মুম্বইয়ে নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেছেন বলিউডের উদীয়মান তারকা সুশান্ত সিং রাজপুত৷ এখনও তার আত্মহত্যার কারণ জানা যায় নি, কোন ‘সুইসাইড নোটও’ মেলেনি৷
বিজ্ঞাপন
৩৪ বছর বয়সী সুশান্ত একের পর এক চলচ্চিত্রে নিজের অভিনয় দিয়ে নজর কেড়েছেন৷ ‘কাই পো ছে' দিয়ে বলিউডে অভিষেক তার, শেষ দেখা গেছে নেটফ্লিক্স চলচ্চিত্র ‘ড্রাইভ'-এ৷ রোববার সকালে বাসায় তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়৷
ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার রাতে দেরিতে ঘুমাতে গিয়েছিলেন সুশান্ত সিং৷ দুপুর পর্যন্তও কোন সাড়া না পেয়ে তার বন্ধুদের খবর দেন গৃহকর্মী৷ পরে তারা দরজা ভেঙ্গে তরুণ এই অভিনেতাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান৷
সুশান্ত বিষন্নতায় ভুগছিলেন বলে নিউজ নেটওয়ার্ক ‘আজ তাক'কে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা৷ স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী গত ৯ জুন তার ম্যানেজার দিশা সালিয়ানও একটি ভবন থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন৷
সুশান্ত এর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ তরুণ প্রতিভাবান এই অভিনেতা খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন বলে টুইটে উল্লেখ করেন তিনি৷
সুশান্ত তার অভিনয় জীবন শুরু করেন ছোট পর্দায়৷ ‘পবিত্র রিশতা’ নামের একটি সিরিয়ালে তিনি মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করে ছোট পর্দায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন৷ ২০১৩ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে ‘কাই পো ছে'তে৷ এরপর অভিনয় করেছেন ‘শুধ দেশি রোমান্স’, আনুশকা শর্মার বিপরীতে ‘পিকে’, ‘ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সি’, ‘এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরির’ মত জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোতে৷ ‘কেদারনাথ’ এ অভিনয় দিয়ে মুগ্ধ করেছেন তিনি সবাইকে৷ সবশেষ কাজ করেছেন ‘দিল বেচারা'তে, যা এখনও মুক্তির অপেক্ষায় আছে৷
এদিকে ইরফান খান এবং ঋষি কাপুরের পর সুশান্তের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে বলিউড অঙ্গনে৷ অনেকেই টুইট করে তাকে স্মরণ করেছেন৷ অক্ষয় কুমার খবরটি শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন৷ অজয় দেবগন লিখেছেন এমন মৃত্যুর খবর সত্যিই দুঃখজনক৷ এছাড়া তরুণ আর প্রতিভাবান এই অভিনেতার মৃত্যুর খবরে মর্মাহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন শচিন টেন্ডুলকারও৷
এফএস/জেডএ (টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া টুডে)
শিল্পী, সাহিত্যিকদের অস্বাভাবিক মৃত্যু
তাঁদের জীবন জনতার কাছে খোলা খাতা৷ সাহিত্য, সংগীত ও শিল্পের সঙ্গে সারা জীবন কাটিয়ে জীবনের শেষ মুহূর্তে তাঁরা ভক্তদের থেকে বিদায় নিয়েছেন আশ্চর্যজনকভাবে৷ ছবিঘরে দেখুন এমনই কয়েকজন তারকার আশ্চর্য মৃত্যু৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Rumpenhorst
এলভিস প্রেসলি
এলভিস প্রেসলি বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়কদের মধ্যে একজন৷ তিনি তাঁর ডাকনাম এলভিস নামেও পরিচিত৷ তাঁকে বলা হয় ‘কিং অফ রক অ্যান্ড রোল’ অথবা শুধু ‘দ্য কিং’৷ তিনি জীবনের শেষদিকে এসে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন এলভিস৷ অনেকে মাদকাদ্রব্যকেই তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে অভিহিত করেন৷ নিজের বাথরুমে তিনি ১৯৭৭ সালের ১৬ই আগস্ট হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Rumpenhorst
যুবরানি ডায়না
১৯৮১ সালে ব্রিটেনের যুবরাজ চার্লসের সাথে বাগদানের পর থেকে ১৯৯৭ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ডায়ানাকে বলা হতো পৃথিবীর সবচেয়ে খ্যাতিমান নারী৷ ফ্যাশন, সৌন্দর্য, এইডস রোগ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়৷ এই খ্যাতিই হয়ত ডায়ানার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ ১৯৯৭ সালে ফ্রান্সের প্যারিস শহরে ডায়ানা ও তাঁর তৎকালীন প্রেমিক দোদি ফায়েদ এক গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফান গখ
পোস্ট-ইমপ্রেশনিজমবাদী ওলন্দাজ চিত্রশিল্পী ফান গখের সপ্রতিভ রঙের ব্যবহার শিল্পকলায় সুদূরপ্রসারি প্রভাব রেখেছিল৷ কিন্তু জীবনের প্রতি প্রবল হতাশায় ভুগে ১৮৯০ সালের ২৯ জুলাই রিভলভার দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/United Archives/WHA
ভার্জিনিয়া উল্ফ
ভার্জিনিয়া উল্ফ ১৯ শতকের ব্রিটিশ আধুনিকতাবাদী লেখকদের মধ্যে অন্যতম৷ ডিপোলার ডিজঅর্ডার নামক একটি মানসিক রোগে ভুগেছিলেন তিনি৷ শেষ উপন্যাস ‘বিটউইন দ্য অ্যাক্টস’ লেখা শেষ করার পর তিনি বিষণ্ণতায় ভুগতে শুরু করেন৷ ২৮শে মার্চ ১৯৪১ সালে তিনি তাঁর ওভারকোটের পকেট ভারি পাথর দিয়ে ভর্তি করে ওউজ নদীতে আত্মহত্যা করেন৷
ছবি: Gemeinfrei
মেরিলিন মনরো
এই শতাব্দীতেও তাঁকে নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই৷ মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া সৌন্দর্য আর অভিনয় দক্ষতার পাশাপাশি যৌনতার প্রতীক হিসেবে গোটা বিশ্বে ধারাবাহিকভাবে চর্চিত হয়েছেন মার্কিন অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো৷ লস অ্যাঞ্জেলেসের ব্রেন্টউডে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মনরো মাত্রাতিরিক্ত বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন ১৯৬২ সালের ৫ আগস্ট৷
ছবি: picture-alliance/Everett Colle
ব্রুস লি
অভিনেতা ব্রুস লি মার্শাল আর্ট শিল্পী, শিক্ষক ৷ মাত্র ৩২ বছর বয়সে ব্রুস লির মৃত্যু হয় হংকংয়ে এবং তখনই এই মৃত্যু নিয়ে নানা বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে৷ ১৯৭৩ সালের মে মাসে একটি চলচ্চিত্রে ডাবিংয়ের সময় ব্রুস লির মস্তিষ্ক হঠাৎই ফুলে উঠতে শুরু করে, সঙ্গে শুরু হয় তীব্র মাথাব্যথা৷ চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় সেরেব্রাল এডেমা৷ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচানো যায়নি৷
ছবি: picture-alliance/United Archives/IFTN
মাইকেল জ্যাকসন
মাইকেল জ্যাকসনের আচমকা মৃত্যুর জন্য দীর্ঘমেয়াদে পেইন কিলার সেবনকে দায়ী করা হয়৷ তবে এ নিয়ে বিতর্ক বোধ হয় কোনো দিনই শেষ হবে না৷ শুরুতে জানানো হয়েছিল তাঁর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটেছে৷ পরে জানানো হয়, ডেমারোল নামের ব্যথানাশক ইনজেকশন নেওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে জ্যাকসনের৷ ডেমারোল নেওয়ার পর থেকেই নাকি তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস ধীর হতে শুরু করে৷ এবং এক পর্যায়ে একেবারে বন্ধ হয়ে যায়৷
ছবি: picture alliance/dpa/EPA/Christie's/Ho
স্টিভ আরউইন
স্টিভেন রবার্ট আরউইন ওরফে স্টিভ বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ও টিভি ব্যক্তিত্ত্ব ছিলেন৷ বিশ্বব্যাপী প্রচারিত ‘ক্রোকোডাইল হান্টার’ নামের একটি টেলিভিশন প্রামাণ্যচিত্রের জন্য বিখ্যাত তিনি৷ গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে ডুব-সাঁতার দেয়ার সময় একটি স্টিং-রে বার্ব তাঁর বুক ফুটো করে হুল ফোটালে তিনি তৎক্ষণাৎ মারা যান৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Devai
আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
মার্কিন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আর্নেস্ট মিলার হেমিংওয়ের ওপর নির্মেদ ও নিরাবেগী ভাষার ভীষণ প্রভাব ছিল৷ তাঁর অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় ও জনপ্রিয় ইমেজও পরবর্তী প্রজন্মের ওপর ভীষণ প্রভাব ফেলে৷ ১৯৫৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন হেমিংওয়ে৷ এরপর ১৯৬১ সালের ২রা জুলাই ভোর-সকালে নিজের প্রিয় শটগান দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি৷