ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্রিটেনের মধ্যে ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনার মেয়াদ আবার বাড়ানো হলেও এখনো ঐকমত্যের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বিলম্বের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন চলতি সপ্তাহের শেষেই ইইউ ও ব্রিটেনের মধ্যে বোঝাপড়া সম্পর্কে আশা প্রকাশ করেছেন৷ তিনি রাজনৈতিক সদিচ্ছাকেই সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবে তুলে ধরেন৷ ইইউ মধ্যস্থতাকারীরা অবশ্য বলছেন যে মৌলিক মতপার্থক্য এখনো দূর হয় নি৷ সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা আবার শুরু হবার পরেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না৷ প্রধান ইইউ মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে বলেন, হাতে খুব কম সময় এবং মৌলিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও দ্বিপাক্ষিক চুক্তির লক্ষ্যে জোরালো উদ্যোগ চালু আছে৷
আগামী ১লা জানুয়ারি ব্রিটেন পাকাপাকিভাবে ইইউ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে৷ দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত না হলে বিশেষ করে ব্রিটেনের অর্থনীতি মারাত্মক ধাক্কা খাবে বলে প্রায় সব বিশেষজ্ঞই একমত৷ ব্রিটেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি ব্রেক্সিটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, করোনা মহামারির তুলনায় ব্রেক্সিটের প্রভাব অনেক বেশি হবে৷ সংসদের ট্রেজারি সিলেক্ট কমিটির সদস্যদের সামনে তিনি নিজের পূর্বাভাষ তুলে ধরেন৷
১লা জানুয়ারির পর দুই পক্ষের মধ্যে বাধাহীন বাণিজ্য চালু রাখার লক্ষ্যে বোঝাপড়ায় আরও বিলম্ব হলে চুক্তি অনুমোদনের সময় নিয়েও দুশ্চিন্তা বাড়ছে৷ ২৭টি ইইউ সদস্য দেশ ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট চুক্তি অনুমোদন না করলে সেটি ১লা জানুয়ারি কার্যকর হতে পারবে না৷ করোনা সংকট ও বড়দিনের ছুটির ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে৷ সোমবার ইইউ পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্য এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ তাঁরা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে টালবাহানার জন্য দায়ী করেন৷ পার্লামেন্টের শক্তিশালী বাণিজ্য কমিশনের প্রধান জার্মানির ব্যার্ন্ট লাঙে এক টুইট বার্তায় বিলম্বের কথা স্মরণ করে দিয়ে লেখেন, চূড়ান্ত খসড়া ছাড়া ইইউ পার্লামেন্টের পক্ষে সেটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে খতিয়ে দেখা প্রহসন হয়ে দাঁড়াবে৷ বরিস জনসনের জুয়া খেলার কারণে পরিস্থিতি এতদূর গড়িয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন৷
মোটকথা ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও একাধিক দেশের জাতীয় সংসদ বিতর্ক ছাড়া ব্রিটেনের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘রাবার স্ট্যাম্প' মার্কা অনুমোদন নাও দিতে পারে৷ সম্ভবত ২৮শে ডিসেম্বর ইইউ পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হবে৷ সেইসঙ্গে ব্রেক্সিট চুক্তির শর্ত ভেঙে জনসন সরকারের বিতর্কিত আইনও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের আপত্তির কারণ হতে পারে৷ ব্রিটেন সেই আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া বন্ধ না করলে ইইউ পার্লামেন্টে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে ১লা জানুয়ারি চুক্তি কার্যকর না হলে চরম পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে৷ ভবিষ্যৎ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ব্রিটেনের সেই আইনের বিরোধিতা করায় ইইউ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এপি, এএফপি)
ইংল্যান্ডে ভ্রমণের ১০ কারণ
উত্তাল সমুদ্র, সবুজ পাহাড়, বড় বড় দুর্গ – সবমিলিয়ে ইংল্যান্ড অসাধারণ৷ যুক্তরাজ্যের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে এই ইংল্যান্ড যেখানে ৫০ মিলিয়নের বেশি মানুষ বাস করে৷
ছবি: Getty Images/M.Cardy
লন্ডন
পৃথিবী বিখ্যাত মিউজিয়াম, দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মধ্যরাতে এখানে সেখানে ‘লাইভ মিউজিক’ – এ সবকিছু সমন্বয়ে লন্ডন অসাধারণ৷ যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন ইউরোপের অন্যতম দর্শনীয় স্থান৷ প্রতি বছর কয়েক মিলিয়ন পর্যটক আসে এখানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Kalker
প্রাসাদ
ইংল্যান্ডে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য দুর্গ ও প্রাসাদে ঘুরতে ঘুরতে পর্যটকরা খুঁজে পাবেন ইতিহাসের রোমাঞ্চ৷ এর মধ্যে বেশিরভাগই অট্টালিকায় সুসংরক্ষিত৷ উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ডোভার ক্যাসেলের কথা, মধ্যযুগীয় এ দুর্গ অবস্থিত সমুদ্রতীরের খাঁড়া পাহাড়ের উপর৷
ছবি: picture-alliance/prisma/Tpx
চা
চা, বিশেষ করে দুধ দিয়ে ঘন কালো চা এখানকার অন্যতম পানীয়৷ ১৭শ শতকের দিকে এ অঞ্চলে চা পানের প্রচলন হয়৷ সেই থেকে এখনো পর্যন্ত চা এখানকার বিশেষ পানীয়৷
ছবি: picture-alliance/Food and Drink/G. Franks
স্থাপত্যকলা
নর্ম্যান ফস্টার ও ডেভিড চিপারফিল্ডের মতো বিখ্যাত স্থপতিদের জন্যও ইংল্যান্ডের সুনাম আছে আধুনিক স্থাপত্যকলায়৷ লন্ডনে রয়েছে জাহা হাদিদের নকশায় ২০১২ সালের অলিম্পিকসের জন্য বানানো একুয়াটিক্স সেন্টার৷
ছবি: picture-alliance/prisma/Tpx
স্টোনহেঞ্জ
ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের স্বীকৃতি পেয়েছে এই স্টোনহেঞ্জ৷ এখানকার পাথরগুলো উপাসনালয়, মানমন্দির নাকি কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার হতো, তা অবশ্য এখনো ঠিক জানা যায়নি৷ তবে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ এ স্থান পরিদর্শনে আসে৷ ভিতরের বৃত্তবন্দি পাথরগুলো স্থাপন করা হয় খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০ সাল নাগাদ৷
ছবি: picture-alliance/Bildagentur-online/Tetra
ম্যানচেস্টার
এক সময়ের বাণিজ্যিক শহর ম্যানচেস্টার এখন পরিণত হয়েছে এক আধুনিক শহরে, যেখানে অসংখ্য ক্লাব বা সুরিখানার দেখা মিলবে৷ প্রতি দু’বছর পর পর অনুষ্ঠিত ম্যানচেস্টার ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যলে যোগ দিতে পৃথিবী বিখ্যাত সংগীতশিল্পী, আঁকিয়ে, অভিনেতারা জড়ো হন এখানে৷
ছবি: picture-alliance/empics/D. Thompson
উদ্যান
বড় বড় বাগানের পাশাপাশি সারা ইংল্যান্ড জুড়ে আছে অসংখ্য ছোট ছোট বাগান, যেগুলো সারা বছরই খোলা থাকে সাধারণ মানুষের জন্য৷ দক্ষিণ পশ্চিম ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ার কাউন্টিতে দেখা মিলবে ব্রিটিশ ল্যান্ডস্কেপের অসামান্য উদাহরণ৷ তৃণভূমি, হ্রদ, বনভূমির সংমিশ্রণে ১৭২০ সালের দিকে সাজানো হয়েছে এখানকার পরিবেশ৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/R. Tomlinson
বিটলস
বিটলস ভক্তরা জীবনে একবার হলেও লিভারপুলে আসার কথা ভাবেন৷ এই চার শিল্পীর ছোটবেলা কেটেছে যেখানে সেসব বাড়িগুলো আছে এখনো৷ বিটলসের নানা স্মৃতি ছড়িয়ে আছে এখানকার বিভিন্ন জায়গায়৷
ছবি: picture-alliance/Pixsell/L. Stanzl
কর্নওয়াল
ইংল্যান্ডের কর্নওয়াল বিখ্যাত এ অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য৷ এতে আছে রুক্ষ সমুদ্র, দীর্ঘ বালুময় সমুদ্র সৈকত, পাহাড়ি উপত্যকা আর ছোট্ট জেলে গ্রাম৷
ছবি: picture-alliance/prisma/Tpx
শেক্সপিয়ার
পৃথিবী বিখ্যাত শেক্সপিয়ারের সান্নিধ্য পাওয়া যাবে এই ইংল্যান্ডেই৷ স্টার্টফোর্ড-আপঅন-অ্যাভনে রয়েছে তাঁর জন্মস্থান, আছে স্কুল৷ তাঁর বিখ্যাত নাটকগুলো ইংল্যান্ডেরই অনেক মঞ্চে নিয়মিত প্রদর্শিত হতো৷