1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশের তাপমাত্রা বাড়ছে

৮ নভেম্বর ২০২২

বাংলাদেশের তাপমাত্রা গত তিন দশকে দ্রুত বেড়েছে৷ সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে বলছে, শীতকাল আরো বেশি শুষ্ক এবং বর্ষাকাল আরো বেশি আর্দ্র হচ্ছে৷

Bangladesch Hitze Wetter
ছবি: bdnews24.com

গেল তিন দশকে বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা তার আগের তিন দশকের চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে৷ জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ২৭ উপলক্ষে প্রকাশিত বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যান বা জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে৷

সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফর্মেশন সার্ভিসেস বা সিইজিআইএসের হিসেবে, ১৯৬১ থেকে ১৯৯০ সালে প্রতিবছর গড়ে তাপমাত্রা বেড়েছে ০.০০৬৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ আর ১৯৯১ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তাপমাত্রা বেড়েছে প্রতিবছর গড়ে ০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ অর্থাৎ আগের তিন দশকের তুলনায় গত তিন দশকে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে এর প্রায় সাড়ে চার গুণ৷

সিইজিআইএসের হিসেবে আরো দেখা যায়, যতই সময় গড়াচ্ছে তত তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার বাড়ছে৷ যেমন, গত তিন দশকের মধ্যে ১৯৯১ থেকে ২০০০-এর মধ্যে তাপমাত্রা বেড়েছে ০.৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০১ থেকে ২০১০ পর্যন্ত বেড়েছে বছরে গড়ে ০.৫৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০১১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গড়ে ১.০৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷

বদলে যাচ্ছে আবহাওয়া

শীত ও বর্ষায় সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা যথাক্রমে বছরে বেড়েছে ০.৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ০.৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ অর্থাৎ, শীতকাল ক্রমে উষ্ণতর হচ্ছে৷

একইসঙ্গে বৃষ্টিপাতের ধরনও বদলে যাচ্ছে৷ যেমন, দেশ জুড়ে গড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গড়ে ৮.৪ মিলিমিটার বেড়েছে৷ শীতকালে অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং প্রাক বর্ষা মৌসুমে অর্থাৎ মার্চ থেকে মে মাসে বৃষ্টিপাত বছরে কিছুটা কমেছে৷ অন্যদিকে, বর্ষা ও বর্ষার পর, অর্থাৎ, জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে৷ এর অর্থ শীতকাল আরো বেশি শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুম আরো বেশি আর্দ্র হচ্ছে৷

ভবিষ্যৎ কোন দিকে?

এদিকে, জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেল আইপিসিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, যেভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হচ্ছে তাতে সারা পৃথিবীতে তাপমাত্রা ২০৩০ সাল নাগাদ শিল্পযুগের শুরু থেকে দেড় ডিগ্রি বাড়বে৷ আর ২০৫০ সাল নাগাদ ১.৭ ডিগ্রি থেকে ২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে৷ দীর্ঘমেয়াদে, অর্থাৎ শতাব্দীর শেষে তাপমাত্রা বাড়তে পারে ১.৮ ডিগ্রি ৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ তাদের হিসেবে, বাংলাদেশের তাপমাত্রা ২০৩০ সাল নাগাদ তাপমাত্রা শিল্পযুগের শুরুর চেয়ে ০.৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ০.৬৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে৷ ২০৫০ সাল নাগাদ ১.৩ ডিগ্রি থেকে ২ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে পারে৷

তাপমাত্রা বাড়লে কী হবে?

আইপিসিসির গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে অতিবৃষ্টির হার বাড়ে ৭ ভাগ৷ বাড়ে শক্তিশালী সাইক্লোনের হার৷ প্রতিবেদনটি বলছে, পৃথিবীর তাপমাত্রা আর ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে প্রতি শতকে দুই থেকে তিনবার ভয়ঙ্কর অতিবৃষ্টির কবলে পড়বে পৃথিবী৷ প্রতি দশকে একবার প্রচণ্ড খরায় অধিকাংশ জমি শুকিয়ে যাবে এবং চারবার উর্বরতা হারাবে৷ হিট ওয়েভ বা তাপপ্রবাহের ঘটনা এরই মধ্যে বেড়েছে ২.৮ গুণ৷ আর একটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়লে তা ৯.৪ গুণ বাড়বে এবং তাপমাত্রা বাড়বে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷

‘‘এই প্রতিবেদনটি হলো বাস্তবতা,'' বলেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং আইপিসিসির ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য ভেলেরি ম্যাসন-ডেলমট৷ প্রতিবেদনটি বলছে, জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন করে মানুষ পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রাকশিল্পযুগের চেয়ে এরই মধ্যে প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়িয়ে ফেলেছে (০.৮ ডিগ্রি সে. থেকে ১.২ ডিগ্রি সে.)৷ এর অর্থ গড়ে প্রতি দশকে মানবসৃষ্ট কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়েছে ০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷

‘‘রিপোর্টের ফল দেখে এটা নিশ্চিত যে, আমরা এরইমধ্যে একটি জলবায়ু সংকটের ভেতর পড়ে গেছি,'' বলেন জুরিখভিত্তিক বিজ্ঞানী সোনিয়া জেনেফিরাটনে৷

বাংলাদেশের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ সালিমুল হক বলেন, ‘‘ আইপিসিসির প্রতিবেদনে এটি পরিষ্কার যে, মানবসৃষ্ট কারণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ফলে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হচ্ছি৷ এর ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে৷ বেড়েছে দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ