‘‘বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উত্পাদনের একটা চেষ্টাও আমাদের আছে৷ আর সেটা হবে বিরাট একটা মাইলফলক৷’’ ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপচারিতায় এ কথা জানান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর আব্দুর রাজ্জাক৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে: একটা শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেমন হওয়া উচিত? ঢাকা কতটা পিছিয়ে আছে?
কমোডর আব্দুর রাজ্জাক: আমি মনে করি, একটা শহর বর্জ্য মুক্ত থাকবে৷ রাস্তায় বর্জ্য দেখা যাবে না৷ মানুষ সিটি কর্পোরেশনের নির্দিষ্ট জায়গায় বর্জ্য ফেলবে৷ এদিক থেকে ঢাকা অনেকটাই পিছিয়ে আছে৷ যদিও আমরা উন্নতি করছি৷ এটার আরো উন্নতি করার সুযোগ আছে৷ আগে এক সময় আমাদের সব রাস্তাতেই বর্জ্য থাকত৷ আমরা রাস্তা থেকে বর্জ্য সরিয়ে নিয়েছি৷ আমরা ট্রান্সফার স্টেশন করেছি৷ আমাদের ৩৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩১টি ওয়ার্ডে এসটিএফ আছে৷ আমরা চেষ্টা করছি প্রতিটি ওয়ার্ডে দুই থেকে তিনটি এসটিএফ নির্মাণের জন্য৷ যদিও আমাদের জায়গার সংকট আছে৷ তবে আমরা জায়গা পাওয়া চেষ্টা করছি৷
একটু আগেই বলছিলেন, আমরা পিছিয়ে আছি৷ এই জায়গা থেকে সমাধানের পথ কী?
ময়লা দিয়ে ব্যবসা করেন তাঁরা
বর্জ্য, বিশেষ করে প্লাস্টিক বর্জ্যকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই ব্যবসা করছেন৷ এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভাল হচ্ছে, তেমনি কিছু মানুষের কর্মসংস্থানও হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Frentzen
বিলিকিস আদেবিয়ি-আবিওলা
যুক্তরাষ্ট্রে এমবিএ করার পর আইবিএম-এ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পাঁচ বছর কাজ করার পর নিজ দেশ নাইজেরিয়ায় গিয়ে বর্জ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন৷ দেশটির সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত শহর লাগসের ময়লা নিয়ে ব্যবসা করছেন৷ কোম্পানির নাম ‘উইসাইকেলার্স’৷ তাদেরকে আবর্জনা দেয়ার মাধ্যমে স্থানীয়রা ‘উপহার’ পেয়ে থাকেন৷ আর আবিওলার কোম্পানি ঐ আবর্জনা থেকে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: WeCyclers
থাটো গাটহানিয়া ও রেয়া এনগোয়ানে
দক্ষিণ আফ্রিকার এই দুই তরুণী প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে স্কুল ব্যাগ তৈরি করেন৷ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের এগুলো দেয়া হয়৷ এ সব ব্যাগে সোলার প্যানেল বসানো আছে৷ ফলে শিক্ষার্থীরা হেঁটে স্কুলে যাওয়া-আসার ফলে প্যানেলগুলো যে চার্জ পায় তা দিয়ে রাতের বেলায় আলো জ্বলে৷ ফলে মোমবাতি না জ্বালিয়ে শিশুরা পড়তে পারে৷ ছবিতে একেবারে ডানে রেয়া আর বাম থেকে তিন নম্বরে থাটোকে দেখা যাচ্ছে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: repurposeschoolbags.com/Screenshot
অ্যান্ড্রু মুপুয়া
মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময় বাবা-মা দু’জনই যখন চাকরি হারিয়ে ফেলেন তখন অ্যান্ড্রু কাগজের ব্যাগ তৈরির ব্যবসা শুরু করেন৷ পুঁজি জোগাড় করতে ৭০ কেজি প্লাস্টিক বোতল বিক্রি ও শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা ধার নেন তিনি৷ ব্যাগ তৈরি শিখতে ইন্টারনেট আর ভিডিওর সাহায্য নেন তিনি৷ বর্তমানে ২৪ বছর বয়সি অ্যান্ড্রুর অধীনে ২০ জন কাজ করছেন৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: DW
লরনা রুট্ট
ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে কেনিয়ার নাইরোবিতে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ফ্যাক্টরি গড়ে তোলেন তিনি৷ এসব প্লাস্টিক দিয়ে তাঁর কোম্পানি বেড়া তৈরি করে৷ ঘরবাড়ি সহ সংরক্ষিত এলাকায় বেষ্টনী দিতে তাঁর বেড়া ব্যবহৃত হয়৷ কাঠের বদলে এ সব বেড়া খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: L. Rutto
বেথেলহেম টিলাহুন আলেমু
আফ্রিকার ফুটওয়্যার ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ইথিওপিয়ার ‘সোলরেবেলস’ বিশ্বে অনেক জনপ্রিয়৷ আলেমু’-র উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটি গাড়ির পুরনো টায়ার, ফেলে দেয়া জামাকাপড় ব্যবহার করে জুতা তৈরি করে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Frentzen
বাংলাদেশে রিসাইক্লিং ব্যবসা
প্লাস্টিক বোতল রিসাইকেল করে এমন অনেক কারখানা গড়ে উঠেছে ঢাকায়৷ তাদের হয়ে পরিত্যক্ত বোতল সংগ্রহ করছেন অনেকে৷ এতে তাদের দারিদ্র্যতা দূর হচ্ছে৷ বোতলগুলো মেশিন দিয়ে টুকরো করে প্লাস্টিক পণ্য বানায় এমন কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়৷ কিছু অংশ বিদেশে, বিশেষ করে চীনেও রপ্তানি হয়ে থাকে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M.Uz Zaman
ওয়েস্ট কনসার্ন
বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকার বর্জ্য থেকে কমপোস্ট সার তৈরি করছে ওয়েস্ট কনসার্ন নামের একটি কোম্পানি৷ তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটি এক লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি বর্জ্য রিসাইকেল করেছে৷ বিস্তারিত জানতে উপরে ‘+’ চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: wasteconcern.org
7 ছবি1 | 7
অনেক উন্নতি করার সুযোগ আছে৷ যদি মানুষের সচেতনতা ও সহযোগিতা থাকে৷ আসলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রথম শর্ত হচ্ছে, মানুষের সচেতনতা ও সহযোগিতা৷ এটা যদি পরিপূর্ণভাবে পাওয়া যায় তাহলে দ্রুতই আমরা উন্নতি করতে পারব৷ কিছু সীমাবদ্ধতা আমাদের আছে৷ কিছু বর্জ্য পরিবহনে আমরা খোলা ট্রাক ব্যবহার করছি৷ আগামী বছর যাতে খোলা ট্রাক রিপ্লেস করা যায় সেই চেষ্টা করছি৷ পাশাপাশি বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উত্পাদনের একটা চেষ্টাও আমাদের আছে৷ বিদেশি কোন কোম্পানির সঙ্গে যদি এটা আমরা করতে পারি তাহলে বিরাট একটা মাইলফলক হবে৷
উন্নত দেশে আমরা দেখি বর্জ্য রিফাইন করে জৈব সার, গ্যাস এমনকি বিদ্যুৎ তৈরি করা হচ্ছে৷ এগুলো নিয়ে আমাদের কি কোনো পরিকল্পনা আছে?
কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান বা দেশের সঙ্গে আপনাদের আলোচনা হচ্ছে?
এখানে চাইনিজ কোম্পানি, কোরিয়ান কোম্পানি ও জার্মান কোম্পানির লোকাল এজেন্টের সঙ্গে কথা হচ্ছে৷ এছাড়া তাদের প্রতিনিধিও এখানে আছেন, যাঁদের সঙ্গে কথা হচ্ছে৷ আশা করছি, ভবিষ্যতে আমরা ভালো সমাধানে পৌঁছাতে পারব৷
ঢাকা শহরে কী পরিমাণ বর্জ্য উত্পাদিত হয় এবং তার কতটুকু আমরা পরিষ্কার করতে পারি?
আব্দুর রাজ্জাক
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে প্রতিদিন কী পরিমাণ বর্জ্য জেনারেট হয়, সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই৷ তবে প্রতিদিন আমরা কতটুকু বর্জ্য সরিয়ে নিচ্ছি তার একটা হিসাব আমাদের কাছে আছে৷ এটাও আবার সিজন টু সিজন ভ্যারি করে৷ এই শুষ্ক মৌসুমে প্রতিদিন আমরা ২১শ' থেকে ২২শ' টন বর্জ্য পরিবহন করে নিয়ে যাচ্ছি৷
আমরা তো পুরোটা নিতে পারছি না?
পুরোটা নিতে পারছি না, এটা বলা ঠিক হবে না৷ কারণ সিটি কর্পোরেশন যে সুবিধা দিয়েছে তাতে করে যে বর্জ্য আমাদের কাছে আসছে, তার পুরোটাই আমরা নিয়ে যাচ্ছি৷ কোনো বর্জ্য তো রেখে যাওয়া হচ্ছে না৷ সিটি কর্পোরেশন তো প্রতিটি মানুষের দরজায় যেতে পারবে না৷ কিন্তু আমরা যে ব্যবস্থা নিয়েছি সেখানে যদি মানুষ বর্জ্যটা পাঠানোর ব্যবস্থা করে, তাহলে আমরা প্রতিদিনই সেটা পরিষ্কার করে নিয়ে যাচ্ছি৷
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যারা যুক্ত তাদের তো স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে৷ এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন বা সরকারের তরফ থেকে কি তাদের ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে?
প্রাথমিকভাবে যারা ভ্যানে করে বর্জ্য নিয়ে যাচ্ছে, তারা কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের কর্মী না৷ তথাপি তাদের ব্যাপারে আমরা সচেতন৷ এদের যারা ভ্যান মালিক তাদের সঙ্গে আমরা নিয়মিতই কথা বলছি৷ যারা এগুলো নিচ্ছে, তারা যেন বর্জ্য নেয়ার সময় হাতে হ্যান্ডগ্লাভস পরে বা মুখে মাস্ক পরে সেটা আমরা বলছি৷ কিন্তু এটা একটা অভ্যস্ততার ব্যাপার৷ অনেক সময় তারা হ্যান্ডগ্লাভস বা মাস্ক পরে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না৷ তারপরও কীভাবে তাদের অভ্যস্ত করা যায় সে চিন্তা আমাদের আছে৷ আমরা সে ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছি৷
এই বর্জ্যগুলো তো উন্মুক্ত অবস্থায় থাকে৷ এই অবস্থার পরিবর্তন কীভাবে সম্ভব?
ডাস্টবিন নয়, রাস্তাই বেছে নিচ্ছেন ঢাকাবাসী
প্রায় দেড় কোটি মানুষের শহর ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বেশ নাজুক৷ দু’টি সিটি কর্পোরেশন বিপুল সংখ্যক বাসিন্দার প্রতিদিনের বর্জ্য অপসারণে যেমন অদক্ষ, তেমনি এ শহরের বেশিরভাগ বাসিন্দাই আবর্জনা ফেলার ব্যাপারে অসেচতন এবং উদাসীন৷
ছবি: DW/M. Mamun
কন্টেইনার আছে, তবুও...
ঢাকা শহরের মালিবাগের তালতলা এলাকায় সড়কের অর্ধেকজুড়ে ফেলা হয় আবর্জনা৷ ময়লা ফেলার কন্টেইনার থাকলেও, এলাকার বাসিন্দারা ময়লা ফেলেন বাইরে, সড়কের উপরেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
দুর্গন্ধে অতিষ্ট পথচারীরা
খোলা জায়গায় ময়লা ফেলার কারণে দুর্গন্ধে কষ্ট করে চলতে হয় পথাচারীদের৷
ছবি: DW/M. Mamun
ক’দিনেই লোপাট ডাস্টবিন
ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে এ বছরের শুরুর দিকে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পুরো শহরজুড়ে সড়কের পাশে পাশে স্থাপন করেছিল কয়েক হাজার ডাস্টবিন৷ কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই এ সব ডাস্টবিনের বড় একটি অংশ চুরি হয়ে যায়, পড়ে থাকে শুধু তার স্ট্যান্ডগুলো৷
ছবি: DW/M. Mamun
পথচারীদের চলাফেরায় ব্যাঘাত
চুরি যাওয়া ডাস্টবিনের সেসব স্ট্যান্ড এখন পথচারীদের চলাফেরায় ব্যাঘাত ঘটায় অনেক জায়গাতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
ডাস্টবিন থাকলেই বা কী?
সিটি কর্পোরেশনের বসানো সড়কের পাশের যেসব ডাস্টবিন এখনো টিকে আছে, এটি তার একটি৷ ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকার এ ডাস্টবিন খালি থাকা সত্ত্বেও ময়লা ফেলা হয়েছে বাইরে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়কজুড়ে ফেলা হয়েছে ময়লা
বিপরীত চিত্র ঢাকার মিরপুর এলাকায়৷ নিয়মিত ডাস্টবিন পরিষ্কার না করায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী ময়লা ফেলেছেন ডাস্টবিনের বাইরে, সড়কজুড়ে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভাঙাচোরা কন্টেইনার
অনেক এলাকাতে রাখা হয় ময়লা ফেলার ভাঙাচোরা কন্টেইনার৷ ফলে ময়লা বাইরে ছড়িয়ে পড়ে সহজেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
উড়াল সড়কের নীচে আবর্জনা
ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার কিছু বাসিন্দ ময়লা ফেলেন মেয়র হানিফ উড়াল সড়কের নীচের সড়ক বিভাজনের ওপর৷
ছবি: DW/M. Mamun
অসহনীয় এক পরিবেশ
মেয়র হানিফ উড়াল সড়কের নীচে ফেলা ময়লা-আবর্জনা জ্বালানো হয় দিনে-দুপুরে৷ ফলে এলাকার পরিবেশ অসহনীয় হয়ে ওঠে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বুড়িগঙ্গাই যখন ডাস্টবিন!
বুড়িগঙ্গার দক্ষিণ তীরে আগানগর এলাকার বাসিন্দরা ময়লা ফেলেন সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাদামতলীর অপচনশীল প্লাস্টিক
পুরনো ঢাকার সবচেয়ে বড় ফলের পাইকারি বাজার বাদামতলী৷ সেখানকার ব্যবসায়ীরা নানান অপচনশীল প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য ফেলেন সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতে৷
ছবি: DW/M. Mamun
খোলা জায়গা মানেই আবর্জনার স্তূপ
ঢাকার মিরপুর বাংলা কলেজের বিপরীত পাশে ময়লা ফেলার কোনো কন্টেইনার না থাকায় ঐ এলাকার বাসিন্দারা ময়লা ফেলেন কড়কের ওপরে খোলা জায়গাতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়ক বিভাজনের ওপরই...
হাতিরপুল এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই ময়লা ফেলেন সড়ক বিভাজনের ওপর৷
ছবি: DW/M. Mamun
অভিজাত এলাকাও বাদ নেই
ঢাকার অভিজাত আবাসিক এলাকার একটি মহাখালী ডিওএইচএস-এর প্রবেশমুখে ময়লা আবর্জনার স্তূপ৷
ছবি: DW/M. Mamun
মেডিক্যাল কলেজের বর্জ্য
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নানান ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য ফেলা হয় সামনের ডাস্টবিনেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
হরহামেশাই যে দৃশ্য দেখা যায়
দিনের বেলা বর্জ্য অপসারণের নিয়ম না থাকলেও হরহামেশাই সে দৃশ্য দেখা যায় ঢাকা শহরে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়কজুড়ে ময়লার কন্টেইনার!
সড়কের সিংহভাগ দখল করে ময়লা ফেলার কন্টেইনার রাখার এ দৃশ্য ঢাকার মিরপুর এলাকার৷
ছবি: DW/M. Mamun
আধুনিক মানের ডাস্টবিন
ঢাকার হাতিরঝিলে বসানো হয়েছে চীন থেকে আনা আধুনিক মানের ডাস্টবিন৷ এ সব ডাস্টবিনে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য ও অন্যান্য বর্জ্য ফেলার আলাদা কন্টেইনার আছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ময়লার ভাগাড়
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোশেনের সব ময়লা এনে ফেলা হয় ডেমরার ডাম্পিং ইয়ার্ডে৷ উত্তর সিটি কর্পোশেনেরও এরকম একটি বড় ময়লার ভাগাড় আছে আমিন বাজার এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে৷
ছবি: DW/M. Mamun
19 ছবি1 | 19
আমাদের দু'ধরনের পরিকল্পনা আছে৷ আমি আগেই বলেছি, যদি এগুলো রিফাইন করে বিদ্যুৎ উত্পাদন করা যায় তাহলে এই বর্জ্য অর্ধেকের নীচে নেমে আসবে৷ আরেকটা ব্যবস্থা হলো, যেখানে আমরা বর্জ্য ফেলি সেখানে ১০ ফিট বা ১৫ ফিট হলে সেটা আমরা কাভার দিয়ে ঢেকে দেই৷ তার উপর আবার বর্জ্য ফেলা হয়৷ এভাবে চলতে থাকে৷ বর্তমানে আমাদের যে ল্যান্ডফিল আছে, সেটা আমরা ২০০৫ সালে শুরু করেছি৷ এটা আর দু-তিন বছর চলবে৷ এরপর আমাদের নতুন জায়গায় চলে যেতে হবে৷ সেটা আমরা খোঁজার চেষ্টা করছি৷ নতুন জায়গা পেলে আমরা পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে বর্জ্য ফেলার ব্যাপারে চিন্তা করছি৷
ঢাকার দু'টি সিটি কর্পোরেশনের আয়তন ১৮১ বর্গকিলোমিটার৷ এর সঙ্গে আরো ১৬টি ইউনিয়ন যুক্ত হচ্ছে৷ এর ফলে ঢাকার আয়তন হবে প্রায় ৪০০ বর্গ কিলোমিটার৷ এই বিশাল এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কীভাবে হবে? আমাদের কি সেই পরিমাণ প্রস্তুতি আছে?
ডাস্টবিন নয়, রাস্তাই বেছে নিচ্ছেন ঢাকাবাসী
প্রায় দেড় কোটি মানুষের শহর ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বেশ নাজুক৷ দু’টি সিটি কর্পোরেশন বিপুল সংখ্যক বাসিন্দার প্রতিদিনের বর্জ্য অপসারণে যেমন অদক্ষ, তেমনি এ শহরের বেশিরভাগ বাসিন্দাই আবর্জনা ফেলার ব্যাপারে অসেচতন এবং উদাসীন৷
ছবি: DW/M. Mamun
কন্টেইনার আছে, তবুও...
ঢাকা শহরের মালিবাগের তালতলা এলাকায় সড়কের অর্ধেকজুড়ে ফেলা হয় আবর্জনা৷ ময়লা ফেলার কন্টেইনার থাকলেও, এলাকার বাসিন্দারা ময়লা ফেলেন বাইরে, সড়কের উপরেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
দুর্গন্ধে অতিষ্ট পথচারীরা
খোলা জায়গায় ময়লা ফেলার কারণে দুর্গন্ধে কষ্ট করে চলতে হয় পথাচারীদের৷
ছবি: DW/M. Mamun
ক’দিনেই লোপাট ডাস্টবিন
ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে এ বছরের শুরুর দিকে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পুরো শহরজুড়ে সড়কের পাশে পাশে স্থাপন করেছিল কয়েক হাজার ডাস্টবিন৷ কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই এ সব ডাস্টবিনের বড় একটি অংশ চুরি হয়ে যায়, পড়ে থাকে শুধু তার স্ট্যান্ডগুলো৷
ছবি: DW/M. Mamun
পথচারীদের চলাফেরায় ব্যাঘাত
চুরি যাওয়া ডাস্টবিনের সেসব স্ট্যান্ড এখন পথচারীদের চলাফেরায় ব্যাঘাত ঘটায় অনেক জায়গাতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
ডাস্টবিন থাকলেই বা কী?
সিটি কর্পোরেশনের বসানো সড়কের পাশের যেসব ডাস্টবিন এখনো টিকে আছে, এটি তার একটি৷ ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকার এ ডাস্টবিন খালি থাকা সত্ত্বেও ময়লা ফেলা হয়েছে বাইরে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়কজুড়ে ফেলা হয়েছে ময়লা
বিপরীত চিত্র ঢাকার মিরপুর এলাকায়৷ নিয়মিত ডাস্টবিন পরিষ্কার না করায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী ময়লা ফেলেছেন ডাস্টবিনের বাইরে, সড়কজুড়ে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভাঙাচোরা কন্টেইনার
অনেক এলাকাতে রাখা হয় ময়লা ফেলার ভাঙাচোরা কন্টেইনার৷ ফলে ময়লা বাইরে ছড়িয়ে পড়ে সহজেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
উড়াল সড়কের নীচে আবর্জনা
ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার কিছু বাসিন্দ ময়লা ফেলেন মেয়র হানিফ উড়াল সড়কের নীচের সড়ক বিভাজনের ওপর৷
ছবি: DW/M. Mamun
অসহনীয় এক পরিবেশ
মেয়র হানিফ উড়াল সড়কের নীচে ফেলা ময়লা-আবর্জনা জ্বালানো হয় দিনে-দুপুরে৷ ফলে এলাকার পরিবেশ অসহনীয় হয়ে ওঠে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বুড়িগঙ্গাই যখন ডাস্টবিন!
বুড়িগঙ্গার দক্ষিণ তীরে আগানগর এলাকার বাসিন্দরা ময়লা ফেলেন সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাদামতলীর অপচনশীল প্লাস্টিক
পুরনো ঢাকার সবচেয়ে বড় ফলের পাইকারি বাজার বাদামতলী৷ সেখানকার ব্যবসায়ীরা নানান অপচনশীল প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য ফেলেন সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতে৷
ছবি: DW/M. Mamun
খোলা জায়গা মানেই আবর্জনার স্তূপ
ঢাকার মিরপুর বাংলা কলেজের বিপরীত পাশে ময়লা ফেলার কোনো কন্টেইনার না থাকায় ঐ এলাকার বাসিন্দারা ময়লা ফেলেন কড়কের ওপরে খোলা জায়গাতেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়ক বিভাজনের ওপরই...
হাতিরপুল এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই ময়লা ফেলেন সড়ক বিভাজনের ওপর৷
ছবি: DW/M. Mamun
অভিজাত এলাকাও বাদ নেই
ঢাকার অভিজাত আবাসিক এলাকার একটি মহাখালী ডিওএইচএস-এর প্রবেশমুখে ময়লা আবর্জনার স্তূপ৷
ছবি: DW/M. Mamun
মেডিক্যাল কলেজের বর্জ্য
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নানান ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য ফেলা হয় সামনের ডাস্টবিনেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
হরহামেশাই যে দৃশ্য দেখা যায়
দিনের বেলা বর্জ্য অপসারণের নিয়ম না থাকলেও হরহামেশাই সে দৃশ্য দেখা যায় ঢাকা শহরে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সড়কজুড়ে ময়লার কন্টেইনার!
সড়কের সিংহভাগ দখল করে ময়লা ফেলার কন্টেইনার রাখার এ দৃশ্য ঢাকার মিরপুর এলাকার৷
ছবি: DW/M. Mamun
আধুনিক মানের ডাস্টবিন
ঢাকার হাতিরঝিলে বসানো হয়েছে চীন থেকে আনা আধুনিক মানের ডাস্টবিন৷ এ সব ডাস্টবিনে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য ও অন্যান্য বর্জ্য ফেলার আলাদা কন্টেইনার আছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ময়লার ভাগাড়
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোশেনের সব ময়লা এনে ফেলা হয় ডেমরার ডাম্পিং ইয়ার্ডে৷ উত্তর সিটি কর্পোশেনেরও এরকম একটি বড় ময়লার ভাগাড় আছে আমিন বাজার এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে৷
ছবি: DW/M. Mamun
19 ছবি1 | 19
নতুন এলাকা যুক্ত হলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আয়তন হবে ১৯৬ বর্গকিলোমিটার৷ এখন যেটা আছে ৮৩ বর্গকিলোমিটার৷ এখন ওয়ার্ড আছে ৩৬টি৷ আরো ১৮টি যুক্ত হয়ে হবে ৫৪টি৷ বিশাল জনগোষ্ঠী যুক্ত হবে সিটি কর্পোরেশেনের মধ্যে৷ এর জন্য আমাদের প্রস্তুতি চলছে৷ আমরা অর্গানোগ্রাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছি৷ ভেহিকল যেগুলো লাগবে সেগুলো কেনার প্রস্তুতি চলছে৷ নতুন এলাকাতে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনের জন্য আমরা জায়গা খোঁজার চেষ্টা করছি৷ ল্যান্ড সিলের জন্য কোনো জায়গা পেলে সেটা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেমকে আরো গতিশীল করবে৷ সামনের বিষয়গুলো মাথায় রেখেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি৷
ঢাকা শহরে এখনো আমরা অলি-গলিতে বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখি৷ উন্নত কোনো দেশে আমরা এই অবস্থা দেখি না৷ এই পরিস্থিতি থেকে কি বের হওয়া সম্ভব?
অবশ্যই সম্ভব৷ কেন সম্ভব হবে না? আমি আগেই বলেছি, আপনারা যে লেভেলে আশা করছেন সেটা করতে হলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সচেতনতা ও সহযোগিতা৷ একজন মানুষ যদি নিজে সচেতন হন এবং এইভাবে সহযোগিতা দেন যে আমি রাস্তার মধ্যে কোনো ময়লা ফেলব না৷ আমি আমার বাড়ির ময়লাটা রাস্তায় ফেলে আসব না৷ তাহলে অগি-গলিতে আপনি বর্জ্য দেখবেন না৷ তখন সে কী করবে, সিটি কর্পোরেশন যে জায়গা দিয়েছে সেখানে সে ময়লা ফেলে আসবে৷ এটা করতে পারলে আপনারা যে লেভেলে আশা করছেন সেই লেভেলে পৌঁছে যাবো আমরা৷
ঢাকা শহরকে বর্জ্যমুক্ত করতে আপনার পরামর্শ কী?
আমার প্রথম পরামর্শ হলো, ঢাকা শহরের নাগরিকদের সচেতনতা ও সহযোগিতা দরকার৷ যদি আমরা ক্লিন ঢাকা গড়তে চাই৷ আপনি জানেন আমাদের মেয়র যখন দায়িত্ব নেন তখন তিনি বলেছিলেন, তার তিনটি টার্গেট৷ এগুলো হলো – ক্লিন ঢাকা, গ্রিন ঢাকা ও সেইফ ঢাকা৷ ক্লিন ঢাকার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি৷ কোরবানি ঈদের সময় মানুষ যে পরিমাণ সহযোগিতা করে থাকে, পুরো বছর সেই পরিমাণ সহযোগিতা পেলেই ক্লিন ঢাকা পেতে আমাদের বেশি দেরি হবে না৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷