গরুর শিং থেকে শুরু করে হাড়, খুর, লেজ, ভুঁড়ি, বিশেষ অঙ্গ ইত্যাদি এখন রপ্তানি হয়৷ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসেবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এই খাত থেকে আয় হয়েছে ১৪০ কোটি টাকা৷
বিজ্ঞাপন
ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে এটি সম্ভব করেছেন৷ তাঁরা নিজেরাই বাজারের কথা জেনেছেন৷ আর সেখান থেকেই গরুর এ সব অংশ সঠিকভাবে প্রসেসিং, সংরক্ষণ ও রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ খুঁজে বের করেছেন৷
গরুর বর্জ্য ছাড়াও ঢাকা শহরে নানা ধরনের বর্জ্য রিসাইকেল করা হয়৷ বিশেষ করে প্লাষ্টিক বর্জ্য নিয়ে কাজ করে এমন অনেক কারখানা আছে৷ এর ওপর নির্ভর করে অনেক পরিবার টিকে আছে৷ ঢাকার বাইরে রান্নার কাজে মানুষের জৈবিক বর্জ্য দিয়ে উৎপাদিত বায়োগ্যাস ব্যবহার করা হয়৷ গবাদিপশু ও হাস মুরগির বিষ্ঠায় ক্ষুদ্র আকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পও চালু আছে ব্যক্তিগত পর্যায়ে৷
Dr Lenin Chowdhury - MP3-Stereo
সাধারণভাবে বর্জ্যের উৎস হিসেবে তিনটি ক্ষেত্রকে বিবেচনায় নেয়া হয়:
১. গৃহ বর্জ্য
২. গৃহের বাইরে প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ও
৩. মেডিকেল বর্জ্য
গুণগত বিবেচনায় এই বর্জ্য মোটা দাগে দু'ধরনের:
১. তরল (লিকুইউ) ও
২. কঠিন (সলিড)
কী পরিমাণ বর্জ্য?
বাংলাদেশে বছরে শহরগুলোতে বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ ধরা হয় ২২.৪ মিলিয়ন টন অথবা বছরে মাথাপিছু বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ ১৫০ কেজি৷ ২০২৫ সাল নাগাদ প্রতিদিন বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৪৭,০৬৪ টন৷
দেশের মোট বর্জ্যের ৩৭ ভাগ উৎপাদিত হয় রাজধানী ঢাকায়৷ অথচ সেখানে বর্জ্যের কোনো পরিকল্পিত ব্যবহার নেই৷ এখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলতে বোঝায় বর্জ্য সংগ্রহ করে তা আবর্জনার স্তূপে পাঠিয়ে দেয়া৷ ইউএনএফপিএ-র মতে, ঢাকা যে সর্বাধিক দূষিত শহরের একটি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দূর্বলতা এর অন্যতম কারণ৷
ময়লা দিয়ে ব্যবসা করেন তাঁরা
বর্জ্য, বিশেষ করে প্লাস্টিক বর্জ্যকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই ব্যবসা করছেন৷ এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভাল হচ্ছে, তেমনি কিছু মানুষের কর্মসংস্থানও হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Frentzen
বিলিকিস আদেবিয়ি-আবিওলা
যুক্তরাষ্ট্রে এমবিএ করার পর আইবিএম-এ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পাঁচ বছর কাজ করার পর নিজ দেশ নাইজেরিয়ায় গিয়ে বর্জ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন৷ দেশটির সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত শহর লাগসের ময়লা নিয়ে ব্যবসা করছেন৷ কোম্পানির নাম ‘উইসাইকেলার্স’৷ তাদেরকে আবর্জনা দেয়ার মাধ্যমে স্থানীয়রা ‘উপহার’ পেয়ে থাকেন৷ আর আবিওলার কোম্পানি ঐ আবর্জনা থেকে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: WeCyclers
থাটো গাটহানিয়া ও রেয়া এনগোয়ানে
দক্ষিণ আফ্রিকার এই দুই তরুণী প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে স্কুল ব্যাগ তৈরি করেন৷ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের এগুলো দেয়া হয়৷ এ সব ব্যাগে সোলার প্যানেল বসানো আছে৷ ফলে শিক্ষার্থীরা হেঁটে স্কুলে যাওয়া-আসার ফলে প্যানেলগুলো যে চার্জ পায় তা দিয়ে রাতের বেলায় আলো জ্বলে৷ ফলে মোমবাতি না জ্বালিয়ে শিশুরা পড়তে পারে৷ ছবিতে একেবারে ডানে রেয়া আর বাম থেকে তিন নম্বরে থাটোকে দেখা যাচ্ছে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: repurposeschoolbags.com/Screenshot
অ্যান্ড্রু মুপুয়া
মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময় বাবা-মা দু’জনই যখন চাকরি হারিয়ে ফেলেন তখন অ্যান্ড্রু কাগজের ব্যাগ তৈরির ব্যবসা শুরু করেন৷ পুঁজি জোগাড় করতে ৭০ কেজি প্লাস্টিক বোতল বিক্রি ও শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা ধার নেন তিনি৷ ব্যাগ তৈরি শিখতে ইন্টারনেট আর ভিডিওর সাহায্য নেন তিনি৷ বর্তমানে ২৪ বছর বয়সি অ্যান্ড্রুর অধীনে ২০ জন কাজ করছেন৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: DW
লরনা রুট্ট
ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে কেনিয়ার নাইরোবিতে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ফ্যাক্টরি গড়ে তোলেন তিনি৷ এসব প্লাস্টিক দিয়ে তাঁর কোম্পানি বেড়া তৈরি করে৷ ঘরবাড়ি সহ সংরক্ষিত এলাকায় বেষ্টনী দিতে তাঁর বেড়া ব্যবহৃত হয়৷ কাঠের বদলে এ সব বেড়া খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: L. Rutto
বেথেলহেম টিলাহুন আলেমু
আফ্রিকার ফুটওয়্যার ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ইথিওপিয়ার ‘সোলরেবেলস’ বিশ্বে অনেক জনপ্রিয়৷ আলেমু’-র উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটি গাড়ির পুরনো টায়ার, ফেলে দেয়া জামাকাপড় ব্যবহার করে জুতা তৈরি করে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Frentzen
বাংলাদেশে রিসাইক্লিং ব্যবসা
প্লাস্টিক বোতল রিসাইকেল করে এমন অনেক কারখানা গড়ে উঠেছে ঢাকায়৷ তাদের হয়ে পরিত্যক্ত বোতল সংগ্রহ করছেন অনেকে৷ এতে তাদের দারিদ্র্যতা দূর হচ্ছে৷ বোতলগুলো মেশিন দিয়ে টুকরো করে প্লাস্টিক পণ্য বানায় এমন কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়৷ কিছু অংশ বিদেশে, বিশেষ করে চীনেও রপ্তানি হয়ে থাকে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M.Uz Zaman
ওয়েস্ট কনসার্ন
বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকার বর্জ্য থেকে কমপোস্ট সার তৈরি করছে ওয়েস্ট কনসার্ন নামের একটি কোম্পানি৷ তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটি এক লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি বর্জ্য রিসাইকেল করেছে৷ বিস্তারিত জানতে উপরে ‘+’ চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: wasteconcern.org
7 ছবি1 | 7
রাজধানী ঢাকায় মোট বর্জ্যের ৭০ ভাগই সলিড বর্জ্য বলে মনে করা হয়৷ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন৷ তরল বা লিকুইড বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে ঢাকা ওয়াসা৷ ঢাকায় সর্বমোট ২,৫০০ কিলোমিটার খোলা ড্রেন এবং ৪,০০০ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ ড্রেনেজ সিস্টেম রয়েছে৷ এ কাজ করার জন্য ৬৫ কিলোমিটার খোলা খাল ও বক্স কালভার্ট আছে৷ তরল বর্জ্য সাধারণত এসব ড্রেন ও বক্স কালভার্টের মাধ্যমে অপসারিত হয়৷
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে দিনে গড়ে বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ ছয় হাজার টনের বেশি নয় বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে৷ বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষাও বলছে ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে সাত হাজার মেট্রিক টনের মতো বর্জ্য উৎপাদিত হয়৷ ঢাকায় মাথাপিছু প্রতিদিন বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ ৫৬০ গ্রাম৷
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ঢাকায় প্রতিদিন ৬,১১০ টন গৃহস্থালি বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে৷ এর মধ্যে ঢাকার প্রত্যেক নাগরিক ৩৭৭ গ্রাম বর্জ্য উৎপাদন করে, যার ৯৭ শতাংশই জৈব পদার্থ৷ বাকি তিন শতাংশ বর্জ্য অজৈব৷ মেডিকেল এবং মেডিকেল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ১,০৫০ টন ও রাস্তাঘাট থেকে চারশ মেট্রিক টন বর্জ্য তৈরি হয়৷
বলা হয়ে থাকে ঢাকায় উৎপাদিত বর্জ্যের ৭৬ ভাগই রিসাইকেল যোগ্য৷ তবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পুরোটাই আস্তাকুড়ে ফেলে দেয়া হয়৷ ১০ বছর আগে দৈনিক ৩,২০০ টন বর্জ্য উৎপাদনের বিপরীতে ৪৩ শতাংশ হারে অপসারিত হতো ১,৩৭৬ টন৷ আর এখন দৈনিক ৬,১১০ টন বর্জ্য উৎপাদনের বিপরীতে অপসারিত হয় ৪,৫৮২ টন বর্জ্য৷ বৃষ্টিতে পানি জমলে কঠিন এবং তরল বর্জ্য একাকার হয়ে যায়৷ গত ১০ বছরে ঢাকায় বর্জ্য উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ৷
ডাস্টবিন নয়, রাস্তাই বেছে নিচ্ছেন ঢাকাবাসী
প্রায় দেড় কোটি মানুষের শহর ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বেশ নাজুক৷ দু’টি সিটি কর্পোরেশন বিপুল সংখ্যক বাসিন্দার প্রতিদিনের বর্জ্য অপসারণে যেমন অদক্ষ, তেমনি এ শহরের বেশিরভাগ বাসিন্দাই আবর্জনা ফেলার ব্যাপারে অসেচতন এবং উদাসীন৷
ছবি: DW/M. Mamun
কন্টেইনার আছে, তবুও...
ঢাকা শহরের মালিবাগের তালতলা এলাকায় সড়কের অর্ধেকজুড়ে ফেলা হয় আবর্জনা৷ ময়লা ফেলার কন্টেইনার থাকলেও, এলাকার বাসিন্দারা ময়লা ফেলেন বাইরে, সড়কের উপরেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
দুর্গন্ধে অতিষ্ট পথচারীরা
খোলা জায়গায় ময়লা ফেলার কারণে দুর্গন্ধে কষ্ট করে চলতে হয় পথাচারীদের৷
ছবি: DW/M. Mamun
ক’দিনেই লোপাট ডাস্টবিন
ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে এ বছরের শুরুর দিকে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পুরো শহরজুড়ে সড়কের পাশে পাশে স্থাপন করেছিল কয়েক হাজার ডাস্টবিন৷ কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই এ সব ডাস্টবিনের বড় একটি অংশ চুরি হয়ে যায়, পড়ে থাকে শুধু তার স্ট্যান্ডগুলো৷
ছবি: DW/M. Mamun
পথচারীদের চলাফেরায় ব্যাঘাত
চুরি যাওয়া ডাস্টবিনের সেসব স্ট্যান্ড এখন পথচারীদের চলাফেরায় ব্যাঘাত ঘটায় অনেক জায়গাতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
ডাস্টবিন থাকলেই বা কী?
সিটি কর্পোরেশনের বসানো সড়কের পাশের যেসব ডাস্টবিন এখনো টিকে আছে, এটি তার একটি৷ ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকার এ ডাস্টবিন খালি থাকা সত্ত্বেও ময়লা ফেলা হয়েছে বাইরে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়কজুড়ে ফেলা হয়েছে ময়লা
বিপরীত চিত্র ঢাকার মিরপুর এলাকায়৷ নিয়মিত ডাস্টবিন পরিষ্কার না করায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী ময়লা ফেলেছেন ডাস্টবিনের বাইরে, সড়কজুড়ে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভাঙাচোরা কন্টেইনার
অনেক এলাকাতে রাখা হয় ময়লা ফেলার ভাঙাচোরা কন্টেইনার৷ ফলে ময়লা বাইরে ছড়িয়ে পড়ে সহজেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
উড়াল সড়কের নীচে আবর্জনা
ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার কিছু বাসিন্দ ময়লা ফেলেন মেয়র হানিফ উড়াল সড়কের নীচের সড়ক বিভাজনের ওপর৷
ছবি: DW/M. Mamun
অসহনীয় এক পরিবেশ
মেয়র হানিফ উড়াল সড়কের নীচে ফেলা ময়লা-আবর্জনা জ্বালানো হয় দিনে-দুপুরে৷ ফলে এলাকার পরিবেশ অসহনীয় হয়ে ওঠে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বুড়িগঙ্গাই যখন ডাস্টবিন!
বুড়িগঙ্গার দক্ষিণ তীরে আগানগর এলাকার বাসিন্দরা ময়লা ফেলেন সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাদামতলীর অপচনশীল প্লাস্টিক
পুরনো ঢাকার সবচেয়ে বড় ফলের পাইকারি বাজার বাদামতলী৷ সেখানকার ব্যবসায়ীরা নানান অপচনশীল প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য ফেলেন সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতে৷
ছবি: DW/M. Mamun
খোলা জায়গা মানেই আবর্জনার স্তূপ
ঢাকার মিরপুর বাংলা কলেজের বিপরীত পাশে ময়লা ফেলার কোনো কন্টেইনার না থাকায় ঐ এলাকার বাসিন্দারা ময়লা ফেলেন কড়কের ওপরে খোলা জায়গাতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়ক বিভাজনের ওপরই...
হাতিরপুল এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই ময়লা ফেলেন সড়ক বিভাজনের ওপর৷
ছবি: DW/M. Mamun
অভিজাত এলাকাও বাদ নেই
ঢাকার অভিজাত আবাসিক এলাকার একটি মহাখালী ডিওএইচএস-এর প্রবেশমুখে ময়লা আবর্জনার স্তূপ৷
ছবি: DW/M. Mamun
মেডিক্যাল কলেজের বর্জ্য
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নানান ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য ফেলা হয় সামনের ডাস্টবিনেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
হরহামেশাই যে দৃশ্য দেখা যায়
দিনের বেলা বর্জ্য অপসারণের নিয়ম না থাকলেও হরহামেশাই সে দৃশ্য দেখা যায় ঢাকা শহরে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়কজুড়ে ময়লার কন্টেইনার!
সড়কের সিংহভাগ দখল করে ময়লা ফেলার কন্টেইনার রাখার এ দৃশ্য ঢাকার মিরপুর এলাকার৷
ছবি: DW/M. Mamun
আধুনিক মানের ডাস্টবিন
ঢাকার হাতিরঝিলে বসানো হয়েছে চীন থেকে আনা আধুনিক মানের ডাস্টবিন৷ এ সব ডাস্টবিনে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য ও অন্যান্য বর্জ্য ফেলার আলাদা কন্টেইনার আছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ময়লার ভাগাড়
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোশেনের সব ময়লা এনে ফেলা হয় ডেমরার ডাম্পিং ইয়ার্ডে৷ উত্তর সিটি কর্পোশেনেরও এরকম একটি বড় ময়লার ভাগাড় আছে আমিন বাজার এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে৷
ছবি: DW/M. Mamun
19 ছবি1 | 19
বর্জ্য থেকে পণ্য উৎপাদনের চিন্তা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক কমোডর বখতিয়ার আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের কাছে কঠিন বর্জ্যের হিসাব আছে৷ আমরা বর্জ্য সংগ্রহ করে সরাসরি ডাম্পিং-এ পাঠিয়ে দিই৷ আমাদের ডেমরা এবং মাতুয়াইলে দু'টি ডাম্পিং স্টেশন আছে৷ বর্জ্য সংগ্রহ এবং ডাম্পিং-এর জন্য ৮ হাজার কর্মী আছে৷ আছে যানবাহন৷ আপাতত এর বাইরে আমাদের কিছু করণীয় নেই৷''
তিনি জানান, ‘‘বর্জ্য পরিবহণের জন্য আমরা বর্জ্য অনুযায়ী খোলা বা কাভার্ড ট্রাক ব্যবহার করি৷ মেডিকেল বর্জ্য খুবই সতর্কতার সঙ্গে পরিবহন করা হয়৷ আর ডাম্পিং এলাকাগুলোর আশপাশে কোনো লোকালয় নেই৷ তাই এগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি তৈরি করতে পারেনা৷''
তবে বখতিয়ার আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি বর্জ্য দিয়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং সার উৎপাদন করব৷ তখন বর্জ্য আর বর্জ্য থাকবে না৷ বর্জ্য হবে কাঁচামাল৷ তবে এইসব প্রকল্প করতে অনেক অর্থ এবং জমির প্রয়োজন৷ আশা করি আমরা সফল হবো৷''
প্রিভেনটিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কোন বর্জ্য ডাম্পিং করা যাবে আর কোনটা যাবে না সেটা জানা খুব জরুরি৷ কিছু কিছু মেডিকেল বর্জ্য আছে যা সরাসরি পুড়িয়ে ফেলতে হবে, ডাম্পিং করা যাবে না৷ আমাদের এখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আসলে তেমন আধুনিক নয়৷ সিটি কর্পোরেশন সম্প্রতি মেডিকেল বর্জ্য নিয়ে প্রিজম নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে৷ এই প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতিকর মেডিকেল বর্জ্য চিহ্নিত করে দিচ্ছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সেই অর্থে না থাকায় এখন বর্জ্যের মাধ্যমেই সংক্রামক ও অসংক্রামক দু'ধরনের রোগই ছড়াচ্ছে৷ বর্জ্যে থাকা নানা ধরনের জীবাণু পানির সঙ্গে মিশে, শুকিয়ে বাতাসে ভেসে এবং মাটি ও চারপাশকে দূষিত করে তা আবার ছড়িয়ে পড়ে৷''
ডাঃ লেলিন বলেন, ‘‘অথচ সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বর্জ্য মানুষের জন্য ঝুঁকি বাড়াবে না, এমনকি অর্থনীতির জন্য নতুন দরজা খুলে দেবে৷'' একই ধরনের কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক বখতিয়ার আহমেদ৷ ‘‘উদ্যোগ নিতে পারলে সময় আসবে যখন বর্জ্য হবে পণ্য৷ কেউ বেঁচবেন, কেউ কিনবেন৷ তখন সেটা আর ফেলনা থাকবে না'', বলেন তিনি৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷