বিশ্বের তুখোড় রাজনীতিকদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আছেন৷ কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রীর ফেসবুকে না আসার ব্যাপারে অনেক পাঠকই একমত৷ সেকথাই তাঁরা জানিয়েছেন আমাদের ফেসবুক পাতায়৷
বিজ্ঞাপন
‘‘বাংলাদেশের নেত্রী দু'জনই মিডিয়ার সামনে কম হাজির হন৷ আর ফেসবুক তো একটা সামাজিক মিডিয়া৷ কাজেই তাঁদের দু'জনের ফেসবুকে আসার কথা কোনোভাবেই আশা করা যায় না৷'' একেবারে নিশ্চিত হয়েই ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় এ মন্তব্য করেছেন পাঠক মোসাদ্দেক রহমান৷
বন্ধু সাইদুল হোসেন মোসাদ্দেক রহমানকে সরাসরি সমর্থন করেছেন৷ অর্থাৎ তাঁরও ধারণা যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়া সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটার ও ফেসবুকে আসবেন না৷
পাঠক ফারহানা আক্তারের সোজা উত্তর ‘না'৷ প্লাবনের মতামতও ঠিক ফারহানা আক্তারের মতো৷ আর আমাদের ফেসবুক-বন্ধু মিজানুর রহমানের কথায়, ‘‘কখনই না''৷
নেতা ও প্রশাসন যখন হাতের নাগালে
সোশ্যাল মিডিয়া দক্ষিণ এশিয়ায়ও সরকার ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ দিচ্ছে৷ মিডিয়া ও লাল ফিতের ফাঁস এড়িয়ে এই প্রত্যক্ষ সংলাপের সুযোগ নিচ্ছেন নেতা, মন্ত্রীসহ শীর্ষস্তরের অনেকে৷
ছবি: DW/S. Leidel
সুষমা স্বরাজ
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে টুইট করে হাতেনাতে ফল পেয়েছেন, এমন ভারতীয় নাগরিকের সংখ্যা কম নয়৷ বিদেশের মাটিতে সংকটে পড়া থেকে শুরু করে মধুচন্দ্রিমার ঠিক আগে সদ্যবিবাহিত স্ত্রীর পাসপোর্ট অন্তর্ধান – এমন অনেক পরিস্থিতিতে মুশকিল আসান হিসেবে পাশে দাঁড়িয়েছেন স্বরাজ৷
ছবি: AP
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাপ
আপদকালীন পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমতাসীন মন্ত্রী বা শীর্ষ আমলার টুইটার অ্যাকাউন্ট মনে রাখা অনেক সময়ে কঠিন হতে পারে৷ তাই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিশেষ অ্যাপ চালু করেছে৷ বিদেশে সংকটে পড়লে যে কোনো ভারতীয় নাগরিক এর সাহায্যে নিকটবর্তী দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন৷
ছবি: Getty Images/AFP
নরেন্দ্র মোদী
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়ে নরেন্দ্র মোদী সংবাদমাধ্যমকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে ফেসবুক, টুইটারকেই নিজের বার্তা পৌঁছে দেবার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন৷ পিএমও বা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর প্রায় ২৪ ঘণ্টাই সজাগ থাকে৷ সরাসরি যোগাযোগ করলে অনেক ক্ষেত্রেই কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায়৷
ছবি: twitter.com/narendramodi
শশী থারুর
ভারতের রাজনৈতিক জগতে টুইটার ব্যবহারের পথিকৃৎ বলা যেতে পারে সাবেক কূটনীতিক, লেখক ও কংগ্রেস নেতা শশী থারুরকে৷ বিগত সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনিও সরাসরি অনেক মানুষের সহায়তা করতে পেরেছিলেন৷ অন্যদিকে নানা মন্তব্যের কারণে বার বার সমস্যায় পড়েছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিপর্যয়ের সময় টুইটার
২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের দক্ষিণে চেন্নাই শহরে ভয়াবহ বন্যায় গোটা শহর বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল৷ সরকার, প্রশাসন ও নৌ-বাহিনী সহায়তা ও ত্রাণ তৎপরতার কাজে টুইটার-কে অত্যন্ত সফলভাবে ব্যবহার করতে পেরেছিল৷ #ChennaiRains এবং #ChennaiRainsHelp হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে বিচ্ছিন্ন জলবন্দি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়েছিল৷
ছবি: Imago/Xinhua
সরকারি পরিষেবার ‘টুল’
ভারতীয় রেল বিশ্বের অন্যতম বিশাল ও জটিল এক পরিবহণ নেটওয়ার্ক৷ যাবতীয় সদিচ্ছা সত্ত্বেও যাত্রীদের অভিযোগের শেষ নেই৷ ভারতীয় রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু তাই ফেসবুক ও টুইটারের এক সার্বিক প্ল্যাটফর্ম চালু করেছেন৷ এর মাধ্যমে নানা বিষয় নিয়ে সরাসরি রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব৷
ছবি: Reuters/Adnan Abidi
সজীব ওয়াজেদ জয়
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুক এবং টুইটারে বেশ সক্রিয়৷ তাঁর ফেসবুক পেজের স্ট্যাটাস প্রায়ই খবর হয়৷ তিনি প্রয়োজন হলে বিভিন্ন বিষয়ের ব্যাখ্যা এবং তথ্য দেন সেখানে৷
ছবি: Sajeeb Ahmed Wazed
7 ছবি1 | 7
পাঠক মেঘনাথ বলছেন, এতে নাকি সমালোচনার ঝড় যেমন উঠবে, তেমনি কারাগারে বন্দির সংখ্যাও বেড়ে যাবে৷
তবে পাঠক শুভ মনে করেন, দুই নেত্রীর ফেসবুকে আসাটা বাড়াবাড়ি৷ কারণ তাঁর মতে, ‘‘অন্যান্য সেলিব্রেটিদের কমেন্ট বক্সের যে অবস্থা, তাতে মনে হয় আমাদের রাজনীতিকদের অবস্থা আরো খারাপ হবে৷ কারণ তাঁদের তো কোনো অভিজ্ঞতা নেই৷''