অনুপ্রবেশকারী মামলা: বেঙ্গালুরু পুলিশকে ভর্ৎসনা আদালতের
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০জানুয়ারি মাসে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে কয়েকশ মানুষকে উচ্ছেদ করেছিল কর্নাটক পুলিশ। সোমবার কর্নাটক হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, এভাবে কাজ করার এক্তিয়ার পুলিশের নেই। তদন্ত না করেই পুলিশ কী ভাবে এ ঘটনা ঘটালো, সে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের নির্দেশ, দ্রুত গৃহহীন পরিবারগুলিকে আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
বেঙ্গালুরুর অদূরে একটি বস্তিতে বহুদিন ধরে বসবাস করেন কয়েকশ মানুষ। কর্নাটকের বিভিন্ন গ্রাম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার সহ বহু রাজ্য থেকে কাজ করতে আসা শ্রমিকরা সেখানে থাকেন। শ্রমিকদের হয়ে মামলাকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিসের বক্তব্য, ওই বস্তিতে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা থাকতেন না। থাকতেন, এ দেশেরই হতদরিদ্র মানুষরা। কাজের খোঁজে বহু দূর দূর থেকে যাঁরা বেঙ্গালুরুতে এসেছেন। কিন্তু তাঁদের ভাষা, আচার আচরণ দেখে বহু দিন ধরেই পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশকারী বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ। বস্তুত, গত ১১ জানুয়ারি ওই বেসরকারি জমিতে গিয়ে বাড়িতে বাড়িতে উচ্ছেদের নোটিস লাগিয়ে দিয়ে আসে পুলিশ। ১২, ১৮ এবং ১৯ তারিখ বহু বাধা সত্ত্বেও রীতিমতো বুলডোজার দিয়ে ওই বস্তির সমস্ত বাড়ি ভেঙে দেয় পুলিশ। এর পরেই ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি হাইকোর্টে মামলা করে। সোমবার সেই মামলার শুনানিতেই পুলিশের কাজের নিন্দা করে আদালত।
কর্নাটক হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ পুলিশকে প্রশ্ন করেছে, কীভাবে পুলিশ জানল যে সেখানে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী আছে? এ বিষয়ে কোনও তদন্ত রিপোর্ট পুলিশ দেখাতে পারবে কি? পুলিশ অবশ্য বলার চেষ্টা করে, জমির মালিকের নির্দেশে সেখানে বসবাসকারীরা স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। পাল্টা আদালতের প্রশ্ন, স্বেচ্ছায় যদি তাঁরা চলে যান, তা হলে পুলিশ ১১ তারিখ নোটিস দিল কেন? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেনি পুলিশ। এর পরেই কর্নাটক পুলিশকে আদালত নির্দেশ দেয়, দ্রুত গৃহহীন মানুষদের জন্য আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের কথা শোনা হবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই তৈরি করে ফেলতে হবে আচ্ছাদন।
বেঙ্গালুরু পুলিশের দাবি, বহু দিন ধরেই বেঙ্গালুরু সংলগ্ন এলাকায় ভিড় জমাচ্ছেন অবৈধ বাংলাদেশিঅনুপ্রবেশকারীরা। মূলত কাজের জন্যই তাঁরা সেখানে আসছেন। তবে পুলিশের এই দাবির বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই করছে বেশ কিছু সংস্থা। এ দিন আদালতের নির্দেশকে তাদের জয় হিসেবেই দেখছে সেই সমস্ত সংস্থাগুলি।
এসজি/জিএইচ (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, পিটিআই)