বরফে ঢাকা মানালির সৌন্দর্য দেখতে গিয়ে আটকে পড়েছেন পর্যটকরা৷ রাস্তা খুলতেই শুরু গাড়ির স্রোত৷ আবার তুষারপাত৷ ফলে দীর্ঘ যানজট৷
বিজ্ঞাপন
বরফ পড়তে শুরু হয়েছিল সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকে৷ আর মানালিতে বরফ পড়লেই দিল্লি সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে দলে দলে পর্যটক ভিড় করেন সেখানে৷ বরফাবৃত মানালি ও তাকে ঘিরে সোলাং, কোঠি, গুলাবা সহ একের পর এক সাদা পাহাড় অপরূপ দেখতে লাগে। সেই অসাধারণ সৌন্দর্য দেখতে গিয়েই বিপাকে পড়েছেন পর্যটকরা৷ এত বরফ পড়তে শুরু করেছে, যে মানালি-কেলং রোড পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল৷ মঙ্গলবার সাময়িক সময়ের জন্য রাস্তা খুললেও কতক্ষণ তা খোলা থাকবে, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ নতুন করে বরফ পড়তে শুরু করেছে। ফলে চার কিলোমিটার লম্বা যানজটে পড়ে নাকাল ঘর ফিরতি পর্যটকরা৷
যেখানে মঙ্গলগ্রহের চেয়েও বেশি শীত
যুক্তরাষ্ট্র আর ক্যানাডার একটা অংশে পড়েছিল মঙ্গলগ্রহের চেয়েও বেশি শীত৷ শৈত্যপ্রবাহ এবং তুষার ঝড়ে জনজীবন বিপন্ন৷ ডয়চে ভেলের ইংরেজি বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়ার অনুসারীদের পাঠানো ছবিতে দেখুন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু এলাকার জনজীবন৷
ছবি: picture-alliance/AP Images/M. Fortner
বরফ ঢাকা শহরের পথে ভেঙে পড়া গাছ
যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা রাজ্যে জর্ডান শহরের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে নেমে গিয়েছিল৷ এমন শীতে মানুষের কষ্ট কী পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে তা কল্পনা করা কঠিন নয়৷ এ ছবিটি মাইকেল অ্যালডেন পাঠান মাইন রাজ্যের লুসার্ন থেকে৷ বিদ্যুৎ ছিল না, প্রচণ্ড ঝড়ে গাছপালা ভেঙে পড়ছিল৷ অ্যালডেনের ছবিতে অবশ্য বিরূপ প্রকৃতির সৌন্দর্যই ফুটে উঠেছে৷
ছবি: Michael Alden
প্রকৃতি কখন সদয় হবে!
ইন্ডিয়ানার সাউথ বেন্ড থেকে এ ছবি পাঠিয়ে কারস্টেন হাইভোনেন লিখেছেন, ‘‘আমাদের এখানে ১৩ ইঞ্চি পুরু বরফ জমেছে৷ তাপমাত্রা নেমে গেছে মাইনাস ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷ এমন শীতে শ্বাস নিতেও কষ্ট হয়৷ আবহাওয়া কখন উষ্ণ হবে, কখন রাস্তাঘাট পরিষ্কার করা হবে – আমরা এখন তারই অপেক্ষায় আছি৷ বাচ্চারা দু’দিন ধরে স্কুলে যেতে পারছে না, আগামী কালও বোধহয় যেতে পারবে না৷’’
ছবি: Kristen Hyvonen Amsler
জুরি আছে আনন্দে
কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ৷ শীতে মানুষ কষ্টে মরছে আর পাহাড়ি কুকুর জুরির এ সময়েই মহা আনন্দ৷ তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নামলে ও বরফের বুকে খেলতে চায়, চায় কেউ ওর সঙ্গে থাকুক, ওর সঙ্গে আনন্দ করুক৷ ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শ্যাম্পেইন থেকে জুরির এই ছবি পাঠিয়ে এরিন কিরবি জানতে চেয়েছেন, ‘‘এমন শীতের মধ্যে কে ওর সঙ্গে খেলবে!’’
ছবি: Erin Kirby
বরফের সঙ্গে যুদ্ধ
মিশিগানের মেরিল থেকে এ ছবি পাঠিয়েছেন জুলিয়েট জাভার্স৷ শহরের পথ-ঘাট ঢেকে গেছে বরফে৷ চলছে বরফ সরিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করার চেষ্টা৷
ছবি: Juliette Zavarce
বরফের বাগান
যুক্তরাষ্ট্রের মইনেস থেকে ছবিটি পাঠিয়েছেন মারিয়ানা লিঙ্ক-আলেকজান্ডার৷ আইওয়া অঙ্গরাজ্যে এ শহরটির বর্তমান অবস্থা জানাতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘ওয়েস্ট ডেস মইনেসে আমার বাড়ির সামনের বাগান৷ গতরাতে এখানে তাপমাত্রা মাইনাস ২৫ ডিগ্রিতে নেমে যায়, শৈত্যপ্রবাহের ঠান্ডা তো মাইনাস ৪০-এরও নীচে৷’’ এমন শীতে মারিয়ানার বাগানটা কিন্তু অন্য রূপে সেজেছিল৷
ছবি: Marianne Link-Alexander
অপরূপ প্রকৃতি
দুঃসময়েও কখনো কখনো মানুষ আনন্দ খুঁজে নেয়৷ মিশিগানের মেরিলে আলিরিও জাভার্স শীতের অত্যাচারে কাবু হতে চান না৷ তাই তিনি ব্যালকনি থেকেই ক্যামেরাবন্দি করেছেন বরফে ঢাকা প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যকে৷
ছবি: Juliette Zavarce
জলপ্রপাত এখন বরফসমুদ্র
শন ও’কনর থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়োতে, চ্যাগরিন জলপ্রপাতের কাছে৷ এই শীতে সব জল জমে বরফ৷ মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পানি বরফ না হয়ে থাকে কী করে!
ছবি: Shawn O'Conner
বরফ ঝরায় ঘাম
মাইনাস ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ইন্ডিয়ানার হান্টিংটন শহরও বরফে বরফে সয়লাব৷ এ ছবির প্রেরক বরফ সরানোর যন্ত্র নিয়েই নেমেছিলেন কাজে৷ গাড়ি চালিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য পথ করতে পাক্কা দু’ঘণ্টা খাটতে হয়েছে তাঁকে৷ যুক্তরাজ্য সরকার এমনি এমনিই তো আর জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া বাকি সবার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি!
ছবি: Dan Herber
বরফাচ্ছাদিত
মাইনের পোর্টল্যান্ড থেকে জেমস কোলবাথের পাঠানো ছবি৷ দেখুন, বাড়ি এবং বাড়ির আশপাশ কত উঁচু বরফে ঢাকা৷
ছবি: James Colbath
খেটে মরা
মিশিগান থেকে এ ছবি পাঠিয়েছেন রন সোন৷ বাড়িতে তখন শুধু তাঁর ছোট ছেলেটিই ছিল৷ কাজ সেরে একে একে সবাই বাড়ি ফিরছে৷ বরফ সরিয়ে সেই ছেলেকে প্রথমে তাঁর দাদির জন্য, তারপর বাবা-মায়ের বাড়ি ফেরার পথ করে দিতে হয়েছে৷ পরে আরো একবার বরফ সরিয়ে গাড়ি আসার পথ করতে হয়েছিল তাঁকে৷ মাইনাস ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সাত ইঞ্চি পুরু বরফ তিনবার সরানোর পর শরীর আর চলছিল না৷
ছবি: Ron Sohn
10 ছবি1 | 10
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ণের প্রভাবেই খামখেয়ালি রূপ দেখাচ্ছে প্রকৃতি। সময়ের আগেই উত্তর ভারত জুড়ে প্রবল শৈত্যপ্রবাহ চলছে৷ দিল্লিতে ১৯৯৭-র পর থেকে কখনও ডিসেম্বরে এতদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ চলেনি৷ প্রবল ঠান্ডা, সকালে ধোঁয়াশা, বেলার দিকে হাল্কা রোদ, সন্ধ্যার পর থেকে আবার জাঁকিয়ে বসা শীত, এই হল এখন দিল্লির প্রতিদিনের ছবি৷ এ হেন বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যেও এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে সারারাত ধরে প্রতিবাদ চলছে৷ জামিয়ার কাছে শাহিনবাগে লোকে সারারাত ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বেশ কয়েকদিন ধরে৷ পাঞ্জাবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের সময় বদলে দেওয়া হয়েছে৷ সাতসকালে স্কুল শুরুর বদলে ক্লাস আরম্ভ হচ্ছে বেলা দশটা থেকে৷