এই জেমস বন্ডকে চেনেন আপনি? ইনি ১৯৬৯ সালে মুক্তি পাওয়া বন্ড মুভির নায়ক জর্জ লেইজেনবি৷ বন্ডের ঐ একটি মুভিই তিনি করেছেন৷ পরেরটিতেও তাঁকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেয়া হলে তিনি তা ফিরিয়ে দেন৷
শন কনরি অবসরে যাওয়ার পর বন্ড চরিত্রের জন্য নতুন মুখ খোঁজা হচ্ছিল৷ সেই সময় গাড়ি বিক্রেতা ও পার্টটাইম মডেল ২৮ বছর বয়সি অস্ট্রেলীয় লেইজেনবিকে অডিশনের মাধ্যমে বন্ড চরিত্রের জন্য নির্বাচন করা হয়৷
এরপর ‘অন হার মেজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস' ছবিতে অভিনয় করেন লেইজেনবি৷ বন্ডের পরের ছবিতেও তাঁকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেয়া হলে তিনি তা ফিরিয়ে দেন! এর পেছনে থাকা অন্যতম কারণটি তিনি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্রকাশ করেন৷ ‘উইকেন্ড অস্ট্রেলিয়া' ম্যাগাজিনকে দেয়া সেই সাক্ষাৎকারে অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র জেমস বন্ড বলেন, বন্ড চরিত্রে অভিনয়ের কারণে নারীরা তাঁর সঙ্গে মিশতে আগ্রহী ছিল না৷
পরের জেমস বন্ড কে হবেন?
‘স্পেক্টর’ কি ড্যানিয়েল ক্রেগ-এর শেষ বন্ড ছবি হতে চলেছে? তাহলে তো একটা বিকল্পের কথা ভাবা দরকার...
ছবি: Getty Images
লালচুলো জেমস বন্ড? ড্যামিয়ান লিউয়িস
যখন গুজব ছড়াতে শুরু করল যে, ড্যানিয়েল ক্রেগ তাঁর চার নম্বর বন্ড ছবির পর বিদায় নিতে চান, সাথে-সাথে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে যায়, পরের শূন্য-শূন্য-সাত কে হবেন৷ এমনকি বেটিং চলেছে! ‘হোমল্যান্ড’ সিরিয়ালের অভিনেতা ড্যামিয়ান লিউয়িস আপাতত বুকমেকারদের ফেবারিট৷ লাল চুলে আপত্তি নেই, কেননা জেমস বন্ড তো আসলে স্কটিশ৷
ছবি: picture alliance/dpa/T. Brakemeier
অব্যর্থ লক্ষ্য: ডেভিড বেকহ্যাম
সেক্সি ফুটবল স্টার, সাবেক হলেই বা কী? বেকহ্যাম নিজে না-না করা সত্ত্বেও গুজব ছড়াচ্ছে৷ হাজার হোক, বেকহ্যাম দেখতে শুনতে খারাপ নন, যেমন স্যুট, তেমনই আন্ডারওয়্যার পরে ভালোই দেখায়৷ আর শুটিংও দারুণ, মানে ফুটবল পায়ে পেলে গোলের দিকে৷ শুধু অ্যাক্টিং-টা শিখে নিলেই চলবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Lane
লাইসেন্স টু সিং: রবি উইলিয়ামস
ব্রিটেনের পপ স্টার রবি উইলিয়ামস বছর পনেরো আগেই তাঁর ‘মিলেন্নিয়াম’ গানটির ভিডিও-য় জেমস বন্ড-এর অনুকরণ করেছিলেন টাক্সেডো পরে, নাইট ড্রেস পরিহিতা সুন্দরী পরিবেষ্টিত অবস্থায় গান গেয়ে৷ আজ সেই রবি অনেক বেশি ম্যাচিওর, রগের চুলে পাক ধরেছে৷ জেমস বন্ড হিসেবে মানাবে খারাপ নয়৷ একটা মিউজিক্যাল জেমস বন্ড হলেই বা আপত্তি কি?
ছবি: picture-alliance/dpa/Kaiser
স্লিক স্টাইল: ইদ্রিস এলবা
‘দ্য ওয়্যার’ টিভি সিরিজের ড্রাগ লর্ড স্ট্রিঙ্গার বেল অথবা ‘লুথার’ সিরিজের ডিটেকটিভ জন লুথার-কে মনে আছে তো? গোল্ডেন গ্লোব জিতেছেন৷ রিভলভার চালাতে জানেন৷ খুবই পুরুষালি চেহারা৷ মার্কিন মুলুকে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হয়ে গেল, আর ব্রিটেনে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ জেমস বন্ড হবে না?
ছবি: picture-alliance/dpa/F.Arrizabalaga
বহুমুখী প্রতিভা: মিশায়েল ফাসবেন্ডার
জন্ম জার্মানির হাইডেলব্যার্গে৷ বাবা জার্মান, মা আইরিশ৷ মঞ্চে ও ফিল্মে বিভিন্ন ধরনের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, যেমন অ্যাকশন হিরো ম্যাগনেটো, কিংবা শেক্সপিয়ারের ম্যাকবেথ, বা অ্যাপল-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস-এর ভূমিকায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Cowie
মহিলা জেমস বন্ড? হ্যালি বেরি
নারীবাদী দুনিয়ায় মহিলা জেমস বন্ড হবার সময় এসেছে বৈকি৷ ‘ডাই অ্যানাদার ডে’ ছবিতে তিনি অতীতের স্বনামধন্যা বন্ড গার্ল উর্সুলা অ্যান্ড্রেস-এর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন অনুরূপ একটি বিকিনি পরিহিত দৃশ্যে৷অ্যাকশনের দৃশ্যে তো তাঁকে নিঃসন্দেহে অ্যান্ড্রেস-এর চেয়ে বেশি নিপুণ বলা চলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Fox
হিরো কিংবা ভিলেন: ক্রিস্টফ ওয়ালৎস
‘স্পেক্টর’ ছবিতে ভিলেনের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন এই অস্কার-বিজয়ী অভিনেতা৷ নয়ত তাঁর বন্ড হবার সব যোগ্যতাই ছিল: চেহারা, ক্যারিসমা, অভিজ্ঞতা৷ দেখতে-শুনতে ভালো, বন্দুক চালাতে জানেন, অস্ট্রিয়ার আর কোনো অভিনেতা এত ভালো ব্রিটিশ ইংরেজি বলতে পারেন কিনা সন্দেহ৷
ছবি: imago/EntertainmentPictures
বাহুবল: টম হার্ডি
বুকমেকারদের আরেক ফেবারিট৷ ‘ব্ল্যাক হক ডাউন’ থেকে শুরু করে ‘ম্যাড ম্যাক্স’, কিংবা ঠান্ডা লড়াই-এর আমলের গুপ্তচরবৃত্তির কাহিনি ‘টিঙ্কার-টেইলর, সোলজার, স্পাই’-এর মতো অ্যাকশন ছবিতে অভিনয় করেছেন৷ ‘জিকিউ’ পত্রিকা তাঁকে ২০১৫ সালের সেরা সাজগোজ করা ব্রিটিশ পুরুষদের তালিকায় রাখে৷ এমটিভি-র সবচেয়ে যৌন আবেদনময় পুরুষদের তালিকাতেও তাঁকে রাখা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Ryan
অবিকল্পনীয়: ড্যানিয়েল ক্রেগ
শেষমেষ বলতে হবে, ড্যানিয়েল ক্রেগ থাকলেই ভালো৷ তাঁর গভীর ইস্পাত-নীল চোখ তাঁকে রহস্যময় কিছু একটা এনে দিয়েছে, যাকে সাধারণভাবে সৌন্দর্য্য বলা চলে না৷ তিনি বন্ড-এর চরিত্রকে একাধারে নির্বিকার, অন্যদিকে বেদনার্ত করে তুলেছেন৷ সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন যে, তাঁর আরো একটা বন্ড ছবি করার চুক্তি আছে এবং তিনি সেই ছবিতে অভিনয়ও করবেন৷ কাজেই আশা আছে বৈকি...৷
ছবি: Sony Pictures Releasing GmbH
9 ছবি1 | 9
স্যুট পরা মানুষকে তারা (নারী) পছন্দ করতো না৷ ‘‘ঐ সময়টা ছিল হিপ্পিদের সময়৷ আপনার লম্বা চুল থাকতে হবে, পরতে হবে বেল বটম৷ তখন ‘ইজি রাইডার'-এর যুগ ছিল৷ নয় মাসে মাত্র পাঁচজন নারী পেয়েছিলাম৷ আমি একটুও অহংকার করছি না৷ কিন্তু বন্ড হওয়ার আগে সেই সংখ্যাটা আমি একদিনেই পেরিয়েছি'', বলেন লেইজেনবি৷
এর আগে ব্রিটেনের ডেইলি মেল পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারেও তিনি এ ধরণের মন্তব্য করেছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, ‘‘জেমস বন্ড হওয়ায় আমার যৌনজীবন সীমিত হয়ে গিয়েছিল৷ কোনো নারী আমার সঙ্গে বিছানায় যেতে আগ্রহী ছিল না৷''
বন্ডের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ায় লেইজেনবির অভিনয় ক্যারিয়ারে খরা নেমে এসেছিল৷ পরবর্তীতে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেন তিনি৷