বাংলাদেশিসহ প্রায় ৬০ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গ্রিস অবৈধভাবে তুরস্কে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ গ্রিস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷
বিজ্ঞাপন
জার্মান ম্যাগাজিন স্পিগেল বুধবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে৷
ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক আইন বলছে, অভিবাসীরা কোনো দেশে গেলে তাদের অন্যদেশে না পাঠিয়ে তাদের আশ্রয় আবেদন যাচাই করতে হবে৷
মরিয়া শরণার্থী শিবির: এক নতুন নরক
চলতি বছর লেসবসে অনেক শরণার্থী এসেছেন৷ প্রতিনিয়তই এই সংখ্যা বাড়ছে৷ ফলে মরিয়া ক্যাম্পের অবস্থা ক্রমশ শোচনীয় হয়ে পড়ছে যেখানে শরণার্থীরা অনেকক্ষেত্রে কোন সহায়তা পাচ্ছেন না৷
ছবি: DW/D. Tosidis
উপর থেকে দেখা
মরিয়া শরণার্থী শিবিরের ধারণক্ষমতা তিন হাজার৷ তবে, বর্তমানে সেখানে দশহাজারের মতো শরণার্থী কোনরকমে বসবাস করছেন৷ এই শিবিরটি হচ্ছে গ্রিসের সবচেয়ে বড় শরণার্থী অভ্যর্থনা এবং চিহ্নিতকরণ কেন্দ্র৷
ছবি: DW/D. Tosidis
গভীর ক্ষত
মরিয়াতে বসবাসরত একটি বড় অংশ অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় রয়েছেন৷ তাদের অনেকের দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা দরকার৷ গাজায় ইসরায়েলের রকেট হামলায় গুরুতর আহত এই মেয়েটি মরিয়ায় বাইরের অংশের জলপাই বাগানে একটি তাঁবুতে বাবামায়ের সঙ্গে থাকে৷
ছবি: DW/D. Tosidis
শরণার্থী আসা অব্যাহত রয়েছে
আগস্ট মাসে তিন হাজারের মতো শরণার্থী নৌকায় করে লেসবসে পৌঁছেছেন৷ তাদের মধ্যে ৪০ জন একটি নৌকায় করে সেখানে পৌঁছান যারা সবই আফগানিস্তান থেকে এসেছেন৷
ছবি: DW/D. Tosidis
অপেক্ষার শুরু
সেই আগতদের মধ্যে ২২ শিশু এবং নারীকে একটি ট্রানজিট ক্যাম্পে নেয়া হয়৷ আর বাকি ১৮ পুরুষকে ছবিতে দেখা যাচ্ছে, যাদের কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে শরণার্থী শিবিরে নেবে৷ লাইটহাউস নামের একটি বেসরকারি উন্নয়নসংস্থার স্বেচ্ছাসেবীরা নতুন আগতদের খাদ্য এবং খাবার পানি দেন৷
ছবি: DW/D. Tosidis
ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখা
মরিয়া শিবিরে কোনমতে তৈরি চুলায় রুটি বানাচ্ছেন এক আফগান নারী৷ দেশটির ঐহিত্যবাহী এই রুটির একেকটি এক ইউরোতে অন্য শরণার্থীদের কাছে বিক্রি করেন তিনি৷ মরিয়া শিবিরে দীর্ঘদিন ধরে থাকা শরণার্থীরা সময় কাটাতে এরকম নানা কাজের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখছেন৷
ছবি: DW/D. Tosidis
জরুরী চিকিৎসা সেবা
মরিয়া শিবিরে থাকা অসংখ্য শরণার্থীর চিকিৎসা সেবা প্রয়োজন৷ তাই ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের’ উদ্যোগে শিবিরটির বাইরের অংশে শুধুমাত্র জরুরী রোগীদের জন্য একটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে৷
ছবি: DW/D. Tosidis
প্রতিদিন একই রুটিন
মরিয়াতে বর্তমানে সাড়ে আটহাজারের বেশি শরণার্থী আটকে আছেন৷ প্রতিদিন খাবার আর বিশুদ্ধ পানির জন্য দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাদের৷
ছবি: DW/D. Tosidis
7 ছবি1 | 7
তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথি বলছে, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বরের আগ পর্যন্ত এক বছরে ৫৮ হাজার ২৮৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে তুরস্কে পাঠিয়েছে গ্রিস৷ এদের মধ্যে পাকিস্তানিদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি৷ তবে বাংলাদেশ, সোমালিয়া এবং আলজেরিয়ারও অনেক মানুষ রয়েছেন৷ সিরিয়ার আছেন প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ৷
তুরস্কের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রিস থেকে পাঠানো ব্যক্তিদের বেশিরভাগকে যার যার দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷ আর সিরীয়দের তুরস্কের একটি শহরে পাঠানো হয়েছে, যেখানে তারা শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত ছিলেন৷
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কেরিয়াকস মিতসোতাকিস তুরস্কের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷ তিনি বলছেন, ‘‘যারা শরণার্থী সংকটকে ব্যবহার করেছে তাদের গ্রিস সম্পর্কে বলার সময় সাবধান থাকা উচিত৷''
তবে গ্রিস অনেক বছর ধরেই এভাবে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফেরত পাঠিয়ে থাকে বলে স্পিগেলের প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে৷