আগামী রোববার থেকে চলতি বছরের মাধ্যমিক, দাখিল ও এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা৷ কিন্তু সিলেট, সুনামগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় ভয়াবহ বন্যার কারণে এসব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
এসব পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী৷
শুক্রবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তর থেকে পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে৷
‘‘সকল শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি জেনারেল, এসএসসি ভোকেশনাল এবং দাখিল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে৷ পরীক্ষার পরিবর্তিত সময়সূচি পরে জানানো হবে৷’’
ভারতের মেঘালয়-আসামে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে চলতি মওসুমের তৃতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেট অঞ্চলে৷ সুনামগঞ্জের শহরে এখন একতলা প্রতিটি বাড়িতেই পানি উঠেছে৷ ভাসছে বন্যায় সদরের পাশাপাশি দোয়ারাবাজার, ছাতক, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জামালগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলা৷
সিলেট শহরেও পানি ঢুকেছে৷ কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও সদর উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা এখন পানির নিচে৷
এসব এলাকার বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকেছে৷ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্গতা আশ্রয় নিয়েছেন৷ দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে সুনামগঞ্জে৷
সুনামগঞ্জে ২৩ হাজার ৭৫২ জন এবং সিলেটে ৪৩ হাজার ৮৪৪ জন শিক্ষার্থীর এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কথা৷ বন্যাকবলিত এ দুই জেলায় ৯২টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ার আয়োজনও চলছিল৷
তবে গত দুই দিনে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বেগে ছিলেন৷ পরীক্ষা স্থগিতেরও দাবি জানাচ্ছিলেন তারা৷
মহামারির কারণে পিছিয়ে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের লিখিত পরীক্ষা ১৯ জুন শুরু করে ৬ জুলাই শেষ করার কথা ছিল৷ কিন্তু বন্যার কারণে আবারও পিছিয়ে গেল পরীক্ষা৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
বিশ্ব ঝুঁকি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান
জার্মানির নয়টি উন্নয়ন ও ত্রাণ সংস্থার অ্যালায়েন্স ‘ব্যুন্ডনিস এন্টভিকলুং হিল্ফট’ বিশ্বের ১৮১টি দেশের তথ্য নিয়ে গতবছর ‘বিশ্ব ঝুঁকি সূচক ২০২১’ প্রকাশ করে৷ সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায় তা জানার চেষ্টা করা হয়েছে ছবিঘরে৷
ছবি: Anuwar Hazarika/REUTERS
বিশ্ব ঝুঁকি সূচক
জার্মানির নয়টি উন্নয়ন ও ত্রাণ সংস্থার অ্যালায়েন্স ‘ব্যুন্ডনিস এন্টভিকলুং হিল্ফট’ ১৮১টি দেশের তথ্য নিয়ে গতবছর ‘বিশ্ব ঝুঁকি সূচক ২০২১’ প্রকাশ করে৷ জার্মানির রুয়র-ইউনিভার্সিটি বোখুমের ‘ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ল অফ পিস অ্যাণ্ড আর্মড কনফ্লিক্ট’ এতে সহায়তা করেছে৷ এছাড়া জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যাণ্ড হিউম্যান সিকিউরিটি’ এই সূচক নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেছে৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP
সূচক তৈরির প্রেক্ষাপট
ব্যুন্ডনিস এন্টভিকলুং হিল্ফট মনে করে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকানো না গেলেও দারিদ্র্য ও ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত শক্তিশালীকরণ এবং দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি গ্রহণের মাধ্যমে দুর্যোগের ঝুঁকি কমানো যায়৷ যেসব দেশ ভূমিকম্প-প্রতিরোধী ভবন তৈরি করে, আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং জলবায়ু ও পরিবেশ নিরাপত্তায় বিনিয়োগ করে তারা দুর্যোগ মোকাবেলায় ভালোভাবে প্রস্তুত বলে ধরে নেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Shanto
সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির তালিকায় ১৩ নম্বরে বাংলাদেশ
মোট ৩৬টি দেশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বলে সূচকে উল্লেখ করা হয়েছে৷ বাংলাদেশ আছে ১৩ নম্বরে৷ সূচকের বিস্তারিত জানতে উপর (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Shahin Alam
প্রাকৃতিক দুর্যোগের হুমকি
সাগরের পানি বৃদ্ধি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প ও খরা - এই পাঁচ প্রাকৃতিক দুর্যোগের হুমকির মাত্রা কোন দেশে কতখানি, তা নিয়ে একটি সূচক প্রকাশ করা হয়েছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে থাকা দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ৷ ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন্স, নেদারল্যান্ডস, গ্রিস ও ছোট কিছু দ্বীপরাষ্ট্রসহ আরও কয়েকটি দেশ এই তালিকায় আছে৷
ছবি: AFP/D. Sarkar
দুর্যোগের তাৎক্ষণিক প্রভাব কমানোর সক্ষমতা
দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি কেমন তার চিত্র ঝুঁকি সূচকে পাওয়া যায়৷ এতে দেখা যাচ্ছে, দুর্যোগের তাৎক্ষণিক প্রভাব কমাতে সবচেয়ে কম সক্ষম দেশের একটি বাংলাদেশ৷ দুর্নীতির ধারণা সূচক, ব্যর্থ রাষ্ট্র সূচক, দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি ও আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা, ডাক্তার ও হাসপাতালের বিছানার সংখ্যা, বিমা ইত্যাদি তথ্যের ভিত্তিতে ‘ল্যাক অফ কোপিং ক্যাপাসিটিস’ সূচকটি করা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও পিছিয়ে বাংলাদেশ
দুর্যোগ মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশল গ্রহণে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ৷ বয়স্ক শিক্ষার হার, শিক্ষায় লিঙ্গ সমতা, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, বন ও কৃষি ব্যবস্থাপনা, সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ায় খরচ ইত্যাদি বিবেচনায় ‘ল্যাক অফ অ্যাডাপ্টিভ ক্যাপাসিটিস’ সূচকটি তৈরি করা হয়েছে৷