1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বন্ধু ভাবলে বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ কেন?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৬ জুন ২০১৯

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তে ভারত বিএসএফ মোতায়েন করলেও এ বাহিনীর উপস্থিতি নেই দেশটির নেপাল ও ভুটান সীমান্তে৷ সেখানে আছে এসএসবি৷ তাই প্রশ্ন উঠেছে, ভারত যদি বাংলাদেশকে বন্ধু মনে করে তাহলে সীমান্তে বিএসএফ কেন? 

Die Grenze zwischen Indien und Bangladesch
ছবি: S. Rahman/Getty Images

বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে আবারো সীমান্ত হত্যা নিয়ে উদ্বেগ ও দু:খ প্রকাশ করা হয়েছে৷ কিন্তু ভারতীয় ও বাংলাদেশের বিশ্লেষকরা বলছেন সীমান্তে বিএএসফ ‘গুলি করে হত্যাকেই’ প্রাধান্য দেয়৷
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের  (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ে ঢাকায় তিনদিনের বৈঠক গত শনিবার শেষ হয়৷ বৈঠকে সীমান্ত হত্যা বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করা হয়৷ বিএসএফের মহাপরিচালক রজনীকান্ত  মিশ্র নিহতের এ ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্খিত মৃত্যু’ বলে  উল্লেখ করেন৷ তাঁর মতে, নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে গুলি করে বিএসএফ৷
বিজিবি'র মহাপরিচালক মো. সাফিনুল ইসলাম সীমান্তে এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন৷ বৈঠকে জানানো হয়, এই বছরের প্রথম ৫ মাসে সীমান্তে ১৫ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন৷ আর বিএসএফ মহাপরিচালক দাবি করেন, গত বছর ভারতীয়  ভূখন্ডে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে৷ তাঁদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি ও ছয়জন ভারতীয়৷ 
ভারতের মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) সাধারণ সম্পাদক কিরিটি রয় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সীমান্ত হত্যা ভারতীয় আইনে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ কিন্তু বিএসএফ হত্যা করছে এবং তারা এর জন্য বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেনা৷ তাদের ইমপিউনিটি দেয়া হচ্ছে৷ তারা ট্রিগার হ্যাপি৷’’
নতুন সরকারের সময়ে এই পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ভারতের এ সরকার নতুন নয়, পুরনো সরকার৷ একই সরকার৷ আমি দুর্ভাগ্যজনক হলেও একজন ভারতীয় হিসেবে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, বাংলাদেশ একটি বন্ধু রাষ্ট্র হলেও যেহেতু এখানে মুসলমানরা বেশি, তাই তারা বাংলাদেশকে বন্ধু রাষ্ট্র মনে করেনা৷ তাই বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স) আছে৷ কিন্তু নেপাল বা ভুটান সীমান্তে কোনো বিএসএফ নেই৷ সেখানে আছে এসএসবি (সশস্ত্র সীমা বল)৷’’

বিএসএফ হত্যা করছে কিস্তু তারা বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেনা: কিরিটি রয়

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘১৯৬৮ সালে বিএসএফ-এর জন্ম৷ পাকিস্তান সীমান্তেও বিএসএফ আছে৷ একাত্তরে  পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ হলো৷ শেখ মুজিব সরকারের সময়ই থেকেই বাংলাদেশের সাথে ভারতের সুসম্পর্ক, খালেদা জিয়া সরকারের সময় ভালো সম্পর্ক ছিলো৷ হাসিনা সরকারের সময়ও সুসম্পর্ক৷ কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তে  বিএসএসএফ-ই আছে৷ সীমান্তে দুর্ভাগ্যজনকভাবে হত্যা চলছে৷ ধর্ষণ চলছে৷’’
ভারতের এ মানবাধিকার কর্মী আরো বলেন,‘‘ শুধু বাংলাদেশীদেরই নয়, বিএসএফ ভারতীয়দেরও গুলি করে মারছে৷’’
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান বলেন, ‘‘বিএসএফ-এর যে সকল সদস্যকে বাংলাদেশের সীমান্তে নিয়োগ দেয়া হয় তারা বাংলা ভাষা বোঝেন না৷ সময়ে সময়ে পাকিস্তান সীমান্ত থেকে এনে তাঁদের বাংলাদেশ সীমান্তে দায়িত্ব দেয়া হয়৷ যাদের মধ্যে উগ্রতা আছে৷ লক্ষ্যনীয় যে, পাকিস্তান সীমান্তে দায়িত্ব পালনের সময়ও কিন্তু তারা এতটা উগ্রতা দেখায় না, যেটা বাংলাদেশ সীমান্তে তারা করে থাকে৷ তারা হয়তো সামরিক শক্তির সামর্থ্য বিবেচনা করে৷’’
তিনি বলেন, ‘‘ভারতে আরেকটি নির্বাচন হলেও এখনো কিন্তু সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার কমছেনা৷ নিরীহ বাংলাদেশিদেরকে হত্যা করা হচ্ছে৷ বার বার সীমান্ত হত্যাকান্ড বন্ধে ভারতের সরকার প্রতিশ্রুতি দিলেও বিএসএফ কিন্তু তা আমলে নিচ্ছে না৷ এখানে আসলে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং বাস্তবতার অনে ফারাক আছে৷’’
তিনি বলেন, ‘‘ভারত যে আন্তরিক নয় তা বিএসএফ-এর মহাপরিচালকের কথায়ই বোঝা যায়৷ তিনি সীমান্ত হত্যায় উদ্বেগ ও দু:খ প্রকাশ করছেন, আবার বলছেন বাধ্য হয়ে গুলি ছুড়ছে৷ আসলে সীমান্তে চোরাচালানই বড় ঘটনা৷ এর জন্য গুলি করার কোনো দরকার নেই৷ আমরা বলছি, অপরাধ করলে আটক করো৷ কিন্তু তারা গুলিতেই সামাধান বেছে নিয়েছে৷’’

তারা গুলিতেই সামাধান বেছে নিয়েছে: নূর খান

This browser does not support the audio element.

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ