হাওরের কৃষকরা কিছুদিন আগেই ধান গোলায় তুলে নিশ্চিন্তে ছিলেন৷ এখন বন্যা তাদের এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে৷ বড় সম্বল গরু নিয়েও সংকটে তারা৷ ছয়টি ইউনিয়নের ৭০টি গ্রামের চিত্র প্রায় একই৷
বিজ্ঞাপন
নেত্রকোণার হাওর সংলগ্ন সবচেয়ে বেশি প্লাবিত খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের পাশেই উত্তর আঁটিপাড়ার বাসিন্দা ফালাক মিয়া মাসখানেক আগেই গোলায় ধান তুলেছিলেন৷ ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রোববার বিকালে বলেন, ‘‘ আমার প্রায় ৮০০ মণ ধানের গোলায় এখন তিন থেকে চার ফুট পানি৷ বাজারের ভাড়া গুদামে রাখছিলাম৷ পানির নিচে যে ধান তলিয়েছে সেই ধান যে কী হয়, জানি না৷ বাড়িতে গরু-বাছুর-ছাগল আছে, হাঁস-মুরগি আছে৷ এসব নিয়ে কই যামু?’’
পঞ্চাশোর্ধ্ব এই কৃষক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, ‘‘ যাওয়ার মতো অবস্থা নাই৷ এইবার এক্কেরে সর্বনাশের মইধ্যে পড়ছি৷’’
একই গ্রামের ৪০ বছর বয়সি মনির হোসেন বলেন, ‘‘ আমার গোলায় প্রায় দুই হাজার মণ ধান৷ ঘরের মধ্যে তিন থেকে চার ফুট বানের পানি৷ ধান পানিতে ভেইজ্যা আছে৷ কী করতাম, কিবায় বাঁচাম৷ ’’
একই উপজেলার কাদিরপুর গ্রামের রিপন সরকারের গোলায় থাকা প্রায় ৫০০ মণ ধান এখন পানির নিচে৷ সেই সঙ্গে গবাদি পশু রাখা নিয়েও পড়েছেন সংকটে৷ ‘‘ আমার আটটা গরু৷ তারারে সরানির জায়গা নাই৷ পানির মধ্যেই একটু উঁচু জায়গা দেইখ্যা রাখছি৷ চোরের ভয়ে নিজেও হেইখানে থাকি৷’’
গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়ার কথা জানালেন খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের পাশের উত্তর আঁটিপাড়ার মিন্টু মিয়া, রূপনগর গ্রামের একদিল মিয়া৷
মিন্টুর গরু-বাছুর মিলিয়ে ছয়টি আর একদিল মিয়ার চারটি৷ এর মধ্যে কোরবানির জন্য তৈরি করা পশুও আছে৷ গবাদিপশু রাখার পাশাপাশি গো-খাদ্যের সংকটের কথা বললেন তারা৷
একদিল মিয়ার চারটি গরুর মধ্যে একটি শংকর জাতের বড় ষাঁড়৷ এটা বিক্রি করেই তার সারা বছরের পরিবারের খোরাকি, মহাজনের ঋণ শোধ, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালানোর কথা৷ এগুলো নিয়ে দুই দিন ধরে উপজেলার ডাকবাংলোর সামনে পড়ে আছেন তিনি৷ পরিবার উঠেছে খালিয়াজুরী কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রে৷পানি নামলে পরে বাড়ি ফিরবেন৷
পানিবন্দি লাখো মানুষ, বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিপর্যস্ত জনজীবন
ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল৷ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন সিলেট, সুনামগঞ্চের কয়েক লাখ মানুষ৷ পানি উঠেছে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে৷
একদিকে বৃষ্টি আর অন্যদিকে পাহাড়ি ঢল৷ ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত সিলেট৷ ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার কোম্পানিগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার বেশিরভাগ এলাকাই পানিতে তলিয়ে গেছে৷ জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলারও বিস্তীর্ণ এলাকাও পানিবন্দি৷ পানি বাড়ছে সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, জকিগঞ্জ ও বিশ্বনাথ উপজেলায়৷
ছবি: bdnews24.com
বিপদসীমার উপরে
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার এবং সিলেট পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে৷ সারি নদীর পানি বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে৷ পানির উচ্চতা বেড়েছে কুশিয়ারা ও লোভা নদীরও৷ কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপরে বইছে৷
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সিলেট জেলার পাঁচ উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের জন্য ৪৪৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে; দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে৷
জরুরি জিনিসপত্র নিয়ে দুর্গত এলাকা থেকে নিরাপদ স্থানের সন্ধানে ছুটছেন গ্রামের মানুষ৷ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রনিখাইল এলাকার ইসমাইল আলী বলেন, “বারবার বন্যায় আক্রান্ত হচ্ছি৷ সব হারিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি৷ পরিবার নিয়ে কোথায় যাব৷”
চার দিনের টানা বৃষ্টিতে ভেসে গেছে কোম্পানিগঞ্জ৷ নিজেদের বাঁচাতেই যখন হিমশিম অবস্থা, তখন গবাদি পশু নিয়ে আরো বিপাকে পড়েছেন মানুষ৷ একটি পরিবারকে গরু নিয়ে উঁচু স্থানে যেতে দেখা যাচ্ছে ছবিতে৷
দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে বন্যাক্রান্ত উপজেলাগুলোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ হয় পানি সাঁতরে, নয়তো নৌকায় চেপে আশ্রয়স্থলে ছুটছেন মানুষ৷ অনেকে কলা গাছের ভেলায় চেপেও নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন৷
ঘাসিটুলা, কলাপাড়া, শামীমাবাদ, ডহর, তালতলা, কালিঘাট, সোবহানীঘাট, শাহজালাল উপশহর, তেররতন, হবিনন্দি, সাদিপুর, বোরহানবাগ, শিবগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমার কদমতলিসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক পানিতে ডুবে গেছে৷ অনেক বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে৷ শাহজালাল উপশহর এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম পলাশ জানান, বুধবার দুপুরেই উপশহরের বেশির ভাগ সড়ক তলিয়ে যায়৷ রাতের দিকে বাসায় পানি ঢুকে পড়ে৷ বিদ্যুৎ নেই, সঙ্গে পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।
সিলেট ও সুনামগঞ্জের নয়টি উপজেলার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে৷ সিলেট জেলায় ২৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। এছাড়া জেলার ৬০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এগুলোতে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com
এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত
বন্যার কারণে সারাদেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আগামী রোববার থেকে চলতি বছরের মাধ্যমিক, দাখিল ও এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল৷ এদিকে বন্যার পানি প্রবেশ করায় ২৫ জুন পর্যন্ত সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ৷ পিছিয়ে গেছে পরীক্ষাও৷
ছবি: bdnews24.com
বিপর্যস্ত সুনামগঞ্জও
বৃহস্পতিবার বিকালে তলিয়ে যায় সুনামগঞ্জ পৌর শহর৷ দুর্ঘটনা এড়াতে তখন থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে শহরের বাসিন্দাদের বৃহস্পতিবার রাত কেটেছে অন্ধকারে৷ সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারা, শান্তিগঞ্জসহ কয়েকটি উপজেলা এখন পানিতে ভাসছে৷ বন্ধ সারাদেশের সঙ্গে যানবাহন চলাচল৷ কাজ করছে না মোবাইল নেটওয়ার্কও৷
বিডিনিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুনামগঞ্জে একতলা কোনো বাড়িতে পানি উঠতে বাকি নেই, বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ, সুরমা উপচানো বন্যা চরম দুর্বিপাকে ফেলেছে সুনামগঞ্জ শহরের বাসিন্দাদের৷ সেলিম মিয়া নামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমার ৫০ বছরের জীবনে সুনামগঞ্জ শহরে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখিনি৷ শহরের সব এলাকা প্লাবিত৷ মানুষ আশ্রয় নিতে পারছে না৷ এখন ত্রাণের চেয়ে আশ্রয় জরুরি৷’’
ছবি: bdnews24.com
উদ্ধারে সেনাবাহিনী
সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যাদুর্গতদের উদ্ধার ও ত্রানকাজে সেনা সদস্য নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বিডিনিউজকে জানিয়েছেন, ‘‘সেনাবাহিনীর সদস্যরা ইতোমধ্যে সিলেটে কাজ শুরু করেছেন৷ সুনামগঞ্জেও দ্রুততম সময়ে কাজ শুরু করবেন৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নৌবাহিনীকেও কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন৷’’
ছবি: bdnews24.com
12 ছবি1 | 12
একদিল বলেন, ‘‘ খড়ের লাচিও ডুবে গেছে৷ সব আশা শেষ৷ গরুরে খাওয়াব কী? এখন ভরসা কিনে খাবার খাওয়ানো৷ আমার সেই সামর্থ্য নেই৷ গরুগুলো না খেয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে৷ সামনে কী করব বুঝতে পারছি না৷’’
মিন্টু মিয়ারও একটি বড় ষাঁড় এবারের কোরবানি ঈদে বিক্রি করার কথা৷ এখন সেই ষাঁড় তার জন্য গলার ফাঁস হয়ে গেছে৷ তিনি উঠেছেন খালিয়াজুরী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে৷
তিনি বলেন, ‘‘ নিজেদের ঘরই ডুবে গেছে, গরু রাখব কোথায়? নিজেদেরই খাবার নেই গরুকে কী খাওয়াব?’’
একদিল মিয়া, মিন্টু মিয়ার মতো হাওরে অনেক কৃষক কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু লালন-পালন করেছেন৷ প্রতিবছরই তারা এটা করেন৷ কৃষির পাশাপাশি এটা তাদের উপার্জনের একটি বড় মাধ্যম৷ এখন না পারছেন গরু বিক্রি করতে, না পারছেন রাখতে৷ খোলা আকাশের নিচে এখন গবাদি পশুর সঙ্গে মিলেমিশে দিন কাটাচ্ছেন হাওরবাসী৷ এই উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ৭০টি গ্রামের চিত্র প্রায় একই৷
খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘সবচেয়ে সব সমস্যা হচ্ছে, মানুষের গবাদিপশু ও সারা বছরের জমা ধান রয়েছে বাড়িতে৷ এ নিয়ে মানুষ খুব বিপদে আছেন৷ এগুলো রেখে তারা আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেন না৷ এখন বড় নৌকাও পাওয়া যাচ্ছে না৷ উপজেলা প্রশাসন একটা বড় নৌকা সংগ্রহ করেছে৷ এটা দিয়ে অভিযান শুরু হয়েছে৷ ’’
মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানান খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
বিশ্ব ঝুঁকি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান
জার্মানির নয়টি উন্নয়ন ও ত্রাণ সংস্থার অ্যালায়েন্স ‘ব্যুন্ডনিস এন্টভিকলুং হিল্ফট’ বিশ্বের ১৮১টি দেশের তথ্য নিয়ে গতবছর ‘বিশ্ব ঝুঁকি সূচক ২০২১’ প্রকাশ করে৷ সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায় তা জানার চেষ্টা করা হয়েছে ছবিঘরে৷
ছবি: Anuwar Hazarika/REUTERS
বিশ্ব ঝুঁকি সূচক
জার্মানির নয়টি উন্নয়ন ও ত্রাণ সংস্থার অ্যালায়েন্স ‘ব্যুন্ডনিস এন্টভিকলুং হিল্ফট’ ১৮১টি দেশের তথ্য নিয়ে গতবছর ‘বিশ্ব ঝুঁকি সূচক ২০২১’ প্রকাশ করে৷ জার্মানির রুয়র-ইউনিভার্সিটি বোখুমের ‘ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ল অফ পিস অ্যাণ্ড আর্মড কনফ্লিক্ট’ এতে সহায়তা করেছে৷ এছাড়া জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যাণ্ড হিউম্যান সিকিউরিটি’ এই সূচক নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেছে৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP
সূচক তৈরির প্রেক্ষাপট
ব্যুন্ডনিস এন্টভিকলুং হিল্ফট মনে করে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকানো না গেলেও দারিদ্র্য ও ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত শক্তিশালীকরণ এবং দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি গ্রহণের মাধ্যমে দুর্যোগের ঝুঁকি কমানো যায়৷ যেসব দেশ ভূমিকম্প-প্রতিরোধী ভবন তৈরি করে, আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং জলবায়ু ও পরিবেশ নিরাপত্তায় বিনিয়োগ করে তারা দুর্যোগ মোকাবেলায় ভালোভাবে প্রস্তুত বলে ধরে নেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Shanto
সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির তালিকায় ১৩ নম্বরে বাংলাদেশ
মোট ৩৬টি দেশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বলে সূচকে উল্লেখ করা হয়েছে৷ বাংলাদেশ আছে ১৩ নম্বরে৷ সূচকের বিস্তারিত জানতে উপর (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Shahin Alam
প্রাকৃতিক দুর্যোগের হুমকি
সাগরের পানি বৃদ্ধি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প ও খরা - এই পাঁচ প্রাকৃতিক দুর্যোগের হুমকির মাত্রা কোন দেশে কতখানি, তা নিয়ে একটি সূচক প্রকাশ করা হয়েছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে থাকা দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ৷ ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন্স, নেদারল্যান্ডস, গ্রিস ও ছোট কিছু দ্বীপরাষ্ট্রসহ আরও কয়েকটি দেশ এই তালিকায় আছে৷
ছবি: AFP/D. Sarkar
দুর্যোগের তাৎক্ষণিক প্রভাব কমানোর সক্ষমতা
দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি কেমন তার চিত্র ঝুঁকি সূচকে পাওয়া যায়৷ এতে দেখা যাচ্ছে, দুর্যোগের তাৎক্ষণিক প্রভাব কমাতে সবচেয়ে কম সক্ষম দেশের একটি বাংলাদেশ৷ দুর্নীতির ধারণা সূচক, ব্যর্থ রাষ্ট্র সূচক, দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি ও আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা, ডাক্তার ও হাসপাতালের বিছানার সংখ্যা, বিমা ইত্যাদি তথ্যের ভিত্তিতে ‘ল্যাক অফ কোপিং ক্যাপাসিটিস’ সূচকটি করা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও পিছিয়ে বাংলাদেশ
দুর্যোগ মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশল গ্রহণে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ৷ বয়স্ক শিক্ষার হার, শিক্ষায় লিঙ্গ সমতা, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, বন ও কৃষি ব্যবস্থাপনা, সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ায় খরচ ইত্যাদি বিবেচনায় ‘ল্যাক অফ অ্যাডাপ্টিভ ক্যাপাসিটিস’ সূচকটি তৈরি করা হয়েছে৷