1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বনাঞ্চল সংরক্ষণ

মারেইকে আডেন / এসবি১১ অক্টোবর ২০১৩

সরকারি নিয়মের বেড়াজাল নয় – বনাঞ্চল সংরক্ষণের ক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষের সক্রিয় ভূমিকাই কার্যকর হতে পারে৷ জার্মান এক সংস্থার সাহায্যে তাজিকিস্তানে এভাবে সাফল্য পাওয়া গেছে৷

Herbst in der Monbachtal-Schlucht. Foto: Ronald Wittek dpa
ছবি: picture-alliance/Ronald Wittek

পামির মালভূমির সাদা চূড়ার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাত হাজার মিটার৷ পৃথিবীর অন্যতম উঁচু মালভূমি এটি৷ পামিরের কোল ঘেঁষে খরগ শহরের অবস্থান৷ তাজিকিস্তানের দক্ষিণে, আফগান সীমান্তসংলগ্ন এলাকা এটি৷

সোভিয়েত আমলে শহরের বাসিন্দারা বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং কয়লা পেতেন৷ কিন্তু সে সব দিন চলে গেছে৷ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এখানকার বাসিন্দারা স্থানীয় বন থেকে জ্বালানি এবং ঘরবাড়ি তৈরির কাঠ জোগাড় শুরু করেন৷ এই প্রক্রিয়ায় ধ্বংস হয় অধিকাংশ বনাঞ্চল৷

জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেড-এর জন্য কাজ করেন মানুচের ফেজাকভ৷ তাঁর বাড়ি এখানে৷ বনজঙ্গলের এরকম ধ্বংসলীলা দেখে ব্যথিত তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘বনের এই অংশে সবার প্রবেশাধিকার আছে৷ এখানে কোনো বেড়া নেই আর কেউ এর দায়িত্বও নিচ্ছে না৷ সুতরাং মানুষ এবং গবাদিপশু সহজে প্রবেশ করছে৷ মানুষ গাছপালা কেটে নিয়ে যাচ্ছে আর পশু চারাগাছ খেয়ে ফেলছে৷''

কয়েক কিলোমিটার দূরে অবশ্য পাওয়া গেলো ভিন্ন চিত্র৷ জঙ্গলের চারপাশে রয়েছে বেড়া৷ ফলে গবাদি পশু ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না৷ বন রক্ষায় বিশেষজ্ঞদের আইডিয়া হচ্ছে, প্লট আকারে বনের বিভিন্ন অংশের দায়িত্ব স্থানীয় মানুষের হাতে তুলে দেয়া৷

এই আইডিয়া অনুযায়ী, বন যারা ব্যবহার করবেন, তারাই বনের চারপাশে বেড়া দেবেন এবং নতুন গাছ লাগাবেন৷ আর মানুচের-এর মতো বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত তাদের কাজ তদারকি করবেন৷ দু'বছরের মধ্যে যারা লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন না, তাদের কাছ থেকে বনের প্লট আবার নিয়ে নেওয়া হবে৷ আর কাজের প্রতিদান হিসেবে স্থানীয়রা তাদের আয়ত্তে থাকা বনের কাঠ সংগ্রহ করে ব্যবহার কিংবা বিক্রি করতে পারবেন৷

ইতোমধ্যে ৪৫০টি প্লটে এই আইডিয়া কাজে লাগিয়ে বিশ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় পুনরায় বন তৈরি সম্ভব হয়েছে৷ স্থানীয়দের মাঝে পুস্তিকাও বিতরণ করা হয়েছে৷ এতে গাছ লাগানো এবং সেগুলো গবাদি পশুর হাত থেকে রক্ষার উপায় ছবিসহ বাতলে দেয়া হয়েছে৷ আশার কথা হচ্ছে, পরিবেশ এবং বন বাঁচাতে স্থানীয় কিছু পরিবার জ্বালানি কাঠের ব্যবহার কমাতে শুরু করেছেন৷

এর মূল কারণ অবশ্য জ্বালানি সাশ্রয়ী জানালা৷ হিমাংকের নিচে ত্রিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠাণ্ডা এই মালভূমিতে অস্বাভাবিক নয়৷ তা সত্ত্বেও কারাশেরভ পরিবার এখন অনেক কম কাঠ ব্যবহার করেন৷ আর সেটা হচ্ছে এই বিশেষ জানালার কল্যাণে৷ এই পরিবারকে ক্ষুদ্রঋণ নিতেও সহায়তা করেছেন ফেজাকভ৷ জ্বালানি সাশ্রয়ী জানালার দাম প্রায় ষাট ইউরো, যা এই পরিবারের মাসিক বাজেটের প্রায় এক তৃতীয়াংশ৷ জিআইজেড তাদের আর্থিক সহায়তা করেছে৷ পরিবারের সদস্য রাউফ কারাসাও বলেন, ‘‘জ্বালানি সাশ্রয়ী জানালাগুলো দেখতেও সুন্দর৷ আমরা আমাদের নতুন বাড়িতে সেগুলো লাগিয়েছি৷ ফ্লোরে তাপ নিরোধক টাইলসও বসিয়েছি৷ ফলে শীতকালে হিটার কম ব্যবহার করলেও ঘর গরম থাকে৷''

খরগ-এ এখনো অনেক প্লট রয়েছে, যেগুলোতে অদূর ভবিষ্যতেও কোনো গাছপালা জন্মাবে বলে মনে হচ্ছে না৷ তবে এসব প্লটেই নতুন করে বনায়নের চেষ্টা শুরু হয়েছে৷ শর্ত মেনে এই কঠিন কাজ করতে আগ্রহীদের কিস্তিতে অর্থ দেয়া হবে৷ বছরে একশো ইউরো, পাঁচ বছর ধরে পাবেন তারা৷

নতুন করে বনায়নের আইডিয়া স্থানীয়রা পছন্দ করেছেন মনে হচ্ছে৷ তাই প্রচণ্ড গরম সহ্য করে সকাল থেকে কয়েক ডজন চারা লাগিয়েছেন এই মানুষগুলো৷ রাখিমবেক রাখমনভ বলেন, ‘‘আমাদের জীবনের জন্য, দেশের জন্য বন গুরুত্বপূর্ণ৷ সকল তাজিক – বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটা দরকার৷ আমরা সবাই বনের উপর নির্ভরশীল৷''

পামির মালভূমিতে অবস্থিত এই নদীর দু'পাশে আবারো বন সৃষ্টিতে কয়েক দশক সময় প্রয়োজন৷ তবে মানুচের ফেজাকভ আশাবাদী৷ আর সেই প্রচেষ্টার অংশ হওয়ায় তিনি এবং তাঁর সহকর্মীরা গর্বিত৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ