বেলজিয়ামের শহর ভাভিয়াজের রাস্তায় শুনশান নীরবতা৷ বেজে উঠেছে সাইরেন৷ পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশে হঠাৎ বন্যায় দুইশর কাছাকাছি মানুষ মারা গিয়েছেন৷ নিহতদের স্মরণে বেলজিয়াম পালন করছে রাষ্ট্রীয় শোক৷
বিজ্ঞাপন
বন্যার জলের এমন তাণ্ডব জীবিতদের মধ্যে কেউ প্রত্যক্ষ করেননি৷ পশ্চিম ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ আক্রান্ত হলেও হতাহত ও ক্ষতির পরিমাণ জার্মানিতে সবচেয়ে বেশি, তারপরেই রয়েছে বেলজিয়াম৷ জার্মানিতে কমপক্ষে ১৬৫ জন মানুষ মারা গিয়েছেন, বেলজিয়ামে অন্তত ৩১ জন৷ এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন, উদ্ধারকর্মীরা এখনো ধ্বংসস্তূপে হতাহতের খোঁজ করছেন৷
বেলজিয়ামে গত কয়েকদিনে টেলিফোন ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা হয়েছে৷ এরপর অনেকের খোঁজ মেলায় নিখোঁজের সংখ্যা কমেছে৷ বন্যার জল নেমে যাওয়ার পর ধ্বংসযজ্ঞের আসল চেহারা বোঝা যাচ্ছে৷ বাড়িঘর ভেঙে গেছে, নানা জায়গায় একটার ওপর আরেকটা গাড়ি পড়ে আছে৷ স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মিলে স্বেচ্ছাসেবীরা ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের কাজে হাত দিয়েছেন৷ কিন্তু সব আগের অবস্থায় ফেরানো মোটেই সহজ নয়৷
বন্যার পর জার্মানদের বাঁচার লড়াই
চকিত বন্যার জল নেমেছে। কিন্তু তা ফেলে গিয়েছে ধ্বংসস্তূপ। আর সেই সব সরিয়ে বাঁচার লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জার্মানরা।
ছবি: Thomas Lohnes/Getty Images
বন্যার পরের ছবি
যে জায়গায় বন্যা হয়েছে, সেখানে শুধু বিপর্যয়ের ছবি। বাড়ি ভেঙেছে। গাড়ি ভেসে গেছে। আসবাব ভেঙে ছড়িয়ে আছে চারদিকে। মৃতের সংখ্যা ১৬০ ছাড়িয়েছে। এখনো অনেকে নিখোঁজ।
ছবি: Abdulhamid Hosbas/AA/picture alliance
এ কোন বাড়ি
জুটা স্কেলেকিসের অ্যাপার্টমেন্ট। তিনি ও তার আহত স্বামী দুই দিন ধরে এই অবস্থায় ছিলেন। তারপর প্রশাসনের কর্মীরা এসে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যান। তাদের অ্যাপার্টমেন্ট আর বাসযোগ্য নেই।
ছবি: Thomas Lohnes/Getty Images
রাস্তার হাল
যা একসময় ছিল মানুষের প্রিয় আসবাব ও ঘরের জিনিসপত্র, তা এখন আবর্জনায় পরিণত হয়েছে। সেই আবর্জনায় ভর্তি রাস্তা। কিন্তু এর ফলে পরিবেশ দূষিত হয়ে তার প্রভাব মানুষের স্বাস্থ্যের উপর পড়তে পারে। আর কাদা একবার শুকিয়ে গেলে খুব শক্ত হয়ে যাবে। তা ওই আবর্জনাকে এমনভাবে জড়িয়ে নেবে যে, তখন পরিষ্কার করা দুষ্কর হবে।
ছবি: Bram Janssen/picture alliance/AP
কাজে নেমে পড়েছেন আবাসিকরাই
সময় নষ্ট না করে কাজে নেমে পড়েছেন আবাসিকরাই। তারাই রাস্তা সাফ করছেন। আবর্জনা ফেলছেন। ময়লা ফেলার গাড়ি এসে বারবার করে তা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বন্যাক্রান্ত একটি এলাকায় সপ্তাহান্তে ১৪ হাজার টন আবর্জনা সরানো হয়েছে।
ছবি: Thomas Frey/picture alliance/dpa
সাহায্যের হাত
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জার্মানির মানুষ। প্রচুর স্বেচ্ছাসেবক গিয়ে বন্যাক্রান্ত এলাকায় কাজ করছেন। প্রচুর ডোনেশন জমা পড়েছে। বেশ কিছু সমাজসেবী সংগঠন জানিয়েছে, তারা আর ত্রাণসামগ্রী নিতে পারছে না। বিপর্যয় এই এলাকার সব মানুষকে এক করে দিয়েছে।
ছবি: Oliver Pieper/DW
ম্যার্কেল আবার
জার্মানির চ্যান্সেলার ম্যার্কেল মঙ্গলবার আবার বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে দেখেন। তিনি এদিন গিয়েছিলেন নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়াতে।
ছবি: Wolfgang Rattay/AFP/Getty Images
বাসিন্দাদের সঙ্গে
ম্যার্কেল সেখানে বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করেন। কথা বলেন। তাদের উজ্জীবীত করেন।
ছবি: Wolfgang Rattay/AFP/Getty Images
ত্রাণ কীরকম হচ্ছে
সেখানে ত্রাণের কাজ কীরকম হচ্ছে সেটাও দেখেন জার্মান চ্যান্সেলার।
ছবি: Oliver Berg/dpa/picture alliance
সমালোচনা
বন্যার আগাম আভাস দেয়া হয়নি, তাই বিপাকে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। জার্মান প্রশাসনকে এখন এই সমালোচনা শুনতে হচ্ছে। প্রশাসন অবশ্য এই সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছে। ম্যার্কেল বলেছেন, মোবাইল অ্যালার্ট সিস্টেমের উপর সবসময় ভরসা রাখা যায় না। যখন মোবাইল ফোনেই কাজ করবে না, তখন কী করে অ্যালার্ট মানুষের কাছে পৌঁছবে?
ছবি: Thomas Lohnes/Getty Images
9 ছবি1 | 9
বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপে এবং প্রধানমন্ত্রী ভেরভিয়াস পরিদর্শনে গিয়েছেন৷ এই শহরটিই বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ তাদের উপস্থিতিতেই স্থানীয় সময় দুপুর বারোটা এক মিনিটে জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা সাইরেন বাজান৷ এরপরই দেশজুড়ে পালন করা হয় এক মিনিটের নীরবতা৷
রাজধানী ব্রাসেলসে সব বাস-ট্রাম-মেট্রো ট্রেন এক মিনিটের জন্য থেমে থাকে৷ জাপানের টোকিওতে অবস্থান করা বেলজিয়ামের অ্যাথলিটরাও যোগ দিয়েছেন এই শোক পালনে৷ দেশটির সব সরকারি ভবনে তেরঙা পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে৷ ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দপ্তরে ইইউ-এর পতাকাও অর্ধনমিত ছিল৷