ন্য়াশভিলের স্কুলে বন্দুকধারীর আক্রমণের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যেতে পারেন তিনি।
ছবি: John Amis/AP
বিজ্ঞাপন
সোমবার নর্থ ক্যারোলিনার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে বক্তৃতা করতে উঠে ন্যাশভিলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন তিনি। বাইডেন জানান, ওই স্কুলে যা ঘটেছে, তা মর্মান্তিক। এরপরই অ্যামেরিকার বন্দুক আইন নিয়ে সরব হন তিনি। বাইডেনের বক্তব্য, একমাত্র কংগ্রেসই এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসতে পারে এবং দেশকে বাঁচাতে পারে।
অ্যামেরিকা-জুড়ে শোকের ছায়া
টেক্সাসের স্কুলে গুলি চালানোর ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। শোকের ছায়া সর্বত্র।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
টেক্সাসের স্কুলে গুলি
টেক্সাসের ইউভ্যালডির একটি প্রাথমিক স্কুলে ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার। ১৮ বছরের এক তরুণ গায়ে বুলেটের বেল্ট লাগিয়ে স্কুলে ঢুকে পড়ে। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে সে ছাত্রছাত্রীদের হত্যা করে। ঘটনায় ১৮ জন শিশু নিহত হয়েছে। মোট মৃত ২১। এর আগে বাড়িতে নিজের দিদিমাকেও গুলি করে হত্যা করে ওই যুবক। পরে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে তার মৃত্যু হয়। গুলি চালানোর কারণ এখনো অস্পষ্ট।
ছবি: Allison Dinner/AFP
বাইডেনের প্রতিক্রিয়া
জাপান থেকে অ্যামেরিকায় ফিরছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিমানেই তিনি খবরটি পান। বিমানে বসেই তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। পরে টুইটও করেন। ওয়াশিংটনে নেমে ফের সাংবাদিক বৈঠক করেন বাইডেন। ঘটনায় নিজের ক্ষোভ চেপে রাখেননি প্রেসিডেন্ট। এর জন্য অস্ত্র আইনকে ফের দায়ী করেছেন তিনি।
ছবি: Kevin Lamarque/REUTERS
ক্ষুব্ধ কমলা হ্যারিস
টেক্সাসের ঘটনায় ক্ষুব্ধ ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তিনিও জানিয়েছেন, এবার দ্রুত অস্ত্র আইন বদল করা উচিত। নির্বাচন পর্বে বাইডেন-হ্যারিস জুটি জানিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে তারা অস্ত্র আইন কঠোর করবেন। কিন্তু রিপাবলিকানদের প্রতিরোধে সেই বিল আইনে পরিণত হয়নি। যা নিয়ে বার বার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাইডেন এবং হ্যারিস দুইজনেই।
ছবি: Alexandru Dobre/AP/picture alliance
পতাকা অর্ধনমিত
হোয়াইট হাউস, নৌবাহিনীর জলযান, সামরিক ঘাঁটি, দূতাবাস-সহ সমস্ত সরকারি ভবনে পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
ছবি: Anna Moneymaker/Getty Images
বেসবল মাঠ
নিউইয়র্কে একটি বেসবল মাঠের ছবি। খেলা শুরুর আগে সেখানে নিহত শিশুদের স্মরণে নীরবতা পালন করা হচ্ছে।
ছবি: Frank Franklin II/AP Photo/picture alliance
স্কুলের চেহারা
মেক্সিকোর সীমান্তে অবস্থিত ইউভ্যালডি। ছোট্ট এই শহরে মাত্র ১৬ হাজার মানুষের বাস। সেখানেই এলিমেন্টারি স্কুলে আক্রমণ চালায় ১৮ বছরের স্যালভাডোর রামোস। গুলির আওয়াজ পাওয়ার পরেই সেখানে পৌঁছে যায় স্থানীয় পুলিশ। পুলিশের গুলিতে নিহত হয় আক্রমণকারী। তার আগে ২১ জনের প্রাণ নিয়ে নিয়েছে সে।
ছবি: San Antonio Express-News/ZUMA Press/IMAGO
ফাঁকা স্কুলবাস
এই স্কুলবাসে করেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল নিহত শিশুদের। ফাঁকা স্কুলবাস দাঁড়িয়ে আছে স্কুলের বাইরে।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
নিরাপত্তার বেষ্টনী
স্কুল চত্বর ঘিরে ফেলেছে নিরাপত্তাকর্মীরা। সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্কুলের বাইরে আতঙ্কিত বাবা-মায়েদের ভিড়।
ছবি: William Luther/The San Antonio Express-News/AP/picture alliance
ভেঙে পড়েছেন অভিভাবকরা
স্কুলের ভিতর থেকে তখনো সমস্ত মৃতদেহ বার করা হয়নি। স্কুলের বাইরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অভিভাবকরা।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
একের পর এক ঘটনা
গত কয়েকবছরে একের পর এক গুলিচালানোর ঘটনা ঘটেছে অ্যামেরিকায়। স্কুলেও আক্রমণ হয়েছে। তবে এত বড় ঘটনা প্রায় ১০ বছর পরে ঘটল। এর আগে কানেকটিকাটের একটি স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
ছবি: Dario Lopez-Mills/AP Photo/picture alliance
10 ছবি1 | 10
এদিন বক্তৃতার সময় বাইডেন জানিয়েছেন, দুঃখজনক সত্য হলো, অ্যামেরিকায় সবচেয়ে বেশি শিশুর মৃত্যু হয় বন্দুকধারীর গুলিতে। গত কয়েকবছরে একের পর এক স্কুলে আক্রমণ হয়েছে এবং একের পর এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ন্যাশভিল তার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ। এই মুহূর্তে এটা বন্ধ হওয়া দরকার। একটি সমীক্ষা তুলে ধরে বাইডেন বলেন, বলা হচ্ছে, প্রতিবছর গাড়ি দুর্ঘটনায় যত ছাত্রছাত্রীর মৃত্যু হয়, বন্দুকধারীর হামলায় তারচেয়ে অনেক বেশি ছাত্রছাত্রী নিহত হয়। এই তথ্য দিয়েই বাইডেন দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, চোখের সামনে এই তথ্য থাকা সত্ত্বেও তার হাত-পা বাঁধা। অস্ত্র আইন বদলের চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে এবার বিষয়টি তিনি কংগ্রেসের হাতে ছেড়ে দিয়েছিন। তার বক্তব্য একমাত্র কংগ্রেসই পারে এই পরিস্থিতির বদল ঘটাতে।
নব্বইয়ের দশকের তুলনা টেনে এনেছেন বাইডেন। তিনি তখন কংগ্রেসে। প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন অস্ত্র আইন নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। বাইডেনের বক্তব্য, এবারও সেই একইভাবে অস্ত্রের বিরুদ্ধে নামতে হবে। প্রেসিডেন্ট বলেছেন, অধিকাংশ অ্যামেরিকান ঘরে সেমি অটোমেটিক, হত্যা করা যায়, এমন অস্ত্র রাখতে চান না। কয়েকজন রাখে। আর যারা রাখে, তারাই এই কাজ করে। ন্যাশভিলের স্কুলে এক নারী একাধিক বন্দুক নিয়ে গিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ অবশ্য ঘটনাস্থলেই তাকে গুলি করে মেরেছে।
ন্যাশভিলের ঘটনায় তিনটি শিশু এবং তিনজন প্রাপ্ত বয়স্কের মৃত্যু হয়েছে। এক নারী সেমি অটোমেটিক মেশিনগান নিয়ে স্কুলের ভিতর ঢুকে পড়ে নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে। পুলিশ এখনো পর্যন্ত তার পরিচয় প্রকাশ করেনি। কেন সে একাজ করলো, তা-ও এখনো স্পষ্ট নয়।