1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বন্ধ কেদারযাত্রা, এখনো আটকে বহু তীর্থযাত্রী

২ আগস্ট ২০২৪

উত্তরাখণ্ডের প্রশাসন জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত ৭৩৭ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত্য়ু হয়েছে ১১ জনের।

হিমাচলে মেঘভাঙা বৃষ্টি
পাহাড়ে মেঘভাঙআ বৃষ্টিছবি: AFP/Getty Images

উত্তরাখণ্ডের ভীমবলিতে বুধবার মেঘফাটা বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও হিমাচলপ্রদেশে সিমলার কাছে মেঘফাটা বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সারাদিন বৃষ্টি হয়ার পর শুক্রবারও বৃষ্টির দাপট কমেনি। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এই আরো ৪৮ ঘণ্টা এমনই বৃষ্টি চলবে।

এই পরিস্থিতিতে হিমাচলপ্রদেশে মানালি যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। নদী কার্যত রাস্তার উপরে উঠে এসেছে। অন্যদিকে উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। সেখানে শ্রবণ মাসকে কেন্দ্র করে তীর্থযাত্রা শুরু হয়েছে। বহু তীর্থযাত্রী চারধাম যাত্রা শুরু করেছেন। ফলে কেদারনাথ, বদ্রীনাথে প্রচুর পর্যটক। তারই মধ্যে আবহাওয়ার এই অবস্থা হওয়ায় বহু যাত্রী মাঝরাস্তায় আটকে পড়েছেন।

প্রশাসন জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে আপাতত কয়েকদিনের জন্য় যাত্রা বন্ধ রাখা হয়েছে। যারা আটকে পড়েছেন, তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। এখনো পর্যন্ত ৭৩৭ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে সমতলের কাছাকাছি পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আটজন গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন বলে জানা গেছে। মৃত্য়ু হয়েছে ১১ জনের। যে সমস্ত যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের মধ্য়ে একজন ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''এখনো বহু যাত্রী পাহাড়ে আটকে আছেন। কয়েকজনের খোঁজ মিলছে না। মেঘফাটা বৃষ্টির পর রাতারাতি গোটা এলাকার চেহারা বদলে যায়। রাস্তার উপর দিয়ে প্রবল গতিতে জল বইতে শুরু করে। আমাদের হেলিকপ্টারে করে শোনপ্রয়াগে নামিয়ে আনা হয়।''

জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী একসঙ্গে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। শুক্রবারও বেশ কিছু যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন। বৃষ্টি হওয়ার কারণে উদ্ধারকাজে ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানিয়েছেন জওয়ানরা।

তেহরি এবং রুদ্রপ্রয়াগে এখনো ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। ওই অঞ্চলে পরিস্থিতি সবচেয়ে বিপজ্জনক। জায়গায় জায়গায় ধস নেমেছে। ফলে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।

কেন এমন ঘটনা?

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য়, জলবায়ু পরিবর্তন অবশ্যই এই ঘটনার জন্য় দায়ী। কিন্তু এর পিছনে মানুষের হাতও আছে। অর্থাৎ, একে ম্য়ানমেড ডিজাস্টার বলছেন অনেকেই। তাদের বক্তব্য়, এর আগে যোশীমঠে ভূমিধস কীভাবে গোটা শহরকে রাতারাতি ঘরছাড়া করেছিল, সকলে তা দেখেছেন। ২০১৩ সালে কেদার এবং বদ্রীতে ভয়াবহ মেঘফাটা বৃষ্টির কারণে রাস্তাই বদলে গেছে। উখিমঠ, যোশীমঠ সমস্ত জায়গার ভূপ্রকৃতি বদলে গেছে। তা সত্ত্বেও প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্য়বস্থা নেয়নি।

পরিবেশবিদ দীপায়ন দে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''যে কোনো ঘটনা ঘটলেই জলবায়ু পরিবর্তনকে দোষী সাব্য়স্ত করা হয়। অথচ আমরা কী ভয়াবহ কাণ্ড করেছি, তা কেউ উচ্চারণ করেন না। যেভাবে উত্তরাখণ্ডে পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে, তা অকল্পনীয়। তারই ফল ভুগতে হচ্ছে এখন।''

একই কথা বলছেন পরিবেশবিদ এবং সিভিল এঞ্জিনিয়ার বিভাংশু কাপারওনি। বিভাংশু উত্তরাখণ্ডের মানুষ। ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ''এই গোটা এলাকা সিসমিক থ্রি জোনের উপর অবস্থিত। অর্থাৎ ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। সেই সত্তরের দশকে এনিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু কোনো সরকার এসব কথায় কর্ণপাত করেনি। যথেচ্ছ গাছ কাটা হয়েছে। নগরায়ন হয়েছে। এখন তার ফল পাচ্ছি আমরা।''

পরিবেশবিদদের অনেকেই বলছেন, উত্তরাখণ্ডে যেভাবে যথেচ্ছ পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি হয়েছে, চারধাম রাস্তা তৈরি হয়েছে, বড় বড় লেন তৈরি করা হয়েছে, তা ভয়াবহ। পরিবেশ, প্রকৃতির কথা মাথায় রাখা হয়নি। পাহাড় কার্যত ধ্বংস করা হয়েছে।

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ