওই শৌচালয়টিতে বোমা মজুত করে রাখা হচ্ছিল। তবে কারা তা রেখেছে, এখনো তা স্পষ্ট নয়। পুলিশও এবিষয়ে এখনো কিছু জানায়নি।
বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এভাবেই রাজ্যজুড়ে বোমা তৈরি ও মজুত করছে শাসকদল। তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।