বন শহরে শেষ হলো আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন
৮ এপ্রিল ২০০৯কিয়োটো প্রোটোকল অনুযায়ী বিভিন্ন দেশকে আগামী ২০১২ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যে নামিয়ে আনতে হবে৷ কিন্তু এরপর কি হবে তা এখনও নির্ধারিত হয়নি৷ তাই কিয়োটো প্রোটোকলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আগামী ডিসেম্বরে কোপেনহেগেন-এ অনুষ্ঠিত হবে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক পরিকাঠামোগত সম্মেলন বা ইউএনএফসিসিসি৷ জাতিসংঘ জলবায়ু সংস্থার উদ্যোগে ঐ সম্মেলনে কিয়োটো প্রটোকলের পরিমার্জন করে আরেকটি আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষর করার সম্ভাবনা রয়েছে৷ কিন্তু সেখান থেকে আদৌ কোন ফল আসবে কিনা - তা বোঝা যাবে তার আগের তিনটি প্রস্তুতিমূলক সম্মেলনের মাধ্যমে৷ আর তারই প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো জার্মানিতে৷
সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলার জন্য স্বল্পোন্নত এবং ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রগুলো তাদের সুনির্দিষ্ট দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন৷ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি থেকে বাঁচতে প্রতিবেশ ব্যবস্থা ভিত্তিক অভিযোজন কৌশল প্রণয়ন করার উপর জোর দেয়া হয়৷ এছাড়া ১৯৯০ সালের তুলনায় গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন ২০২০ সালের মধ্যে ৪৫ শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ৯৫ শতাংশ হ্রাসের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে৷ এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় গরিব দেশগুলোর জন্য বছরে ৫০ থেকে ৮৬ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তার প্রয়োজন বলে মতামত ব্যক্ত করা হয়৷
উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিযোগ, উন্নত বিশ্ব গত দুই শতাব্দী ধরে শিল্পায়ন প্রক্রিয়ায় সম্পদ অর্জন করতে গিয়ে পরিবেশে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড যোগ করেছে৷ তাই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহযোগিতা করার দায়িত্ব উন্নত বিশ্বের৷
বন সম্মেলনে অংশ গ্রহণকারী অক্সফাম এর বাংলাদেশ অফিসের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ কিয়োটো প্রটোকলে স্বাক্ষর করেননি৷ তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সক্রিয় সহযোগিতা করার ব্যাপারে বেশ ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ ইউরোপ সহ অনেক শিল্পোন্নত দেশ কার্বন নির্গমন কমাতে রাজি হলেও চীন, ভারত, ব্রাজিলের মত উন্নয়নশীল দেশগুলো এ ব্যাপারে সবসময় গড়িমসি করছে৷ তাই উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি এসব দেশগুলোকেও একটি ঐকমত্যে নিয়ে আসার বিষয়টি সবচেয়ে বড় চ্যলেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে৷
প্রতিবেদক: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারুক