আবার বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেছে ভারতের শাসক দল বিজেপি৷ আসামের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘বাংলাদেশি মুসলমানদের' বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে তারা৷
বিজ্ঞাপন
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেও বাংলাদেশ থেকে আসামে যাওয়া মুসলমানদের বিরুদ্ধে লাগামছাড়া বক্তব্য দিতে শুরু করেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)৷ তখন বিজেপির কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাও বলেছেন, বিজেপি যদি সরকার গঠন করে তাহলে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মুসলমানদের বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে৷ এ জন্য ‘বাংলদেশি মুসলমানদের' বাক্স-প্যাটরা গোছানোর কথাও বলা হয়েছিল তখন৷
আগামী এপ্রিলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসামসহ মোট পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন৷ আসামে নির্বাচন হবে ৪ঠা ও ১১ই এপ্রিল৷ পশ্চিমবঙ্গে ৪ঠা এপ্রিল থেকে শুরু করে সাতদিন ধরে চলবে ভোট৷
আসন্ন এই নির্বাচনকে ঘিরে আসামে আবার ‘বাংলদেশি মুসলমান' ইস্যুকে সামনে নিয়ে এসেছে বিজেপি৷ হিন্দুত্ববাদী দলটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আসামে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হলে ১৯৭১-এর পরে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মুসলমানদের চিহ্নিত করে বাংলাদেশে পাঠানো হবে৷
একজন নরেন্দ্র মোদী
উগ্র সাম্প্রদায়িক আদর্শ এবং বিভাজনের রাজনীতির কারণে ভারতের বহু মানুষের কাছে তিনি খলনায়ক৷ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিজেকে নতুন মোড়কে সামনে এনে সেই নরেন্দ্র মোদীই শোনাচ্ছেন ভারতকে বদলে দেয়ার মন্ত্র৷
ছবি: dapd
চা ওয়ালা
১৯৫০ সালে গুজরাটের নিম্নবিত্ত এক ঘাঞ্চি পরিবারে জন্ম নেয়া নরেন্দ্র মোদী কৈশরে বাবাকে সাহায্য করতে রেল ক্যান্টিনে চা বিক্রি করেছেন৷ ঘাঞ্চি সম্প্রদায়ের রীতি অনুযায়ী ১৭ বছর বয়সে যশোদাবেন নামের এক বালিকার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়, যদিও বেশিদিন সংসার করা হয়নি৷ ছাত্র হিসেবে সাদামাটা হলেও মোদী বিতর্কে ছিলেন ওস্তাদ৷ ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর প্রচারক হিসাবে রাজনীতির দরজায় পা রাখেন মোদী৷
ছবি: UNI
গুজরাটের গদিধারী
১৯৮৫ সালে আরএসএস থেকে বিজেপিতে যোগ দেয়ার ১০ বছরের মাথায় দলের ন্যাশনাল সেক্রেটারির দায়িত্ব পান ১৯৯৫ সালে গুজরাটের নির্বাচনে চমক দেখানো মোদী৷ ১৯৯৮ সালে নেন দলের জেনারেল সেক্রেটারির দায়িত্ব৷ ২০০১ সালে কেশুভাই প্যাটেলের স্বাস্থ্যের অবনতি হলে দলের মনোনয়নে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আবির্ভূত হন নরেন্দ্র মোদী, যে দায়িত্ব তিনি এখনো পালন করে চলেছেন৷
ছবি: Reuters
দাঙ্গার কালিমা
মোদীকে নিয়ে আলোচনায় ২০০২ সালের দাঙ্গার প্রসঙ্গ আসে অবধারিতভাবে৷ স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ সেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় গুজরাটে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হন৷ মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও তিনি দাঙ্গায় উসকানি দেন৷ তিনি এ অভিযোগ স্বীকার করেননি, আদালতও তাঁকে রেহাই দিয়েছে৷ তবে দাঙ্গার পক্ষে কার্যত সাফাই গেয়ে, হিন্দুত্ববাদের গান শুনিয়েই তিন দফা নির্বাচনে জয় পান মোদী৷
ছবি: AP
রূপান্তর
দাঙ্গার পর নিজের ভাবমূর্তি ফেরানোর উদ্যোগ নেন নরেন্দ্র মোদী৷ একজন বিতর্কিত নেতার বদলে উন্নয়নের কাণ্ডারি হিসাবে তাঁকে প্রতিষ্ঠা দিতে শুরু হয় ‘গুজরাট মডেল’-এর প্রচার৷ ২০০৭ সালের পর নিজেকে একজন সর্বভারতীয় নেতা হিসাবে তুলে ধরতে নতুন প্রচার শুরু করেন এই বিজেপি নেতা, প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্র্যান্ড মোদী’৷গুজরাটের উন্নয়নের চিত্র দেখিয়ে কলঙ্কিত ভাবমূর্তিকে তিনি পরিণত করেন ভারতের ত্রাতার চেহারায়৷
ছবি: UNI
ভারতের পথে পথে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে নরেন্দ্র মোদী পাড়ি দিয়েছেন তিন লাখ কিলোমিটার পথ৷ সারা ভারতে পাঁচ হাজার ৮২৭টি জনসভায় তিনি অংশ নিয়েছেন, নয় মাসে মুখোমুখি হয়েছেন পাঁচ কোটি মানুষের৷ কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসাবে শুরু করলেও এবার তিনি হিন্দুত্ব নিয়ে প্রচার এড়িয়ে গেছেন সচেতনভাবে, যদিও বাংলাদেশের মানুষ, ভূখণ্ড এবং ধর্ম নিয়ে নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি নেতাদের বক্তব্য নতুন সমালোচনার জন্ম দিয়েছে৷
ছবি: AP
নতুন ইতিহাস
ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটই যে এবার ভারতে সরকারগঠন করতে যাচ্ছে, বুথফেরত জরিপ থেকে তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷ ৬৩ বছর বয়সি মোদীর নেতৃত্বে এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি৷ ৭ই এপ্রিল থেকে ১২ই মে অনুষ্ঠিত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৮১ কোটি ৪০ লাখ৷ তাঁদের মধ্যে রেকর্ড ৬৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শেষ হাসি
নির্বাচনে বিজেপির প্রতিশ্রুতি ছিল – মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের অর্থনীতি নতুন গতি পাবে, গুজরাটের আদলে তিনি ভারতকে বদলে দেবেন৷ অবশ্য সমালোচকরা বলছেন, ‘কলঙ্কিত ভাবমূর্তি’ ঢাকতে এসব মোদীর ফাঁপা বুলি৷ তাঁর স্বৈরাচারী মেজাজ, শিক্ষা ও অর্থনীতির জ্ঞান নিয়েও ঠাট্টা-বিদ্রুপ হয়েছে৷ বলা হচ্ছে, ভোটাররা টানা তৃতীয়বার কংগ্রেসকে চায়নি বলেই বিজেপি জয় পেয়েছে৷ যদিও শেষ হাসি দেখা যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর মুখেই৷
ছবি: dapd
7 ছবি1 | 7
আসামের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির নির্বাচনি প্রচার দেখভাল করার সার্বিক দায়িত্ব পেয়েছেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা৷ বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাঁর দলের সাম্প্রতিক বক্তব্যের পক্ষে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বললেন, ‘‘ওদের (বাংলাদেশি মুসলমান) আসল লক্ষ্য ধীরে ধীরে পুরো রাজ্য দখল করা এবং আমাদের (হিন্দু) কণ্ঠ এবং সংস্কৃতিকে দমন করা৷ এ কারণে এবারের নির্বাচনটা হবে আগেকার সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারবিরোধী৷'' তিনি জানান, বিজেপির আপত্তি শুধু বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মুসলমানদের বিষয়ে৷ তাঁর মতে ‘প্রকৃত ভারতীয় মুসলমানরা' বিজেপির সঙ্গেই আছে৷
বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আসামে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হলে তারা ১৯৭১-এর পরে যাওয়া বাংলাদেশি মুসলমানদের ফেরত পাঠাবে৷ আর ১৯৫০ থেকে ১৯৭১-এর আগে যেসব মুসলমান বাংলাদেশ, অর্থাৎ তখনকার পূর্ব পাকিস্তান থেকে গেছেন, তাঁদের ভারতেই রাখা হবে; তবে তাঁদের পূর্ণ নাগরিকের মর্যাদা না দিয়ে শরণার্থীর মর্যাদা দেয়া হবে৷ ১৯৫০ থেকে ১৯৭১-এর আগে যাওয়া মুসলমানদের প্রসঙ্গে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘‘১৯৭১-এর আগে প্রায় ২০ লক্ষের মতো শরণার্থী এসেছে৷ তারা এবং তাদের উত্তরসূরিরা অর্থনীতি এবং শিক্ষায় উন্নতি করুক৷ তবে তাদের শরণার্থীর মর্যাদাই পাওয়া উচিত৷ কেউ যদি আবেদন জানিয়ে নাগরিকত্ব পেয়ে যায়, সেটা অন্য ব্যাপার৷ ''
শাহরুখকে ‘পাকিস্তানের দালাল’ বলল হিন্দু মৌলবাদীরা
হিন্দু মৌলবাদীরা ভারতে যে অসহিষ্ণুতা ছড়াচ্ছে – এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন হিন্দি ছবির সুপারস্টার শাহরুখ খান৷ তাতেই খেপে গেছেন বিজেপিসহ হিন্দু মৌলবাদী অন্যান্য দলের কতিপয় নেতা৷ শাহরুখকে বলছেন ‘পাকিস্তানের দালাল’!
ছবি: Johannes Eisele/AFP/Getty Images
কিং খানের ‘হাফ সেঞ্চুরি’
গত ২ নভেম্বর ছিল ‘বলিউড কিং’ শাহরুখ খানের ৫০তম জন্মদিন৷ জীবনের অর্ধ শতাব্দী পূরণ বলে কথা! বিশ্বের কোটি কোটি ভক্ত এ উপলক্ষ্যে অভিনন্দন এবং শুভকামনায় সিক্ত করেন শাহরুখকে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Stringer
শাহরুখের সত্যি বয়ান
জন্মদিনে একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন শাহরুখ৷ সাম্প্রতিক সময়ে গরুর মাংস নিয়ে হিন্দু মৌলবাদীরা যে দেশব্যাপী অসহিষ্ণুতা ছড়িয়েছে সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে শাহরুখ বলেছিলেন, ‘‘ধর্মীয় সহিষ্ণুতার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিছু আর হয়না৷ ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি দেশকে অন্ধকার যুগের দিকে ঠেলে দিচ্ছে৷’’
ছবি: picture alliance/ZUMA Press/F. Shamim
বিজেপিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া
সাক্ষাৎকারটি প্রচারের পরই বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়ভার্গব টুইটারে লিখে দেন,‘শাহরুখের হৃদয় পড়ে আছে পাকিস্তানে’৷ সেই টুইট পরে প্রত্যাহার করে নিলেও বুধবার তিনি বলেছেন, ভারত অসহিষ্ণু হলে শাহরুখের মতো এক মুসলমান অমিতাভ বচ্চনের পরই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকা হতে পারতেন না৷’’ বিজেপির কয়েকজন নেতা শাহরুখকে ‘মুখ সামলে কথা বলা’র অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, মুখ না সামলালে শাহরুখের ছবি বয়কট করা হবে৷
ছবি: Johannes Eisele/AFP/Getty Images
জঙ্গি নেতার সঙ্গে তুলনা
শাহরুখের সমালোচনা করতে গিয়ে বিজেপির আরেক সাংসদ যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘‘শাহরুখ এখন হাফিজ সাঈদের ভাষায় কথা বলছেন৷’’ বলিউড ইতিহাসের অন্যতম সেরা সুপারস্টারের সঙ্গে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লশকর-ই তৈয়বার শীর্ষ নেতা হাফিজ সাঈদের তুলনা ভারতের সাধারণ মানুষ এবং শাহরুখ ভক্তদের আহত করেছে৷ সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের তেমন প্রতিক্রিয়াই জানাচ্ছেন সবাই৷
ছবি: AP
শাহরুখের ধর্মনিরপেক্ষতা
ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত জীবনে শাহরুখ খুবই উদার৷ তাঁর স্ত্রী গৌরির জন্ম হিন্দু পরিবারে৷ প্রেম করে বিয়ে করার পরেও শাহরুখ কখনো গৌরির ধর্ম বিশ্বাস বা ধর্ম চর্চায় হস্তক্ষেপ করেননি৷ ভক্তদের কাছে ‘এসআরকে’ নামেও পরিচিত মুম্বই মহাতারকা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে নামাজ পড়া এবং পূজা করার ব্যবস্থা রয়েছে৷ ছবিতে স্ত্রী গৌরির সঙ্গে শাহরুখ৷
ছবি: Strdel/AFP/Getty Images
5 ছবি1 | 5
৪৫ থেকে ৬৬ বছর আগেও যাঁরা আসামে গেছেন তাঁদের ব্যাপারে বিজেপির এই দৃষ্টিভঙ্গি দেখে আসামের মুসলমানদের মাঝে শঙ্কা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে৷ অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)-এর নেতা আমিনুল ইসলাম মনে করেন, ভারতের মুসলমানদের একাংশের অবস্থা এখন রোহিঙ্গাদের মতো৷ তিনি বলেন, ‘‘(মিয়ানমারের) রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কী হয়েছে তা আমরা জানি৷ একইরকম ঘটনা আমাদের সঙ্গেও ঘটতে পারে৷''
ভারতে মৌলবাদীদের পাকিস্তান বিরোধীতা
ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিরোধ দীর্ঘদিনের৷ চারটি যুদ্ধও হয়েছে দেশ দু’টির মধ্যে৷ তবে দু’দেশের দ্বন্দ্বকে রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ না রেখে তা সংস্কৃতি এবং খেলাধুলার অঙ্গনেও ছড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু মৌলবাদীরা৷
ছবি: Getty Images/AFP
ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচে বাধা
১৯৯৯ সালে ভারত সফরে এসেছিল পাকিস্তান৷ সেবার দু’দেশের ক্রিকেট ম্যাচ বানচাল করতে ফিরোজ শাহ কোটলার পিচ খুঁড়ে রেখেছিল হিন্দু মৌলবাদী দল শিব সেনা৷ তারপরও অবশ্য ম্যাচ হয়েছে৷ ২০০৬ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের জয়পুর এবং মোহালির দু’টি ম্যাচেরও বিরোধীতা করেছিল শিব সেনা৷ সেবারও অবশ্য নির্বিঘ্নেই ম্যাচ হয়েছে৷
ছবি: Fotolia/S.White
বীনা মালিক আর আলী সেলিমের পারফর্ম্যান্সেও আপত্তি
রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস’-এর চতুর্থ আয়োজনে অংশ নিতে এসে পাকিস্তানের বীনা মালিক এবং আলী সেলিমও পড়েছিলেন শিব সেনার আপত্তির মুখে৷ অনুষ্ঠানের আয়োজকরা শুধু পাকিস্তানি হওয়াকে অপরাধ মেনে বীনা এবং সেলিমকে অবশ্য বাদ দেননি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Merey
কাবাডিতেও পাকিস্তানে আপত্তি
২০১৪ সালে পেশাদার কাবাডি লিগের কয়েকটি দল পাকিস্তানের খেলোয়াড় দলে রেখেছিল৷ টাকা খরচ করে তাদের খেলোয়াড় নিয়ে তাদের শেষ পর্যন্ত খেলানো যায়নি৷ সেবারও শিব সেনার আপত্তি এবং আপত্তির মুখে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিতে হয় দলগুলোকে৷
ছবি: imago/Xinhua
আতিফ আসলামের কনসার্ট হলো না
২০১৫ সালের ২৫শে এপ্রিল পুনেতে আতিফ আসলামের কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল৷ শিব সেনার আপত্তির মুখে সেই কনসার্ট আর হয়নি৷
ছবি: Coke Studio
বন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারলেন না গুলাম আলী
পাকিস্তানের গজল শিল্পী গুলাম আলী ভারতে তুমুল জনপ্রিয়৷ এ মাসেই প্রয়াত গজল শিল্পী জগজিৎ সিং-এর জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মু্ম্বইতে আসার কথা ছিল তাঁর৷ শুধু পাকিস্তানি হওয়ার কারণে তাঁর ভারত আগমন নিয়েও আপত্তি তোলে শিবসেনা৷ গুলাম আলী তাই এবার আর প্রয়াত বন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেও মুম্বই আসতে পারেননি৷
ছবি: Getty Images/AFP
পাকিস্তানির পাশে থাকায় ভারতীয়র মুখেই কালি
নিজের লেখা বইয়ের প্রকাশের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মুম্বই এসেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুরশিদ কসুরি৷ অনুষ্ঠান হয়েছে, পুস্তকও প্রকাশিত হয়েছে৷ কিন্তু তাদের দাবি অনুযায়ী অনুষ্ঠান বাতিল না হওয়ায় অনুষ্ঠানে এসে সুধেন্দ্র কুলকার্নির মুখে কালি ছিটিয়ে দিয়েছে শিবসেনা সমর্থকরা৷ ভারতের সাবেক কূটনীতিক সুধেন্দ্র কুলকার্নির একমাত্র অপরাধ তিনি এক পাকিস্তানির বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Pilick
6 ছবি1 | 6
আসামের ইসলামি দলগুলো ইতিমধ্যে বিজেপির প্রচারণার বিপরীতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্টভাবেই তুলে ধরতে শুরু করেছে৷ আসামের এক ছাত্রনেতা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘‘ভারতের বৈধ নাগরিকদের বাংলাদেশি বলে দেয়া হচ্ছে৷ ভারতীয় সংবিধানের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে৷ বিজেপি যা খুশি তাই করতে পারে না৷''
ভারতের অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই অবশ্য মনে করেন, আসামের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির এই ‘বাংলাদেশি মুসলমান' বিরোধী বক্তব্য শুধু ভোট বাড়ানোর কৌশল৷
এসিবি/ডিজি (রয়টার্স)
ভারতে নির্বাচন এ্লেই বিজেপি ‘বাংলাদেশি মুসলমান’ ইস্যু নিয়ে উত্তেজনা তৈরি করে কেন? এটা কি শুধুই ভোট বাড়ানোর অপকৌশল? প্রিয় পাঠক, নীচে আপনার মতামত জানান৷