1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বর্ণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ

২৬ নভেম্বর ২০১৪

নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ তরুণকে গুলি করে হত্যার পরেও শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাকে আদালত অভিযুক্ত না করায়, ফার্গুসন শহরে সৃষ্ট দাঙ্গা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে৷ রাজ্যে রাজ্যে বিক্ষোভ৷ ক্লিভল্যান্ডেও কিশোর হত্যার প্রতিবাদ অব্যাহত৷

Ferguson Entscheidung Grand Jury - Protest in New York 24.11.2014
ছবি: picture-alliance/dpa/Peter Foley

মিসুরি পরিস্থিতি

পরিস্থিতি মোকাবিলায় মঙ্গলবার মিসুরি রাজ্য গভর্নর জে নিক্সন দাঙ্গা কবলিত ফার্গুসন এলাকায় আরো কয়েক'শ রক্ষী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন৷ ৯ই আগস্ট পুলিশ কর্মকর্তা ড্যারেন উইলসন ফার্গুসনের রাস্তায় ১৮ বছর বয়সি তরুণ মাইকেল ব্রাউনকে গুলি করে হত্যা করেন৷ প্রায় তিনমাস ধরে শুনানির পর সোমবার রাতে বিচারকদের রায়ে উইলসনের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি অভিযোগ না আনার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়৷

গ্র্যান্ড জুরি তাঁদের সিদ্ধান্তে জানান, উইলসন আত্মরক্ষার্থে গুলি করেছেন৷ তাই তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়নি৷ এর পরপরই কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত ফার্গুসনের হতাশ, ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা সহিংস দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়ে৷ শহরটির ক্ষমতা কাঠামো শ্বেতাঙ্গ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় সহিংসতা প্রায় বর্ণবাদী দাঙ্গার রূপ নেয়৷ থানার সামনে বিক্ষোভ করেন কৃষাঙ্গরা, আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় পুলিশের কয়েকটি গাড়িতে৷ নিহত ব্রাউনের পারিবারিক আইনজীবীও আদালতের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে রায়কে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করেছেন৷ দাঙ্গাকারীরা শহরের ডজনখানেক ভবন আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছেন৷ কর্তৃপক্ষের দাবি, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকায় দাঙ্গাকারীরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি৷

ভবনে অবৈধ অনুপ্রবেশ, অবৈধ অস্ত্র রাখা ও বেআইনি সমাবেশ করার অভিযোগে ৬১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ পরিস্থিতিকে হৃদয়বিদারক বলে উল্লেখ করেছেন রাজ্য গভর্নর নিক্সন৷ দাঙ্গা কবলিত এলাকায় এখন ২,২০০ রক্ষী মোতায়েন আছে বলে জানিয়েছেন তিনি৷

উইলসনের বক্তব্য

মাইকেল ব্রাউনকে গুলি করে হত্যাকারী পুলিশ কর্মকর্তা ড্যারেন উইলসন ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতে প্রথমবারের মতো এবিসি নিউজে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, ব্রাউন নিহত হওয়ায় তিনি দুঃখিত, কিন্তু এ জন্য বিবেকের কাছে দায়ী নন তিনি৷ তবে নিজের জীবন নিয়ে তাঁর সংশয় রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি৷ তিনি এও বলেছেন যে, ব্রাউনের জায়গায় যদি কোনো শ্বেতাঙ্গ থাকত তবে একই কাজ করতেন তিনি৷ উইলসনের মতে, একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে সঠিক দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি৷

যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বিক্ষোভ

কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ মাইকেল ব্রাউন হত্যার বিচারকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে৷ বার্তা সংস্থা এপি-র প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিউ ইয়র্ক থেকে সিয়াটল পর্যন্ত এই বিক্ষোভের অধিকাংশই শান্তিপূর্ণ৷ এ সময় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন এবং নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড বহন করেন৷

নিউ ইয়র্কে বিক্ষোভকারীরা অল্প সময়ের জন্য ব্রুকলিন সেতু বন্ধ করে দেন৷ অন্যান্য সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়৷ মিশিগান, মাইন, জর্জিয়া, উইসকনসিন, আটলান্টা, বস্টন, লস অ্যাঞ্জেলেসসহ আরও অনেক শহরে বিক্ষোভ হচ্ছে৷ মিনেসোটার মিনেপোলিসে বিক্ষোভ হয়েছে৷

আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় পুলিশের কয়েকটি গাড়িতেছবি: Reuters/A. Latif

ওবামার নিন্দা

ফার্গুসনে ব্যাপক সহিংসতা শুরুর পর এই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ এ ধরনের কাজ যারা করেছে, তারা অপরাধী বলে মন্তব্য করেছেন তিনি৷ তাদের বিচারের আওতায় আনারও ঘোষণা দিয়েছেন ওবামা৷

বিক্ষোভে ফুঁসছে ক্লিভল্যান্ড

যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ডে খেলনা পিস্তল হাতে ১২ বছরের কিশোরকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবারও সেখানে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছেন কয়েক'শ মানুষ৷ এর ফলে ব্যস্ত সড়কে দেখা দেয় যানজট৷ সেখানে প্রধান স্লোগান ছিল ‘হ্যান্ডস আপ ডোনট শ্যুট', ‘নো জাস্টিস নো পিস'৷

শনিবার তামির রাইস নামের ঐ কিশোরকে হত্যার পর প্রতিবাদের আগুন ক্লিভল্যান্ড থেকে ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যে৷ এই আগুনে ঘি ঢেলেছে মিসুরি ফার্গুসন শহরে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ তরুণকে গুলি করে হত্যার দায়ে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাকে আদালত অভিযুক্ত না করায়৷ ক্লিভল্যান্ডের প্রধান প্রধান সড়ক অবরোধ করে রেখেছে বিক্ষোভকারীরা৷

নিউ ইয়র্ক থেকে সিয়াটল পর্যন্ত এই বিক্ষোভের অধিকাংশই শান্তিপূর্ণছবি: Reuters

বিক্ষোভকারীদের একজন নিশা পিয়ার্স সংবাদ সংস্থা এপিকে বলেন, ‘‘যে ব্যবস্থা চলছে তাতে আমাদের রক্ষা করার জন্য কোনো আইন নেই৷ তাই সুবিচার পেতে হলে নিজের হাতেই আইন তুলে নিতে হবে৷''

এদিকে তামিরের পরিবার স্থানীয় অ্যাটর্নিকে তামির রাইস ও পুলিশের মধ্যে গুলির আগে কথোপকথনের ভিডিও প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছিল৷ পুলিশ সোমবার তাদের সেই ভিডিও দেখিয়ে জানিয়েছে বুধবার গণমাধ্যমের কাছে সেই ভিডিও প্রকাশ করবে তারা৷

শনিবারের ঘটনা-তামিরের হাতে ছিল সেমি-অটোম্যাটিক হ্যান্ডগানের মতো একটি ‘‘এয়ারসফ্ট'' গোত্রীয় একটি নকল পিস্তল৷ পুলিশ অফিসাররা সেটা না জেনেই গুলি চালান৷ যদিও তামির সেই পিস্তল পুলিশের দিকে তাক করেনি, এমকি কিছু বলেনি পর্যন্ত৷ রবিবার সকালে তামির হাসপাতালে মারা যায়৷

স্থানীয় পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ভিডিও ও অপরাপর সাক্ষ্য-সাবুদ সংগ্রহ করেছে এবং সরকারি কৌঁসুলির কাছে পেশ করবে, বলে জানিয়েছে৷ অতঃপর সরকারি কৌঁসুলির দপ্তর সেই সব সাক্ষ্য-প্রমাণ গ্র্যান্ড জুরির কাছে দাখিল করতে পারে৷ তা থেকে নির্ধারণ করা হবে, পুলিশ অফিসারটি সঙ্গত কারণে, না অসঙ্গতভাবে বলপ্রয়োগ করেছিলেন৷ তামির রাইস-এর পরিবারবর্গের অ্যাটর্নি কিন্তু জানিয়েছেন যে, তারা ব্যক্তিগতভাবে ঘটনার তদন্ত করে দেখবেন৷

এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ