না একই সঙ্গে দু'জনের সাক্ষাৎকার নেননি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল৷ তবে এসব সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে মজার কিছু বিষয়৷
বিজ্ঞাপন
মাশরাফিকে বরাবরই মজার মানুষ মনে হলেও তামিমকে সে তুলনায় বেশ গুরুগম্ভীর ব্যক্তিত্ব হিসেবেই চেনেন ক্রিকেট ভক্তরা৷ কিন্তু এবার লাইভে তামিমের ভিন্ন রূপ দেখলেন তারা৷
করোনা ভাইরাসের কারণে সব ক্রিকেটারই গৃহবন্দি৷ আর সেসময়টাকে কাজে লাগাতেই একটু খোশ গল্পের মেজাজে ছিলেন তামিম৷ তার সাথে মুশফিক আর রিয়াদের আলাপে বোঝা গেলো আমাদের দেশের ক্রিকেটাররা একে অপরের কাজের প্রতি কতটা শ্রদ্ধাশীল৷ পাশাপাশি তারার কতটা বিনয়ী৷ একই সাথে এসব আলাপে উঠে এসেছে অনেক ‘সিক্রেট' অর্থাৎ গোপন কথা যা হয়ত আগে কারো জানা ছিলো না৷
আপনি কি জানতেন ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে পরিশ্রমী মুশফিকুর রহিম? মুশফিক ভীষণ বিনয়ী তিনি তা স্বীকার করতে নারাজ৷ তার মতে তামিম, সাকিবের মত তার প্রতিভা নেই বলেই এত পরিশ্রম করতে হয়৷
এই প্রথম মনে হয় তামিম বসেছিলেন সঞ্চালকের আসনে৷ বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে সম্পর্কটা যে কতটা গভীর এই আলাপ থেকেই তা উঠে আসে৷ ওয়ানডে ও টেস্ট দলের ক্যাপ্টেনের মধ্যে কথোপকথোনের শুরুটা অবশ্যই করোনা নিয়ে শুরু হয়েছিল৷ কেননা সাক্ষাৎকারের পেছনে যে মূল কারণ ওটাই, নইলে এত সময় কি থাকে ব্যস্ততম ক্রিকেটারদের হাতে৷
মুশফিকের মতে, করোনা ভাইরাসের যে প্রাদুর্ভাব এটা কর্মের ফল৷ এটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত৷ মানুষ প্রচুর পাপ করেছে বলেই এত রোগ শোক ভোগ করতে হচ্ছে এবং এই রমজান মাসে দোয়া করে মাফ চাইলে খুব শিগগিরই এই সংকট কেটে যাবে বলে মনে করেন তিনি৷ তারা দুজনেই অবশ্য এই লক ডাউনের সময়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন, কারণ পরিবারের সঙ্গে এত সময় কাটানোর সময় তাদের কোথায়! তামিম তো মজা করে বলেই ফেললেন যাদের প্রচুর টাকা পয়সা আছে, তারাও এখন চাইলে বেড়াতে যেতে পারে না৷
তবে কথোপকথনের শুরুতেও মুশফিককে একটু ভয় পেতে দেখা যায়৷ কারণ তামিমের প্রশ্ন মানেই নাকি সেখানে ঝামেলা থাকে৷ বোঝা গেলো ড্রেসিং রুমেও এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় মুশফিককে৷
একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা একাদশ
ডয়চে ভেলের অনুরোধে এপ্রিল, ২০১৬ সালে এই একাদশ নির্বাচন করেন আকরাম খান৷ তাঁর দেয়া ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী নামগুলো থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: BDnews24/M. Rahman
তামিম ইকবাল
ডয়চে ভেলের অনুরোধে ২০১৬ সালের এপ্রিলে এই একাদশ নির্বাচন করেন আকরাম খান৷ তিনি সেরা একাদশ নির্বাচন করায় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের ভাতিজা তামিমকে নিয়েছেন বলে যাঁরা ভাবছেন তাঁরা একবার তামিমের পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিন৷ বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে ব্যক্তিগত মোট রানের সংখ্যা ৫,০০০ রান পেরিয়েছেন তিনি৷ এ জন্য তাঁকে ১৫৯টি ম্যাচ খেলতে হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Kiran
শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ
টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বিরুদ্ধে একদিনের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম জয়টি আসে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে৷ সেই ম্যাচে ওয়াকার, ওয়াসিম, শোয়ের আখতারের মতো বোলারদের বিপক্ষে প্রথম ব্যাট করতে নেমে ৩৯ রান করেছিলেন বিদ্যুৎ৷ দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই রান টাইগারদের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল৷
ছবি: Mir Farid
সাকিব
অনেকে হয়ত তাঁকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় বলবেন৷ বিশ্ব ব়্যাংকিংয়ে কয়েকবার শীর্ষে উঠে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সেরা বিজ্ঞাপন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন এই অলরাউন্ডার৷ ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ পর্যন্ত ১৬৩টি একদিনের ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৪,৫৬৬, উইকেট নিয়েছেন ২১৫টি, সেঞ্চুরি আছে ৬টি৷ সাকিবের চেয়ে উইকেট বেশি আছে শুধু মাশরাফির৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
মুশফিকুর রহিম
এই উইকেট-রক্ষক কাম ব্যাটসম্যানের ওডিআই ডেব্যু হয়েছিল ২০০৬ সালে৷ সেই থেকে ১৬৪টি ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৪,০৭৬টি, আছে ৪ সেঞ্চুরি (২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ পর্যন্ত)৷ প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটিও তাঁর৷
ছবি: Getty Images/R. Pierse
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু
বাংলাদেশের প্রথম একদিনের ম্যাচ খেলেছিলেন নান্নু৷ সেই সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২০৷ সেটি ১৯৮৬ সালের কথা৷ এরপর মোট ২৭টি ওয়ানডে খেলেছেন৷ ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জয়ে নান্নুর করা সাত ওভার (২৯ রান দিয়েছিলেন) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল৷
ছবি: Mir Farid
পাইলট
শুধু ভালো উইকেট-রক্ষকও ছিলেন না, শেষদিকে ব্যাট করতে নেমে দলকে জেতাতে না পারলেও বেশ কয়েকবারই একটা সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন৷ ১৯৯৫ সালে ওডিআই খেলা শুরু করার পর ১২৬ ম্যাচে ১,৮১৮ রান করেছিলেন৷
ছবি: Mir Farid
রফিকুল আলম
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন এই অলরাউন্ডার৷ ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের হয়ে দু’টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন৷ তবে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম খেলেন ১৯৮০ সালে৷ ১৯৮২ ও ১৯৮৬-র আইসিসি ট্রফিতেও খেলেছেন রফিকুল আলম৷
ছবি: Mir Farid
রফিক
প্রধান পরিচয় বাঁ-হাতি স্পিনার হলেও মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবেও পরিচিত ছিলেন৷ ১৯৯৫ সালে শারজায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে তাঁর ওডিআই অভিষেক হয়েছিল৷ প্রথম উইকেটটাই পেয়েছিলেন টেন্ডুলকারকে আউট করে৷ বোলিং ফিগার ছিল ৫-০-১৫-১৷ এরপর ১২৫টি একদিনের ম্যাচ খেলে সমান সংখ্যক উইকেট পেয়েছিলেন৷
ছবি: Mir Farid
মাশরাফি (অধিনায়ক)
সেরা একাদশের অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফিকে বেছে নেয়ার সিদ্ধান্তটি আকরামের জন্য সহজই ছিল বলা যায়৷ দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বোলার হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অন্যদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে নিতে বেশ কয়েকবারই পারদর্শিতা দেখিয়েছেন তিনি৷
ছবি: BDnews24/M. Rahman
মুস্তাফিজুর রহমান
আইসিসি ২০১৫ সালে ওয়ানডে একাদশের যে নাম ঘোষণা করেছিল তাতে প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে স্থান পেয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান৷ ঐ বছর জুনে ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর অভিষেক ঘটে৷ প্রথম দুই ওয়ানডেতে তিনি ১১ উইকেট নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
রুবেল হোসেন
ডানহাতি এই ফাস্ট বোলারের ওয়ানডে অভিষেকটা স্মরণীয় হয়েছিল৷ ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঐ ম্যাচে ৩৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে টাইগারদের জয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন৷
ছবি: Getty Images/Dibyangshu Sarkar
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (দ্বাদশ খেলোয়াড়)
সাকিব-তামিম-মুশিফক-মাশরাফিদের ভিড়ে তাঁর নাম চাপা পড়ে গেলেও দলের প্রয়োজনে মাঝেমধ্যেই তাঁকে ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হতে দেখা যায়৷ ২০১৫ বিশ্বকাপের পরপর দুই ম্যাচে তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন৷ তাঁর অফস্পিনও সময় সময় বেশ কাজে লাগে৷
ছবি: Getty Images/R. Pierse
অমায়িক আকরাম
সেরা একাদশে নিজের নাম না রাখা প্রসঙ্গে আকরাম খান বলেন, ‘‘তালিকা আমি করেছি, সেখানে তো আমার নাম রাখতে পারি না৷’’ তবে ইএসপিএনক্রিকইনফো ডটকম ওয়েবসাইটে আকরামকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘প্রথম আসল নায়ক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Bernama
13 ছবি1 | 13
মুশফিক সারাদিন কি করে কাটাচ্ছেন এই প্রশ্ন শেষ হতেই ভিডিওতে একঝলক দেখা মেলে তামিমের ছেলের৷ এরপরের প্রশ্ন ছিলো কতটা কষ্ট করে মুশফিক জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন৷ ক্রিকেট কেনো বেছে নিলেন মুশফিক? মুশফিকের প্রিয় খেলা কিন্তু ব্যাডমিন্টন৷ লারার ভক্ত মুশফিক বিকেএসপিকে পরীক্ষা দিতে গিয়ে বেছে নিয়েছিলেন ক্রিকেটকে৷
এসব কথার মাঝখানে অনেক মজার তথ্য হাজির করেন তামিম, যেমন মুশফিক এবার প্র্যাকটিস ম্যাচে পেস বোলিং করেছিলেন৷ সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে তামিম বলেন, ‘মুশফিক কি নিজের উচ্চতার কথা ভুলে গিয়েছিলেন?
এক পর্যায়ে একে অপরকে জিজ্ঞেস করেন তাদের চুল কেটে দিয়েছে কে? জানা গেলো দু'জনের স্ত্রীই এই কাজটা নিপুনভাবে করেছেন৷
মুশফিকের মনেও ছিলো প্রশ্ন৷ আর সেটা এশিয়া কাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে ইনজুরি নিয়ে তামিমের ব্যাটিং প্রসঙ্গ৷ কীভাবে সেটা সম্ভব করেছিলেন তামিম? তামিম জানালেন, চিকিৎসকেরা তাকে দৌড়াতেও নিষেধ করেছিলেন ফ্র্যাকচার নিয়ে অথচ দলের খারাপ অবস্থায় স্ট্রাইকে থাকতে হবে না ভেবে নেমেও ব্যাট হাতে নিয়েছিলেন৷ জানিয়েছেন, প্রচণ্ড ব্যথায় আসলে তখন কি করেছিলেন তার ঠিক জ্ঞান ছিলো না৷
এরপর দু'জনের কথাতেই উঠে আসে টেস্ট প্রসঙ্গ৷ টেস্ট অধিনায়ক হেসেবে মুশফিকের যেসব সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশ অবিস্মরণীয় কিছু জয় পেয়েছে তার জন্য সাধুবাদ জানান তামিম৷
কথা হয় বিপিএল নিয়ে৷ দুজনেই একমত একটা দলের হয়ে অন্তত টানা কয়েক বছর একজনকে দলনেতার দায়িত্ব দেয়া হোক৷
বাংলাদেশের সর্বস্তরের ক্রিকেটারদের নিয়ে তাদের ভাবনার কথাও উঠে আসে এই লাইভে৷ করোনা সংকট থেকে বেরিয়ে তারা প্রথমেই ঘরোয়া ক্রিকেট খেলবেন বলেও জানান৷ কেননা বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটারের উপার্জন হয় শুধু এ থেকেই৷ এটা চলতে না থাকলে তাদের না খেয়ে থাকতে হবে৷
যে ব্যাট দিয়ে জীবনে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন সেটা নিলামে তুলছেন মুশফিক৷ উদ্দেশ্য করোনা সংকটে ত্রাণ তহবিল গড়ে তোলা৷
এসময় দুই ক্রিকেটার রেকর্ড ভাঙ্গা-গড়ার কথা নিয়ে মজায় মেতে ওঠেন৷
শেষ মুহূর্তে তামিম মুশফিককে বলেন, করোনা সংকট শেষ হলে প্রথম যে ম্যাচটা মুশফিক খেলবেন, খেলার আগে ড্রেসিং রুমের কমোডে বসলে নির্ঘাত সেঞ্চুরি করবেন৷ একথা বলার পেছনে ছিলো ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ড্রেসিং রুমের মজার গল্প৷
করোনা সংকট নিয়ে মুশফিকের ভিডিও নিয়ে মজা করতেও ছাড়েননি বাংলাদেশের ওডানডে দলের অধিনায়ক৷
৩ তারিখে মুশফিকের সঙ্গে লাইভের পর ৪ তারিখে তামিম লাইভে হাজির হয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে সাথে নিয়ে৷ টি-টোয়েন্টির এই অধিনায়কের কথা শুনে মনে হয়েছিল তিনি তামিমকে পাল্টা আক্রমণ করতে পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে বসেছিলেন৷ যদিও শেষ পর্যন্ত সে সুযোগ তিনি পাননি৷
রিয়াদ সম্প্রতি দ্বিতীয় সন্তানের বাবা হওয়ায় তাকে শুভেচ্ছা জানান তামিম৷ রিয়াদ তার বড় ছেলেকে পড়ালেখায় সাহায্য করছেন বলে জানালেন৷ চলছে শরীর চর্চা এবং নামাজ-রোজা৷ জানা গেলো বাংলাদেশ দলে খেলার সময় ধর্মীয় অনুশাসনগুলো মানতে দলের অনেকেই রিয়াদকে অনুসরণ করেন৷
রিয়াদ নাকি আগে এতটা ধার্মিক ছিলেন না, তাহলে এর পেছনে কারণটা কি? তা নিয়ে হাসি ঠাট্টায় মেতে ওঠেন দুজন৷
লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করেও রিয়াদ যে দলকে কতটা এগিয়ে রাখেন এবং এই অর্ডারে খেলে দলকে জেতানোর মত বিকল্প এইদেশে এখনও নেই বলে মনে করেন তামিম৷ রিয়াদের ধারণা সাব্বির, সাইফুদ্দিন বা মোসাদ্দেক হতে পারেন তার বিকল্প৷
অন্যদিকে, রিয়াদের প্রশ্ন ছিলো তামিমের কাছে তার সবচেয়ে প্রিয় ম্যাচ কোনটা৷ সেক্ষেত্রে তামিম কিন্তু কোন জেতা ম্যাচের কথা বলেননি৷ বলেছেন মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৫ রানের ইনিংসটির কথা৷
এরপর উঠে আসে নিদাহাস ট্রফির কথা৷ যেখানে শ্রীলংকার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধ ম্যাচে রিয়াদ ছয় মেরে বাংলাদেশকে জিতিয়েছিল৷ তামিম বলেন, শ্রীলংকার বিপক্ষে ২০১৮ সালে টেস্ট সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ৷ সেসময় তিনি হাথুরুকে বলেছিলেন তার দেশে গিয়ে তার দলকে হারাবেন৷
তবে রিয়াদের বোলিং নিয়ে মজা করে তামিম বলেন, রিয়াদ যে ঠিক কোথায় বল করবেন তা স্বয়ং আল্লাহও বলতে পারবে না৷
এরপর নানা মজার প্রসঙ্গ টেনে আনেন তামিম৷ মুশফিকের মত রিয়াদকেও জিজ্ঞেস করেন কে কেটে দিয়েছে চুল৷ এছাড়া কয়েকটি প্রশ্ন করেন যার উত্তরের সঙ্গে একমত হননি রিয়াদ৷ তবে খেলার মাঠে সাকিবের সঙ্গে রিয়াদের বোঝাপড়াটা যে খুব একটা ভালো নয়, তা উঠে আসে তাদের আলাপচারিতায়৷ যদিও বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেননি রিয়াদ৷
আউটডোরে ক্রিকেটারদের সঙ্গে আড্ডাটা ভীষণভাবে মিস করছেন রিয়াদ৷ তার সঙ্গে একমত তামিমও৷ তামিম, মাশরাফি, মুশফিক, সাবিক, লিটন, মিরাজ সবাই করোনা দুর্গতদের জন্য যেভাবে তহবিল গঠন করছেন তাকে সাধুবাদ জানান রিয়াদ৷
গত দুইদিনে দুই অধিনায়কের সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম থেকে লাইভে ছিলেন তামিম৷ আজ রাতে সাবেক অধিনায়ক মাশরাফির সঙ্গে লাইভ করার কথা৷ যদিও তামিমের ধারণা শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করে দিতে পারেন ম্যাশ৷
বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের নতুন অধিনায়ক যে এভাবে তার দলকে চাঙ্গা রাখছেন এটাকে সাধুবাদ জানাতে হয়৷ ক্রিকেটাররা দুর্দিনে মানুষের পাশে দাড়াক৷ বাংলাদেশ দল এই সংকটের মধ্যেও তাদের মনোবল ধরে রেখে আগামী খেলা খেলবে এই প্রত্যাশা৷
সুমনের চোখে বাংলাদেশের সেরা টেস্ট একাদশ
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ গত ১০ নভেম্বর উনিশ বছর পূর্ণ করে বিশে পা রেখেছে৷ সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনের গড়া বাংলাদেশের সেরা টেস্ট একাদশে কারা এবং কেন স্থান পেয়েছেন তা জানতে দেখুন আমাদের এই ছবিঘর৷
ছবি: AP
মাশরাফি
সেরা একাদশের নেতৃত্ব নির্দ্বিধায় মাশরাফি বিন মর্তুজার হাতে তুলে দিয়ে সুমন বলেছেন, ‘‘এত জোরে বল করতে আমি দেশের খুব কম বোলারকেই দেখেছি৷ সুইংও ছিল৷ অত্যন্ত বুদ্ধিমান বোলার৷’’
ছবি: AP
তামিম
‘সেরা পারফর্মার‘ হিসেবেই ওপেনিংয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তামিম ইকবাল৷ লর্ডসে সেঞ্চুরি করা এই খেলোয়াড়কে একাদশে রাখার পেছনে দেশ ও দেশের বাইরে পারফর্ম্যান্সকেই বড় করে দেখেছেন হাবিবুল বাশার৷ তিনি বলেন, ‘‘পেস ও স্পিন সমান ভালো খেলে৷ সবচেয়ে বড় কথা, ওর ব্যাটিং অন্য ব্যাটসম্যানদেরও আত্মবিশ্বাস দেয়৷ ওকে এক নম্বরে রাখতে তাই একদমই সময় লাগেনি৷’’
ছবি: picture-alliance/A. Salahuddin
জাভেদ ওমর
৪০টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা এবং টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের হাবুডুবু খাওয়ার সময়ে উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকার মানসিকতাকে গুরুত্ব দিয়ে জাভেভ ওমরকে দলে রেখেছেন সুমন৷
ছবি: Shamsul Hoque Tanku
মুমিনুল
তিন নম্বর পজিশনে স্থান পেয়েছেন তিনি৷ সুমন বলছেন, মুমিনুলকে বাছতে কষ্ট হয়নি তার৷ তবে এই পজিশনে মুমিনুলকে বাদ দিলে নিজেকে জায়গা দিতেন তিনি৷ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মুমিনুলকে একাদশে রাখার ব্যাখ্যায় সুমন বলছেন, ‘‘রান করার দক্ষতা অনেক এবং ব্যাকফুটে শক্তিশালী৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
বুলবুল
বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে একাদশে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরো অনেক কিছুই দেওয়ার ছিল তাঁর৷’’ মাত্র ১৩ টেস্ট ক্যারিয়ারেও বুলবুল সর্বকালের সেরা একাদশে থাকার মতো ঝলক দেখিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস করেন হাবিবুল বাশার সুমন৷
ছবি: Shamsul Hoque Tanku
আকরাম খান
১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফিজয়ী অধিনায়ক আকরাম খানকে সেরা একাদশে জায়গা দিয়ে সুমন বলছেন, ‘‘যে-কোনো বোলিং আক্রমণকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে ফেলার ক্ষমতা ছিল উনার৷ পেস ও স্পিন খেলার সামর্থ্যের দিক থেকে অত্যন্ত উঁচু দরের ব্যাটসম্যান তিনি৷’’
ছবি: DW/Z. Chowdhury
সাকিব
অলরাউন্ডার হিসেবে একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান৷ সব ফরম্যাটে বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড়ও তিনি৷
ছবি: Munir uz Zaman/AFP/Getty Images
মুশফিক
সুমন বলছেন, মুশফিক অলরাউন্ডার, কারণ, তিনি উইকেটের পেছনেও দাঁড়াবেন৷ বিশেষজ্ঞ উইকেটরক্ষক হিসেবে খালেদ মাসুদ অপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও মুশফিককে দিয়ে কিপিং করালে বাড়তি একজন ব্যাটসম্যান খেলাতে পারার চিন্তা থেকেই তাঁর ওপর আস্থা রেখেছেন সুমন৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
রফিক
এই সি্পন বোলারকে একাদশে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘রফিক আমার দলে সব সময়ই থাকবে৷ আমি অধিনায়ক থাকাকালে সে আমাকে খুব কমই বঞ্চিত করেছে৷ রান আটকানোর পাশাপাশি উইকেট তুলে নেওয়ায় ওর চেয়ে ভালো আর কেউ নয়৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/F. K. Godhuly
শাহাদাত
ভীতিকর পেসার হিসেবে একাদশে শাহাদাত হোসেনকে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়ক যে রকম আক্রমণাত্মক বোলার চায়, শাহাদাত সে রকমই একজন৷ সত্যিকারের টেস্ট বোলার৷’’
ছবি: AP
মুস্তাফিজ
টেস্ট ক্যারিয়ারে এখনো বলার মতো কিছু না করলেও মুস্তাফিজকে যে-কোনো উইকেটে উইকেট নেওয়ার মতো বোলার বলেই মনে করেন সুমন৷ এজন্য তাঁর সেরা টেস্ট একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন তরুণ এই বোলার৷