বরিস বেকার যদিও তাঁর বিলাসী জীবনযাপনের জন্য পরিচিত, তাসত্ত্বেও এই টেনিস তারকা ‘প্যারেন্টিং গাইড’ সংক্রান্ত একটি বই লিখেছেন৷ ২০০৭ সালে লেখা ‘হোয়াট মেকস চিলড্রেন স্ট্রং’ বইটিতে সেসময় তিন সন্তানের বাবা তাঁর সন্তানদের প্রতি ভালোবাসার গভীরতার কথা জানিয়েছেন৷ তবে বইটি খুব বেশি গুরুত্ব সহকারে নেয়নি সমালোচকরা৷ আর এটি উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের চেয়ে তাঁর ভক্তরা কিনেছেন বেশি৷

বরিস বেকারের সন্তানরা বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন এমনটা যারা ভাবছেন তারা ভুল ভাবছেন৷ তাদের কেউই ভালো টেনিস খেলতে পারেন না৷ বড় ছেলে নোয়ার বয়স ২৩ বছর যিনি একজন ডিজি এবং শিল্পী৷ ১৮ বছর বয়সি ইলিয়াস ইন্সটাগ্রাম তারকা হওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত আর বরিসের মেয়ে সতের বছর বয়সি আনা একজন সফল মডেল৷ বরিসের সবচেয়ে ছোট ছেলে আমেডিউস ভবিষ্যতে একজন পুলিশ হতে চান৷

আত্মগর্ব হচ্ছে আত্মবিশ্বাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, একবার বলেছিলেন বরিস বেকার৷ এ জন্যই তিনি তাঁর চেহারা বাড়তি গুরুত্ব নেন৷ আর এজন্য শুধু দামি স্যুট পরাই নয়, পরিষ্কার পরিচ্ছনতার দিকেও বিশেষ মনোযোগী তিনি৷ দিনে তিনবার গোসল করেন বরিস৷ দেহটাকে সুস্থ রাখাকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন এই তারকা৷

আশি এবং নব্বইয়ের দশকে জন্ম নেয়া কিছু ছেলের নাম রাখা হয় বরিস৷ এমনকি এক গবেষক নতুন এক প্রজাতির নামও দিয়েছেন এই নামে৷ ১৯৯৬ সালে জীববিজ্ঞানী ম্যানফ্রেড পার্থ সামুদ্রিক শামুকের একটি নতুন প্রজাতির সন্ধান পান এবং কয়েকবছর পর সেটির নাম রাখেন ‘বুফোনারিয়া বরিসবেকারি’৷

টেনিস কোর্টে হিংস্র সার্ফের জন্য পরিচিত বরিস বেকার একসময় ‘বুম-বুম বরিস’ নামে পরিচিত ছিলেন৷ ১৯৮৫ সালে তিনি উইম্বলডন জেতার পর এক আইসক্রিম কোম্পানি নামটির ট্রেডমার্ক করিয়ে নেয়৷

ফর্মুলা ওয়ানের সর্বকালের সেরা মিশায়েল শুমাখার৷ গত বছর ফ্রেঞ্চ আল্পসে স্কি করতে গিয়ে মাথায় আঘাত পাওয়ার পর দীর্ঘ দিন কোমায় ছিলেন তিনি৷ পরে বাড়ি ফিরে গেলেও এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ নন এফ-ওয়ানের এই কিংবদন্তি৷বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে সাতটি ড্রাইভার শিরোপার পাশাপাশি ৯১টি গ্রঁ প্রি শিরোপাও জিতেছেন ‘শুমি’৷

সবচেয়ে কম বয়সে উইম্বলডন জেতার রেকর্ডটি এখনো তাঁর দখলে৷ মাত্র ১৭ বছর বয়সে উইম্বলডন জিতেছিলেন বরিস বেকার৷ ১৫ বছরের (১৯৮৪-১৯৯৯) ক্যারিয়ারে ছয়টি গ্র্যান্ডস্লাম একক জেতা বেকার একসময় নিজে ছিলেন ব়্যাংকিং-এ পুরুষদের বিশ্ব সেরা, এখন বর্তমান বিশ্বসেরা নোভাক জোকোভিচের কোচ বেকার৷

বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ১৬টি গোল করা ফুটবলার মিরোস্লাভ ক্লোজে৷ জার্মানির হয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলেছেন৷ সর্বশেষ সুযোগটি এসেছিল ২০১৪ সালে৷ সেবার দেশকে বিশ্বকাপ জিতিয়েই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ইতি টেনেছেন জার্মানির হয়েও সবচেয়ে বেশি (৭১) গোল করা এই স্ট্রাইকার৷

অনেকের মতে জার্মানির সর্বকালের সেরা ফুটবলার তিনি৷ জার্মানিকে খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন ১৯৭৪ সালে, কোচ হিসেবেও জিতিয়েছেন ১৯৯০ সালে৷ ব্রাজিলের মারিও জাগালো ছাড়া আর কেউ খেলোয়াড় এবং কোচ দুই ভূমিকাতেই বিশ্বকাপ জিততে পারেননি৷ ‘কাইজার’ বা ‘সম্রাট’ নামেও পরিচিত বেকেনবাওয়ার ফুটবলে নতুনত্বও এনেছেন৷ ফুটবলে সুইপার বা লিবারো পজিশন এসেছে বেকেনবাওয়ারের মাধ্যমেই৷

দুই জার্মানি এক হওয়ার আগেই ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওায়ায় ক্রিস্টিন ওটোর পরিচয় দিতে গেলে লিখতে হয়, ‘পূর্ব জার্মানির ইতিহাসের সেরা সাঁতারু’৷ তবে একীভূত জার্মানিও এত বড় মাপের সাঁতারুর দেখা পায়নি৷ ওটো তাঁর ক্যারিয়ারকে স্মরণীয় করে রেখেছেন অলিম্পিকের এক আসরে ছয়টি সোনা জিতে৷ ১৯৮৮ সালে সিউল অলিম্পিকে এই অনন্য নজির গড়েন তিনি৷

মেয়েদের টেনিস ইতিহাসে অন্যতম সেরা তারকা স্টেফি গ্রাফ৷ ১৯৮২, অর্থাৎ পশ্চিম জার্মানির হয়ে শুরু করে ১৯৯৯ সাল, অর্থাৎ একীভূত জার্মানির হয়ে শেষ করাক ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে মোট ২২টি একক শিরোপা জিতেছেন গ্রাফ৷ এত বেশি গ্র্যান্ড স্লাম একক শিরোপা মেয়েদের টেনিসে আর কেউ জেতেননি৷ দীর্ঘদিন মেয়েদের টেনিসের বিশ্বসেরা ছিলেন তিনি৷ বিয়ে করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক টেনিস তারকা আন্দ্রে আগাসিকে৷