পাকিস্তানের সঙ্গে অস্থায়ীভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচিতে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ৷ এদিকে, পাকিস্তানে বাংলাদেশি দূতাবাস উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে তালেবান৷
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে গুলশান-২ নম্বর চত্বরে জড়ো হন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা৷ তাঁরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গুলশান এলাকায় ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন ঘেরাওয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকেন৷ তখনই আগে থেকে সেখানে অবস্থান নেয়া পুলিশ সদস্যরা গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়৷ তাঁরা লাঠিপেটা করে কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন৷
গণজাগরণ মঞ্চের মারুফ রসুল সংবাদ মাধ্যমকে জানান, পুলিশের লাঠিপেটায় মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন৷ তিনি জানান, ইমরানকে পুলিশ দু'দফায় লাঠিপেটা করলে তিনি মাথা, বুক ও পিঠে আঘাত পান৷ তাঁকে প্রথমে ল্যাবএইড এবং পরে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়৷
জানা গেছে, ইমরান এইচ সরকারকে পুলিশ কিছুক্ষণ আটক রেখে ছেড়ে দিলেও ঘটনাস্থল থেকে গণজাগরণ মঞ্চের ১১ জন কর্মীকে আটক করা হয়েছে৷
জেগে আছে প্রজন্ম চত্বর
মূল দাবি একটাই, ‘যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই’৷ এই দাবি নিয়ে পাঁচই ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগ চত্বরে অবস্থান করছে তরুণ প্রজন্ম৷ তাদের সমর্থন জানাচ্ছে সবশ্রেণির মানুষ৷ ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে বেশ কয়েকদিন৷ কিন্তু এক চুল নড়েনি তারা৷
ছবি: Reuters
লাগাতার আন্দোলন
শাহবাগে অবস্থান নেওয়া তরুণ প্রজন্ম গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি ধরে লাগাতার তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে৷ যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে অনড় তারা৷ ডয়চে ভেলের ওয়েবসাইটে নিয়মিত সেখানকার হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জাতীয় দলের আগমন
রবিবার প্রজন্ম চত্বরে এক টুকরো আনন্দের উপলক্ষ্য হয়ে এসেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা৷ আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল, শাহবাগে অবস্থান নেওয়া ব্লগার, তরুণ সমাজের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে আসছেন তাঁরা৷ রবিবার সেই খবরের সত্যতা প্রকাশ পেলো৷
ছবি: REUTERS
টুইটার লড়াই
হ্যাশট্যাগ #shahbag, কেউ কেউ ব্যবহার করছেন #shahbagh - আসলে শাহবাগের ইংরেজি বানান নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে৷ উইকিপিডিয়া শেষের এইচটি বাদ দিলেও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সেটি ধরে রেখেছে৷ এই বিভ্রান্তি অবশ্য টুইটার লড়াইকে পেছনে ফেলেনি৷ বরং সমানতালে দু’টি হ্যাশটাগ দিয়েই জানানো হচ্ছে আন্দোলনের অগ্রগতি৷
ছবি: REUTERS
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে ‘শোধরানোর’ চেষ্টা
শাহবাগের প্রতিবাদ কি যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে না ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে? বিবিসি ইংরেজি বিভাগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের শিরোনামে এই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল৷ টুইটারে আন্দোলনকারীদের অব্যাহত দাবির পর সেই শিরোনামে বদল এসেছে৷ ইসলামপন্থী বাদ দিয়ে যুদ্ধাপরাধ শব্দটি জোড়া হয়েছে সেখানে৷ এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে আমারব্লগ৷
ছবি: amarblog.com
‘শাহবাগ সাইবার যুদ্ধ’
প্রজন্ম চত্বরে অবস্থান করছেন ‘শাহবাগ সাইবার যুদ্ধ’ দলের অনেক সদস্য৷ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইট ব্যবহার করে যুদ্ধাপরাধীদের চরম শাস্তির দাবিকে আরো সোচ্চার করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা৷ পাশাপাশি প্রজন্ম চত্বরের সর্বশেষ পরিস্থিতিও ইন্টারনেটে তুলে ধরা হচ্ছে এদের মাধ্যমে৷
ছবি: REUTERS
‘আপনার সহায়তা প্রয়োজন’
ডয়চে ভেলের টুইটার পাতাতে আন্দোলনকারীদের কিছু বার্তা আমরা পেয়েছি৷ জিন্নাত গোনিম নামক ঢাকার এক বাসিন্দা টুইটারে লিখেছেন, ‘‘আমরা কোন রাজনৈতিক দল, ধর্ম বা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি নই৷ আমরা বাংলাদেশি৷ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাচ্ছি, আমার মায়ের হত্যাকারীর, বোনের ধর্ষকের বিচার চাচ্ছি৷ আমাদের আপনার সহায়তা প্রয়োজন৷’’
ছবি: twitter.com
এই প্রজন্মের নারী মুক্তিসেনাদের লড়াই
গত কয়েকদিন ধরেই গণমাধ্যমের শিরোনামে জায়গা করে নিচ্ছেন লাকি আক্তার৷ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী আন্দোলন শুরুর দিন থেকে রয়েছেন শাহবাগে৷ তাঁর মতো আরো কয়েকজন নারী মুহুর্মুহু শ্লোগানে কাপিয়ে তুলছেন প্রজন্ম চত্বর৷ বিভিন্ন স্কুলকলেজের ছাত্রীরা মাঝেমাঝে হাজির হচ্ছেন আন্দোলনে৷
ছবি: REUTERS
‘ফাঁসির মঞ্চ’ প্রস্তুত
‘রাজাকারের ফাঁসি চাই’ - এই হচ্ছে প্রজন্ম চত্বরে আন্দোলনরতদের মূল দাবি৷ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করলে তা প্রত্যাখ্যান করে তরুণ প্রজন্ম৷ তারা চায় ফাঁসির আদেশ৷ শাহবাগে প্রতীকী ‘ফাঁসির মঞ্চ’ তৈরি করে যুদ্ধাপরাধীদের চরম শাস্তির অপেক্ষায় আছে ব্লগাররা৷
ছবি: Reuters
সপরিবারের শাহবাগে
শাহবাগে অনেকেই হাজির হচ্ছেন সপরিবারে৷ ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সাহিত্যিক, অধ্যাপক অনেকেই এসেছেন সপরিবারে৷ এই ছবিতে এক শিশুকে দেখা যাচ্ছে শাহবাগ চত্বরে, প্রতিবাদী ব্যানার মাথায় জড়িয়ে৷
ছবি: REUTERS
ব্লগার এন্ড অনলাইন অ্যক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক
‘ট্র্যাইবুনালে কাদের মোল্লার প্রহসনের রায়ের বিরুদ্ধে মহাসমাবেশ’ - এই শিরোনামে পাঁচ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল ব্লগার এন্ড অনলাইন অ্যক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক৷ ব্লগারদের আহ্বানে সেদিন শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করে সাধারণ মানুষ৷ এখন এই আন্দোলন আমজনতার৷
ছবি: REUTERS
10 ছবি1 | 10
তবে পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার শাহাবুদ্দিন আহমেদ জানান, তাঁরা গণজাগরণ মঞ্চের নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা বা নির্যাতন করেননি৷ ঐ এলাকা কূটনৈতিক পল্লি হওয়ায় স্পর্শকাতর এলাকা থেকে তাঁরা গণজাগরণ মঞ্চের নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছেন৷ তবে কয়েকজনকে আটকের কথা স্বীকার করেন তিনি৷
গণজারণ মঞ্চের এই কর্মসূচিতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং মুক্তিযোদ্ধারাও যোগ দেন৷
এর আগে গত বুধবার একই দাবিতে মঞ্চের কর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে গুলশানে পাকিস্তান হাইকমিশন ঘেরাও করে৷ তাঁরা ঘেরাও পরবর্তী সমাবেশে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক অস্থায়ীভাবে ছিন্ন করতে ২০ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন৷ ২০ ঘণ্টা শেষ হওয়ার পর একই দাবিতে বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি শুরু হয়েছিল৷
সমাবেশ ছত্রভঙ্গ হওয়ার পর ইমরান এইচ সরকার আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন৷
যুদ্ধাপরাধের দায়ে গত ১২ ডিসেম্বর জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়৷ পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিসার আলি একে ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ড' বলে অভিহিত করেন৷ আর পাকিস্তান জামায়াত সেদেশের সরকারকে বাংলাদেশ আক্রমণের আহ্বান জানায়৷ ঢাকা অবশ্য পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে তলব করে এর ব্যখ্যা চেয়ে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও৷ আর গণজাগরণ মঞ্চ পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অস্থায়ীভাবে ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছে৷
একাত্তরে ‘মিরপুরের কসাই’ খ্যাত জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি বৃহস্পতিবার রাতে কার্যকর করা হয়েছে৷ বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোন যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো৷ মোল্লার ফাঁসি নিয়ে তৈরি আমাদের বিশেষ ছবিঘর৷
ছবি: AP
অবশেষে ফাঁসি
৪৮ ঘণ্টা ধরে নানা নাটকীয় পরিস্থিতির পর ১২ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার রাতে আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়৷ এর আগে মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ মুহূর্তে বিচারকের নির্দেশে তা স্থগিত হয়৷ মোল্লাকে এভাবে ফাঁসি না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, জার্মানি সহ অন্যান্যরা৷
ছবি: picture-alliance/AA
শেষ দেখা
বৃহস্পতিবার ফাঁসির রায় কার্যকরের কিছুক্ষণ আগে কাদের মোল্লার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তার পরিবারের সদস্যরা৷ এসময় জেলগেটে কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিল বলেন, ‘‘ইসলামী আন্দোলন করার কারণেই আমার পিতাকে ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয়েছে৷’’
ছবি: Reuters
গ্রেপ্তার, দম্ভোক্তি
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০০৮ সালে ঢাকার একটি থানায় দায়ের করা মামলায় ২০১০ সালের জুলাইয়ে গ্রেপ্তার হন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লা৷ পরবর্তীতে কারাগারে দাঁড়িয়ে তাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘বাংলাদেশ হয়েছে বলে অনেকের মাতব্বরি বেড়ে গেছে৷’’
ছবি: Reuters
যত অভিযোগ
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মোট ৬টি অপরাধ বিবেচনায় নেয়া হয়৷ এগুলো হলো পল্লবি এলাকার গণহত্যা, কবি মেহেরুননিসা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালিব হত্যা, কেরানীগঞ্জের ভাটার চর ও ভাওয়াল খানবাড়ি হত্যাকাণ্ড, আলুব্দি গণহত্যা এবং মিরপুরের হযরত আলি পরিবারে গণহত্যা৷ এর সঙ্গে লুটতরাজ, ধর্ষণ এবং ধ্বংসযজ্ঞের অভিযোগও আছে৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: Archiv Rowshan Jahan Shathi
প্রথমে যাবজ্জীবন, পরে মৃত্যুদণ্ড
ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে কাদের মোল্লার অপরাধ প্রমাণিত হয়৷ এর প্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে৷ সেসময় কাদের মোল্লা আদালত থেকে বের হওয়ার সময় ‘বিজয় চিহ্ন’ দেখান৷ এতে সারাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়৷ পরবর্তীতে আপিলের ভিত্তিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় সর্বোচ্চ আদালত৷
ছবি: Strdel/AFP/Getty Images
দাফন সম্পন্ন
বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর মাইক্রোবাসে করে কাদের মোল্লার মরদেহ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের করা হয়৷ বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম লিখেছে, ‘‘স্থানীয় সময় রাত ৪টার দিকে ফরিদুপরের আমিরাবাদ গ্রামে লাশ পৌঁছানোর পর জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়।’’
ছবি: Mustafiz Mamun
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া
কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সৃষ্টি হওয়া শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চে আবারো ভিড় করেছেন অসংখ্য মানুষ৷ মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর সেখানে উপস্থিত জনতা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে৷
ছবি: Reuters
‘‘জাতি আজ কলঙ্ক মুক্ত হলো’’
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার ডয়চে ভেলেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘‘জাতি আজ কলঙ্ক মুক্ত হলো৷ ৪২ বছর পরে হলেও একজন যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড কার্যকর হলো৷’’ তিনি আশা করেন, সব যুদ্ধাপরাধীর দণ্ডই কার্যকর হবে৷
ছবি: privat
জার্মানির প্রতিক্রিয়া
এর আগে, বৃহস্পতিবার জার্মানির মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার মার্কুস ল্যোনিং এক বিবৃতিতে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর না করতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, জার্মানি নীতিগতভাবে মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না৷ তাই ফাঁসির পরিবর্তে কারাদণ্ড দেবার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি৷
ছবি: dapd
ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিতর্ক
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১০ সালে ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করে৷ তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল বিএনপি মনে করে, সরকার বিরোধী দলকে দুর্বল করতে এই ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করেছে৷ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এই ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মুনতাসির মামুন ডয়চে ভেলেকে বলেন, গণজাগরণ মঞ্চ যে অবস্থান থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিতের দাবি জানিয়েছে তা ঠিকই আছে৷ কিন্তু সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় সবদিক বিবেচনা করে৷ তবে গণজাগরণ মঞ্চের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে পুলিশের লাঠিপেটা গ্রহণযোগ্য নয়, বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
এদিকে পাকিস্তানে বাংলাদেশের দূতাবাস বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান নামে একটি জঙ্গি সংগঠন৷ পাকিস্তানের ‘দ্য নেশন' পত্রিকা এ খবর দিয়েছে৷ পত্রিকাটি জানায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করায় তারা এই হুমকি দেয়৷ জঙ্গি সংগঠনটি কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরকে ‘হত্যাকাণ্ড' বলে অভিহিত করেছে৷
অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বলেন, জামায়াতের যে জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পর্ক আছে, তা অনেক আগে থেকেই জানা৷ এবার কাদের মোল্লার জন্য তালেবানের হুমকিতে সেটা আবারো প্রমাণিত হলো৷ জামায়াত পাকিস্তানের প্রতি অনুগত তা পাকিস্তানের ভূমিকায় প্রমাণিত৷ তবে জেনেভা কনভেশন অনুযায়ী পাকিস্তান সরকার সেদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে তিনি আশা করেন৷
এদিকে, তালেবানের হুমকির বিষয়টি পাকিস্তানকে জানানো হয়েছে বলে বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মো: শামীম আহসান৷ বাংলাদেশের দূতাবাস ও সেখানকার কর্মীদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার ব্যাপারে পাকিস্তান বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷