জাইর বলসোনারোকে ব্রাজিলের অনেকেই অগণতান্ত্রিক, বর্ণবাদী এবং সমকামীবিদ্বেষী বলে উল্লেখ করে থাকেন৷ তার গ্রহণ করা নানা পদক্ষেপ দেশের জন্য ক্ষতিকরও মনে করেন অনেকে৷ এবার তাই রাজপথে নেমেছেন বিভিন্ন ক্লাবের ফুটবলপ্রেমীরাও৷ ব্রাজিলের অন্যতম জনপ্রিয় ক্লাব কোরিন্থিয়ান্সের ফ্যান রোজারিও বাসেত্তো বলছেন, ‘‘মানবতার এই শত্রুর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে৷’’

বাসেত্তো কোরিন্থিয়ান্সের ফ্যান হলেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অন্য আরো তিন ক্লাবের ফ্যানরাও এই ক্ষেত্রে তাকেই নেতা বলে মেনে নিয়েছেন৷ পালমেইরাস, সাও পাওলো এবং সান্তোসের ভক্তরাও রাজপথে নেমেছেন বাসেত্তোর নেতৃত্বে৷ কে কোন দলকে সমর্থন করেন? এ প্রশ্নের উত্তর এখন আর জরুরি না৷ উগ্র ডানপন্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই এখন সবার মূল লক্ষ্য৷

বলসোনারোর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে ব্রাজিলের বামপন্থি দলগুলো৷ বাসেত্তো মনে করেন, বিভিন্ন দল ও ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা ভয় পেয়ে চুপ করে আছেন৷ অন্যদিকে বলসোনারোর কর্মীরা রাজপথে শক্তি প্রদর্শন করছে৷ ফলে নিজেকে কট্টর বামপন্থি হিসেবে পরিচয় দেয়া বাসেত্তোর মতো ফুটবল ফ্যানরা এখন রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছেন৷

১১০ বছর আগে এক সামরিক স্বৈরাচারীকে রুখে দেয়ার আন্দোলনে জন্ম হয় কোরিন্থিয়ান্স ক্লাবের৷ সেই সময় থেকেই ফুটবল ক্লাবটির রয়েছে দীর্ঘ রাজনৈতিক ঐতিহ্য৷ কোরিন্থিয়ান্স ফ্যানদের ক্লাবেরও বয়েস এখন ৫০৷ ক্লাবের মোটো ‘‘হারি বা জিতি, আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে৷’’ সেই ঐতিহ্যকে স্মরণ করেই এবার বলসোনারোকে রুখে দেয়ার দায়িত্ব অনুভব করছেন ক্লাবের কট্টর ফ্যানরা৷

করোনা মহামারির শুরু থেকেই একে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে এসেছেন বলসোনারো৷ দেশটিতে এরই মধ্যে ২০ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত, মারা গেছেন ৮০ হাজার মানুষ৷ দরিদ্ররা কাজ হারাচ্ছেন, পাচ্ছেন না ত্রাণও৷ কেবল রাজপথে আন্দোলন না করে দরিদ্রদের সহায়তায়ও এগিয়ে এসেছেন ফুটবল ফ্যানরা৷ এরই মধ্যে চার হাজার পরিবারকে দেয়া হয়েছে সহায়তা প্যাকেজ৷ দ্রুতই এমন আরো সহায়তার কথাও জানিয়েছেন তারা৷