কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে‘ নিহত হয়েছে তিন রোহিঙ্গা৷ নিহতদের সবাই শিশু অপহরণের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেছে পুলিশ৷
বিজ্ঞাপন
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার জানিয়েছেন, লেদা শরণার্থী ক্যাম্পের পাশের এক পরিবারের শিশু অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা৷ এমন তথ্যের ভিত্তিতে, শুক্রবার ভোর রাতে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় অপহৃত শিশু উদ্ধারে অভিযানে নামে পুলিশ৷
প্রদীপ কুমার বলেন, অভিযানে অপহরণকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি ছোঁড়ে৷ পাল্টা জবাবে পুলিশও তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে৷ এসময় তিন অপহরণকারী নিহত হয় বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা৷
অপহৃত শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান প্রদীপ কুমার৷ তবে, পালিয়ে গেছে অপহরণকারীদের অন্য সহযোগীরা৷ ঘটনাস্থল থেকে বন্দুক এবং বুলেট উদ্ধার করেছে পুলিশ৷
কয়েক দিনে আগে, শরণার্থী শিবিরের কাছ থেকে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়৷ এরপর পরিবারের কাছে পাঁচলাখ টামা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা৷
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ২০১৭ সালে মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতার স্বীকার হয়ে প্রায় দশ রাখ রোহিঙ্গা টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছে৷ তাদের মধ্য কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা খুন, শিশু অপহরণ ও পাচার এবং মাদক চোরাচালানের মতো নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে৷
কেমন আছে রোহিঙ্গারা?
মিয়ানমারে সেনা সদস্যদের নির্বিচার হত্যা-নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার এক বছর পূর্ণ হলো৷ কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে কেমন চলছে অসহায় এসব মানুষের জীবন, সে চিত্রই তুলে আনার চেষ্টায় এই ছবিঘর৷
ছবি: Jibon Ahmed
এক ঘরে ১০ জনের বসবাস
আট সন্তান নিয়ে এক ঘরে গাদাগাদি করে থাকেন জোহার ও উম্মে কুলসুমা দম্পতি৷ তাঁদের দুই মেয়ে বড় হয়েছে৷ আর সবার ছোটটার বয়স দুই বছর৷ রাখাইনে কৃষি কাজ করতেন জোহার৷ এখন কাজ নেই, সাহায্যে চলছে তাঁদের জীবন৷
ছবি: Jibon Ahmed
এক টিউবওয়েলে চলে ৯৯ পরিবার
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ পানি সরবরাহে ক্যাম্পে বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ৷ একটি নলকূপের পানি নিয়ে চলছে তিন ব্লকের ৯৯টি পরিবার৷
ছবি: Jibon Ahmed
৩৩ পরিবারের জন্য চার টয়লেট
বাঁশ আর প্লাস্টিক দিয়ে পাহাড়ের ঢালে তৈরি করা হয়েছে টয়লেট৷ এক জায়গায় পাশাপাশি চারটি টয়লেট দিয়ে কাজ চালাতে হয় ৩৩টি পরিবারের সদস্যদের৷ আর দুটো গোসলখানা ব্যবহার করে ২০ থেকে ৩৫টি পরিবার৷
ছবি: Jibon Ahmed
নিউমোনিয়া
রোহিঙ্গা শিবিরের শিশুদের নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার এখনো বেশ৷ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত আট মাসের জাইনুকা বিবিকে বালুখালীতে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিমের চিকিৎসকদের কাছে এনেছেন মা খালেদা বানু৷
ছবি: Jibon Ahmed
ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম
ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিমের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে বেশ কয়েকটি সংস্থা ও সংগঠন৷ এ রকম একটি টিমের চিকিৎসক সোহেল জানান, প্রতি দিন ৪০-৫০ জন রোগী দেখেন৷ তাঁদের অধিকাংশ পানিবাহিত, ঠান্ডা ও ইনফেকশনের সমস্যা নিয়ে আসেন৷
ছবি: Jibon Ahmed
ঈদে জন্ম ‘কোরবান আলীর’
শরণার্থী শিবিরে ২১ সেপ্টেম্বর জন্ম হয়েছে এজাহার হোসেন ও রেনুর একমাত্র ছেলে সন্তানের৷ কোরবানির ঈদের দিন জন্ম হওয়ায় তার নাম রাখা হয়েছে কোরবান আলী৷ এনজিও পরিচালিত একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে জন্ম নেওয়া এই শিশু ও তার মা সুস্থ আছে বলে জানান এজাহার হোসেন৷
ছবি: Jibon Ahmed
অপরিকল্পিত বসতি
স্বল্প সময়ের মধ্যে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আসায় তাঁদের আশ্রয়ের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়াই গড়ে তোলা হয় ঘর৷ বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ঘরগুলো৷
ছবি: Jibon Ahmed
ঝুঁকিপূর্ণ ঘর
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ের মধুরছড়ার এই বসতিতে আছে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা৷ পাহাড়ের ঢালে তৈরি করা হয়েছে তাঁদের ঘর৷ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এসব ঘর থেকে তাঁদের সরিয়ে নেওয়া পরিকল্পনা করেছে সরকার৷ এরইমধ্যে কিছু পরিবারকে সরিয়েও নেওয়া হয়েছে৷